নাটক শুরুর প্রথম দিকে আমরা দেখতে পাবো একটা লোক রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে এবং কিছু লোক রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে আছে। দাঁড়িয়ে থাকা লোকগুলো একলা হেঁটে যাওয়া লোকটিকে ছিনতাই করে । এখানে দেখতে পাওয়া যাবে রাস্তার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে নাটকের নায়ক আফরান নিশো। এখানে তার ভয়ংকর চেহারাও আমরা দেখতে পাবো।
এর পরের দৃশ্যে দেখা যাবে একটি পরিবারে স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে হালকা একটু পারিবারিক দ্বন্দ্ব। ভদ্রমহিলাটি নিতু নিতু বলে চিৎকার করবে, এক পর্যায়ে নিতু চরিত্রে অভিনয় করা সাবিলা নূর জিজ্ঞেস করবে কি হয়েছে মা। তার মা তার কাছে দেয়া টাকা ফেরত চাইবে বিল পরিশোধের জন্য। সাবিলা নূর জানাবে সে টাকা তার কাছে নেই, সে অন্য এক বন্ধুকে ধার দিয়েছে ।
এরপর আমরা দেখতে পাবো সাবিলা নূরের আব্বা বাথরুমে আটকা পড়বে, মানে বাথরুম লক হয়ে যায়। সাবিলা নূর গেট ম্যানকে ফোন করে একজন তালা চাবিওয়ালা লোক পাঠাতে বলে।
এর পরের দৃশ্য আমরা দেখতে পারব কেউ একজন কলিং বেল বাজাচ্ছে সাবিলা নূর দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে এবং সেখানে দেখা যায় আফরান নিশো কে। প্রথম দেখায় তারা একজন আরেকজনের দিকে বেশ খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকে । এরপর সাবিলা নূর তাকে ভিতরে আসতে বললে নিশো ইতস্তত বোধ করে। জোর করে বলায় সে ঘরের ভিতর ঢুকে সাবিলা নূর তাকে নিয়ে বাথরুমের দিকে যায় এবং বলে তাড়াতাড়ি খুলতে। আরফান নিশো কিছু বুঝে উঠতে পারে না, বলে আমি বাথরুমে যাব কেন। সাবিলা নূর তাকে বলে আপনি তালা চাবি ওয়ালা না ? নিশো বলে না। সাবিলা নূর বলে তাহলে ভিতরে এসেছেন কেন?
নিশা জানায় আপনি আমাকে জোর করে ভিতরে এনেছেন। আমি তো এসেছি বাড়ি ভাড়া নিতে ওদিকে বাথরুমে আটকে থাকা সাবিলা নূরের আব্বা বলে, ঘরের লক্ষী এসেছে। তাড়িয়ে দিস নে, বসতে দে।
এরপরে নিশো একটা স্ক্রুড্রাইভার আনতে বলে এবং সেটা দিয়ে বাথরুমের লক খুলে দেয় খুলে দেওয়ার পর সাবিলা নূরের আব্বা বেরিয়ে এসে নিশোকে জড়িয়ে ধরতে যায় এবং বলে বাড়ি ভাড়া দেব। নিশো জানায়, সে সিঙ্গেল। সাবিলা নূরের আব্বু বলে সমস্যা নেই, আমার জান বাঁচিয়েছো তুমি। আমি তোমাকে বাড়ি ভাড়া দিব। এদিকে সাবিলা নূর এবং তার আম্মু ইতস্তত করতে থাকে। বাড়ি ভাড়া ভদ্রলোকটি বলে ১০ হাজার টাকা এবং নিশো অগ্রিম পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে চলে যায়।
এর পরের দৃশ্যে আমরা দেখতে পাবো নিশো তার কিছু বই নিয়ে রুমটিতে উঠে পড়তেছে। সাবিনা নূর এসে হাজির হয় এবং নিশোর থাকার রুম খুলে দেয়। তারা হালকা পাতলা পরিচিত হয় । এরপর নিশো একটি হাতুড়ি পেরেক এবং একটি স্ক্রড্রাইভার চেয়ে বসে সাবিলা নূরের কাছে। সে সম্মতি জানায়।
তারপর আমরা দেখব নিশো হাতুড়ি দিয়ে দেয়ালে পেরেক ঠুকতে গিয়ে হতে ব্যথা পায়। পরে রুম থেকে বের হয়ে আসে। সাবিলা নূরের সাথে দেখা হয়। সাবিলা নূর ওষুধ এনে হাতে লাগিয়ে দেয়।
এরপর আমরা দেখব সাবিলা নূর এবং নিশো ছাদে বসে আছে । সামনে তাদের দুটো মগ। সাবিলা নূর নিশোকে একটি মগে কফি ঢেলে দেয় এবং খেতে বলে। খেতে খেতে তারা গল্প করতে থাকে।
এরপরেই দেখা যাবে সাবিলা নূর হঠাৎ নিশোর রুমে ঢুকে পড়ে এবং খুব আবেগ ঘন স্বরে নিশোকে বলে আপনি নাকি চলে যাচ্ছেন। নিশো বলে হ্যাঁ। দেশের বাড়িতে একটু ঝামেলা হয়েছে তাই যেতে হচ্ছে। চলে আসবে।
সাবিলা নূর তাকে প্রমিস করতে বলে সে যেন ফিরে আসে। নিশো সাবিলা নূরের হাত ধরে প্রমিস করে যে বেচে হোক মরে হোক ফিরে আসবে।
এ দৃশ্যে আমরা দেখব সাবিলা নূর এবং তার আব্বা-আম্মা টিভি দেখছে এবং মুড়ি মাখা খাচ্ছে, তারা আলাপ আলোচনা করছেন নতুন ভাড়াটিকে নিয়ে । ভাড়াটিয়া অনেকদিন হলো চলে গেছে আর আসেনি।
হঠাৎ করে কলিংবেল বাজে এবং দরজা খুলে দেখে নিশো এসেছে। তাকে তার রুমের চাবি দিয়ে দেয়।
এরপর এসে নিশো রুমে চলে যায় এবং ভয়ংকর কিছু কান্ড এর দৃশ্য তুলে ধরা হয়।
তারপর দেখা যাবে সাবিলা নূর বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তাতে হেঁটে যাচ্ছে রাস্তায় কিছু বখাটের ছেলে তাকে উত্ত্যক্ত করায় সে তাদের একজনকে চড় মারে। এতে ছেলেটি রেগে যায় এবং বলে একে আজকে রাতে তুলতে হবে।
সন্ধ্যার দিকে দেখা যাবে সাবিলা নূর রিক্সা করে ফিরতেছে একটি মাইক্রো কার তার সামনে দাঁড়ায় এবং সাবিলা নূরকে অপহরণ করে। অপহরণ করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং একটি ঘরে দেখা যায় কাজী এবং সেই বখাটে ছেলেটি জামাই সেজে বসে আছে। বলে তোমাকে বিয়ে করব। সাবিলা নূর হেসে স্বাভাবিকভাবে বলে সে তাকে ভালোবাসে এবং বিয়ে করার জন্য সে প্রস্তুত। ছেলেটি অবাক হয়ে যায়। এরপর সাবিলা নূর শাড়ি পড়তে পড়ে আসে এবং কাজী যখন নাম জিজ্ঞেস করে তখন সাবিলা নূর পুরুষ কণ্ঠে বলে খোদেজা বেগম। এশুনে ঘটক দৌড়ে পালায়।
এরপরের দৃশ্যে আমরা দেখব আফরান নিশোর কোলে সাবিলা নূর শুয়ে আছে একটি বদ্ধ ঘরে। সাবিলা নূরের জ্ঞান ফিরে এবং জিজ্ঞেস করে সে এখানে কেন , কিভাবে আসলো সে এখানে। নিশো জানায় সে হঠাৎ মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যায় এবং নিশো তাকে ধরে ফেলে। পরে সে বিশ্বাস যায় না বলে কান্ড টা আপনি ঘটিয়েছেন। আপনি আমাকে পছন্দ করেন বলে আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করছেন। এরপর হালকা পাতলা নিশো বলে যে সে যদি মানুষ না হয়ে ভুত হয় তাহলে নূর কি বিশ্বাস করবে। সাবিলা হেসে দেয়। বলে আপনি ভুত না হয়ে দৈত্য হলে ভালো হতো । আমার ইচ্ছা গুলো পূরণ করতে পারতেন। নিশো জিজ্ঞেস করে কি ইচ্ছা। সাবিলা নূর জানায় তার ইচ্ছে একদিন ঘুম থেকে উঠে সে দেখতে চায় তার আসে পাশে অনেক রকমের ফুল। এটা শুনে নিশো চলে যায়।
সকালবেলা উঠে সাবিলা নূর ছাদে যায় সাথে কে দেখে হরেক রকমের ফুল ফুটে আছে সে দেখে খুব খুশি হয় এরপর সে নিজের রুমে গিয়ে এসকে ধন্যবাদ জানায়। এবং তাকে জড়িয়ে ধরে।
তারপর দেখা যাবে সাবিলা নূর রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এবং বখাটে গুলো তাকে দেখে ক্ষমা চেয়ে খালাম্মা বলে ডাকছে।
তারপর আমরা দেখি বাড়ির দারোয়ান নিশোর রুমে ঢুকে পড়ে এবং স্যার স্যার বলে তাকে খুঁজতে থাকে। নিশোকে খাট থেকে উপরে ঘুমাতে দেখে সে ভয় পেয়ে যায় এবং দৌড়ে পালায়।
এরপর দেখা যাবে সাবিলা নূরের আব্বা খুব বেশি চিন্তিত অফিসের একটা ফাইল হারানোর বিষয় নিয়ে ফাইলটি হারিয়ে গেলে তার চাকরি যাবে এবং সেই সাথে জেল জরিমানাও হতে পারে। বিষয়টি সাবিলা নূর নিশোকে জানায় এবং নিশো বলে এসব নিয়ে চিন্তা না করতে।
এখন দেখা যাবে একজন লোকে ঘুমিয়ে আছে কেউ একজন তার গলায় চাপ দিচ্ছে বালিশেরও পাশ থেকে সে ভয় পেয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠে তার পাশে থাকা তার স্ত্রী তার এসব কান্ডে বিরক্ত হয়। আবার তারা ঘুমানোর চেষ্টা করে খানিক বাদে আবার সে ভূতের উপদ্রব এক পর্যায়ে তাদের কাথা ছুঁড়ে ফেলা হয় মানে ভুতে সরিয়ে ফেলে। এসব দেখে ভদ্রলোকের স্ত্রী খুব বিরক্ত হয় এবং ভদ্রলোকটিকে পাশের রুমে গিয়ে ঘুমাতে বলে। পাশের রুমে গিয়ে সে পানি খেতে চায় কিন্তু পানির জগ আপনা আপনি উপরে উঠে এবং তার মুখে পানি ঢেলে দেওয়া হয়। সে খুব ভয় পায় এবং জিজ্ঞেস করে কে। অশরীরী আত্মা উত্তর দেয় সে তার জম। এবং চুরি করা ফাইলটি ফেরত দিতে বলে। সে সেই রাতের বেলায় হাফপ্যান্ট পড়ে ফাইল হাতে নিয়ে দৌড়ে সাবিলা নুরদের বাসায় গিয়ে দিয়ে আসে।
এরপর রাতে সাবিলা নূর এবং নিশো ঘুরতে বের হয়। সাবিলা নূর তার সাথে ঘটে যাওয়া অদ্ভুদ ঘটনাগুলো নিশোকে শোনাতে থাকে। এবং এ কান্ড দারয়ান দেখে ফেলে। এরপর সাবিলা নূর বাসায় চলে আসে। সিড়িতে দারোয়ান তাকে কিছু বলতে যায় কিন্তু তার মুখ থেকে সে কিছু বের করতে পারে না। দারোয়ান অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে ডাক্তারের কাছে নেয়া হয়। একটি চিরকুটে সে লিখে যায়, পাশের রুমের লোকের থেকে সাবধান।
এসব ঘটনা প্রত্যক্ষ করে সাবিলা নূর বুঝতে পারে নিশো আসলেই ভুত। সে দৌড়ে নিশোর রুমে যায় এবং তাকে জিজ্ঞেস করে সে কে। নিশো বলে আমি কে না জিজ্ঞেস করে জিজ্ঞেস করা উচিত আমি কি । এরপর কথায় কথায় বলা হয় তাকে দেয়া ওয়াদা রক্ষা করতেই সে মৃত্যুর পরও এ বাসায় এসেছে। এসব শুনে সাবিলা নূর খুব ভয় পায় এবং দৌড়ে রুম ত্যাগ করে।
পরের দৃশ্যে দেখা সাবিলা নূর আবার নিশোর রুমে যায় এবং জিজ্ঞেস করে নিশো আছে কিনা। নিশো উত্তর দেয় সে আছে কিন্তু সামনে আসছে না যদি সে ভয় পায় পায়। এরপর সামনে এসে তারা একজন আরেকজনকে ছুঁয়ে দেখে।
শেষের দৃশ্যে দেখা যাবে তারা ছাদে বসে আছে। নিশো সাবিলা নূরের কাধে মাথা রেখে হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
নায়েম ইমতিয়াজ নিয়ামুল আমাদের বেশ ভালো ভালো গল্প এবং নাটক উপহার দিয়েছেন। এ নাটকেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। তিনি খুব সুন্দর ভাবে নাটকের প্রতিটি চরিত্রকে উপস্থাপন করেছেন । যদিও নাটক স্বল্প সময়ের জন্য হয়ে থাকে তারপরও তিনি চেষ্টা করেছেন প্রতিটি বিষয়কে খুব সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তোলার । এখানে এ গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা নিশো এবং সাবিলা নূর খুব ভালোভাবে তাদের চরিত্রকে তুলে ধরতে পেরেছেন। বাবা এবং মায়ের চরিত্র অভিনয় করা শিল্পী দুজন ভালোভাবেই তাদের অভিনয় শিল্পের পরিচয় দিয়েছেন। ওদিকে দারোয়ান চরিত্রে অভিনয় করা লোকটিও বেশ সাবলীল ভাবে তার রোল প্লে করেছে। সব মিলিয়ে ৫৩ মিনিটের নাটকটি বেশ উপভোগ্য ছিল । নিশোর সাজসজ্জাও বেশ গোছানো ছিলো। এক কথায় বলতে গেলে পেইং ঘোস্ট নাটকটি দেখার মত ছিল। নিশো কেমন অভিনয় করে আমরা যারা নাটক দেখি তারা খুব ভালো ভাবেই জানি। বাংলাদেশের নাটকে অভিনয় করা ভালো অভিনেতাদের একজন আফরান নিশো।
সুন্দর লেখা দিলেন ভাই। নাটকের রিভিউ পড়ে নাটকটা এখনই দেখতে ইচ্ছে করছে। সময় বের করে দেখে নেব। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম সুন্দর সমালোচনা লেখার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই। নাটকটি আসলেই চমৎকার ছিল। সময় পেলে দেখে নিয়েন।
একেবারে নতুন কাহিনী সম্বলিত একটা নাটক ছিল। এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট এই টাইপের নাটক খুবই কম হয়েছে। কাহিনী টা তো বেশ দারুণ লাগল। ভালো রিভিউ দিয়েছেন নাটক টার। দেখতে হবে নাটক টা।।
জ্বি ভাই সময় পেলে দেখে নিতে পারেন। পুরো ৫৪ মিনিট স্ক্রিনে চোখ আটকে রাখার মতো।
ভাইয়া আপনার নাটকের রিভিউ দেখে ইচ্ছে করছে এখনই নাটকটি দেখতে। এর আগে আমি এই নাটক দেখিনি আমার কাছে একদম নতুন লাগছে। নাটকের পুরো কাহিনীটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ।
আপনাকেও আপু অসংখ্য ধন্যবাদ। নাটকটি আসলেই অনেক চমৎকার ছিল। সময় পেলে দেখে নেবেন। ভালো লাগবে আশা করি।