কাউকে ঠকাবেন? আপনি কি সুখী হতে পারবেন?

আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আশা করছি আপনারা সকলেই বেশ ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের অনেক দোয়া এবং সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভালো আছি। আমরা যেন সব সময় সুস্থ সুন্দর এবং ভালো থাকতে পারি সে কারণে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি ব্লগ লিখার জন্য উপস্থিত হলাম। আমি আজকে আপনাদের মাঝে যে ব্লগ শেয়ার করব তার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা হয়েছে, কাউকে ঠকিয়ে কি কখনো ধনী হওয়া যায়? আমি আশাবাদী আজকের এই ব্লগ আমাদের বাস্তব জীবনের উপর বেশ ভালো একটা প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে। উপভোগ করার জন্য পড়তে থাকুন।

Source

আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত শুধুমাত্র নিজের কথা ভাবে। নিজেকে ধনী করতে এবং নিজে স্বার্থ অর্জন করতে অন্যের ক্ষতি হোক কিংবা না হোক এই বিষয়ের প্রতি বিন্দুমাত্র লক্ষ্য রাখিনা। কথা শুধু একটাই, নিজেকে আরও বেশি ধনী করতে হবে এবং নিজেকে আরও বেশি সম্পদশালী করতে হবে। সবসময়ই মাথার ভেতরে একটাই চিন্তা, কিভাবে আমি ধনী হব এবং হোক সেটা কাউকে ঠকিয়ে কিংবা অন্যায় পথে।

আসলে প্রকৃতপক্ষে এই পৃথিবীতে কেউ কাউকে ঠকিয়ে ধনী কিংবা বড় হতে পারে না। ধনী কিংবা বড় হতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই সঠিক রাস্তা এবং সঠিক ভাবে ধনী হতে হবে। ধনী হওয়ার জন্য যে মানুষকে ঠকাতে হবে কিংবা অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করতে হবে এমন কোন কথা না।

আমার বাস্তব জীবনে আমি এমন অনেক মানুষ দেখেছি। যারা শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থ অর্জনের জন্য এবং নিজেদেরকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করে এবং অণ্যের সম্পদের প্রতি অনেক লোক থাকে। আমরা সকলেই জানি, লোভ করলে পাপ এবং পাপের শেষ পরিণতি মৃত্যু। এবং মৃত্যুর পরেও আমাদের এর জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে। তবে তারপরেও আমাদের লোভের সীমা যেন ছাড়িয়ে গিয়েছে এবং আমরা যে কোন মূল্যে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত এবং ধনী করতে চাই এটাই আমাদের মূল লক্ষ ।

Source

আমরা হয়তো অন্যকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে নিজে ধনী হতে পারি। আমার চোখে দেখা, পাড়া-প্রতিবেশীদের মাঝে এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা অনেক সম্পদশালী ছিল। তবে তাদের এক পুরুষ যেতে না যেতেই তাদের সমস্ত সম্পদ বিলীন হয়ে গিয়েছে। এর পেছনে আসলে মূল রহস্য কি?

গ্রামের বৃদ্ধ প্রবীনদের কাছে আমি গল্প শুনেছি। তাদের অনেক ব্যক্তিবর্গের সম্পদ ছিল অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করা। অর্থাৎ জোর জুলুম বংশগত শক্তি দেখিয়ে অসহায় মানুষের সম্পদ আত্মসাৎ করেছে। যদিও পরবর্তীতে সম্পদ গুলো তাদের নামে রেজিস্ট্রি হয়েছিল তবে তারপরেও সেগুলো তারা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে টিকিয়ে রাখতে পারেনি।

আসলে মানুষের সম্পদ আত্মসাৎ করে খুব একটা বেশি দিন সুখে থাকা যায় না। হয়তো চোখের সামনে আপনি দেখবেন মানুষের সম্পদ আত্মসাৎ করে অনেকেই সুখে আছে। কিন্তু সে সুখ শুধুমাত্র বেশ কিছুদিনের জন্য। কারণ অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করে কিংবা অন্যের সম্পদ অন্যায় ভাবে লিখে নিয়ে সেই সম্পদ টিকিয়ে রাখা কখনোই সম্ভব না।

শুধু সম্পদ এর কথা নয়। আমরা অনেকে আছি যারা এই সমাজে শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থঅর্জনের জন্য মানুষকে অন্যায় ভাবে হত্যা পর্যন্ত করতে ছাড় দেয় না। এখানে শুধু একটাই লক্ষ্য আমাদের স্বার্থ অর্জন করতে হবে।

Source

কিন্তু আমাদের একটা বিষয় মনে রাখা উচিত। এই পৃথিবীতে আদালতে আপনি অপরাধী না হলেও সৃষ্টিকর্তার আদালতে আপনি কিন্তু একজন বড় অপরাধী। কারণ অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করা যেমন অন্যায় ঠিক এটি আপনাকে মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে কখনোই সুখী হতে দেবে না।

কারণ সৃষ্টিকর্তার আদালতে কখনো সৃষ্টি কর্তা দুই রকম বিচার করেন না। সেই বিচারের দিন আপনি কি হিসাব দিবেন? দুনিয়ার স্বার্থে আপনি যে অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করলেন এই আত্মসাৎকৃত সম্পদ একদিন আপনাকে সাপের ছোবলে নিশেষ করে দেবে। কারণ পৃথিবীর সমস্ত আদালতের বিচার কিনে নেওয়া গেলেও সৃষ্টিকর্তার বিচার কখনোই আপনি কিনে নিতে পারবেন না। কারণ সৃষ্টিকর্তা কারো প্রতি জুলুম করেন না। আপনি দুনিয়ার উপরে ভালো কাজ করলে সেই কাজের প্রতিদান ভালো পাবেন এবং যদি মন্ত কাজ করেন তাহলে অবশ্যই এর জন্য আপনাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।

Source

সততাই মহৎ গুণ! তাই আমাদের প্রত্যেক মানুষকে সততা অর্জন করতে হবে। যদিও সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে পাঠিয়েছেন এবং আমাদের ভেতরে লোভ-লালসা পাঠিয়েছেন। তবে তাই বলে কি আমরা সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে যাব এবং শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থ অর্জনের চেষ্টা করব?

কখনোই সেটা হতে পারে না। সর্বোপরি আমাদেরকে সকল প্রকার লোভ থেকে দূরে থাকতে হবে। আমরা কখনো অন্য সম্পদ আত্মসাৎ করবো না এবং কারো প্রতি জুলুম করব না। আমাদের একটি বিষয় সবসময় মাথায় রাখা উচিত, এই দুনিয়ার আদালতে আমরা অপরাধী না হলেও সৃষ্টিকর্তা কিন্তু একটা বিচার করবেন এবং এটি আমাদের শেষ বিচার। শেষ বিচারের দিন অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ এর অপরাধে আপনাকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে এবং সেখানে কোন আপিল চলবেনা।

একটি বিষয়ে আমাদের মনে রাখা উচিত। এই পৃথিবীতে কাউকে বঞ্চিত করে কিংবা কাউকে ঠকিয়ে কখনো আমরা ধনী হতে পারব না। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের একটাই আবেদন, সৃষ্টিকর্তা যেন দুনিয়ার স্বার্থে আমাদেরকে কখনোই কাউকে না ঠকিয়ে কিংবা অন্য সম্পদ আত্মসাৎ না করে এই দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার সক্ষমতা দান করেন। কারণ এই দুনিয়ার পরেও আমাদেরকে আবারও হিসাব দিতে হবে এবং শেষ বিচারের দিন আমাদের মালিকের কাছে সবকিছুর জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য
^{বাস্তব জীবন থেকে আজকের এই ব্লগ লিখছি। আমি কাউকে কখনোই ছোট কিংবা কাউকে লক্ষ্য করে এই ব্লগ লিখছি না।}