এক মেয়ের, নাম রাইনা
আসসালামুআলাইকুম/আদাব🤝
বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় অবস্থান করছি ।
রাইনা সবসময় হাসিখুশি এবং সবার প্রিয় ছিল। স্কুল জীবনে সে খুবই প্রতিভাবান এবং পরিশ্রমী হলেও, HSC পরীক্ষার ফলাফল তার প্রত্যাশা অনুযায়ী আসে নি। সবাই যখন তাদের চমৎকার রেজাল্ট ফেসবুকে দেখাচ্ছিল, রাইনার ফলাফল খুব কম নম্বরের, এবং সে অনুভব করল যে বন্ধুরা ও আশেপাশের মানুষদের মধ্যে তার প্রতি অবহেলা, ব্যঙ্গ বা হাসাহাসি শুরু হয়েছে। অনেকেই বলল, “ও তো পারবে না,” আবার কেউ বলল, “ওর মতো মেয়েরা ইউনিভার্সিটিতে যেতে পারবে না।” সেই সব কথায় রাইনার হৃদয় ভেঙে গেল। সে বুঝতে পারল যে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে শুধু নিজের উপর নির্ভর করতে হবে। রাইনা তখন ঠিক করল যে, এই অপমানই হবে তার শক্তি। সে পুরো এক বছরের জন্য বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করল। ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া, বন্ধুদের সাথে আড্ডা— সব কিছু বন্ধ করে শুধু নিজের পড়াশোনায় মনোনিবেশ করল। প্রতিদিন সকালে উঠে পুরনো নোট সাজিয়ে নিত, ভিডিও দেখে বুঝতে চেষ্টা করত, এবং যেটা বোঝা যেত না, তা খুঁজে বের করত। রাতে ঘুম কম হতো, দিনগুলো একেবারে একঘেয়ে হলেও সে থেমে থাকেনি। মা অনেক সময় বলত, “বাবা, একটু বিশ্রাম নাও,” কিন্তু রাইনা বলত, “এখন বিশ্রাম নেওয়ার সময় নয়, যদি এখন হার মানি, চিরদিন কেউ আমাকে ছোট ভাববে।” সে জানত, সফল হতে হলে একা লড়তে হবে, কারো সহানুভূতি বা প্রশংসার ওপর নির্ভর করা যাবে না। এই এক বছরের নিরব পরিশ্রম তাকে শিখিয়েছে যে, প্রতিটি ব্যর্থতা আসলে এক নতুন সুযোগ। রাইনা শুধু বই পড়ত না, সে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন উপায় খুঁজত। কখনও কখনও মন খারাপ হতো, কিন্তু সে থেমে থাকত না। একদিন ফলাফল বের হলো, এবং রাইনা অবাক হয়ে গেল যখন দেখল যে সে দেশের একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের CSE ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হতে পেরেছে। এটি ছিল তার কঠোর পরিশ্রমের এবং ধৈর্যের ফল। যারা এক সময় তার ব্যর্থতার সঙ্গে হেসেছিল, তারা তখন তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছিল। কেউ মেসেজ করছিল, কেউ স্টোরিতে লিখছিল, ‘Proud of you, Raina!’ কিন্তু রাইনা শুধু হেসে বলল, “যারা এক সময় বিশ্বাস করেছিল না, তারা আজ দেখছে আমার পরিশ্রমের ফল।” বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনে, ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে রাইনা মনে মনে ভাবল যে, এই এক বছরের নিরবতা এবং সংগ্রাম তাকে আজকের রাইনা বানিয়েছে। সে বুঝল, ব্যর্থতা কোনো শেষ নয়, এটি এক নতুন শুরু। এক সময় যারা তাকে হেয় করেছিল, তারা আজ তার সাফল্যের গল্প শোনাচ্ছে। রাইনার গল্প আমাদের শেখায় যে, নিজের ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস রাখলে, কোনও বাধাই চূড়ান্ত নয়। অন্যরা তোমাকে বুঝুক বা না বুঝুক, তুমি নিজেকে গড়ো নিজের পরিশ্রম এবং দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে। রাইনার মতো যদি কেউ হার মানে না, নিজের লক্ষ্য এবং স্বপ্নকে মাথায় রেখে লড়াই চালিয়ে যায়, তবে একদিন সে নিজের জন্য এবং অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণার গল্প হয়ে উঠবে। রাইনা শুধু একজন শিক্ষার্থী নয়, একজন প্রতীক হয়ে উঠল যে, কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং আত্মবিশ্বাস দিয়ে সব বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। তার জীবনের এই সময়, যখন সে একা লড়েছে এবং নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছে, তা প্রমাণ করে যে, অন্যদের অবহেলা বা সমালোচনা কখনোই তোমার গন্তব্য নির্ধারণ করতে পারবে না। জীবনেই যদি সত্যিকারের সাফল্য পেতে চাও, তবে নিজেকে জানো, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো এবং চুপচাপ কঠোর পরিশ্রম করো। কারণ একদিন, এই নিরব পরিশ্রমই এমন সাফল্য এনে দেবে, যা সবাইকে চমকে দেবে। এই গল্পটি কেবল রাইনার নয়, এমন সকলের অনুপ্রেরণা, যারা এক সময় ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়েছে কিন্তু থেমে যায়নি। ব্যর্থতা যদি না আসে, কেউ নিজের সত্যিকারের শক্তি বুঝতে পারবে না। তাই, প্রত্যেকের জন্য বার্তা স্পষ্ট—নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখো, কঠোর পরিশ্রম করো, এবং ধৈর্য ধারণ করো। সাফল্য আসবেই, এবং একদিন তার ফলাফল সেই সমস্ত মানুষদেরও দেখাবে যারা এক সময় তোমার অবহেলা করেছিল।
Posted using SteemX
এতক্ষণ আমার পোষ্ট মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজ এখানেই শেষ করছি, অন্য কোনদিন নতুন কিছু নিয়ে আপনাদের সামনে উন্মোচিত হব। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
ধন্যবাদ সকলকে✨💖
ফোনের বিবরণ
ক্যামেরা | Redmi note 9 |
---|---|
ক্যামেরা.মডেল | note9 |
কভার ফটো | পিক্সাবে। |
অবস্থান | সিরাজগঞ্জ- বাংলাদেশ। |
আমার পরিচয়
আমি শেলি। আমি বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুরে খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ে সি এস ই তে অধ্যায়নরত আছি। ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকতে ভালোবাসি। নতুন কিছু শিখতে এবং জানতে ভালোলাগে।ঘুরতে আর খেতে খুব ভালোবাসি।অবসর সময় পেলেই ছবি আঁকি। এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে। 🌼💖🌼 |
---|
🎉 Congratulations!
Your post has been upvoted by the SteemX Team! 🚀
SteemX is a modern, user-friendly and powerful platform built for the Steem community.
🔗 Visit us: www.steemx.org
✅ Support our work — Vote for our witness: bountyking5