সবুজ গালিচার বিচ গুলিয়াখালি, চট্টগ্রাম।১০% shy-fox এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? নিশ্চই ভালো। আমি আছি মোটামুটি। বেশ কয়েক দিনের ঠান্ডা,কাশি সাথে বিষন্নতা কাটিয়ে এখন কিছুটা ভালো আছি। হঠাৎ পুরানো ছবি ঘাটতে গিয়ে গতবছরে ছবি খুঁজে পেলাম একেবারে ভিন্ন সবুজ সৈকত গুলিয়াখালি বিচের ছবি।উড়নচণ্ডী আমার সাথে চলুন আবারও ঘুরিয়ে আনি অসাধারণ এক সমুদ্র সৈকত থেকে।


IMG_2778.JPG

গুলিয়াখালি বিচের অবস্থান বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায়। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে পাঁচ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সহজেই চলে আসতে পারেন এই সবুজ বিচে। আমরা ব্যক্তিগত গাড়িতে গিয়েছিলাম আপনারা চাইলে সীতাকুন্ড বাজার থেকে একশো থেকে দেড়শো টাকা দিয়ে ভাড়া করা সিএনজি বা টেম্পোতে করে যেতে পারেন। তবে যাবার পথটা খুব আরামদায়ক নয়।


received_307608101185944.jpeg

প্রকৃতি ও গঠনগত দিক থেকে এই সমুদ্র সৈকত একেবারেই ভিন্ন। জোয়ারের সময় সৈকতের এক রুপ, ভাটার সময় অন্য রুপ। ভাটার সময় সমুদ্রের পাড়ে যেতে হলে কাদায় ভরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হবে।আর জোয়ারের সময় পুরো এলাকা জুড়ে শুধুই পানি, ছোট ছোট নালা গুলিতেও নৌকা চলে।


IMG_20201219_132047.jpg

এই বিচের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো একদিকে দিগন্ত জোড়া জলরাশি,অন্যদিকে ঘন সবুজ কেওড়া বন।কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারিদিকে শ্বাসমূল দেখা যায়। এই পরিবেশ সোয়াম ফরেষ্ট বা ম্যানগ্রোভ বনের মত। আপনি যদি ভাটার সময় যান তাহলে ঘন সবুজ বন পেরিয়ে, দীর্ঘ কাঁদামাখা পথ পেরিয়ে সমুদ্রের খুব কাছে গেলে দেখা পাবেন বক,সারস নাম না জানা আরো অনেক সুন্দর পাখির। তবে বলে রাখি স্থানীয়রা বলে এই বিচে বিষাক্ত সাপের ছড়াছড়ি।


received_1125044371364576.jpeg

এই বিচের দুই রকম সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে বেশ খানিকটা সময় হাতে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের হাতে সময় কম ছিলো তাই জোয়ারের সময়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারিনি। নৌকায় করে বনের ভেতর ঘুরতে না পাড়ার আফসোস মিটিয়েছি পাড়ে বেধে রাখা নৌকায় হেলান দিয়ে।


FB_IMG_1636819955383.jpg

গুলিয়াখালী সৈকতকে ভিন্নতা এনে দিয়েছে ঘন সবুজ ঘাস। দুর থেকে দেখলে মনে হয় কেউ যেন ঘন সবুজ কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছে বিচের সামনে। ভাটার সময় সেই ঘাসের কার্পেটে বসেই দেখে নিতে পারেন কেওড়া বন, শ্বাস মুল আর পাশ বয়ে চলা ছোট খালের পানিতে আটকে পড়া ছোট ছোট মাছ।


FB_IMG_1636819940474.jpg

স্থানীয় মানুষের কাছে এই বিচ মুরাদপুর বিচ নামেই পরিচিত। ২০১৪ সালের আগে এই বিচের খোঁজ খুব বেশি মানুষের জানা ছিলো না।অল্প পরিচিত এই সৈকতে মানুষ জনের আনাগোনা কম বলে এখানে আপনি পাবেন নিরিবিলি পরিবেশ। তবে এই বিচের আশেপাশে থাকার কোন হোটেল নেই খাবারের ভালো কোন ব্যবস্থা নেই।বাংলাদেশের যে কটা বিচ আছে এই বিচ তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ঘন সবুজ ঘাসের কার্পেট পাশ দিয়ে চলা ছোট খাল আর সবুজ কেওড়া বন আপনাকে মুগ্ধ করবে
নিশ্চিত।

লোকেশনলিঙ্ক
https://w3w.co/redouble.claim.galleries

Sort:  
 3 years ago 
গুলিয়াখালী সৈকতকে ভিন্নতা এনে দিয়েছে ঘন সবুজ ঘাস। দুর থেকে দেখলে মনে হয় কেউ যেন ঘন সবুজ কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছে বিচের সামনে।

আসলেই আপনি খুব সুন্দর কথা বলেছেন। দেখে তো তাই মনে হচ্ছে, এ যেন সবুজের সমারোহ। আমারও সেখানে যাওয়ার খুব ইচ্ছা আছে। কিন্তু সময়ের অভাবে সেখানে যেতে পারছিনা। আপনার ছবিগুলো সত্যিই অসাধারণ হয়েছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

এত সুন্দর বিচ বাংলাদেশে আছে গুলিয়াখালিতে না গেলে বুঝতেই পারতাম না। সময় পেলে দেখে আসবেন ভালো লাগবে।

 3 years ago 

হ্যা আপু,মুরাদপুর বিচ দেখতে অসাধারণ সুন্দর হয়তো আপনি অনেক আগে এসেছেন তাই পরিবেশ ছিল অন্যরকম।তবে এখন অনেকটাই উন্নত হয়েছে পর্যটক এখানে আসে ঘুরাঘুরি করতে। তবে সমুদ্রের যে সৌন্দর্য সবুজ ঘাসের গালিচা এখনো আগের মতই আছে। চারিদিকে খাবারের রেস্টুরেন্ট সবকিছুই এখন উন্নত হয়েছে।আপু,আপনার প্রথম ফটোগ্রাফার টা দেখে আমার মনে হচ্ছিল আমি এই জায়গাটা চিনি। তাই পুরোটা লেখা পড়ে বুঝতে পারলাম এটা আমাদের সীতাকুণ্ড মুরাদপুর বিচ। ধন্যবাদ আপু

 3 years ago 

আমি দেড় বছর আগে গিয়েছিলাম। বিচ ভালো লেগেছিলো কিন্তু অন্য কিছুই সুবিধাজনক মনে হয়নি, হয়তো এখন ভালো হয়েছে।

 3 years ago 

গুলিয়া খালি সিবিচ অনেক সুন্দর একটা জায়গা এবার সেখনে ট্রর দিব।আমার কাছে জায়গাটা খুবই ভালো লেগেছিল ২০১৯ সালে ফেচবুকে দেখে।

আপনার দুরদান্ত ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আরো সুন্দর ভাবে দেখলাম।খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।শুভ কামনা রইলো।

 3 years ago 

গুলিয়াখালি সবুজ গালিচার বিচ খুবই সুন্দর একটা দৃশ্য। আমি প্রথমে দেখে মনে করেছিলাম এটা হয়তো কোনো ওয়ালমেট এর ছবি। পরে বিস্তারিত পড়ে এবং আপনার ছবিগুলো দেখে বুঝলাম যে না এটা সত্যি সুন্দর একটা জায়গা। এটা আমাদের বাংলাদেশের চট্টগ্রামে অবস্থিত। আপনার বিষন্নতার দিনে পুরনো এ্যালবাম থেকে আমাদেরকে অনেক সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। আমাদের সাথে এত সুন্দর ফটোগ্রাফি ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

আপু আপনি এত সুন্দর করে জায়গাটির বর্ণনা দিয়েছেন ইচ্ছে করছে গিয়ে দেখে আসতে। চেষ্টা করবো অবশ্যই গিয়ে জায়গাটা ঘুরে আসতে। আপনার মাধ্যমে এত সুন্দর জায়গাটি সম্পর্কে জানতে পারলাম।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকেও।পৃথিবীর অনেক দেশের বিচ দেখেছি কিন্তু গুলিয়াখালির মত এত সবুজ বিচ আর কোথাও দেখিনি।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57621.01
ETH 3094.14
USDT 1.00
SBD 2.32