নাটকের প্রথমেই আমরা দেখতে পাবো নাদিয়া মীম আর আর আফরান নিশো একটি পার্কে বসে থাকে এবং মীম বলতে থাকে সে অনেকবার বলছে অনেকবার বুঝাইছে কিন্তু নিশো বুঝে নাই৷ এবং পরে একটা বিয়ের কার্ড হাতে ধরায় দেয়। অনেক কড়া কড়া কথা শুনায় মীম নিশোকে এবং বিয়ের দাওয়াত দেয় নিজের গার্লফ্রেন্ড এর ।
নিশো খুব খুশি হয় এতে৷ তা দেখে মীম বলে শোকে কি সে পাগল হয়ে গেসে নাকি কিন্তু নিশো জানায় সে খুশি পাগল হয়ে গেছে। অনেক দিন মীমকে তার গার্লফ্রেন্ড হিসেবে সহ্য করতে হয়েছিলো যা থেকে সে এখন মুক্ত। সে বলে একটার পর একটা গার্লফ্রেন্ড না আসলে তার ভালো লাগে না৷
এরপর স্টাইল মেরে নিশো চলে যায় মীম দাঁড়ায় থাকে। এখানে কিছু সুন্দর ভয়েজে নিশোর কথা ব্যাকগ্রাউন্ডে চলে৷
গুরুত্বপূর্ণ কথাটা হলো
"অলয়েজ আমার রিলেশনশিপ স্টাটাস একটাই - আই আম সিংগেল"। তারপরই সুন্দর থিম সং শুরু হয়ে যায় নাটকের৷
পরের দৃশে সোজা নিশো হাতে গিফট নিয়ে মীমের বিয়েতে চলে যায়। গিয়ে কিছুক্ষণ হাসি তামাশা করে এবং ছবি তুল। নিশো যখন চলে আসতে থাকে তখন মীম গিফট খুলে দেখে তাতে লেখা
" তুমি আম্মু হবা, সেদিন আমায় ভুলে যাবা"৷
যখন নিশো অনুষ্ঠান থেকে চলে আসতে যায় তখন তার চোখে ধরা পরে সুন্দরী তানজিন তিশা৷ দেখে মনে মনে বলা শুরু করে যেখানে তার পুরনো সম্পর্ক শেষ হয় সেখান থেকেই তার নতুন রিলেশন শুরু হয়। এবং আরো বলে, বিয়ে বাড়ি হলো মেয়ে পটানোর পার্ফেক্ট জায়গায়।
তারপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ভঙ্গিতে এর ওর ছবি তোলার ভানে তিশার ছবি তুলতে থাকে৷ এবং পরে গিয়ে মীমের কাছে গিয়ে জিগায় সুন্দরী মেয়েটা কে। সে জানায় তার মেয়েটি তার হাজবেন্ডের কাজিন৷
এরপর বুকে হাত দিয়ে হ্যার্ট এটাক করার ভান করতে করতে তিশা কাছে যায়৷ গিয়ে জিজ্ঞেস করে সে হার্টের ডাক্তার কিনা৷ তিশা বলে যে সে কি এম্বুলেন্স ডাকবে? পরে নিশো বলে যে আপনি কি বুঝেন না যে এ এটাক কিসের। আপনার মতো এতো সুন্দরী দেখে আমার হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে৷ তিশা হেসে দেয়৷ পরে বিয়াই বেয়াইন সম্পর্কে তারা কথা বার্তা চালিয়ে যেতে থাকে৷
পরে তিশা একটি চেয়ায়ে বসে থাকে আর নিশো গিয়ে কথা বলত্র বলতে একটা গোলাপ ফুল দেয় তিশা কে৷
এরপর তিশা অনুষ্ঠান থেকে বাসায় চলে আসে। টেবিলে রাখা গোলাপ টা হাতে নিয়ে মনে মনে খুশি অনুভব করতে থাকে। তার মা আসে। এসে কিছু বলে যায়। ওদিকে নিশো তার এক্সগার্লফ্রেন্ডকে ফোন দেয় তিশার নাম্বারের জন্য। আধা ব্ল্যাকমেইল করে সে নাম্বার আদায় করে মীমের কাছ থেকে৷ তিশা তার গার্লফ্রেন্ড এর তালিকায় ১৩ নাম্বারের৷ আন লাকি থার্টিন বলে চিহ্নিত হয়৷ নাম্বার নিয়ে ফোন দেয় তিশাকে। পরিচয় দেয়। হাল্কা কথা হয়৷
তারপরের দিন তারা দেখা করে। দেখা যে রেস্টুরেন্টে করে সেখানে একটা পরিচিত মেয়ে এসে নিশোকে জড়ায়ে ধরে। যা দেখে তিশা অবাক হয়। এরপর তিশা বলে ভাবি মানে মীম তাকে নিশোর থেকে দূরে থাকতে বলেছে৷ কেন বলেছে সেটাও বলে। পরে নিশো বলে যে মীম তাকে পছন্দ করতো কিন্তু সে পাত্তা দিতো না তাই সে এমন বলছে৷ সত্য জানার জন্য মীমকে ফোন দিয়ে নিশো তিশাকে বলতে বলে যে মীম কিভাবে জানে নিশো অতটা ভালো না৷ সে কি তার প্রেমিকা ছিলো কিনা৷ তিশা করেও তা৷ কিন্তু মীম সব টা লুকিয়ে ফেলে৷
এরপর আরেক দিন দেখা হয়৷ সেদিন নিশো বাইক নিয়ে আসে এবং বাইকে উঠতে তিশা অস্বীকৃতি জানালে তাকে মামিস গার্ল বলে খাপানোতে সে জেদ করে বাইকে উঠে ঘুরে বেড়ায়৷ তিশার ভালোই লাগে৷
এরপর একদিন রাত ১২ টায় নিশো তিশাকে বের হতে বলে। তাকে এডভেঞ্চার দিতে চায়৷ এবারও তিশা বের হতে চায় না৷ তখন আবার নিশো তাকে মামিস গার্ল বলে টিটকারি মারে৷ ঠিক ১২ টায় নিশো বাইক নিয়ে তিশাদের বাসার সামনে এসে হর্ণ বাজালে তিশা লুকিয়ে বের হয়ে যায়৷ মধ্য রাতে ঘোরাঘুরি শেষে তারা বাড়িতে এসে পড়ে৷ তিশার কাছে খুব ভালো লাগে ব্যাপারটা৷
এভাবে চলতে চলতে প্লেবয় নিশো একটা সময় তিশার প্রতি প্রকৃতপক্ষেই দূর্বল হয়ে পড়ে৷ এবং একদিন সে সিদ্ধান্ত নেয় যে সে তিশাকে প্রপোজ করবে৷
তিশাকে ফোন দিয়ে বলে যে তার গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে৷ পরের দিন দেখা করে নিশো সব খুলে বলে এবং সে তিশাকে প্রপোজ করে বসে৷ কিন্তু তিশা আসলেই নিশোকে ভালোবাসে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য কিছুটা সময় নেয়৷ বলে যে সে আজকে থেকে কিছুদিন মোবাইল ফোন যোগাযোগ নিশোএ সাথে রাখবে না৷ যদি সে থাকতে পারে তাহলে সে বুঝবে যে সে নিশোকে ভালোবাসে৷ আর যদি এমনটা না হয় তাহলে সে তার এই সিমটি আর অন করবে না৷ নিশো বুঝে নেয় যে এ মেয়ে তার প্রেমে পড়বে না৷ সে একটা ছ্যাকা খাওয়া ভাব নিয়ে বারে চলে যায়৷
বারে গিয়ে একটা মেয়ের তার ব্রেকাপ পার্টি দিচ্ছিলো তা জানতে পারে এবং নিশো গিয়ে সে মেয়েটির কাছ গিয়ে আলাপচারিতা শুরু করে দেয়৷ কিছুদিন ঘোরাঘুরি করে এবং সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে৷
তার প্রায় ৩ মাস পর তিশা নিশোকে ফোন দিয়ে দেখা করতে চায়৷ তারা একটা রেস্টুরেন্টে দেখা করে৷ এবং পাব্লিক প্লেসেই তিশা নিশোকে জড়িয়ে ধরতে যায়৷ নিশো বাধা দেয় এবং বলে সে তো এখন অন্য একটা রিলেশনে আছে৷ তা শুনে তিশা কষ্ট পায়৷ এবং কান্নাকাটি করে চলে যায়৷
নিশোর কাছেও অনেক খারাপ লাগে৷ সে তার গার্লফ্রেন্ড এর কাছে যায় এবং তার গার্লফ্রেন্ড তার সাথে ব্রেকাপ করে দিয়ে নতুন আরেকটা রিলেশনে চলে যায়৷ নিশো দেবদাস হয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়ায়৷
পরে নিশো তিশাকে ফোন দেয় কিন্তু ফোন তিশা রিসিভ করে না৷
তিশারা পরিবারসহ বিদেশে তার বাবার কাছে চলে যাওয়ার সময় নিশো এসে হাজির হয় এবং বলে তাকে একটা সুযোগ দিতে৷ সে ভালো প্রেমিকা হয়ে দেখাবে৷ তিশা যেমনভাবে তাকে চায় সে তেমন হয়েই দেখাবে৷ কিন্তু তিশা তাও না মেনে চলে যায়৷ দুজনেই মন থেকে কষ্ট পায়৷ বিদায় বেলায় নিশো তিশাকে বলে সে ভালো হয়ে যাবে এবং তার অপেক্ষা করবে৷ কিন্তু তিশা জানায় সে আর ফিরবে না৷
এরপর বহুদিন নিশো সকল প্রকার মেয়ে থেকে বিরত থাকে৷ মেয়ে দেখলে উপরে তাকিয়ে থাকে, মাটিতে তাকিয়ে থাকে৷ নিজেকে ঢেকেও রাখে মাঝে মাঝে৷ এমনকি তার রুমে থাকা একটি মেয়ের চিত্রও সে নামিয়ে রাখে৷ এভাবে কাটতে থাকে সময়৷
কিন্তু বানর বুড়ো হলেও গাছে উঠা ছাড়া যেমন চলতে পারে নিশোরও প্রেম ছাড়া চলে না৷ হঠাৎ ২ মাস পর একদিন তার ফ্ল্যাটে দেখা দেয় সালহা খানম নাদিয়া৷ নাদিয়াকে দেখে সে প্রেমে পড়ে যায়৷ এবং তাকে পটানোর ধান্দায় আবার মেতে ওঠে৷
![S20809-12261723.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVymZUFDeBrtkmc3r3QmDcLDxhHw2qv7GemhQSz2Zzp6t/S20809-12261723.jpg) |
পরিচালক জাকারিয়া সৌখিন খুব ভালোভাবে প্রতিটি কাস্টকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন৷ কিন্তু তাও কেন যেন আমার বেশ কয়েকটি জায়গায় বেশ খাপ ছাড়া লেগেছে৷ নাটকটিতে আসলে হয়তো পরিচালক বিনোদন ধর্মী করতে চেয়েছেন৷ কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠে নি৷ এখানে সব কিছুর কেমন যেন একটা ব্যালেন্স হয়ে গিয়েছে৷ যা আসলেই খুব ধারুণ দক্ষতার পরিচয়৷
গেস্ট আর্টিস্ট হিসেবে কাস্ট করা সালহা খানম নাদিয়া এবং নাদিয়া মীম, দুজনই নিজেদের যতটুকু দেখানো যায় দেখিয়েছেন। মেইন ফোকাসে থাকা আফরান নিশো এবং তানজিন তিশা বেশ ভালো অভিনয় করে আমরা সবাই জানি৷ আমার কাছে এখানে ব্যক্তিগত ভাবে তিশার রোল প্লে টা বেশ সুক্ষ্ম মনে হয়েছে এ নাটকে৷ সিব চরিত্রর ঢুকে যাওয়া আমাদের সকলের পছন্দের অভিনেতা আফরান নিশোর অভিনয় টা হয়তো আরেকটু ভালো করার বা হওয়ার সুযোগ ছিলো।
অভারল সব কিছু ঠিক ঠাক৷ ডায়লগ থেকে শুরু করে চিত্রধারণ৷ সব কিছুতেই একটা বেশ দারুণ সৌন্দর্য উপলব্ধি করার মতো একটা নাটক হয়েছে।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRsJKf2r9DWRdqqiCgFRUu5YUjJBJQDYwV131Y9fgbQ7K/siam.png)
খুবই চমৎকার একটি নাটক রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এর আগে আমি এই নাটকটি দেখতে গিয়েছিলাম কিন্তু কোন এক সমস্যার কারণে দেখা হয়নি। সংক্ষিপ্ত আকারে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাই। সময় পেলে দেখে নিয়েন। ভালো লাগবে আশা করি। সবাই ভালোই অভিনয় করেছেন নাটকটিতে৷
ইউটিউব থেকে চোখের সামনে আপনার ভালোই একটি নাটক চলে এসেছে যার ফলে আপনি দেখতে পেয়েছেন। ইউটিউবে নাটক দেখতে আমারও অনেক ভালো লাগে আমিও অনেক নাটক দেখি। আপনি খুব সুন্দর করে নাটকটি রিভিউ করেছেন। নাটকটি যদিও আমার দেখা হয়নি তবে আপনার রিভিউটি পড়ে চোখের সামনে ভেসে উঠলো নাটকটি দেখার ইচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ আপু।
দেখে নিতে পারেন একটু টুক করে নাটকটি। বেশ ভালোই। সব কিছু মিলিয়ে ভালো অভিজ্ঞতা হবে বলে আশা রাখি
আফরান নিশো ভাইয়ের নাটক মানেই তো হিট। আমার কাছে অনার নাটক দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। এই নাটকের ট্রেলার দেখেছি কিন্তু এখনো নাটকটির দেখা হয়নি। আপনি রিভিউ দিয়েছেন মানে দুর্দান্ত একটি নাটক। আমি অবশ্যই নাটকটি দেখব। আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করে উৎসাহিত করার
জন্য। আসলেই নাটকটি অনেক উপভোগ্য ছিল। প্রতিটি চরিত্র, প্রতিটি ডায়লগ ,প্রতিটি স্থান সবমিলিয়ে একটি দুর্দান্ত নাটক । সময় পেলে অবশ্যই দেখে নেবেন।
নাটকটি অনেক আগে দেখেছিলাম এবং খুব চমৎকার একটি নাটক। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ রিভিউর মধ্যমে আমায় আবার মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে । আসলে নাটকটি অনেক দুর্দান্ত ছিল । এক ঘন্টা আমার ভালো সময় কেটেছে । নিশো মানেই তো আগুন।
এটা সত্য কথা বলেছেন আরফান নিশোর অভিনয় নিখুত হয় এবং আমার অনেক প্রিয় একজন অভিনেতা ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া আপনি। গতকাল রাতে আমি এই নাটকটি দেখছি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। তানজিন তিশা ও আরফান নিশোর নাটক আমি সব সময় দেখি।
যে আপু তানজিন তিশা এবং আরফান নিশোর আসলেই সত্যিই ভালো নাটক করে ।ধন্যবাদ আপু আপনাকে
এই নাটকের ছোট ছোট ক্লিপ ফেসবুকে দেখেছিলাম সেখানেই আমার খুব ভাল লেগেছিল, ভেবেছিলাম নাটকটা দেখব আপনার রিভিউ পড়ে খুবই ভালো লাগলো সময় হলে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব শুভকামনা আপনার জন্য।
জি ভাই অবশ্যই সময় পেলে নাটকটি দেখে নিবেন। খারাপ লাগবে না দেখে।
ধন্যবাদ ভাই