আমার বাংলা ব্লগ: নাটক রিভিউ - বন্ধন
screenshot এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে নেওয়া
আসসালামু আলাইকুম।
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি নাটক রিভিউ করার জন্য উপস্থিত হলাম। বাংলাদেশের সিনেমা অপেক্ষা নাটক দেখতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। কারণ বাংলাদেশের প্রতিটি নাটক শিক্ষামূলক হয়ে থাকে এবং আমরা চাইলে সেখান থেকে ভালো কিছু অনুপ্রেরণা গ্রহণ করতে পারে এবং শিক্ষা নিতে পারি।
ধারাবাহিকতায় আমি আজকে আপনাদের মাঝে একটি নাটক রিভিউ নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। নাটকের নাম বন্ধন। একটি পরিবারের মাঝে কিভাবে বন্ধন তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র ধৈর্যের মাধ্যমে তা এই নাটকটি দেখলে বোঝা যায়। চলুন কথা না বাড়িয়ে পুরো নাটকের রিভিউ উপভোগ করে আসি।
|
---|
নাটকের নাম | বন্ধন |
---|---|
পরিচালনা | হৃদয় মাহামুদ |
অভিনয়ে | মুশফিক আর ফারহান, কেয়া পায়েল, রিনা খান, রিফাত হাসান আরো অনেকে |
সময় | ৫৬ মিনিট |
ভাষা | বাংলা |
চ্যানেল | সুলতান |
এডিটর | আকাশ সরকার |
|
---|
screenshot এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে নেওয়া
নাটকের শুরুতেই আমরা দেখি বাড়ির ছোট ছেলে মুশফিক আর ফারহান এর বিয়ের জন্য কন্যা দেখতে যাওয়া হয়েছিল। মুশফিকের মা রিনা খান অত্যন্ত কঠোর একজন শাশুড়ি এবং সে তার বড় ছেলের বউকে অনেক শাসনে রাখেন এবং সব সময় তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। ইতিপূর্বেই আমরা যা বাংলা সিনেমায় দেখে এসেছি সেই একই চরিত্র লক্ষ্য করা যায় বন্ধন নাটকে ।
মুশফিক এর বিয়ের জন্য কন্যা দেখতে যাওয়া হয় এবং অবশেষে কন্যা পছন্দ হওয়ার ফলে কন্যাকে মুশফিকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ইসলামিক বৈধভাবে মুশফিক ও পায়েল এর বিয়ে সম্পন্ন হলে পায়েল তার শ্বশুরবাড়ি আসে অর্থাৎ মুশফিক তার বউকে বরণ করে তার নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে।
screenshot এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে নেওয়া
মুশফিক এর বড় ভাই ছিল তার প্রথম মায়ের সন্তান। তার প্রথম মা অসুস্থতার কারণে মারা গিয়েছিল এবং মুশফিকের বাবা পরবর্তী যে বিয়ে করেছিল মুশফিক ছোট মায়ের।
অর্থাৎ মুশফিক ও তার বড় ভাই আলাদা মায়ের সন্তান তবে তাদের মধ্যে বেশ ভালো একটা মিল রয়েছে। যেহেতু মুশফিক নতুন বিয়ে করেছে তাই সে তার নতুন বউকে নিয়ে তার অসুস্থ ভাইয়ের কাছে দেখা করতে নিয়ে গিয়েছিল। মুশফিকের বড় ভাই মুশফিকের বউকে দেখে অনেক খুশি হয়েছিল কারণ সে একটা চমৎকার সুন্দর মেয়েকে বিয়ে করেছে এবং মুশফিকের অসুস্থ ভাই মেয়েটাকে অনেক বেশি পছন্দ করেছিল।
screenshot এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে নেওয়া
বিয়ের পরের দিনের ঘটনা। মুশফিক এর ভাবি নতুন বউ ও তার সকল পরিবারের জন্য রান্না করছিল। এমন সময় বাড়ির ছোট বউ তার বড় ভাবির কাছে এসে রান্নাঘরে বসে ছিল এবং রান্না করার জন্য আবদার করেছিল। যদিও বাড়ির বড় বউ ছোট বউকে রান্না করতে নিষেধ করেছিল তবে তারপরেও জোরপূর্বক ছোট বউ রান্না করার জন্য তার ভাবির কাছে রান্না ঘরে ছিল।
অপরপক্ষে রীনা খান রান্নাঘরে আসে এবং সকালের চা না পাওয়ার কারণে অত্যন্ত বকাবকি শুরু করে। বাড়ির ছোট বউকে রান্না করে দেখে বড় বউ এর প্রতি অনেক খারাপ আচরণ করে এবং তাকে অনেক খারাপ ভাষায় গালাগালি করেছিল। যদিও ছোট বউ বলেছিল বড় ভাবির কোন দোষ নাই তবে তারপরেও রিনা খান অত্যন্ত বাজে ব্যবহার করেছিল বাড়ির বড় বউ এর সাথে।
screenshot এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে নেওয়া
বাড়ির বড় ছেলে অসুস্থ। সে রুই মাছের মাথা খেতে অনেক বেশি পছন্দ করে। যখন বাড়ির বড় ছেলে তার বউয়ের সাথে আলাপ করছিল তখন দেয়ালের ওপার থেকে বাড়ির ছোট বউ শুনতে পেয়েছিল। খাবার সময় বাড়ির ছোট বউ বলেছিল মাছের মাথাটা আমি খেতে চাই। কিন্তু সে মাথাটা পরে খাবে বলে খাবার শেষ করে বড় অসুস্থ ভাইয়ের কাছে মাছের মাথাটা নিয়ে এসেছিল।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিষয়টি রিনা খান জানতে পেরেছিল এবং অপরপক্ষে বড় ছেলের রুমে প্রবেশ করে তাকে মাছের মাথা খেতে দিয়েছিল না।
এবং রিনা খান রাগান্বিত হয়ে মুশফিক এর বড় ভাই কে একটি ওষুধ খেতে দিয়েছিল। তবে বাড়ির ছোট বউ ছিল শিক্ষিত তাই সে ওষুধটি দেখে চিনতে পেরেছিল এটি মানুষকে তিলে তিলে শেষ করার একটি মারাত্মক ক্ষতিকর। এই ওষুধ এর মাধ্যমে মানুষকে সারাজীবন অসুস্থ করে রাখা সম্ভব। বিষয়টি বাড়ির ছোট বউ তার হাসবেন্ড মুশফিককে জানিয়েছিল এবং এর জন্য মুশফিক বিষয়টির জন্য তার মায়ের প্রতি অত্যন্ত ঘৃণা পোষণ করেছিল।
screenshot এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে নেওয়া
এরপর বাড়ির বউ মার্কেট করতে যাবে। শপিং এর জন্য শাশুড়ির কাছে গিয়ে ১০০০০ টাকা দাবি করেছিল। শাশুড়ি দশ হাজার টাকা দিতে রাজি না হলে মুশফিক এসে বলেছিল মা আমার বউ শপিং করতে যাবে তাকে কিছু টাকা দিয়ে দাও। অবশেষে বাড়ির ছোট বউ সবার জন্য শপিং করেছিল কিন্তু তার শাশুড়ির জন্য কোন শপিং করেছিল না। অবশেষে রিনা খান এই বিষয়টির জন্য অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করেছিল এবং সে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে গেল।
screenshot এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে নেওয়া
অপরপক্ষে রিনা খান এর চিকিৎসার জন্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। তবে একটি পরিবার থেকে হুট করে 6 লাখ টাকা ম্যানেজ করা কোনোভাবেই সম্ভব। বিষয়টি বাড়ির বড় ছেলে জানতে পেরেছিল এবং মুশফিককে ডেকে পাঠিয়েছিল।
মুশফিক যখন তার বড় ভাইয়ের ঘরে গিয়েছিল তখন মুশফিকের বড় ভাই একটি স্বর্ণের থলে দিয়েছিল। যেখানে তার প্রথম মা তাকে কিছু স্বর্ণ দিয়েছিল যেগুলো সে বিপদের দিনে খরচ করতে পারবে। যেহেতু অসুস্থ মুশফিকের বড় ভাইয়ের মা মারা গিয়েছে এবং সৎমা রয়েছে তবে সৎ মায়ের চিকিৎসার জন্য মুশফিকের বড় ভাই স্বর্ণগুলো মুশফিকের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল।
অপারেশনের দিন, মুশফিকের বড় ভাই রিনা খানের ঘরে প্রবেশ করেছিল এবং সেখানে পরিবারের সকলে উপস্থিত ছিল। কিন্তু রিনা খান সেই অসুস্থ মানুষ কে দেখে অত্যন্ত রাগান্বিত হয়েছিল। অবশেষে মুশফিক যখন তার ভাইয়ের কৃতজ্ঞতার কথা বলেছিল এবং টাকাগুলো তার ভাই দিয়েছে এই কথা শুনে রীনা খান অঝোরে কান্না শুরু করেছিল।
রিনা খান তার সৎ বড় ছেলের কাছে গিয়ে কান্না শুরু করেছিল এবং সমস্ত ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছিল। অপরপক্ষে বাড়ির বড় বউ এর কাছে তার শাশুড়ি রিনা খান ক্ষমা চেয়েছিল এবং এখানে নাটকের একটা দারুন খুশির মুহূর্ত ছিল এবং এখানে নাটকটি শেষ হয়েছিল।
|
---|
|
---|
আমাদের বাস্তব পরিবারে এমন ঘটনা অনেক ঘটে। পরিবারের প্রথম মা মারা যাওয়ার পর বাবা যদি দ্বিতীয় বিয়ে করে তাহলে সেই পরিবারে যে পরে মা আসে সেই মা সৎ মা।
সৎ মানে ভালো। তবে কেন এই মা গুলো পরিবারের সৎ ছেলের প্রতি এমন অসহনীয় আচরণ করে?
অবশেষে যাই হোক আর রিনা খান সমস্ত ভুল বুঝতে পেরে যে ক্ষমা চেয়েছিল এবং তাদের পরিবারে আবারও সুখ ফিরে এসেছিল এই বিষয়টি আমাকে সত্যি অনেক বেশি আনন্দিত করে। আমি মনে করি এই নাটকটি আমাদের সপরিবারে দেখা উচিত এবং এই নাটক থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।
|
---|
১০/৯
VOTE @bangla.witness as witness
OR
|250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি
আমি মোহাম্মদ আকাশ সরদার
। জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি ব্লগিং করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। যদিও আর্ট আমার অনেক বেশি পছন্দ তবে আর্টওয়ার্ক কাজের জন্য আমার হাত একদম বাজে। ভ্রমণ এবং ফটোগ্রাফি আমার সব থেকে প্রিয় বিষয়। নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ এবং নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ ভালো লাগে। অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করতে পারলে মনের ভেতরে আনন্দ আসে। সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে চাই এবং সকলের প্রিয় ব্যক্তি হয়ে এই সমাজে বসবাস করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://x.com/steemforfuture/status/1798635788030378428?t=nW5S8rQHd0c4pejJfXlciQ&s=19
সন্তান নিজের হোক অথবা সৎ হোক, সন্তানের সাথে একই রকমের ব্যবহারই করা উচিত, সবসময় ভালো ব্যবহার করা উচিত। এই নাটকটা আমি আরো বেশ কয়েকদিন আগে দেখেছিলাম। রিনা খান নিজের সৎ বড় ছেলেকে মারাত্মক ওষুধ দিয়ে অসুস্থ বানিয়ে রেখেছিল, যেটা বাড়ির ছোট বউ ধরতে পেরেছে। রিনা খান নিজের সৎ ছেলের সাথে যেরকমই ব্যবহার করুক না কেন, সে কিন্তু সব সময় নিজের সৎ মাকে সম্মান করেছে। শেষে মায়ের অসুস্থতার সময় নিজের আসল মায়ের স্বর্ণ গয়না বিক্রি করার জন্য দিয়ে দিয়েছিল। রিনা খান নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে শেষ পর্যন্ত এটা দেখে ভালোই লেগেছে।
বন্ধন নাটকটি পরিবার কেন্দ্রিক একটি নাটক চমৎকার একটি নাটক। খুব সুন্দর ভাবে আপনি রিভিউ করেছেন নাটকটির। আসলে সৎ মা খুব কম ই ভালো হয় বেশিরভাগ সৎ মায়েরা খারাপ হয়। এখানে সেটাই বুঝিয়েছে যে একজন সৎ মা তার সৎ সন্তানের ক্ষতি করছে সে সম্পদ পাবে বলে। কেয়া পায়েল খুব সুন্দর ভাবে তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেন। নাটকটি আমি বেশ আগেই দেখেছিলাম এবং আপনার রিভিউ দেখার পর আরো ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
সবার সাথে সবার সম্পর্কটা থাকা দরকার একেবারে সুন্দর এবং ভালো। রিনা খান তো দেখছি নিজের সৎ ছেলেকে একেবারেই দেখতে পারত না। এমনকি ছেলের বউকেও। কিন্তু ছেলে এবং ছেলের বউ তো দেখছি খুবই ভালো ছিল। আর ছোট ছেলের বউ সবকিছু এসে ধরে ফেলেছিল নিজের শাশুড়ির কার্যকলাপ। বড় ছেলেকে ভুল ওষুধ খাইয়ে এতদিন আরও বেশি অসুস্থ বানিয়ে ফেলেছে। আসলে এরকম কার্যকলাপ দেখলে সবার কাছেই খারাপ লাগবে। তবে তিনি নিজের ভুলটা তখনই বুঝতে পেরেছিলেন, যখন তিনি নিজে অসুস্থ হয়েছিলেন, আর সৎ বড় ছেলে এরকম ব্যবহার দেখেছিলেন।
অনেক সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করেছেন ভাইয়া। আপনার আজকের এই নাটক রিভিউটা অনেক অনেক ভালো লেগেছে। আরো ভালো লেগেছে এখানে রিনা খান অভিনয় করেছে দেখে। অন্যরকম এক হাসি আনন্দের নাটক ছিল এটা।