চলুন ঘুরে আসি স্বপ্নের দার্জিলিং থেকে। @ shy-fox ১০% বেনিফিসিয়ারী।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? নিশ্চই ভালো। আমিও ভালো আছি।

"দুরে কোথাও দুরে, আমার মন বেড়ায় ঘুরে " ছন্নছাড়া মন সারাক্ষণই ঘুরে বেড়াতে চায়, কিন্তু মহামারী করোনা সে পথ বন্ধ করে দিয়েছে। তাইতো পুরনো স্মৃতি খুঁজে ফেরা,চলুন আমার প্রিয় দার্জিলিং থেকে ঘুরিয়ে আনি।

received_1064113024517049.jpeg
লোকেশন লিঙ্কঃ

https://w3w.co/blaze.foods.dancer


আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ, রাস্তার দুই পাশে যতদুর চোখ যায় পাহাড়ের ঢাল জুড়ে সবুজ চা বাগান। বাঁকের পর বাঁক পেরুনোর রহস্য, পথের মাঝে হঠাৎ উকি দেয়া ঝর্ণাআর নাম না জানা বুনো ফুলের সমাহারই হচ্ছে দার্জিলিং।ছোটবেলা থেকে সমরেশ মজুমদারের বই পড়ে ঠিক করেছিলাম দেশের বাইরে কোথাও যেতে পারলে প্রথমেই যাবো দার্জিলিং এ। আসলেই তাই হয়েছে প্রথম দেশের বাইরে যাওয়া হয় দার্জিলিং। স্বপ্ন দেখা দার্জিলিং গিয়ে এত মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম এখন পর্যন্ত ৭ বার গিয়েছি দার্জিলিং। পুরনো শহরের গন্ধ, টয়ট্রেন, সারি সারি ওক,পাইন আর ইউক্যালিপটাস। আর রাস্তার বাঁক পেরুতেই শ্বেত শুভ্র বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা এই স্মৃতি বারবার আসতে বাধ্য করে দার্জিলিং এ।

FB_IMG_1643116080745.jpg

কিভাবে যেতে হয় দার্জিলিং চলুন জেনে নিন। আমরা বাংলাদেশ থেকে গিয়েছিলাম। রাত সাড়ে দশটায় রাজধানী ঢাকা থেকে শ্যামলী পরিবহনে রওনা দিয়েছিলাম ভোর পাঁচটায় বুড়িমারী স্থল বন্দের পৌছে গিয়েছিলাম। এসি বাসের ভাড়া পড়েছিলো শিলিগুড়ি পর্যন্ত ১৫০০ টাকা। বর্ডার খোলার আগ পর্যন্ত আমরা শ্যামলী পরিবহনের রেষ্ট রুমে জিনিসপত্র রেখে কিছু সময় রেষ্ট নিয়ে বুড়ির হোটেলে সকালের নাস্তা খেয়েছিলাম হাঁসের মাংস দিয়ে। এরপর বর্ডার খুললে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে ওইপাড়ে গিয়ে শ্যামলি পরিবহনের ঠিক করে রাখা গাড়িতে উঠে পড়লাম বেলা দেড়টা নাগাদ পৌছে গেলাম শিলিগুড়িতে। সেখান থেকে ভাড়া করা জিপে করে রওনা হলাম দার্জিলিং এর উদ্দেশ্যে। জিপের ভাড়া জনপ্রতি ২৫০ টাকা।শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পৌছাতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘন্টা।

received_1901173406722271.jpeg

দারুণ রোমাঞ্চকর পথ পেরিয়ে যখন দার্জিলং ঢুকলাম ভীষণ মুগ্ধ হলাম। দার্জিলিং ঢোকার মুখেই চোখে পড়লো সেই বিখ্যাত টয়ট্রেন স্টেশন ঘুম। একছুটে গিয়ে ছুঁয়ে দেখলাম স্বপ্নের ট্রয় ট্রেন যা এতদিন দেখেছিলাম সিনেমায়। প্রায় সন্ধ্যার মুখে গোধুলির আলো আধারীতে স্বপ্নের বাস্তবায়ন সারা জীবনের জন্য মনে গেঁথে রইলো।

received_1139789639759142.jpeg

received_3111502479169588.jpeg

ঠিক সন্ধ্যার মুখে চেক ইন করলাম হোটেলে। একেবারেই ম্যালের কাছে ছিলো হোটেলটি নাম ক্যাপিটাল। রুমভাড়া পড়েছিলো ২৫০০ হাজার রুপি। দার্জিলিং এ বিভিন্ন মানের হোটেল আপনি পাবেন ৭০০ রুপি থেকে দশ হাজার রুপির হোটেল খুঁজে নিতে পারেন নিজের বাজেট অনুযায়ী। ম্যালের যত কাছে থাকবেন ভাড়া ততই বাড়বে আর যদি বাজেট কম হয় পাহাড়ের নীচের দিকে নামলে সস্তায় পেয়ে যাবেন হোটেল। হোটেলে লাগেজ রেখে ফ্রেস হয়ে ছুটলাম রাতের খাবার খেতে হাস্তি ভাস্তি রেষ্টুরেন্টে সেখানে শুধুই ভেজ আইটেম পাওয়া যায়। রুটি,সব্জি পুরি, চাউমিন, ইডলি,দোসা সব পাওয়া যায়। আমার পছন্দের মসলা দোসা দিয়ে খাওয়া শেষ করে হোটেলে ফিরলাম। দীর্ঘ জার্নির ক্লান্তিতে বিছানায় যাওয়া মাত্রই হারিয়ে গেলাম ঘুমের রাজ্যে। পর দিন সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে রওনা দিলাম ম্যালের উদ্দেশ্যে। সেখানে শীতের পোশাকের পশরা সাজিয়ে বসে আছেন দোকানীরা। দার্জিলিং এ আমার সবচেয়ে পছন্দের জায়গা এই ম্যাল ,ম্যালের শেষ মাথায় রাখা বেঞ্চে বসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে দেখতে অনায়াসে কাটিয়ে দেয়া যায় একটা বেলা।নানান রকম শৌখিন পণ্য, চা-কফি নিয়ে হাজির মানুষ জনের সাথে কথা বলতে বলতে দুপুর গড়িয়ে এলো। আজ হোটেলে রেস্ট নেবো পরদিন আপনাদের ঘুরিয়ে আনবো দার্জিলিং এর টুরিস্ট স্পট থেকো তাই অপেক্ষায় থাকুন দ্বিতীয় পর্বের।

received_613137186419051.jpeg

received_467283474927252.jpeg


আমি সোনিয়া বাংলাদেশি। বাংলায় লিখি গান-কবিতা। ভালোবাসি দেশ বিদেশ ঘুরতে। অবসর কাটে বই পড়ে গান শুনে। জীবনের বোধ আনন্দে বাঁচো।

Sort:  
 2 years ago 

বাহ্ সুন্দর একটা সময় কাঠিয়েছেন আপু । আপু আপনার দার্জিলিং ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আমি দার্জিলিং কখনো যায়নি। কিন্তু ইচ্ছা আছে কোন দিন যাওয়ার। জানি না কবে যাওয়া হবে। সুন্দর একটি আনন্দময় মুহূর্ত কাটানো কিছু কথা আমাদের মধ্যে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

খুবই দারুন সময় কাটিয়েছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো,দার্জিলিং দৃশ্য গুলো খুবই সুন্দর করে উঠিয়েছেন যা দেখে মুগ্ধ। সব থেকে ভালো লাগছে আপনি পোস্ট এর মধ্য সব তথ্য দিয়েছেন এই তথ্য আমরা যারা নতুন যাবো তাদের জন্য হেল্পফুল। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনি ভ্রমণের মুহূর্তগুলো খুবই অসাধারণ ভাবে কাটিয়েছেন। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দার্জিলিংয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার সুযোগ হলো। আসলে ঐ স্থানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুবই অসাধারণ। ফটোগ্রাফি খুবই দুর্দান্ত ছিল। আশা করি আপনি এই ধরনের পোস্ট আরো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করবেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

যাবো যাবো অনেক দিনের স্বাদ, দার্জিলিং যাবো ভ্রমনে। মাত্রতো পাসপোর্ট প্রস্তুত হলো তার উপর আপনার ফটোগ্রাফিগুলো আরো বেশী লোভ জাগিয়ে দিলো। হয়তো খুব দ্রুততম সময়ে ইচ্ছেতা পূর্ণতা পাবে। ধন্যবাদ

 2 years ago 

যাবার আগে টিপস নিয়ে যাবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.12
JST 0.031
BTC 68916.78
ETH 3733.42
USDT 1.00
SBD 3.73