বিলুপ্ত লোকসংস্কৃতি - মাটির বাড়ি এবং বিভিন্ন তৈজসপত্র ⛲ ১০% লাজুক শিয়ালের জন্য 🦊
✅সবাইকে স্বাগতম #amarbanglablog এ আমার পক্ষ থেকে আমি @steem-for-future .10% বেনিফিশিয়ারি @shy-fox কে 🦊🦊
⤵️⤵️⤵️
Original image made by canva from @steem-for-future
আসসালামু আলাইকুম
আবারো আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়ে গেলাম। আশা করছি সকলের সুস্থ এবং ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের অনেক অনেক দোয়া এবং আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমিও আজ অনেক অনেক ভালো আছি। সকলেই সুস্থ সুন্দর থাকুন এবং সকলের প্রতি শুভকামনা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগিং।
অনেকদিন পর আমি আজকে আবারো আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি বিলুপ্ত লোকসংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য নিয়ে। আমি আজকে আপনাদের সামনে তুলে ধরব বিলুপ্ত মৃৎশিল্প অর্থাৎ মাটির বাড়ির কিছু রিভিউ নিয়ে। যদিও এটা সম্পূর্ণ রিভিউ না তারপরেও মাটির বাড়ি কিভাবে বিলুপ্ত হয়ে গেল আমাদের কাছেথেকে অর্থাৎ ভূখণ্ড থেকে সেই বিষয়ে সামান্য কিছু বলার চেষ্টা করব। চলো বন্ধুরা শুরু করা যাক মূল বিষয়।।।
পূর্বেই আপনাদের মাঝে অবগত করেছিলাম যে আমি শীতকালে আমার দেশের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে আমি পূর্বে বেশ কয়েকটি পোস্টে আপনাদের সামনে আলোচনা করেছি। তবে আমার সেই ভ্রমনের কাহিনী আজকে আরো একটু উন্নত এবং ভিন্নধর্মী করার চেষ্টা করেছি।
আমি যখন আমার দেশের বাড়িতে বেড়াতে গেলাম তখন দেখতে পেলাম আমার পাশের বাড়ি অর্থাৎ আমার দাদার বাড়ি। উপরে নাম মাত্র ঘরের চাল দেওয়া রয়েছে। সুতরাং বর্ষাকালে প্রতিনিয়ত টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ে। এবং এমনটি ধারাবাহিকতা বজায় থাকার কারণে বাড়িগুলো এখন প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। অর্থাৎ মৃৎশিল্পের যে অসাধারণ কারুকার্যখচিত বাড়ি ছিল সেটি এখন আপাতত প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। তো দেখে নেওয়া যাক সেই বাড়ির সম্পর্কে বেশকিছু ফটোগ্রাফি যেগুলো আমাদের বিলুপ্ত লোকসংস্কৃতির অন্তর্গত।।
এটি হলো ভাঙ্গা বাড়ির একবারে সর্বশেষ পেছনের অংশ। ভাঙ্গা চালা দিয়ে এই ঘরের ভিতরে প্রতিনিয়ত বৃষ্টির পানি পড়ে এবং দেয়ালগুলো বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায়। যখন এই দেওয়ালগুলো বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায় তখন এগুলো ভিজে স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায় এবং ওপরের আবরণটা নষ্ট হয়ে যায়। এই ধারাবাহিকতা বজায় কারণে বাড়িটি এখন নষ্ট হয়ে গেছে প্রায়।
এটি হলো বাড়ির সর্বশেষ পেছনে রহস্য। সুতরাং এবারে আমরা সামনের দিকে প্রবেশ করব।।
এটি হলো বাড়ির প্রধান ফটক। এই ঘরের ভেতরে ঢুকতে হলে আপনাকে এই কাঠের পুরনো দরজা দিয়ে ঢুকতে হবে।
আনুমানিক আমার দাদার কাছ থেকে জানতে পারি এই ঘরের দরজা টি প্রায় শত বছরের পুরনো। কিন্তু তারপরেও এই ঘরের দরজায় কোন প্রকার কাঠের ক্ষতি হয়নি কিংবা দরজা এখনো অনেক মজবুত আছে। এখনো আশা করা যায় প্রায় 40 থেকে 50 বছর মেয়াদ থাকতে পারে এই কাঠের দরজার।
সুতরাং আমি সর্বপ্রথম এই কাঠের দরজা দিয়ে রুমের ভিতরে প্রবেশ করলাম। ছোট্ট এই রুমের ভিতরে প্রবেশ করার পর আমিতো রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম।
এটা হচ্ছে আমার দাদার থাকার স্থান। অর্থাৎ এখানে আমার দাদা এবং দাদী রাত্রের বিছানা হিসেবে নির্বাচন করেছেন। যদিও আমাদের থাকার জন্য অনেক ভালমানের বাড়ি রয়েছে তার পরেও আমার দাদা এবং দাদী এই রুম থেকে অন্য কোথাও থাকতে ইচ্ছুক নই।
তাদের একটাই কথা। এটা আমাদের নিজস্ব রুম। এবং আমরা এই আমাদের নিজস্ব রুম থেকে কখনোই অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে পারবো না কিংবা থাকবো না। শত বার বলার পরেও তারা তাদের মত কখনোই পরিবর্তন করেনি।
সুতরাং দাদা এবং তাদের জন্য এটি হলো নির্বাচিত বিছানা।
মাটির তৈরি পাতিল। এবং পাটের তৈরি শিকা। এই মাটির তৈরি করা পাতিল গুলোর যে বয়স কত আমার সঠিক ধারণা নাই। তবে আমার জন্মের পর থেকে আমি এই মাটির পাতিল গুলো দেখছি। সেগুলো সম্পর্কে আমার বাবা এবং আমার কাকা সহ অন্য কেউ এ বিষয়ে সঠিক ধারণা দিতে পারেনা। তবে আমার কাছে মনে হয় এই মাটির পাতিল গুলো এবং হাতে তৈরি করা পাটের শিকা গুলো আজ থেকে প্রায় 30 থেকে 35 বছর পূর্বের হতে পারে।মা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পারলাম না। তবে
এই পাটের তৈরি শিকা এবং মাটির তৈরি পাতিল প্রায় বিলুপ্ত। এগুলো আমার মনে হয় সংরক্ষণ করা জরুরি।
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
![]() | ![]() |
---|
উপরের চিত্র গুলো দেখেই বুঝতে পারছেন। এগুলো হলো বেশ পুরনো মাটির তৈরি পাতিল। এগুলোর নাম সম্পর্কে আমার সঠিক ধারণা নাই। তবে আমি বেশ কিছু উপকরণ এর আঞ্চলিক নাম আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
মাটির তৈরি পাতিল
সরা(যেটাকে আমরা আধুনিক ভাষায় সিলভারের ঢাকনা বলে থাকি)
মাটির তৈরি বিশাল পাত্র বিশেষ (যা ধান গম ইত্যাদি সংরক্ষণ করার জন্য ব্যবহার করা হতো)
পাতিল (ভাত রান্না করার জন্য বিশেষ বিশেষ পত্র)
তাছাড়াও এখানে রয়েছে বিভিন্ন মাটির তৈরি তৈজসপত্র যেগুলো নাম আমার জানা নাই
তবে এই পুরো ঘর ঘুরে দেখে আমার অনেক ভাল লাগছিল এবং একটি বিষয় আমি আশ্চর্য হয়ে গেছিলাম যে, এই মাটির ঘরে ও কিন্তু অসাধারণ একটা আধুনিক বিষয় রয়েছে। সেটা হল বিদ্যুৎ।
যদিও বর্ষাকালে প্রচন্ড বৃষ্টির পানি পড়ে চালের ফুটো দিয়ে, তার পরেও একটা আশ্চর্য বিষয় হলো এই ঘরে কিন্তু যথার্থ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা রয়েছে যেখান থেকে খুব সহজেই আপনার দাদা এবং দাদী বৈদ্যুতিক আলো গ্রহণ করতে পারে এবং বৈদ্যুতিক পাখা চালিয়ে তাদের গরম নিবারণ করতে পারে।
আসলে আমাদের প্রজন্ম যে সকল জিনিস গুলো ছিল প্রায় অনেক কিছুই এখন সেগুলো বিলুপ্ত। অর্থাৎ আগামী প্রজন্ম এ সকল জিনিস গুলো থেকে দূরে থাকবে। আমার নিজের কথাই বলতে গেলে, আমার বয়সে আমি যে সকল জিনিসগুলো দেখছি কিংবা দেখেছি সে সকল জিনিস গুলো আগামী জেনারেশন হয়তো বিলুপ্ত জিনিস হিসেবে জানতে সক্ষম হবে। সুতরাং বিলুপ্ত জিনিস গুলো আমাদের সংরক্ষণ করা জরুরি এবং আগামী প্রজন্মকে সেসকল জিনিসগুলো সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া থাকলে তারা প্রাচীন ঐতিহ্য এবং সভ্যতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ সবাইকে সাথে থাকার জন্য।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
১০০% ইউনিক এবং অরিজিনাল।
Device | Samsung galaxy f22 |
---|---|
Photographs | @steem-for-future |
পোস্ট তৈরিতে ব্যবহৃত কমিউনিটি
@amarbanglablog
শুধুমাত্র বাংলায় যারা ব্লগিং করেন তাদের জন্য এই ব্লগ। বাংলা ছাড়া অন্য কোন ভাষা এখানে সাপোর্ট করা হয় না। সুতরাং নিজের মনের ভাষায় ব্লগিং করুন।
স্পেশাল ধন্যবাদ জানাতে চাই
@photoman @shy-fox @amarbanglablog @blacks @abb-school @heroism @club75
আমার w3w লোকেশন কোড
https://w3w.co/state.goofy.reddish
discord server
আমাদের অফিসিয়াল Discord server এ যুক্ত হয়ে যান যে কোন সাহায্যের জন্য
@heroism
সাপ্তাহিক লিকুইড স্টিম এবং সর্বোচ্চ 90 শতাংশ পর্যন্ত কিউরেশন রেওয়ার্ড পেতে স্টিমিট পাওয়ার ডেলিগেট করুন @heroism এ ...
আমি মোঃ আকাশ আলী। আমি একজন বাংলাদেশী নাগরিক। বর্তমানে আমার বাংলা ব্লগ এবং বিউটি অফ ক্রিটিভিটি কমিউনিটির নিয়মিত মেম্বার। আমি প্রফেশনাল লাইফে বর্তমানে বেকার। তবে আগামীতে আমি আশাবাদী যে স্টিমিট এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেট নিয়ে কাজ করতে সক্ষম হব। গরিব-দুঃখী এবং অসহায় মানুষদের কে সাহায্য করতে পারলে খুব ভালো লাগে। সুতরাং আগামীতে আমার মন চিন্তা ধারা আমি গরিব দুঃখী অসহায় মানুষদের সাহায্যের কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখবো। আমি বিশ্বাস করি সৃষ্টিকর্তা আমার জন্য যতটুকু নির্ধারণ করে রেখেছেন আমি ঠিক ততটুকুই পাবো। পিতা মাতার দোয়া ভালোবাসা নিয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চাই।। বেঁচে থাকতে চাই প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।।
গ্রামের মাটির তৈরি ঘর দেখে অনেক ভালো লাগলো। আমি অনেক আগে একবার এরকম মাটির তৈরি ঘর দেখেছিলাম। মাটির তৈরি ঘরের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লেগেছে। আর ঘরের ভিতরে মাটির তৈরি জিনিসপত্র গুলো দেখে অবাক হলাম। এখন তো এরকম দেখায় যায় না। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
এটা একদম ঠিক কথা। এখন আগের মত মাটি তৈরি তৈজসপত্র গুলো আর দেখা যায় না। তবে মাঝে মাঝে কিন্তু এগুলো লক্ষ্য করা যায়। ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে
মাটির তৈরি ঘর এখনো কিছু কিছু গ্রামে রয়েছে।
তবে এগুলো অনেকটাই বিলুপ্তির পথে।
খুব ভালো লাগলো আপনার দাদা এখনো মাটির ঘরটা বেছে নিয়েছে থাকার জন্য 💌
আসলে মাটির ঘর বেশ আরামদায়ক হয়ে থাকে তাই হয়ত উনার এই সিদ্ধান্ত ☺️
যাক সবাই মিলে ভালো থাকুন দোয়া রইল 🥀
এটা ঠিক কথা। আমাদের গ্রামে বিশেষ করে একটাই মাটির ঘর রয়েছে। আর সেটি হল আমার দাদার। তবে ভাই এটা হয়তো ঠিক কথা যে এই মাটির ঘর বেশ আরামদায়ক। গরমকালে খুব একটা গরম লাগে না। আবার শীতকালেও শীতের মাত্রা কিছুটা কম থাকে। হয়তো এটাই হতে পারে উনাদের সিদ্ধান্ত।
অনেক চমৎকার মন্তব্য। অনেক অনেক প্রীতি শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা রইল ভাই আপনার প্রতি
আজকে আপনি আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর ভাবে মাটির তৈরি কিছু লোকসংস্কৃতির দৃশ্য তুলে ধরেছেন। এই ধরনের লোকসংস্কৃতির দৃশ্য বর্তমানে আর দেখতে পাওয়া যায় না। অনেক খোঁজ করার পরে গ্রাম অঞ্চল গুলোতে এই ধরনের লোকসংস্কৃতির কিছু পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের মাঝে এমন সুন্দর কিছু লোকসংস্কৃতির দৃশ্য তুলে ধরার জন্য
এটা একদম ঠিক কথা। যদি খোঁজ করা যায় তাহলে হয়তো একটি গ্রামে দুই থেকে তিনটি বাড়ি মাটির পাওয়া যেতে পারে আবার নাও পারে। তবে আমাদের অঞ্চলে মাত্র একটি মাটির বাড়ি রয়েছে এবং সেটি হল আমার দাদার। ধন্যবাদ আপনাকে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য
আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আসলে আমাদের এই অঞ্চলে মৃৎশিল্প নেই বললেই চলে। এখন আমাদের ফেনী জেলার মধ্যে মৃৎশিল্পের সামগ্রী তেমন কোন দরকার নেই। মৃৎশিল্প টি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আগের প্রতিটি ঘরে ঘরে মৃৎশিল্পের মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখা যেত এখন তা আর চোখে পড়ে না। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তর থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আমাদের এলাকায় তবে মৃৎশিল্পের কিছুটা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে খেজুরের গুড় তৈরি করতে যে সকল তৈজসপত্র ব্যবহার করা হয় সেই সকল তৈজসপত্র গুলোর অধিকাংশই মাটির তৈরি। তবে মাটির এই ঘরগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে এগুলো আবার দেখা যায়। তবে হয়তো আজ থেকে পাঁচ থেকে দশ বছর পর এগুলো সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য
ভাই আপনি আমাদের মাঝে বাঙালির ঐতিহ্য কে অনেক সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন কেননা এসব মাটির ঘর এবং জিনিসপাতি এগুলো হলো বাঙালির ঐতিহ্য যা দিনদিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে । আপনার পোষ্টের মাধ্যমে এগুলো নতুন করে আবার দেখতে পেলাম এটি সত্যিই অনেক চমৎকার ছিল। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমিও যে একজন বাঙ্গালীর। আর প্রাচীন সভ্যতা এবং প্রাচীন ঐতিহ্য গুলো আমার খুব ভালো লাগে। যার কারণে আমি বিলুপ্ত লোকসংস্কৃতি কিংবা প্রাচীন ঐতিহ্য নিয়ে লিখতে খুবই ভালোবাসি। যদিও মাঝে মাঝে এ সকল জিনিস গুলো আমাদের অঞ্চলে দেখা যায় তারপরেও খুবই নগণ্য। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য