বোনদের সাথে গাজীপুরের ভাঙ্গা ব্রিজ ভ্রমণ
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগ এর সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আশা করছি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই বেশ ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের অনেক অনেক দোয়া এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভালো আছি। আমরা যেন সর্বদা সুস্থ সুন্দর এবং ভালো থাকতে পারি সে কারণে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি চমৎকার ভ্রমণের গল্প ও অভিজ্ঞতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। বেশ কিছুদিন পূর্বে গ্রামের বাড়ি থেকে আমার কাজিন বেড়াতে এসেছিল। দুলাভাই দুইটা ভাগিনা ও আমার ছোট ভাই আমাদের শহরের বাসাতে বেড়াতে এসেছে।
যাইহোক অনেকদিন পর তাদেরকে পেয়ে বেশ আনন্দ লাগছিল। কারণ অনেকদিন পর আবার আমরা একসাথে আনন্দ করতে পারব এবং অনেক বেশি মজা করতে পারব।
শহরের আশেপাশে ভ্রমণ করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে দুইটা ছোট ভাগিনা থাকার কারণে পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করা অসম্ভব। তাই একদিন আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে আমরা কোথাও ভ্রমণে যেতে চাই। তবে ভ্রমণের যাবার সঠিক স্থান আমরা নির্বাচন করতে বেশ ব্যর্থ হয়েছিলাম।
অবশেষে আমার ছোট ভাই আবির আমাদেরকে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল এবং আমরা আবারো ভাঙ্গা ব্রিজ ভ্রমণে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম। মূলত আমি মাঝে মাঝেই ভাংগা ব্রিজ ভ্রমণ করেছি এবং ভাঙ্গা ব্রিজ ভ্রমণ করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে যেহেতু তারপরেও গ্রামের বাড়ি থেকে বোনেরা বেড়াতে এসেছে তাই তাদের কাছে জায়গাটি নিতান্তই নতুন। তাই আমি এবং আমার ছোট ভাই আবির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা তাদেরকে নিয়ে ভাঙ্গা ব্রিজ ভ্রমণে চলে যাব।
তখন প্রায় বিকেল চারটা বেজে ৩০ মিনিট। আমরা একটি অটো রিকশা নিয়েছিলাম এবং গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে একদম সোজা চলে গিয়েছিলাম ভাঙ্গা ব্রিজ ভ্রমণে। তবে রাস্তায় যেতে আমাদের বেশ কষ্ট হয়েছিল। কারণ ভাঙ্গা বীজ নামক জায়গাটি সকল পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত এবং কোন প্রকার টিকিটের ব্যবস্থা নাই। তাই সেখানে প্রত্যেক শুক্রবারে চাকরিজীবী এবং সকল প্রকার শ্রেণী পেশার মানুষ ভিড় করে এবং সেখানে একটি বড় ধরনের মেলার মতো আয়োজন করা হয়ে থাকে। তাই রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম ছিল এবং আমাদের সেখানে পৌঁছাতে প্রায় পাঁচটা অতিক্রম হয়ে গিয়েছিল।
ভাঙ্গা ব্রিজ নেমে আমার দুটি ছোট ভাগিনা অনেক বেশি খুশি। কারণ তারা এই প্রথম শহরে এসেছে এবং এত চমৎকার একটি জায়গা উপভোগ করতে পেরেছে। যদিও ভাংগা ব্রিজ অঞ্চলটি শহরের ভেতরে তবে তার পরেও এর দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য আপনাকে অনেক বেশি পূলোকিত করবে। শহরের পরিবেশ এত সুন্দর সত্যি সেখানে না গেলে বোঝার কোন উপায় নাই।
বিশেষ করে সেখানে সবথেকে দর্শনীয় স্থান ছিল একটি ছোট নদী। বিশাল মাঠ এবং পুরো মাঠের পানি ভর্তি ছিল। এখানে বেশ অনেকগুলো ট্রলার বাধা ছিল এবং ট্রলারে ভ্রমণের টিকেট মাত্র ২০ টাকা। চাইলে ২০ টাকা দিয়ে সেখানে অনেক ভালো মানের নৌকা কিংবা ট্রলার ভ্রমণ করা সম্ভব।
ঘাটে ডিঙ্গি নৌকা বাধা ছিল। তবে ডিঙি নৌকা ভ্রমণের জন্য আপনাকে প্রতি টিকিটের মূল্য গুনতে হবে ৫০ টাকা। তবে আমার নৌকা ভ্রমন করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আমার সাথে দুইটা ছোট ভাগিনা থাকার ফলে শখ পূরণে আমরা ব্যর্থ হয়েছিলাম। কারণ ছোট ভাগিনা যদি নৌকার ভিতর গিয়ে কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে এটা সত্যি অনেক খারাপ দেখায়। তাই আমরা নৌকা ভ্রমণের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছিলাম।
আশেপাশে অনেকগুলো স্থান ভ্রমন করলাম এবং আমরা একটি গানের আসরে যুক্ত হয়েছিলাম। সেখানে বাংলা একতারা ব্যবহার করে গান গাওয়া হয়েছিল এবং দেশ উপভোগ করেছিলাম।
যেহেতু বিকেলে শেষ প্রান্তে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম তাই প্রায় এক ঘন্টা ভ্রমণের ফলেই সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। এবার আমরা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম এবং কোন কিছু খাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেছিলাম
আমরা একটি ছোট্ট দোকানে গিয়েছিলাম এবং সেখানে গিয়ে হালকা নাস্তা করেছিলাম। ফুচকা ও চটপটি খাওয়া শেষ করে আমরা অতি দ্রুত অটো রিস্কার নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। আর এভাবেই আমরা চমৎকার একটি দিনে পরিবারের সাথে গাজীপুরে ভাঙ্গা বীজ ভ্রমণ করেছিলাম।
আপনি কি কখনো আমার মত হুট করেই পরিবার নিয়ে ভ্রমন করেছেন? যদি ভ্রমণ করে থাকেন তাহলে আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের কাছে আপনার ভ্রমনের গল্প শেয়ার করুন। মূল্যবান সময় দিয়ে পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
VOTE @bangla.witness as witness
OR
|250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি
আমি মোহাম্মদ আকাশ সরদার
। জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি ব্লগিং করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। যদিও আর্ট আমার অনেক বেশি পছন্দ তবে আর্টওয়ার্ক কাজের জন্য আমার হাত একদম বাজে। ভ্রমণ এবং ফটোগ্রাফি আমার সব থেকে প্রিয় বিষয়। নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ এবং নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ ভালো লাগে। অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করতে পারলে মনের ভেতরে আনন্দ আসে। সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে চাই এবং সকলের প্রিয় ব্যক্তি হয়ে এই সমাজে বসবাস করতে চাই।
https://x.com/steemforfuture/status/1840235648512602298?t=s-ZeTBwBvMJ3rmqBWjP3Rw&s=19
এই জায়গা টায় কয়েকবার যাওয়া হয়েছে আমার। আমি গাজীপুরেই থাকি আর আমাদের বাসা থেকে এই জায়গাটা খুব একটা দূরে নয়। পরিবারের মানুষদের সাথে দারুন কিছু সময় কাটিয়েছেন। ছোট বাচ্চাদের জন্য নৌকা ভ্রমণটা আসলেই একটু রিক্সের। তবে নৌকায় করে জায়গাটায় ঘুরলে আরো বেশি উপভোগ করতেন। আমার কাছে এই জায়গাটা বেশ ভালো লাগে। যাইহোক মুহূর্তে গুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জেনে খুব ভালো লাগলো আপনিও এখানে গিয়েছেন। তবে একদম ঠিক বলেছেন, নৌকা ভ্রমণ করতে পারলে আরও বেশি উপভোগ করা যেত। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।