লাইফ স্টাইল: অচেনা গ্রামের মধ্য দিয়ে গাংনীবাজারে মার্কেট করতে যাওয়ার অনুভূতি

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago (edited)


আসসালামু আলাইকুম


কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। সকলকে শুভকামনা জানিয়ে শুরু করছি আজকের একটি পোস্ট। আজকের পোস্টে আমি আমার অনুভূতি তুলে ধরব। যেখানে দেখতে পারবেন বাড়ি থেকে অচেনা গ্রামের মধ্য দিয়ে ভ্যান গাড়িতে করে গাংনী বাজারে মার্কেট করতে যাওয়ার মুহূর্ত। আর এছাড়াও অন্যান্য বিষয়ের তথ্য। তাই চলুন পোস্ট শুরু করি।


IMG_20230717_111210289_BURST0020.jpg





বিবাহের কয়েক মাস পর হাজবেন্ডের সাথে গাংনীবাজারে মার্কেট করার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম কিন্তু পথের মধ্যে তেমন গাড়ি পাচ্ছিলাম না। এ মুহূর্তে আমাদের এখানে মোটরসাইকেল ছিল না। বেশ অনেক ভ্যান গাড়ি আলাদের কাছে সে মোবাইল করল। কিন্তু এতে কোন ফল হলো না। অনেকক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলাম। এরপর পাড়ার একজন গাড়ি নিয়ে আসলো। আমরা যে পথ দিয়ে গাংনী বাজারে যাই সে পথ দিয়ে উনি যেতে চাইলেন না। উনি বললেন শর্ট রাস্তা দিয়ে যাব, একটু ভাঙ্গাচুরা রাস্তা হলেও দ্রুত পৌঁছাতে পারবো। ভাঙ্গাচুরা রাস্তা কথাটা শুনে খুব খারাপ লাগছিল, তারপরেও নতুন এলাকা দিয়ে বাজারে যাবো এইটা ভেবে ভালো লাগছিল। আর ভালো লাগছিল পাশে আমার মানুষটা রয়েছে তাই। সে কিছুতেই এই শর্ট রাস্তা দিয়ে যেতে চাচ্ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে আমি বললাম এদিকে তো গ্রামগুলো আমার চেনা জানা নয়। দেখতে দেখতে যেতাম, গ্রামগুলো চিনতে পারতাম। তারপর সে রাজি হল। গাড়িতে উঠে বসলাম। এদিকে আমাদের এক ছোট চাচা শ্বশুর-শাশুড়ি উঠলো। তারা হসপিটালে যাবে।


IMG_20230717_110557_982.jpgIMG_20230717_110559_615.jpg
IMG_20230717_110636_873.jpgIMG_20230717_110715_920.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



আমাদের গ্রামের পর বানিয়াপুকুর গ্রাম। গ্রামটা আমার কাছে বেশ নোংরা মনে হয়েছিল। রাস্তার পাশ দিয়ে খাল রয়েছে। রাস্তায় জায়গায় জায়গায় মানুষের আবর্জনা রেখেছে আর রাস্তার উপরে খড়ি শুকাতে দিয়েছে,এছাড়াও আরো অনেক নোংরা পরিবেশ মনে হয়েছিল। হয়তো এই সমস্ত কারণে সে রাজি হয়েছিল না এই গ্রাম দিয়ে যেতে। তবে শুনেছি গ্রামের মানুষ বেশি শিক্ষিত এবং উচ্চ পদস্থ কর্মচারী রয়েছে এই গ্রামে। হয়তো নতুন গ্রাম বলে একটু কেমন কেমন লেগেছিল আমার। এরপর লুৎফুন্নেসা নামক হাই স্কুলের রাস্তার উঠলো। এই স্কুলের পাশ দিয়ে চ্যাংগাড়া নামক একটি গ্রাম। সেখানে আমার ছোট ফুফু শাশুড়ির বাড়ি। এই ফাঁকা রাস্তায় সে এবং ইমনভি ভাইয়া অনেক চলাচল করেছে। গাংনীতে বিশেষ প্রয়োজনে এ রাস্তা দিয়ে তারা যাওয়া আসা করেছে। এছাড়া আরো অনেক গল্প বলতে বলতে চললো।


IMG_20230717_110736_147.jpgIMG_20230717_110828_538.jpgIMG_20230717_110857_526.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



এর কিছুক্ষণ পর লুৎফন্নেসা স্কুল অতিক্রম করে গাড়িটা গাংনী হাট-বোয়ালিয়া এর হাই রোডে উঠল। আর তার সম্মুখে রয়েছে গোপালনগর গ্রাম। গোপালনগর গ্রাম আমার পূর্ব পরিচিত, এখানে অনেকবার এসেছি আত্মীয়ের বাসায়। কিন্তু রাস্তা ক্রস করে এই দিকের এই রাস্তা আমার চেনা ছিল না। নতুন একটি রাস্তা ও স্কুল সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেলাম। পাশাপাশি দুইটা গ্রাম সম্পর্কে জানলাম। ঠিক এমন মুহূর্তে হাই রোডে ওঠার পর সে আমাকে বলল দুইটা সেলফি উঠাতে। কিন্তু পেছনে চাচার শশুর শাশুড়ি থাকায় আমার লজ্জা লজ্জা লাগছিল। উনাদের জন্য তেমন সেভাবে কথা বলতে পারছিলাম না তার সাথে। এরপর সে আমার হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে নিজেই সেলফি উঠালো। তবে দুঃখের বিষয় হলেও সত্য পিছনের ছোট আঙ্কেল আজ আর বেচে নেই। আমাদের এই গাংনী বাজারে আসার এক দুই মাসের মধ্যে হঠাৎ মারা গেছেন। উনাকে ওই প্রথম চিনেছি বা দেখেছি। উনি আমার শ্বশুরের অনেক শ্রদ্ধা করতেন ভালোবাসতেন এবং সব সময় সহায়তা প্রদান করতেন।


IMG_20230717_111239_011.jpgIMG_20230717_111241_041.jpgIMG_20230717_111210289_BURST0010.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



ঐ আঙ্কেলের নাম শফিকুল ইসলাম। আমার স্বামী তাকে শফি চাচা বলে ডাকতো। গাংনী বাজারে যাওয়ার পথে উনি অনেক কথা বলছিলেন আমার সাথে, শুধু আমি নতুন অবস্থায় একটু লজ্জা পাচ্ছিলাম। তবে উত্তর দিয়েছিলাম উনার সকল কথায়। আঙ্কেল আমাদের বংশের সবাইকে মোটামুটি চেনে। আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন গাংনী বাজারে রয়েছেন, তাদেরকে উনি চেনেন। ঠিক এমনই বিভিন্ন বিষয়ের কথা বলছিলেন মাঝে মধ্যে। গাংনী বাজারে প্রবেশ করতে আমাদের এক আংকেল পাঁচতলা ফ্ল্যাট করেছে উনি জানেন এবং চেনেন। এদিকে 'মালসাদোয়া' নামক গ্রামে প্রবেশ করতেই সুন্দর একটি পার্ক নির্মাণ হচ্ছে। এটা নাকি আমার ছোট মামাশ্বশুরের কুটুমেরা তৈরি করছেন। আমি অনেক আগেই দেখেছি এই স্থানটা। তবে আমার হাজবেন্ডের কাছ থেকে ক্লিয়ার হলাম, এই মালসাদোয়া গ্রামের জমিদার ছিলেন আমার ছোট মামা শ্বশুরের শ্বশুর। উনাদের বড় একটি জমির দাগ এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে পার্ক তৈরি করার কাজ হাতে নিয়েছে।


IMG_20230717_111452_372.jpgIMG_20230717_111547_380.jpgIMG_20230717_111550_485.jpg
IMG_20230717_111552_555.jpgIMG_20230717_111555_440.jpgIMG_20230717_111555_757.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
Location



দিনটা বেশ রোদ গরম ছিল। ফাঁকা গাড়িতে যাচ্ছিলাম তাই একটু বিরক্ত হচ্ছিলাম রোদে। এরপরেও বেশ ভালো লাগছিল তাদের সুন্দর সুন্দর গল্প শুনতে আর নতুন কিছু জানতে। আর এভাবে একটি মুহূর্তে গাংনী বাজারে পৌঁছে গেলাম। সেখানে উপস্থিত হয়ে চলে গেলাম মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে। গাংনী সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসায় আমার ছোট বোন পড়ে। সেখানে স্যারের কাছে অনুমতি নিয়ে বোনকে বাইরে নিয়ে এলাম এবং মার্কেট করতে চলে গেলাম। আর এভাবেই অচেনা গ্রামের মধ্য দিয়ে গাংনী বাজারে পৌছালাম। মার্কেট করা বিষয়ে বিস্তারিত আগামী পোস্টে দেখবেন।


IMG_20230717_111932_035.jpgIMG_20230717_113158_227.jpgIMG_20230717_113910_037.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
Location


কিছু তথ্য


ফটোগ্রাফিগ্রামাঞ্চলের পরিবেশ
ফটোগ্রাফি ডিভাইসমোবাইল ফোন
ক্যামেরাInfinix Hot 11s
লোকেশনLocation
ফটোগ্রাফারসিমরান
ব্লগিং মোবাইলHuawei P30 Pro
দেশবাংলাদেশ


সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

আমার পরিচয়

আমি মোছাঃ সিমরান জারা। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য সুমন জিরো নাইন এর পরিবার। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর। আমি একজন গৃহিণী। আমি ফটোগ্রাফি, রেসিপি পাশাপাশি ব্লগ করতে বেশি পছন্দ করে থাকি। এছাড় বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগে। আমি এসএসসি পাশ করেছি। গাংনী ডিগ্রী কলেজে অধ্যায়ণরত রয়েছি।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 4 months ago 

আপনি বানিয়ে পুকুরের মাঝখান দিয়ে লুৎফুরন্নেছা স্কুলের পাশ দিয়ে গাংনী বাজারে গিয়েছেন। এই রাস্তা দিয়ে গাংনী যেতে গোপালনগর মাঝখানে পড়ে। রাস্তাটা খুবই আঁকাবাঁকা। আপনার বোন গাংনী সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে এটা আমার জানা ছিল না। আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। যাইহোক সবাই মিলে অনেক সুন্দর কেনাকাটার মুহূর্তে অতিবাহিত করেছিলেন মনে হয়।

 4 months ago 

হ্যাঁ আমার ছোট বোন ওখানে পড়ে।

 4 months ago 

অচেনা গ্রামের মধ্য দিয়ে গাংনী বাজার যাওয়ার সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন আপু। পোস্টটি ভালো হয়েছে। গামীণ পথে ভ্যানে ভ্রমণ চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য দারুণ উপভোগ্য। আপনার পোস্টকৃত ছবিতে সেই প্রাকৃতিক দৃশ্য দারুণ ভাবে তুলে ধরেছেন। নতুন গ্রাম চেনা হলো, গন্তব্যেও যাওয়া হলো আপনাদের। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 4 months ago 

আমি কলেজে যাওয়ার মুহূর্তে অনেকদিন ভাবতাম এই দিকে কেমন কেমন গ্রাম। ঐদিন কিন্তু সেই সুযোগ হয়ে গেছে।

 4 months ago 

প্রিয়জনের সাথে অচেনা গ্ৰামে ঘুরে গাংনী বাজার যাওয়ার খুব সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করেছেন। আমি তো ভেবেছিলাম বর্তমান সময়ের ঘটনা বলছেন কিন্তু পরে আপনার পোস্ট পড়ে জানলাম বিয়ের কয়েকমাস পরের ঘটনা শেয়ার করতে এসেছেন। তাই তো বলি এত ছোট বাচ্চা নিয়ে আপনি মার্কেটে গেলেন কিভাবে? তবে অচেনা গ্ৰাম ঘুরে ভ্যানে করে যাওয়ার মজাই আলাদা। আমার তো খুব ভালো লাগে। শ্বশুর বাড়ির কেউ থাকলে আমিও খুব লজ্জা পাই আর তাই ছবি তুলতে আনইজি লাগে। আপনার সেই চাচা শ্বশুর মারা গিয়েছে জেনে খারাপ লাগলো। যাই হোক নতুন গ্ৰাম ঘুরে বাজারে যাওয়ার খুব সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করেছেন।

 4 months ago 

না আপু এগুলো বিয়ের পরে। বেশ অনেক বার তার সাথে মার্কেট করতে গেছি তো সেগুলাই শেয়ার করি।

 4 months ago (edited)

সেদিনের স্মৃতিটা আজও আমার মনে রয়েছে। কতই না সুন্দর ভাবে আমরা ধীরে ধীরে গাড়িতে গাংনী শপিং করতে যাচ্ছিলাম। আজকে চাচা আমাদের মাঝে নেই, চাচার কথা মনে হলে, অতীত স্মৃতিগুলো আমার খুবই কষ্ট দেয়। সেই দিনের সেই সুন্দর মুহূর্তের পথচলার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছ দেখে ভালো লাগলো।

 4 months ago 

আমার কাছে একদম সেদিন মনে হয়।

 4 months ago 

পোস্টে কিছু ভুল রয়েছে। অনুগ্রহপূর্বক সেগুলো সংশোধন করুন। এরপর থেকে পোস্ট লেখার পরে সাবমিট করার আগে একবার ভালোভাবে চেক করে নেবেন।

 4 months ago 

ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আমি চেষ্টা করি তারপরেও ভুল হয়ে যায়। আচ্ছা মনোযোগ দিয়ে সব রিভাইস দিয়ে তারপর সাবমিট করব।

 4 months ago 

আপনার হাসবেন্ডের সাথে অচেনা গ্রাম দিয়ে গাংনীবাজারে গেলেন। তবে অচেনা গ্রাম দিয়ে গেলে অনেক সময় ভালো লাগে। যদিও আপনার অচেনা গ্রামের রাস্তা এবং আবর্জনার কারণে আপনার কাছে ভালো লাগেনি। তবে দূর দুরন্ত পথে অনেক সময় গাড়ির ড্রাইভারগুলো চাই দ্রুত যাওয়ার জন্য বিকল্প রাস্তা খুঁজে। তবে গাংনীবাজারে গিয়ে ভালোই করেছেন আপনার ছোট বোনকে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে সাথে নিয়ে গিয়ে। ধন্যবাদ খুব সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।

 4 months ago 

হ্যাঁ এই রাস্তা দিয়ে যেতে বেশি সময় লাগেনি।

 4 months ago 

খুবই সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আজকে আপনি আপনাদের গাংনী বাজারে মার্কেট করার জন্য খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করেছেন৷ ভিন্ন একটি গ্রাম দিয়ে যেভাবে আপনি সেখানে গিয়েছেন তা দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত আপনি আজকে আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷

 4 months ago 

এই গ্রাম দুইটা প্রথম চিনতে পেরে ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65800.35
ETH 3464.66
USDT 1.00
SBD 2.68