শ্রমজীবী মানুষ নাকি তারা যোদ্ধা?
আসসালামু আলাইকুম। হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ।
আশা করছি সকলেই সুস্থ এবং ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় আমিও অনেক অনেক ভালো আছি।
প্রতিনিয়ত এই ব্যস্ত শহর। ব্যস্ত শহরে যতগুলো যানবাহন রয়েছে ঠিক তেমনি রয়েছে তার থেকে বেশি জনগণ।
। শত শত যানবাহন যেখানে বিদ্যুৎ গতিতে চলাচল করে রাস্তায় তার থেকেও বেশি গতিতে চলে আমাদের জীবনের ঠেলাগাড়ি।
জীবনটা একটি ঠেলাগাড়ির মত। প্রতিনিয়ত আপনাকে এর শাখা সচেতন রাখতে হবে এবং আপনি জীবনে যাই করেন না কেন কখনোই থামানো যাবে না।
আপনি এই দ্রুততম শহরে যদি যানবাহনের দিকে লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন যানবাহনগুলো এদিক থেকে সে দিকে এলোমেলো ছোটাছুটি করছে ঠিক আমাদের জীবনের পরিণতি একই রকম। কখন আমরা কোথায় যাচ্ছি এবং কি পরিস্থিতির ভিতর দিয়ে আমাদের জীবন পার করছি কিংবা কিভাবে আমাদের জীবিকা নির্বাহ করছি তার কোন ঠিক ঠিকানা নাই। শহরের বড় বড় যানবাহন গুলো যেমন দ্রুতগতিতে এলোমেলো ছোটাছুটি করে আমাদের জীবনের প্রতিটি দিন প্রতিটি মুহূর্ত এভাবেই ছোটাছুটি করে পার করতে হয়।
বিশেষ করে আমাদের জীবনে চলার পথে প্রধান নির্বাহ হচ্ছে খাদ্য। খাদ্য ছাড়াও বাসস্থান চিকিৎসা বস্ত্র এগুলো রয়েছে আমাদের জীবনের চলার জন্য পরিহার্য বিষয়। তবে আপনি যদি এই অপরিহার্য বিষয়গুলো জীবনে পেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে অর্থ যোগদান দিতে হবে। আর সে সকল অর্থগুলো যোগান দেওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই কোন না কোন পরিশ্রম করতে হতে হবে।
আপনি যে বয়সের মানুষ কিংবা যেকোনো মানুষ হয়ে থাকেন না কেন আপনার জীবনের জন্য পরিশ্রমের কোন বিকল্প নাই। তবে আপনি যে কাজে বেশি দক্ষ অবশ্যই সেই কাজের প্রতি আপনার দক্ষতা প্রয়োগ করা দরকার এবং আপনার জীবনের গাড়িকে সচল রাখতে হলে অবশ্যই পরিশ্রমের কোন বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না।
তাছাড়াও এই জীবন সংগ্রামের চাকাটাকে যদি আপনি টিকিয়ে রাখতে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত ছোট বড় লড়াই এর মাধ্যমে জীবনকে পরিচালনা করতে হবে ্্ কোন সময় আপনার জীবন ভালো যেতে পারে আবার কোন সময় মন্দ যেতে পারে। তবে কোনো বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আপনি যদি আপনার জীবনের চাকা সফল রাখতে না পারেন তবে আপনি কখনোই জীবনের বেঁচে থাকার সার্থকতা পেতে পারেন না।
গল্পটা ছোট একটা ঘটনাকে উপেক্ষা করে। আমি কাল গাজীপুরের চৌরাস্তায় গিয়েছিলাম ব্যাংকের কিছু এটা কি কাজ করার জন্য। যাইহোক ব্যাংকের কাজ শেষ করে আমি একটি লোকাল বাস পেয়ে করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম এবং ঠিক বাসার কাছাকাছি এসে পৌঁছে গিয়েছিলাম। এরপর আমাকে অফিসে আসার জন্য আরও একটি যানবাহন ব্যবহার করতে হবে এবং এর জন্য আমি একজন রিস্কাওয়ালাকে আমার অফিসের কাছে যাবার জন্য বলেছিলাম এবং সে আমার অফিসের কাছে তার রিস্তা নিয়ে আমাকে পৌছে দিচ্ছিল ্্
আসলে এই রিক্সাওয়ালাকে নিয়ে আমার মূল গল্প
এই রিক্সাওয়ালা সকালবেলা বের হয়েছে এবং সারাদিন রোদ্রের ভেতরে যাত্রী গুলোকে তাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিচ্ছে। আমার নিজের কথা বলতে গেলে আমি প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা এই রিক্সার আহরণ করেছিলাম এবং আমার গন্তব্যস্থল এ আসার জন্য।
কিন্তু এই অসামান্য পরিশ্রমের জন্য আমি রিক্সাওয়ালা কি মাত্র 10 টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়েছিলাম ্্্্। এখন কথা হচ্ছে এই ব্যস্ত নয় এবং উচ্চ মূল্যের বাজারে ১০ টাকা দিয়ে কি করা কি হয়??
আমাকে আমার গন্তব্য স্থানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি থাকি মাত্র ১০ টাকা দিয়েছি এবং এভাবে সে সারাদিন দশ টাকা কিংবা ২০ টাকা ভাড়া মেরে তার জীবন পরিচালনা করছে। অথচ আমরা বড় বড় চাকরি করে আমাদের জীবন পরিচালনা করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত।
এখন আমি তার জীবন নিয়ে যদি একটু চিন্তা ভাবনা করি তাহলে আমার কাছে মনে হয় আমি যদি তার জায়গায় থাকতাম হয়তো কোনভাবেই জীবন পরিচালনা করা সম্ভব হতো না। কিভাবে সম্ভব এত পরিশ্রমের ফল এত কম ্্।??। সারাদিন রোদ্রের মধ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সে তার জীবিকা নির্বাহ করার জন্য প্রতিনিয়ত লড়ে যাচ্ছে। সত্যি বিষয়টি আমাকে অনেক অনেক অবাক করে দিয়েছিল এবং আমি তাকে দেখে রীতিমত অবাক হয়েছিলাম।
যদিও আমি এর আগে কখনো এই বিষয়টি নিয়ে এত চিন্তিত ছিলাম না। আমি সারাদিন শত শত রিস্কাওয়ালা কিংবা জীবন যোদ্ধাদের দেখেছি। তবে আমি যখনই তাদেরকে নিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম সত্যি বিষয়টি বড় কষ্টসাধ্য।।
শুধুমাত্র পরিবারের কথা চিন্তা করে এ সকল মানুষগুলো এখনো প্রতিনিয়ত আমাদের সমাজে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। জীবনের সকল মায়া ত্যাগ করে প্রতিনিয়ত আমাদেরকে তাদের ঘামে ভেজা টাকার বিনিময়ে সুখ এনে দিতে এতোটুকু দ্বিধাবোধ করে না।
শুধু রিক্সা চালক বলে নয় ্্।। আমার সমাজে এবং দেশে এই বহির্বিশ্বে যতগুলো শ্রমজীবী মানুষ রয়েছে এবং খেটে খাওয়া মানুষ রয়েছে তাদের প্রতি আমার অবিরাম শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা অন্তরের অন্তস্থল থেকে। স্যালুট জানাই সকল শ্রমজীবী মানুষদেরকে ্্।।।
সত্যি ভাইয়া শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট দেখলে মাঝে মাঝে খুবই খারাপ লাগে। সামান্য ১০ টাকা পেয়েও রিকশাওয়ালারা অনেক খুশি হয়। হয়তো এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে সেই দশ টাকার কোন মূল্য নেই। কিন্তু তাদেরকে টিকে থাকতে হলে পরিশ্রম করতেই হবে। আসলে এক একটি মানুষ যেন একেকজন যোদ্ধা। হয়তো জীবন যুদ্ধে হার মানা তাদের কাছে অনেক কঠিন। জানিনা সবার জীবন যুদ্ধ কবে শেষ হবে। কবেই বা এক টুকরো সুখের আশা করতে পারবে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে চমৎকার মন্তব্যের জন্য। আপনি আপনার মন্তব্য প্রকাশ করেছেন ্