প্রিয় বন্ধু বুলবুলকে বিমান বন্দরে বিদায়ের কিছু কথা…

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন, আমিও আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় বেশ ভালো আছি। প্রিয় বন্ধুকে বিদেশগামী বিদায়ের কিছু কথা আপনাদের সাথে শিয়ার করছি। ভুল ত্রটি হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

আমরা বেশ কয়েকজন বন্ধু একত্রে থাকি, আনুমানিক ১০ থেকে ১৪ জন হবে। আমরা মনে করি এটা আমাদের পরিবার। প্রতিদিন সকাল ও বিকাল আমাদের দেখা হয় আমার দোকানে। সকালে এসে সবাই মিলে আড্ডা দেই, আবার বিকালে। বুলবুল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো বন্ধু, আজকে বিদায় দিচ্ছি বিদেশের উদ্দেশ্য। বন্ধুদের মাঝে কোন ঝগড়া হলে বুলবুল কিছু বলেই মিলিয়ে দিতো। তার মধ্যে কি যেন আছে, কোন কথা কোথায় বললে ভালো হবে সে খুব ভালোই জানে।

কোন জায়গায় ঘুরতে যেতে চাইলে সবাইকে ঠিক সময়ে একত্রে করা ছিল তার কাজ। আমাদেরকে খুব ভালোবাসে বুলু। হঠাৎ করে তার বাবা ভিসা পাঠায়, ঈদের কিছু দিন আগে তাকে চলে যেতে হবে। বিদেশ যাওয়ার কথা কাউকে বলে না, যাতে করে সবার ঈদটা নষ্ট না হয়। বিদেশ যাওয়ার ২ দিন আগে আমরা সবাই শুনতে পারি বুলু চলে যাবে। তার ইচ্ছে দিলো সবাই মিলে তাকে যেন বিমান বন্দরে দিয়ে আসি। আমরা সকাল ৭ টার সময় বাজারে চলে আসি ১২ জন বন্ধু।

বিদায়ের যাত্রা আমাদের কারো মনে হচ্ছে না, মনে হচ্ছে আমরা কোন শিক্ষা সফরে যাচ্ছি। অনেক খৈ-খোল্লা করে দুপুরের দিকে ঢাকাতে আসি। তার কাগজ পত্র ঠিক করতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘন্টার মতো। পরে আমরা রেস্তোঁরায় যাই, দুপুরের খাবার খেয়ে নিই।

১ ঘন্টার মতো রেস্ট নিয়ে শাহাজালাল বিমান বন্দরে ২ তলায় উঠি। সেখানে একটা মজার কথা না বললেই না হয়। বুলু চলে যাবে আমরা সবাই দুঃখ প্রকাশ করছি। এই দিকে বুলবুল টিকটক নিয়ে ব্যস্ত। সবাই ছবি তুলার পর যে সময় বুলবুল ভিতরের দিকে চলে যাচ্ছে প্রত্যেকের চোখে পানি চলে আসলো, কেউ নিরবে, কেউ অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে চোখের জল ফালাচ্ছে।

আমরা তত ক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, যত ক্ষণ পর্যন্ত বুলবুল এর নেটওয়ার্ক আছে। আমরা গ্রুপ কল দিয়ে তার সাথে সবাই কথা বলছিলাম। বন্ধুদের মুখের দিকে তাকানো যায় না, কেমন যেন হেয়ে গেছে সবাই, কেউ কারো সাথে কথা বলে না সে দিন সবাই যেন নিস্তব্দ হয়ে গিয়েছিলো।

এখন আর আগের মতো ঘুরা ফিরা হয় না। আমাদের গ্রুপটা আর আগের মতো নেই। খুব মিস করি প্রিয় বন্ধু বুলবুল-কে।