ক্ষমতার অপব্যবহার

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমি খবরের কাগজ পড়তে ভালোবাসি। এটা আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। যদিও এখন আর খবরের কাগজ বাসায় রাখা হয় না। তবে তাতে কোনো সমস্যা হয় না। অনলাইনে সব খবরই পড়া হয়। যে পত্রিকাটা বাসায় রাখতাম তাদের অনলাইন ভার্সনের খবরগুলো প্রতিদিন দেখে নেই। দু তিন দিন আগে অনলাইন এক পত্রিকায় একটা খবর দেখেছিলাম। যেটা দেখে খুবই খারাপ লেগেছিলো। খবরটা হচ্ছে একজন কৃষককে উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে সাহায্যের বদলে বকুনি খেতে হয়েছে। তাকে অপমান করে অফিস থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। একজন মহিলা কৃষি কর্মকর্তা তার সাথে চূড়ান্ত রুঢ় ব্যবহার করেছে। এই খবরটা গত কয়েকদিন যাবত দেখছিলাম অনলাইন পত্রিকা সহ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো। এরকম ঘটনা যে এবারই প্রথম ঘটলো তা নয়। বরং আমাদের দেশে এমনটাই সবসময় ঘটে থাকে।

IMG_20240327_173836.jpg

সরকারি চাকরিজীবীরা তাদের কাছে সাহায্য প্রার্থী মানুষদেরকে মানুষই মনে করে না। তারা যে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এটা তারা ভুলে যায়। তারা তাদেরকে জনগণের মালিক মনে করে। অথচ ঘটনা হওয়ার কথা পুরো উল্টো। কারণ জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তাদের বেতন হয়। সরকারি কর্মচারীদের উচিত জনগণের সাথে ভালো ব্যবহার করা। ঘটনাচক্রে সেদিন এক সাংবাদিক ওখানে উপস্থিত ছিলেন। তার কল্যাণেই এই খবরটা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। খবরটা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার ফলে কৃষি বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সেই মহিলাকে বদলি করে দিয়েছে। কিন্তু এটা তো সমস্যার সাময়িক সমাধান। এই ধরনের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হলে যারা এ ধরনের নেককারজনক কাজের সাথে যুক্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারি প্রত্যেকটা কর্মচারী কর্মকর্তার যেনে বুঝতে পারে তাদেরকে রাখা হয়েছে জনগণের সেবা প্রদান করার জন্য। জনগণের সাথে খারাপ ব্যবহার করার জন্য নয়।


খবরের মারফত জানতে পেরেছি সেই মহিলা কৃষি কর্মকর্তা সাহায্য প্রার্থী সেই কৃষকের সাথে বেশ দুর্ব্যবহার করেছিলো। তিনি তার শিক্ষার জানান দিতে সেই কৃষককে ইংরেজিতে অনেক গালমন্দ করেছিলেন। কৃষকের অপরাধ ছিল তার ধানের ক্ষেতে পোকার সংক্রমণ হয়েছিল। সেই সংক্রমণ থেকে কিভাবে বাঁচবে সেটাই জিজ্ঞেস করেছিলো। কৃষি বিভাগকে রাখাই হয়েছে এই কাজের জন্য। তাতেই মনে হোলো মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। সেই মহিলা কৃষি কর্মকর্তা এক পর্যায়ে নাকি সেই কৃষককে বলেছিল আমি কি আপনার কামলা দেই নাকি? আমার মতে তখন সেই কৃষকের বলা উচিত ছিল হ্যাঁ আপনি আমার কামলা দেন। কারণ আমার ট্যাক্সের টাকায় আপনার বেতন হয়। আমাকে সাহায্য করার জন্যই আপনাকে এখানে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেই বৃদ্ধ দরিদ্র কৃষক কিছুই বলতে পারেনি। শুধু তার চোখ বেয়ে কয়েক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়েছে।


যাই হোক তারপরেও কিছুটা হলেও সেই মহিলা শিক্ষা হয়েছে। তাকে এমন এক জায়গায় ট্রান্সফার করা হয়েছে যে অঞ্চলের মানুষ খুবই উগ্র। এখানে এসে মহিলার সমস্যা হবে সেটা আমি বুঝতে পারছি। কারন এই অঞ্চলে একসময় আমার চাকরি সূত্রে যাতায়াত ছিলো। যার ফলে সেই অঞ্চলের মানুষকে আমি বেশ ভালোভাবেই চিনি। মহিলাকে এখন সেখানে সবার সাথে বেশ নরম ব্যবহার করতে হবে। না হলে সে নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হবে। আসলে এগুলো কোন স্থায়ী সমাধান নয়। বাংলাদেশের আর দশটা সাধারণ মানুষের মতো আমারও চাওয়া সরকারি কর্মকর কর্মচারী কর্মকর্তাদের ব্যবহারে যেন লাগাম টানা হয়। তারা যেনো বুঝতে পারে তাদেরকে রাখা হয়েছে দেশের মানুষের সেবা দেয়ার জন্য। তাদেরকে শাসন করার জন্য নয়।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR

---|---


ধন্যবাদ

Sort:  
 last month 

বর্তমান সময়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা সাধারণ কোনো মানুষ কে মূল্য দিতে চায় না।তারা সব তাদের ক্ষমতার দাপট দেখাতে ব্যস্ত। আসলে আমাদের উচিত ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের কে জায়গা মতো উচিত শিক্ষা প্রদান করা। আসলে ক্ষমতার জোরে অনেকে অনেক কিছুই করে। কিন্তু ক্ষমতা ছাড়ার পর সে ব্যক্তি গুলো অনেক টা নিঃস্ব হয়ে যায়।

 last month 

আমাদের দেশের কোনো সরকারি সেক্টরে কাজ করানোর জন্য গেলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। তাদের ভাবভঙ্গি দেখলে মাথায় রক্ত উঠে যায়। মাসে মাসে বেতন নিবে, আর অফিসে গিয়ে হাজিরা দেওয়া ই তাদের কাজ। কাজের কাজ তো কিছুই করে না। যাইহোক সেই কৃষককের জন্য আসলেই খুব খারাপ লাগছে। তবে সেই মহিলার এমন জায়গায় ট্রান্সফার হয়েছে,এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 64255.05
ETH 3499.98
USDT 1.00
SBD 2.50