শিলং এর পথে পথে। ১০% shy-fox এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই।নিশ্চই ভালো। সিজন চেন্জ হচ্ছে চারিদিকের অনেক মানুষের ঠান্ডা কাশি জ্বর হচ্ছে,আমিও বাদ যাইনি এই তালিকা থেকে।শীতের বিরম্বনা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে বেশ কিছু সুবিধা। ঘুরতে যাবার জন্য আদর্শ সময় হচ্ছে শীত,আর সেই ঘুরে বেড়ানো যদি হয় পাহাড়ে তাহলে তো কথাই নাই।গত শীতে গিয়েছিলাম ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং এ। চলুন আমার সাথে ঘুরিয়ে আনি শিলং এ।


FB_IMG_1636204756185.jpg

স্থান-লিংক

শিলং

মেঘ পাহাড়ের লুকোচুরি বাঁকের পর বাঁক পেরুনোর রহস্য আর পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে চলা ঝর্ণার অপার্থিব রহস্য দেখতে হলে যেতে হবে শিলং।রবি ঠাকুরের লেখায় শিলং এর বর্ণনা পড়ে যাবার ইচ্ছা প্রবল হয়। যখন সত্যি শিলং পৌছালাম নিজেকে ধরে রাখার মুশকিল হয়ে পড়লো। কল্পনার আঁকা বাঁকা পাহাড়ি পথ, পথের পাশে ফুটে থাকা বুনো ফুলের গালিচা,সাথে ওক,পাইন,ক্রিসমাস-ট্রি আর হালকা বেগুনি আভার চেরী ফুলের সৌন্দর্য আমাকে বিমোহিত করে ফেললে।

FB_IMG_1636210164747.jpg

স্থান-লিংক

ঢাকা থেকে রাত ১২ টায় রওনা হয়ে পরদিন ভোর ৫ টায় সিলেট পৌছালাম।সেখান থেকে ২ ঘন্টার পর পাড়ি দিয়ে তামাবিল সীমান্তে পৌছালাম এর পর বর্ডারের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে জীপ ভাড়া করে রওনা হলাম শিলং এর উদ্দেশ্যে। শিলং পৌছানোর আগে পথে বেশ কটি স্পট দেখে নিলাম। বর্ডার পেরোতেই প্রথমে পড়লো ডাউকি নদী, সবুজ স্বচ্ছ পানির নদী আর পানির নীচের রংবেরঙের পাথর আপনাকে মুগ্ধ করবে নিশ্চিত। চাইলে ঘন্টা হিসেবে নৌকা ঠিক করে ঘুরে আসতে কাকের চোখের মত স্বচ্ছ পানিতে।

ডাউকি নদী

FB_IMG_1636207591834.jpg

স্থান-লিংক

নদীর সৌন্দর্যের রেশ কাটতে না কাটতেই দেখা হয়ে গেলো পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা স্বচ্ছ ঝর্ণার সাথে। পাথরের ওপর আচড়ে পড়া পানির যে শব্দ তা দীর্ঘক্ষণ মনকে অন্য রকম এক প্রশান্তি এনে দেবে।যেতে পথে দেখা মিললো উমক্রেম ঝর্ণা আর সাদা জলের ধারার বোরহিল ঝর্ণার।

FB_IMG_1636207625706.jpg

স্থান-লিংক

উমক্রেম ঝর্ণা

FB_IMG_1636207615108.jpg

স্থান-লিংক

বোরহিল ঝর্ণা

পরের গন্তব্য লিভিং রুট ব্রিজ। এই ব্রিজে যাবার পথটা বেশ কষ্টের।অনেক দুর্গম পথ পেরিয়ে যখন ব্রিজের সামনে পৌছালাম তখন ঘোর কাটছিলো না। দুটো গাছের
শেকড় কিভাবে যাত্রাপথ তৈরী করেছে সেই বিস্ময়েই কাটলো বেশ খানিকটা সময়।। লিভিং রুট ব্রিজের নীচের বয়ে চলা শীতল জলের ধারায় পা ডুবিয়ে অনায়াসে ক্লান্তি দুর করে নিতে পারেন।

FB_IMG_1636207606146.jpg

স্থান-লিংক

লিভিং রুট ব্রিজ

লিভিং রুট ব্রিজ দেখে আমরা রওনা হলাম মাওলিনং পাড়ার উদ্দেশ্যে। মাওলিনং গ্রাম দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম। সারি সারি নানান রঙের ফুল দুপাশে ঘন সবুজ গ্রাম চোখের প্রশান্তি এনে দিলো মুহুর্তেই।

FB_IMG_1636207600199.jpg

স্থান-লিংক

যাত্রাপথের সব স্পট দেখে রওনা হলাম শিলং এর উদ্দেশ্যে। আকাঁ বাঁকা পাহাড়ি পথ বেয়ে সমতল থেকে যতই উপরের দিকে উঠছিলাম তত শরীরে ঠান্ডার অনুভূতি বাড়ছিলো। প্রায় রাত আটটার দিকে শিলং শহরে যখন পৌছালাম তখন মন হলো স্বপ্নের ভেতর কোন অলৌকিক শহরে পৌছে গেছি। দুরের পাহাড়ে জ্বলে থাকা ছোট ছোট জোনাক পোকা যেন আমাদের স্বাগত জানালো।

FB_IMG_1636210184308.jpg

স্থান-লিংক

ছবিগুলি আমার তোলা ফেসবুকে শেয়ার করা আছে।

এবার বিরতি নেবো। সামনের পর্ব লিখবো চেরাপুন্জি
নিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃষ্টি বহুল এলাকা চেরাপুন্জি। শিলং বেড়াতে গেলে চেরাপুঞ্জিতে না গেলে বেড়ানো অসম্পূর্ণই রয়ে যাবে।অপেক্ষায় থাকুন আর জানাতে ভুলবেন না আমার ভ্রমন কেমন লাগলো।

Sort:  
 3 years ago 

আপু প্রথমেই জানাই খুব খুব সুন্দর ও অমায়িক হয়েছে আপনার ভ্রমনটি আর ভ্রমনের স্পট গুলিতো দারুন হয়েছে ।সবার তো যাওয়ার সুযোগ হয়না অনেক সমস্যা ভেজাল অতিক্রম করে এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমনে যেতে হয়।তাই না গিয়েও সব সুন্দর সুন্দর স্পট দেখে ফেললাম আপনার মাধ্যমে ।ছবিগুলো দেখলে মনে হয় আমি সেই স্থানে উপস্থিথ থেকে উপভোগ করতেছি মুহূর্ত গুলি ।ধন্যবাদ আপু শিলং এর এতো সুন্দর ভ্রমনের মুহূর্তগুলি শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমার ও ভালো লাগলো। সামনের পর্বে থাকবে চেরাপুন্জির গল্প।

 3 years ago 

আমিও দেখার আগ্রহে থাকলাম।

 3 years ago 

এই সপ্তাহেই লিখবো।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 66785.43
ETH 3494.10
USDT 1.00
SBD 2.83