সাজেকে মেঘ পাহাড়ের লুকোচুরি
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আমি তো বেশ ভালো আছি, দীর্ঘদিন পর আমার আম্মা আমেরিকা থেকে দেশে এসেছে। তাই আনন্দেই কাটছে দিন,সারাক্ষণই মনে হয় আর ভয় নেই, কিছু হলেই সে ছুটে আসবে আর শক্ত করে আমার হাতটা ধরবে। আমি গ্রুপে নতুন, আপনারা কি আমার পোষ্ট দেখছেন?
।
*দুর্গম পথ পেরিয়ে পাহাড় বেয়ে যখন সাজেক পৌছাবেন তখন মুহূর্তেই সব ক্লান্তি দুর হয়ে যাবে। রাস্তার মাঝখানে দাড়ালে একপাশে বাংলাদেশের সারি সারি পাহাড় অন্যপাশে যতদুর চোখ যায় ততদুরই ভারতের মিজোরামের পাহাড়। সাজেকে থাকার জন্য রয়েছে বেশ কিছু হোটেল আর রিসোর্ট,সারা নীল কুটির, মেঘপুন্জি,সেনাবাহিনীর একটি রিসোর্ট বেশ জনপ্রিয়। তবে পিক টাইমে গেলে বুকিং দিয়ে যেতে ভুলবেন না। আমরা ছিলাম সারা নীল কুটিরে। কাঠের তৈরী রিসোর্টটি সত্যিই চমৎকার। আর সবচেয়ে ভালো লেগেছে যেটা সেটা হলো রির্সোটের রুমে বসে দেখা যায় সামনের সারি সারি পাহাড়, আর সেই পাহাড়ের গায়ে মেঘেদের লুকোচুরি। *
যারা সাজেক যাবেন তাদের একটা তথ্য জানা জরুরী। সাজেকে রাত ১১ টার পর বিদুৎ চলে যায় কোন কোন হোটেলে অবশ্য জেনারেটর চলে তবে সারারাত নয়। পাহাড়ে প্রচন্ড মশার উৎপাত তাই স্প্রে, ওডোমাস,এবং মশারী নিতে ভুলবেন না।
আমি আমার বাচ্চা আর হাজবেন্ড আমরা তিনজনেই গিয়ে ছিলাম এই ট্যুরে। ঢাকার কমলাপুর থেকে বাস ছেড়েছে রাত১১ টায় ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই পৌছে গেছি খাগড়াছড়িতে। সেখানে একটা রেষ্টুরেন্টে ফ্রেস হয়ে নাস্তা খেয়ে সকাল নয়টা নাগাদ রওনা হয়েছি সাজেকের উদ্দেশ্যে। আগে থেকে বুক করা ছিলো চান্দের গাড়ি, এই গাড়িতে অবশ্য আমারদের সহযাত্রি ছিলো আরো কয়েকজন। সাজেকে ঢোকার আগে সেনাবাহিনীর পারমিশন নিতে হয়। সেজন্য অনেকগুলো গাড়ি একসাথে জড়ো হয় একটা জায়গায়। সেখানে পাহাড়ি লোকেরা নানা রকম ফলের পশরা সাজিয়ে অপেক্ষায় থাকে পর্যটকদের জন্য।আমরা এখানে মিষ্টি পাহাড়ি লেবু,পেয়ারা,পেঁপেঁ জাম্বুরা খেয়েছি মজা করে।
**
বেলা ১টা নাগাদ পৌছেছি সাজেকে। পুরো যাত্রা পথটাই এত অসাধারণ ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। রিসোর্টে পৌছে ফ্রেশ হয়ে দে ছুট পেট পূজা করতে ব্যাম্বু চিকেন,বাশের সব্জি, শুটকি ভর্তা দিয়ে ভরপেট খেয়ে রওনা হয়েছি রুই লুই পাড়া আর কংলাক পাহাড়ের উদ্দেশ্যে। রুই লুই পাড়া হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত পাহাড়ি গ্রাম। এই কংলাক পাহাড়ে উঠতে হাটতে হয়েছে প্রায় ১ ঘন্টা যা খুবই কষ্টকর। তবে ওঠার পর যে দৃশ্য তা সারা জীবন চোখে লেগে থাকার মত।মাঝখানে একটা ভিউ পয়েন্ট সেখান থেকে তাকালে পুরো ৩৬০ ডিগ্রি জুড়েই শুধু পাহাড় আর পাহাড়।পাহাড়ের সূর্যস্ত দেখতে এখানে ভীড় করে অনেক পর্যটক।
পাহাড়ের সূর্য ডোবা দেখে ফেরার পথে ব্যম্বু চা খেলাম।সেখান থেকে গন্তব্য হেলিপ্যাড এখানে দাড়িয়ে দেখলাম দুর পাহাড়ে বৃষ্টি ঝরছে।
পাহাড়ে সন্ধ্যাটা কাটিয়ে যখন রাতের বেলায় হোটেলে ফিরছিলাম হঠাৎই একরাশ মেঘ আমাদের ছুঁয়ে গেলো।। মুহুর্তেই কুয়াশার ভেতর হারিয়ে গেলাম আমরা। রাতের সাজেক অন্য রকম। হোটেলের বাইরে ভেতরে সব জায়গায় তৈরী হচ্ছে চিকেন বারবিকিউ,ব্যাম্বু চিকেন বারবিকিউ। পুরো রাস্তা জুড়ে মানুষের জটলা,গান বাজছে,সাথে বারবিকিউ এর সুঘ্রাণ।
ভোরের সাজেক অন্য রকম, আবহাওয়া ভালো থাকলে মেঘ বারান্দা ভেদ করে পৌছে যায় ঘরের ভেতর। যারা মেঘ আর পাহাড়ের লুকোচুরি দেখতে চান অনায়াসে ঘুরে আসতে পারেন সাজেক থেকে। দার্জিলিং এর পুরো আমেজ পেতে পারেন সাজেক থেকেই।
**লেখাটি পড়ে যদি সাজেক যেতে মন চায় কমেন্ট করতে ভুলবেন না। শুভকামনা সবার জন্য। **
সাজেক অনেক সুন্দর একটি জায়গা এখানে মেঘ লুকোচুরি করে প্রকৃতির সাথে মেঘের রাজ্য দেখতে আসলেই অনেক ভালো লাগে। আপনি অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে। অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন মেঘের। এমন সুন্দর ফটোগ্রাফি দেখতে খুবই ভালো লাগে। আপনার সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।সময় পেলে ঘুরে আসতে পারেন। আর মেঘ হাত দিয়ে ছুয়ে দেখতে চাইলে সাজেকে যেতেই হবে।
যদিও দেখে খুব যেতে ইচ্ছে করছে। আসলেই দারুন ছিলো আপনার আজকের পোষ্ট, ফটোগ্রাফি ছিলো অসাধারন। আপনার পোষ্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। অনেক ধন্যবাদ এমন অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ। আপনি মন দিয়ে পড়েছেন বুঝলাম।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমার খুব ভালো লাগে বারবার ইচ্ছে করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ছুটে চলে যায় কোন অজানাতে। আমার সাজেক যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল কিন্তু এবারে হলো না এবারে কক্সবাজার বান্দরবান ট্যুর দেওয়ার কারনে সাজেক যাওয়া হলো না। ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে যাবো।আপনারা অনেক ইনজয় করেছেন আর আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে। ফটোগ্রাফির মাধ্যমে হলেও সাজেক এর কিছু অংশ দেখতে পেরেছি।ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাদেরকে দেখাতে পেরে আমিও খুশি হয়েছি।
সাজেক মানেই মেঘের রাজ্য। বাংলাদেশের কয়েকটি সেরা টুরিস্ট জায়গার ভিতর সাজেক অন্যতম একটি। ঘোরাঘুরি করতে আমারও খুব ভালো লাগে তবে প্রকৃতির মজা নিতে বেশি ভালো লাগে। সাজেক কখনো যাওয়া হয়নি তবে যাওয়ার খুব ইচ্ছে আছে। সুন্দর দৃশ্য গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
এখন সাজেক ঘোরার উপযুক্ত সময় আকাশ পরিস্কার থাকলে মেঘ ধরতে পাওয়া যায় সহজেই। ট্রাভেল আমার নেশা, চোখ রাখবেন আমার পোষ্টে। ধন্যবাদ
আমার কাছে বাংলাদেশের সব থেকে প্রিয় একটি যায়গা এই সাজেক ভ্যালি।সাজেকে গেলে খুব কাছ থেকে মেঘের সাথে সাক্ষাত করা যাই যা সত্যি দারুন অনুভুতি অনেক সুন্দর লিখেছেন সাথে সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন।শুভ কামনা।
ধন্যবাদ। দার্জিলিং এর অনেক খানি খুজে পাওয়া যায় সাজেকে।
ধন্যবাদ।সত্যিই অসাধারণ জায়গা।
সাজেক যাওয়ার খুব ইচ্ছে আমার। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে যাওয়ার ইচ্ছে আরো বেড়ে গেলো। খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
এখন সাজেক যাবার জন্য পারফেক্ট সময়। স্বচ্ছ আকাশে মেঘের আনাগোনা মুগ্ধ করবে নিশ্চিত।
আপনার সাজেকের দৃশ্য গুলি খুবই সুন্দর হয়েছে।ছবিগুলো দেখে যাবার আগ্রহ অনেক বেড়ে গেলো।ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। সামনে আরো কিছু ভ্রমনের গল্প শেয়ার করবো।
সামনা সামনি সাজেক আরো সুন্দর, গেলে ফিরতে ইচ্ছা করবে না। ধন্যবাদ।
মন ভরে গেল পুরো লেখাটা পড়ে। মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম প্রতিটি ছবি। সাজেকের গল্প অনেক আগেই আমি শুনেছি। পাহাড় ভীষণ ভালোবাসি। যাওয়ার ইচ্ছে অনেক এই সাজেকে। বাংলাদেশ তো যেতেই হবে। আর যখন যাব এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে একদম ভুল করবোনা।
খুব ভালো লাগবে। একটু অবসর কাটানোর জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা খুজে পাওয়া মুসকিল। হাতে সময় নিয়ে গেলে মন ভরে যাবে।