স্বপ্নের স্নোফল দেখতে গিয়েছিলাম লাচং।@ shy-fox ১০% বেনিফিসিয়ারী

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? নিশ্চই ভালো। আমিও বেশ ভালো আছি।

প্রতিদিনের অভ্যস্ত জীবনে নানান জটিলতা কাজ করে, ব্যস্ততা পিছু ছাড়েনা। একঘেয়ে জীবনকে রঙিন করতে মাঝে মাঝেই ছুট দেই দূরে বহুদূরে।আজ আপনাদেরকে ঘুরিয়ে আনবো ভারতের সিকিম রাজ্যের লাচং থেকে। সেখানেই দেখেছিলাম স্বপ্নের স্নোফল।

FB_IMG_1641651702958.jpg


লোকেশন লিঙ্কঃ

https://w3w.co/clotted.squander.slims


ভাবুন তো চারিদিকে সাদা ধবধবে বরফ,তার মাঝখানে আপনি দাঁড়িয়ে আছেন। ইচ্ছে করলেই স্নো-বল বানিয়ে ছুড়ে দিতে পারছেন পাশে থাকা সঙ্গীর দিকে, বিষয়টা দারুণ মজার না "এরকম মজার অভিজ্ঞতা পেতে আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘদিন।

FB_IMG_1641651709572.jpg

বরফ ছোড়াছুড়ি করার এই মজার অভিজ্ঞতা পেতে যেতে হবে ভারতের নর্থ সিকিমের লাচং এ। আমরা বাংলাদেশ রাজধানী ঢাকা থেকে শ্যামলীর বাসে করে প্রথমে গিয়েছিলাম ভারতের শিলিগুড়িতে,বাস ভাড়া পড়েছিলো বাংলা দেশি পনেরোশ টাকা। সেখান থেকে ভাড়া করা প্রাইভেট কারে করে গিয়েছিলাম সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে। প্রাইভেট কারের ভাড়া পড়েছিলো ২৩০০ রুপি। আপনারা চাইলেই শেয়ারে জিপে করে যেতে পারেন সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ২৫০ রুপি।আমরা যেদিন গ্যাংটক পৌছেছি সেদিন রাত হয়ে গিয়েছিলো তাই ওই দিন যাইনি পরদিন ট্যাভেল এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে ৮ জন মিলে একটা প্যাকেজ নিয়েছিলাম লাচং যাবার জন্য। দুই দিনের যাতায়াত, খাবার, হোটেল গাড়ি ভাড়া সহ খরচ পড়েছিলো পার পারসন ৬০০০ টাকা।

FB_IMG_1641651763672.jpg

গ্যাংটক থেকে লাচং যেতে সময় লাগে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা।আমরা এমজি মার্গ থেকে চলে গিয়েছিলাম ট্যাক্সি স্ট্যন্ডে সেখান থেকে জিপে করে রওনা দিলাম লাচং এর উদ্দেশ্যে। গ্যাংটক থেকে লাচং যাবার পুরো পথটাই স্বপ্নের মত। দুইপাশে উচু পাহাড় মাঝে মাঝে ঘন সবুজ বন আর বাঁক পেরোতেই বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা দারুণ অনুভূতি। এই যাত্রাপথে চোখে পড়বে বিশাল বড় তিনটি ঝর্ণা তিস্তা ব্যারেজ যা সত্যিই মুগ্ধ করবে আপনাকে।

Screenshot_20220107-091516_Facebook.jpg

পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে যতই লাচং এর দিকে যাচ্ছিলাম ততই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হচ্ছিল। কারণ আগে থেকে আমরা আবহাওয়ার খোঁজ নিয়ে গিয়েছিলাম আবহাওয়ার তথ্য জানান দিয়েছিলো সন্ধ্যায় বরফ পড়তে শুরু করবে।এই ৮ থেকে ১০ ঘন্টার যাত্রা পথে ড্রাইভার উচ্চস্বরে গান বাজিয়েছেন এতে না কি ঝিমুনি আসেনা। মাঝখানে দুপুরের দিকে খাবারের জন্য আমরা যেখানে থেমেছিলাম সেই জায়গায় স্মৃতি ভোলার নয়। চারিদিকে পাহাড় মাঝখানে জঙ্গল পেরিয়ে রেস্তোরাঁ। সেখানে আমরা বাঁধাকপি দিয়ে সয়া, ডিম, ডাল আর আচার দিয়ে ভাত খেয়েছিলাম।ঠিক সন্ধ্যার পর আমরা যখন হোটেল পৌছালাম তখন অল্প অল্প স্নো পড়তে শুরু করেছে সেটাই আমার দেখা প্রথম স্নোফল। নিমেষেই সব ক্লান্তি ভুলে নেমে পড়লাম প্রথম স্নো গায়ে মাখতে।

FB_IMG_1641651794290.jpg

সারাদিনের দেখা সুন্দর দৃশ্য, প্রথম স্নো গায়ে মাখা সব কিছু মিলে ভালো লাগার যে অনুভূতি তৈরি হয়েছিলো তা ভোলার নয়। রাতের খাবার সারলাম গরম গরম সুপ, মটর পনির,আরো নানান রকম ভেজ আইটেম দিয়ে ইতিমধ্যে বেশ জোড়ে সোরে বরফ পড়তে শুরু করেছে রুম হিটার চালিয়ে দুটো কম্বল একসাথে গায়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।মাঝরাতে তীব্র ঠান্ডায় মাথা ব্যাথা শুরু করলে চেক করে দেখলাম টেম্পারেচার মাইনাস -২ এ নেমে গেছে। আরো কিছু বাড়তি শীতের কাপড় জড়িয়ে শুয়ে পড়লাম।পরদিন সকালের গন্তব্য ইয়ামথাং ভ্যালি।সকালে উঠে হোটেলের জানলা দিয়ে যে দৃশ্য দেখলাম তা এই জীবনে ভোলার নয়।

FB_IMG_1641651789656.jpg


FB_IMG_1641651798791.jpg

ঘুম থেকে উঠে জানলা খুলে চক্ষু চড়কগাছ। হোটেলের পেছনের পাহাড় গাছপালা হোটেলের সামনে সবখানে সাদা বরফ দিয়ে ঢেকে রয়েছে ঝটপট কিছু ছবি তুলে নাস্তা খাওয়া শেষ করে বেরিয়ে পড়লাম ইয়ামথাং ভ্যালির উদ্দেশ্যে। গাড়িতে ইয়ামথাং ভ্যালি যেতে সময় লাগলো প্রায় চল্লিশ মিনিট কিন্তু বিধি বাম সারারাত প্রচুর বরফ পড়ায় ১ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতেই রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে কিন্তু ওই অল্প সময়েই ইয়ামথাং এর যে রুপ দেখলাম তার বর্ণনা করা সম্ভব নয় ছবি দেখে আপনারাই বুঝে নেন। আজ এটুকুই পরের পর্বে আরো বিস্তারিত জানাবো।

কিছু ছবি আমার ফেসবুকে শেয়ার করা আছে


FB_IMG_1641651774349.jpg


FB_IMG_1641651777730.jpg


আমি সোনিয়া বাংলাদেশি। বাংলা লিখি গান-কবিতা। ভ্রমণ আমার নেশা। ভালোবাসি গান শুনতে বই পড়তে।

Sort:  

আপু আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আমারও বিভিন্ন জায়গা ঘুরতে অনেক ভালো লাগে। দেশ এবং দেশের বাইরে অনেক জায়গায় ঘুরেছি। তবে সামনে ইচ্ছা আছে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার। আপনার এই পোস্ট দেখে আমি অনেক অনুপ্রাণিত হলাম।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76491.95
ETH 2940.27
USDT 1.00
SBD 2.64