বাংলা নাটক রিভিউ: ঠিকানা

^{ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে}

আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি বাংলা নাটক রিভিউ করার জন্য উপস্থিত হলাম। নাটকটি একটি বাস্তবধর্মী নাটক এবং একটি শিক্ষনীয় নাটক। তাই আমি আজকে আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের কাছে বাংলা নাটক ঠিকানা রিভিউ করার জন্য উপস্থিত হলাম। আমি আশাবাদী আজকের এই নাটকটি রিভিউ উপভোগ করে আপনারা বেশ আনন্দ পাবেন।

^{স্কিনশট ইউটিউব থেকে নেওয়া}

নাটকের শুরুতেই আমরা অফিসের একটি দৃশ্য দেখে। এখানে ফারহান একটি মাল্টিন্যাশনাল অফিসে কাজ করেন। ফারহান নতুন বিয়ে করেছেন এবং বাড়িতে তার অসুস্থ মা। তাই ফারহান অফিস শুরু হওয়ার ২ ঘণ্টা আগেই অফিসে প্রবেশ করে এবং সমস্ত ফাইলগুলো রেডি করেছিল।

ফারহান লাঞ্চ হবার পূর্বেই তার বস এর চেম্বারে যায় এবং সমস্ত ফাইলগুলো জমা দেয়। ফাইলগুলো দেখে অফিসের বস আশ্চর্য হয় এবং তাকে জিজ্ঞেস করে এত আগে ফাইলগুলো কি জন্য রেডি?

ফারহান মুচকি হাসে এবং কথাটি বলার জন্য অনুমতি নেয়। তার অফিসের বসকে বলে, ফারহানের দুই দিনের ছুটি লাগবে। কারণ ফারহান তার পরিবারের সাথে সময় কাটাতে চাই। অফিসের বস খুশি হয়ে ফারহানের ছুটির পেপারে স্বাক্ষর করে এবং তার ছুটি হয়ে যায়।

^{স্কিনশট ইউটিউব থেকে নেওয়া}

ফারহানি বিয়ে করেছে এক পরিবারের। কিন্তু ফারহানের পরিবার ছিল মধ্য। তাই ফারহানের বউ তার মায়ের সাথে থাকতে চায়না। সেজন্য ফারহানকে একটি বড় বাড়ি ভাড়া দিতে বলে এবং তাকে বাধ্য করে। অবশেষে ফারহান একটি বড় এবং সুন্দর বাসা ভাড়া নেয়।

বাসা ভাড়া নেওয়ার পর ফারহান ও তার স্ত্রী সেই নতুন বাসায় যায়। ফারহানের স্ত্রী ফারহানা একদিন রাতে ফারহানকে বলেছিল ফারহানের শাশুড়িদের কে আমন্ত্রণ করতে। অবশেষে ফারহান তার শাশুড়িকে আমন্ত্রণ করেছিল এবং তার স্ত্রীর কাছে পারমিশন চেয়েছিল তার মাকে ইনভাইট করার জন্য। তবে ফারহানের স্ত্রী বলেছিল তোমার মা আসবে কিন্তু আরো কিছুদিন পরে। যেহেতু এখন আমার মা আসছে তাই তোমার মায়ের কিছুদিন পরে আশাই ভালো। ফারহান কথাটি শুনে অনেক কষ্ট পেয়েছিল।

^{স্কিনশট ইউটিউব থেকে নেওয়া}

ফারহানের শ্বশুর বাড়ির লোকজন সবাই বিদায় নিয়েছিল এবং প্রায় এক সপ্তাহ তাদের সাথে ছিল। ফারহান জানতে পেরেছিল তার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট। তারপরেও ফারহান তার মায়ের সাথে দীর্ঘদিন যাবত দেখা হয়নি এবং তার মায়ের সাথে দেখা করতে গিয়েছিল।

দীর্ঘদিন পরে গ্রামের বাড়িতে তার মায়ের কাছে গিয়েছিল এবং তার মা অসুস্থ ছিল। ফারহান বাড়িতে গিয়ে তাদের পুকুর থেকে মাছ ধরেছিল এবং তাদের সবজি দিয়ে ফারহানের মা রান্না করেছিল। ভাত খেতে বসেছে কিন্তু এমন সময় ফারহানের শশুর শাশুড়ি ফারহানকে অপমান করতে শুরু করেছিল। কারণ তাদের মেয়েকে রেখে একা একা ফারহান তার মায়ের কাছে এসেছে। অবশেষে ফারহানকে ওই রাত্রেই ঢাকায় ফিরে যেতে বাধ্য করে।

ফারহান ওই রাত্রেই ঢাকায় চলে গিয়েছিল এবং সে রাত্রে তার স্ত্রী ফারহানাকে অনেক বেশি অপমান করেছিল। কিন্তু তারপরেও ধনী লোকের মেয়ে অপমান খুব একটা মনে করেনি। অনেক দুঃখ মনের ভিতর নিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী রাতে ঘুমিয়ে গিয়েছিল।

এরপর মধ্যরাতে হঠাৎ ফোন করেছিল ফারহানের ছোট ভাই। ফারহান ফোন পেয়ে কান্না শুরু করেছিল এবং তার বউ তাকে সান্তনা দিয়েছিল। তবে ফারহান চিৎকার করে কান্না করছিল । এবং ফারহান খুব শীঘ্রই তার গ্রামের বাড়িতে ব চলে আসলো।

^{স্কিনশট ইউটিউব থেকে নেওয়া}

ফারহান তার মায়ের লাশ দেখে বিশ্বাস করতে পারছিল না। ফারহান অনেক কান্নাকাটি করছিল এবং পাশাপাশি তাদের এলাকার লোকজন ফারহানকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। তবে ফারহান তার মায়ের কাছে অপরাধী ছিল কারণ সে বউয়ের কথা রাখার জন্য ওই রাত্রে মায়ের কথা না শুনে ঢাকায় ফিরে গিয়েছিল।

^{স্কিনশট ইউটিউব থেকে নেওয়া}

অবশেষে ফারহান তার মায়ের জানাজা শেষ করল এবং তাকে কবর দিয়েছিল। কবর দেওয়ার পর তাদের জীবন শুরু হতে থাকে এবং ইতিপূর্বেই তাদের পরিবারে দুইটা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে। তাদের এখন খুব ভালোভাবে দিন যাচ্ছে এবং ফারানের বউ যেহেতু ফারহানের মা মারা গিয়েছে সেহেতু অনেক খুশি ছিল।

^{স্কিনশট ইউটিউব থেকে নেওয়া}

দীর্ঘ ২৫ বছর ৪ মাস পরের ঘটনা। ফারহানের বড় সন্তান প্রেম করে একজনকে বিয়ে করেছে। ওই মেয়ের পরিবার আমেরিকায় থাকে। তাই ফারহান ও তার স্ত্রীকে একটি অনাথ আশ্রম এ রেখে আসে।

ফারহান এদিকে মুচকি মুচকি হাসছিল। কারণ তার স্ত্রী ইতিপূর্বেই ফারহান ও তার মায়ের মধ্যকার সম্পর্ক দূরত্ব করে রেখেছিল। অবশেষে ফারহানের স্ত্রী ফারহানা অনেক কান্না করছিল এবং অপরদিকে ফারহান অনেক খুশিতে ছিল। ফারহানের সন্তানকে নিয়ে তার পুত্রবধু আমেরিকায় চলে গেল এবং তখন ফারহান হাসছিল।

এমন সময় ফারহান তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করল , মনে পড়ে আমার কথা? তুমিও আমার মায়ের কাছ থেকে আমাকে আলাদা করে দিলে। এখন বুঝতে পারছো ? পৃথিবীতে সন্তান ও মায়ের দূরত্ব থাকলে মায়ের মনে কেমন কষ্ট হয়। ফারহান এমন কথা বলছিল এবং এখানে নাটকের সমাপ্তি হয়ে গেল।

নাটকটি দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। কারণ এখানে জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের সমাজে এমন স্ত্রী রয়েছে যারা পরিবারের সাথে থাকতে চায় না। যেমনটি আমরা নাটকে চরিত্রে ফারহান ও তার স্ত্রীর মাঝে দেখলাম। অবশেষে সৃষ্টিকর্তা কখনোই অন্যায় বিচার করেন না। ঠিক ২৫ বছর পর একই শাস্তি দিলেন ফারহান ও তার স্ত্রীর পরিবারের মাঝে।