আমার শৈশবের স্মৃতি: ঘুড়ি
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগ এর সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আশা করছি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলে বেশ ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের অনেক অনেক দোয়া ও আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভাল আছি। আমরা যেন সব সময় সুস্থ সুন্দর এবং ভালো থাকতে পারি সে কারণে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি
আজ আমি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের মাধ্যমে আমার শৈশবের স্মৃতি নিয়ে ছোট্ট একটি ব্লগ লেখার জন্য উপস্থিত হলাম। আমার শৈশবে অনেক স্মৃতি রয়েছে সে সকল স্মৃতিগুলোর মধ্যে সবথেকে আনন্দদায়ক স্মৃতি হলো শৈশবে বন্ধুদের সাথে ঘুড়ি ওড়ানোর স্মৃতি। আমি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের মাধ্যমে আমার শৈশবের ঘুড়ি উড়ানো স্মৃতি শেয়ার করতে চাই। সকলে উপভোগ করুন আমি আশাবাদী আপনাদের বেশ ভালো লাগবে।
শৈশবে সব থেকে মধুর যে স্মৃতি ছিল তার মধ্যে সবথেকে অন্যতম স্মৃতি হল শৈশবে ঘুড়ি পোড়ানোর স্মৃতি। ছোটবেলায় যখন আমি কেজি স্কুলে পড়তাম তখন আমার ঘুড়ি ঘোরানোর বেশ একটা লোভ ছিল। বিশেষ করে আমি পড়ালেখা ফাঁকি দিয়ে শৈশবটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করতাম। শৈশবে আমি মাছ ধরতাম ও বন্ধুদের সাথে পুকুরের সাঁতার কাটতাম। পাশাপাশি আমার বন্ধুদের সাথে আমি মার্বেল খেলেছি ও বিকেল বেলা বন্ধুদের সাথে মাঠে গিয়ে ঘুড়ি ওড়াতাম।
আমার এখনো বেশ ভালো মনে আছে। আমি বাজারে গিয়ে দুই টাকা দিয়ে রঙিন পেপার কিনতাম। রঙিন পেপার গুলো বাসায় নিয়ে এসে নারিকেল গাছের কাঠি ব্যবহার করতাম এবং পাশাপাশি একটি বিশেষ গাছ রয়েছে যে গাছটি আমাদের অঞ্চলে বাবলা গাছ নামে পরিচিত। বাবলা গাছের ফল দিয়ে আঠা তৈরি করে সেটা দিয়ে আমি ঘুড়ি তৈরি করতাম।
আমি ঘুড়ি তৈরিতে বেশ পারদর্শী ছিলাম। বিশেষ করে আমি বিভিন্ন ডিজাইন ও বিভিন্ন রঙের ঘূড়ি তৈরি করতাম। আমার হাতে তৈরি করা ঘুড়িগুলো বেশ ভালোভাবে আকাশে উড়ে বেড়াতো। মাঝে মাঝে বন্ধুরা আমার কাছে আবদার করত আমি যেন তাদেরকে ঘুড়ি বানিয়ে দেই ।।
ঘুড়ি তৈরি করা শেষ হলে আমি বেশ আনন্দ পেতাম। কারণ একটি ঘুড়ি তৈরি করতে আমার প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় লেগে যেত। ১ থেকে দেড় ঘন্টা অতিক্রম করার পর যখন একটি রঙিন ঘুড়ি তৈরি করতাম তখন আর আনন্দের শেষ থাকত না।
আমি যখন ঘুড়ি তৈরি করতাম তখন আমার আশেপাশের থাকা ছেলে মেয়েগুলো তা মনোযোগ সহকারে দেখতো। এবং ঘুড়ি তৈরি করা শেষ হলে শুতা ব্যবহার করে নাটাই হাতে নিয়ে মাঠে চলে যেতাম ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য।
ওই পাশ থেকে একজন ধরে রাখত এবং অপরপাশে আমি নাটাই ধরে বেশ কিছুটা দূরে চলে যেতাম। কিছুটা দূরে চলে যাবার পর যখন হালকা বাতাস চলে আসতো তখন একজন ঘুড়ি হাত থেকে ছেড়ে দিত এবং আমি অপর পাশ থেকে টান দিতাম এবং তখন আকাশে উড়ে যেত।
আমি বিভিন্ন রকমের ঘড়ি তৈরি করতে পারি, আঞ্চলিক ভেদে প্রতিটি ঘুড়ির নাম আমি বলতে পারি না। তবে আমি শুধু আমার আঞ্চলিক ভাষায় আপনাদের মাঝে বেশ কয়েকটি ঘুড়ির নাম শেয়ার করতে পারি।
- ডাঊট
- চিল
- কোয়াইড়া
- বক্স
- সাপ
আমি আমার আন্তরিক নামে বেশ কিছু ঘুড়ির নাম আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। তবে অঞ্চলভেদে তা বিভিন্ন রকমের হতে পারে।
ঘুডি ওড়াতে ওড়াতে আমাদের প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যেত
। সন্ধ্যায় আমরা প্রতিযোগিতা করতাম কে কার আগে ঘুড়ি নিচে নামে আনতে পারে। এর জন্য আমরা নাটাই খুব দ্রুত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘুড়ি নিচে নিয়ে আসতাম।
তবে একটি মজার বিষয় রয়েছে এখানে, বাতাসের বিপরীতে যখন আমরা ঘুড়িগুলো দ্রুত নিচে নামানোর চেষ্টা করতাম তখন মাঝে মাঝে আমাদের ঘুড়ি থেকে সুতা কেটে যেত এবং সেগুলো হারিয়ে যেত এবং আমরা তখন সেই কেটে যাওয়া ঘুড়ির পেছনে দৌড় দিতাম। সত্যিই অনেক আনন্দ হতো এবং সেই দিনগুলো মনে হলো এখনো অনেক আনন্দ লাগে।
আমি আশাবাদী আমার শৈশবের স্মৃতি নিয়ে আজকের এই ঘুড়ি উড়ানোর চমৎকার ব্লগ আপনাদের বেশ ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে অবশ্যই মন্তব্য করতে ভুলবেন না। চাইলে আপনিও আপনার শৈশবের অনুভূতিগুলো আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন। উপভোগ করার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
|250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি
আমি মোহাম্মদ আকাশ সরদার
। জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি ব্লগিং করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। যদিও আর্ট আমার অনেক বেশি পছন্দ তবে আর্টওয়ার্ক কাজের জন্য আমার হাত একদম বাজে। ভ্রমণ এবং ফটোগ্রাফি আমার সব থেকে প্রিয় বিষয়। নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ এবং নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ ভালো লাগে। অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করতে পারলে মনের ভেতরে আনন্দ আসে। সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে চাই এবং সকলের প্রিয় ব্যক্তি হয়ে এই সমাজে বসবাস করতে চাই।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://x.com/steemforfuture/status/1804064984487596071?t=POgJmNa89tyAXE3knup3Uw&s=19
আপনি ঘুড়ি ওড়ানোর সময় নাটাই ধরতেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। তাছাড়া সব থেকে বেশি ভালো লাগলো আপনি সব ধরনের ঘুড়ি বানাতে পারেন জানতে পেরে। আপনি আঞ্চলিক ভাষায় অনেক ধরনের ঘুড়ি নাম লিখেছেন। এরমধ্যে সব ঘুড়ি আমি চিনি না। আপনার শৈশবের স্মৃতি ঘুড়ি পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া ধন্যবাদ।
শৈশবের স্মৃতিগুলো সত্যি অনেক মিস করি। আমি সব ধরনের ঘুড্ডি তৈরি করতে পারি। ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ছোটবেলায় ঘুড়ি উড়ানো আপনার মত আমারও সবথেকে বড় শখের মধ্যে একটা ছিল।
যদিও মাঝপথে এগুলো বাদ হয়ে গিয়েছিল তবে করোনা কালীন সময় আবার পুনরাবৃত্তি হয়েছিল।
করোনার মধ্যে সবাই মিলে অনেক বড় বড় ঘুড়ি বানিয়ে উড়িয়েছিলাম।
আপনার ঘুড়ি উড়ানো ছোটবেলার স্মৃতিময় গল্প জানতে পেরে সত্যি অনেক ভালো লাগলো।
তবে আমার আর সুযোগ হয়নি। শৈশবে সেই আনন্দগুলো হারিয়েছি সেগুলো এখন আর কোনোভাবেই উপভোগ করতে পারি না কিংবা সময় সুযোগ হয় না। যাই হোক আপনি করোনা কালীন সময়ে ঘুড্ডি তৈরি করেছেন এটা যেন বেশ ভালো লাগলো।
শৈশবের সেই ঘুড়ি উড়ানোর স্মৃতি এখনো মনে পড়ে ভাইয়া। সেই দিনগুলো হারিয়ে গেছে। তবে স্মৃতিগুলো এখনো মনের মাঝে রয়ে গেছে। আপনার পোস্ট পড়ে আমার জীবনের শৈশবের স্মৃতিগুলো মনে পড়ল। অসাধারণ লিখেছেন আপনি।