পিতা মাতার ঋণ কখনো শোধ করার মতো না। তাই তাদের প্রতি আমাদের আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগ এর সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আশা করছি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই বেশ ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের অনেক অনেক দোয়া এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে বাবা ও ছেলের সম্পর্ক টপিক নিয়ে একটি ব্লগ লেখার জন্য উপস্থিত হয়েছি। আপনারা সকলেই আমন্ত্রিত, সকলেই আজকের এই ব্লগ উপভোগ করুন এবং আপনাদের বাবার প্রতি ভালোবাসা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন ( মন্তব্যের মাধ্যমে )।
পিতা মাতার মাধ্যমে আমরা এই পৃথিবীর আলো দেখতে সক্ষম হয়েছি। জন্মের পর পিতা-মাতায় আমাদের সব থেকে আপনজন এবং মৃত্যু পর্যন্ত পিতা মাতার মত আপন এই পৃথিবীতে আর কোন মানুষ হতে পারে না। পৃথিবীতে সকল ভালোবাসার মধ্যে সার্থকতা লুকিয়ে থাকলেও মাতা পিতার ভালবাসার ভেতরে কোন সার্থকতা লুকিয়ে থাকে না। একমাত্র আপনার পিতা এবং আপনার মাতা আপনাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে এবং বাকি সমস্ত ভালোবাসায় চরম সার্থকতা লুকিয়ে আছে।
বাবা একটি বটগাছের মত। আপনার জন্মের পর থেকে আপনার বাবা আপনার সমস্ত দায়িত্ব পালন করে আসছে। শত কষ্ট করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বাবা আপনার জন্য কাজ করে এবং আপনার এবং আপনার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে। আসলে প্রত্যেকটি বাবা হল এই সমাজে একটি করে জীবন যোদ্ধা। প্রতিটি বাবা তার মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে রাত দিন এবং শুধুমাত্র স্ত্রী এবং সন্তানের সুখে থাকার জন্য।
বাবার হাত ধরেই আমরা এই পৃথিবীতে হাটতে শিখেছি। বাবা হল আমাদের পথ প্রদর্শক এবং বাবাকে আমরা অনুসরণ করে এই পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত টিকে আছি
যার মাধ্যমে আমরা এই পৃথিবীর আলো দেখতে পেয়েছি এবং যে আমাদের পথপ্রদর্শক তার সাথে আমাদের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত?
অবশ্যই পিতা-মাতার জন্য আমাদের সম্পর্ক একদম ভালো হওয়া উচিত এবং বিশেষ করে পিতা এবং মাতা কে কখনোই কষ্ট না দেওয়া উচিত। পিতা ও পুত্রের মাঝে সম্পর্ক একটা মধুর সম্পর্ক তৈরি হওয়া উচিত। যেখানে কখনো কোন রাগ অভিমান বিন্দুমাত্র স্থান পাবে না এবং পিতা-মাতার প্রতি কখনোই একটি সন্তানের মনে কোন খারাপ মনোভাব তৈরি হবে না।
বাবা এই পৃথিবীতে সব থেকে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। কারণ বাবা নিজে না খেয়ে পরিবারের জন্য অর্থ সঞ্চয় করে এবং নিজে ছেড়া পোশাক পরিধান করে পরিবারের জন্য নতুন পোশাকের ব্যবস্থা করে।
আমি প্রতিটি ঈদ ও সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে দেখেছি। যখন আমি ছোট থাকতাম এবং বাবার কাছে কোন কিছু আবদার করতাম তখন কোন কিছুতেই বাবা আমাকে নিষেধ করেনি। তবে দিন শেষে আমি দেখেছি, আমার বাবাকে পুরন ো শার্ট পরিধান করতে।
প্রত্যেক ঈদে বাবা যখন আমাদের জন্য নতুন পোশাক নিয়ে আসতেন তখন বাবার জন্য কিছুই আনতেন না। বাবাকে যখন বলতাম বাবা তোমার পোশাক কোথায়? তখন বাবা বলতো আমার পোশাক এখনো তৈরি করা হয়নি.।
ঈদের দিন সকালে বাবা যখন আবার সেই একই পুরনো পোশাক পরিধান করত তখন বাবাকে আবারো জিজ্ঞেস করতাম। বাবা আপনি কেন নতুন পোশাক কিনলেন না?
তখন বাবা বলতো এই তো আর কিছুদিন পরেই আরো একটি ঈদ আসছে। তখন না হয় নিয়ে নেব। এই ঈদ তো চলে গেল। আবার যখন পরের ঈদ আসত তখন বাবা আবারও বলতো, এই বছরের দুইটা ঈদ শেষ আগামী বছর অবশ্যই কিনব।
আসলে বাবার এই মিথ্যা কথার মাঝে যে আমাদের জন্য ভালোবাসা লুকিয়ে আছে তা আমরা কোনভাবেই বুঝতে পারতাম না। যখন ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলাম এবং কিছুটা হলেও বুঝতে শিখলাম তখন বুঝলাম বাবা আসলে কি কারনে ঈদে তিনি নতুন পোশাক না কিনে আমাদের জন্য পোশাক কিনে দিতেন। বাবারা আসলে এমনই হয়। যদিও প্রত্যেক বাবা দেখতে বাহিরে অত্যন্ত কঠোর কিন্তু ভিতরে সন্তানের জন্য মায়ায় পুরো হৃদয়টা পরিপূর্ণ।
বাবা যেমন আমাদেরকে ছোটবেলায় নিজে না খেয়ে আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন, নিজে নতুন পোশাক ক্রয় না করে আমাদের জন্য নতুন পোশাক এর ব্যবস্থা করেছেন সেই বাবার প্রতি আমাদের সব সময় সম্মান থাকা জরুরী।
এখন সন্তান হিসেবে আমাদের উচিত তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়া। বাবা যেমন রাতদিন পরিশ্রম করে আমাদেরকে খাবারের ব্যবস্থা করেছেন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ঠিক আমাদের উচিত বাবার প্রতি সহানুভূতি ও বাবাদের খেয়াল রাখা। পৃথিবীতে প্রত্যেকটি বাবাকে দেখতে আপনি অত্যন্ত কঠোর মনে করতে পারেন। তবে তাদের অন্তরের ভেতরে যে ভালোবাসা রয়েছে তারা তা কখনোই প্রকাশ করে না।
ছোটবেলায় বাবা যেমন আমাকে ঈদে নতুন পোশাক কিনে দিত এবং বাবা পোশাক নিত না। বড় হয়ে এখন আমিও বাবার মত হতে শিখে গেছি। মাঝে মাঝে অনেক ভালো লাগে যখন বাবাকে কোন কিছু গিফট করতে পারি এবং নতুন পোশাক কিনে দিতে পারি।
তাছাড়াও আমাদের সকলের উচিত এই বৃদ্ধ বয়সে বাবাকে মাথার মুকুট বানিয়ে রাখা। কারণ পিতা-মাতার সেবা করলেই আপনি স্বর্গ যাবেন এবং পিতা-মাতার দোয়া ছাড়া আপনি কখনোই স্বর্গ লাভ করতে পারবেন না এটি শিওর। কারণ সকল দোয়ার ভেতরে পর্দা থাকলেও পিতা-মাতার দোয়ার ভেতরে কোন পর্দা থাকে না। পিতা মাতা আপনার জন্য যে দোয়া করবে সৃষ্টিকর্তা সেই দোয়া খুব দ্রুত কবুল করবেন এবং এটি সৃষ্টিকর্তার ওয়াদা।
জীবনে সুখী হতে চাইলে কখনো সংসার থেকে আলাদা হওয়া ঠিক না। সংসার মানে পিতা-মাতা এবং সকল আত্মীয়-স্বজন। তাছাড়াও আমরা যদি পিতা-মাতাকে মাথার মুকুট বানিয়ে রাখতে পারি আমরা যেমন ইহকালের জীবনে শান্তি পাব ঠিক পরকালের জীবনেও আমাদের শান্তি মিলবে এবং আমরা স্বর্গ লাভ করতে পারব। তাই পিতা এবং পুত্রের মাঝে সম্পর্কটা মধুর হওয়া জরুরী। বৃদ্ধ বয়সে পিতা মাতাকে বৃদ্ধাশ্রমে না পাঠিয়ে তাদের দায়িত্ব নেওয়া আমাদের একান্ত গুরুদায়িত্ব।
এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি ছেলেকে সৃষ্টিকর্তা যেন তার পিতা-মাতার দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ করে দেন এবং দায়িত্ব পালন করতে শক্ত একটা মনোভাব তৈরি করেন।। পিতা-মাতার সাথে যেন আমরা সব সময় ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে পারি এবং বাবা ও ছেলের মাঝে সম্পর্ক যেন আজীবন মধুর থাকে এবং শক্ত থাকে।
ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
|250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি
আমি মোহাম্মদ আকাশ সরদার
। জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি ব্লগিং করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। যদিও আর্ট আমার অনেক বেশি পছন্দ তবে আর্টওয়ার্ক কাজের জন্য আমার হাত একদম বাজে। ভ্রমণ এবং ফটোগ্রাফি আমার সব থেকে প্রিয় বিষয়। নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ এবং নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ ভালো লাগে। অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করতে পারলে মনের ভেতরে আনন্দ আসে। সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে চাই এবং সকলের প্রিয় ব্যক্তি হয়ে এই সমাজে বসবাস করতে চাই।
https://x.com/steemforfuture/status/1797594052638232718?t=D3DZBNRg-yicAqW-BiuAIQ&s=19
আসলে পিতা মাতার প্রতি আমাদের অবশ্যই অনেক বেশি দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে। কেননা আমরা এই পৃথিবীতে যত কিছুই করি না কেন আমরা কখনো মা বাবার ঋণ শোধ করতে পারবো না। আসলে আমরা যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন মা-বাবাকে সবসময় ভালোবাসবো এবং তাদেরকে কখনো কষ্ট দেবো না। আসলে আজকে আপনার পোস্টটি অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট ছিলাম মা-বাবাকে নিয়ে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাই। পিতা মাতার জন্য আমরা যা কিছুই করি তার ঋণ কখনোই পরিশোধ করা সম্ভব না। তাই তাদের প্রতি আমাদের আরও বেশি দায়িত্ব-কর্তব্য ও ভালোবাসা দেখানো উচিত।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।