বাঙালির জনপ্রিয় একটা সুস্বাদু রেসিপি: বীজকলা এবং আলু দিয়ে পুষ্টিকর ছোট্ট মাছের তরকারি
আশা করি বন্ধু সবাই করোনাকালীন সময়ে সবাই সাবধানে আছেন ,নিরাপদে আছেন , সচেতনভাবে চলে নিজেকে সুস্থ রেখেছেন। আজ আমি ছোট মাছের সাথে বীজকলার একটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি আশা করি সকলের খুব ভালো লাগবে। বীজ কলা অনেকেই ডয়রা কলা নামে পরিচিত । আমি আজ ছোট ছোট মাছ দিয়ে বীজ কলার একটা রেসিপি তৈরী করেছি। আশা করি রেসিপিটি সকলে খুব পছন্দ করবেন।
■ছোট ছোট মাছ গুলি যেভাবে সংগ্রহ করেছিলাম;
প্রথমেই বলি এই মাছগুলো আমার বাবার নিজ হাতে ধরেছিলেন। ছোট্ট একটা ডোবা থেকে জল সেচে বাবা মাছগুলি ধরেছিলেন। সত্যি মাছ ধরার মুহুর্তটা খুব চমৎকার ছিলো।
■রেসিপিটি যেভাবে তৈরি করা হয়েছিলো;
উপাদান ও পরিমাণ:
ছোট মাছগুলি (ঝিঙ্গা মাছ, পুঁটি মাছ, কই মাছ,টাকি মাছ,খোলসে মাছ,টিংরা মাছ, কাঁকড়া ইত্যাদি।
মাছগুলি 400 গ্রাম
বীজ কলা 6 পিচ
আলু 300 গ্রাম
লবন 2 চামচ
হলুদ 2 চামচ
কাঁচা লংকা 5 পিচ
জিরে 3 গ্রাম
পেঁয়াজ 1 পিচ
রসুন 1 পিচ
শুকনো লংকার গুঁড়ো 1.5 গ্রাম
সরিষার তেল 35 গ্রাম
প্রয়োজনমত জল
●প্রথম ধাপের কাজ _
প্রথমেই আমি ভালোভাবে মাছগুলি পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিলাম। তার পর মাছগুলি এবং বীজকলা ,পেঁয়াজ ,রসুন ,কাঁচা লংকা এক জায়গায় করলাম।
●দ্বিতীয় ধাপের কাজ-
এবার আমি বটি দিয়ে মাছগুলির আঁশ ভালোভাবে ফেলে দিলাম। তারপর মাছগুলি গোটা রেখে মাছ থেকে নাড়ি ভুঁড়ি বের করে ফেলে দিয়ে মাছটি রেখেদিলাম। বীজ কলা গুলির খোসা ফেলে দিলাম দিলাম বটি দিয়ে কেটে। তার পর প্রয়োজন মত বীজকলা গুলি কেটে নিলাম।
আলুগুলির খোসা ফেলে বটি দিয়ে কেটে নিলাম।তারপর পেঁয়াজ ,রসুনের খোসা ফেলে খুব সুন্দর কুঁচি কুঁচি করে পেঁয়াজ ,রসুন কেটে নিলাম। এর পর কাঁচা লংকা ও সুন্দর ভাবে কুঁচি কুচি করে কেটে নিলাম।
●তৃতীয় ধাপের কাজ_
এখন মাছগুলি সুন্দর ভাবে পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নেব। আলু বীজকলা, পেঁয়াজ রসুন, কাঁচা লংকা ও জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নেবো।
●চতুর্থ ধাপের কাজ_
এবার আমি ছোট মাছগুলিকে হলুদ ,লবন মিশিয়ে দেব। তারপর ভালোভাবে হলুদ লবন মেখে নেবো।
●পঞ্চম ধাপের কাজ -
এখন আমি উনুনের উপর কড়াই রাখবো। কড়াই টা সামান্য সময় গরম করবো। তারপর সরিষার তেল ঠেলে দেবো। সরিষার তেল গরম হওয়ার পর হলুদ লবন মিশ্রিত ছোট্ট মাছগুলি তেলের মধ্যে দেবো। আমার প্রয়োজনমত সময় নিয়ে মাছ গুলি খুব ভালোভাবে ভেজে নেবো। ভেজে নেবার পর মাছগুলি কড়াই থেকে তুলে নেবো।
●ষষ্ঠ ধাপের কাজ_
এবার আমি কড়াই এ সামান্য তেল দেবো।বীজকলা এবং আলু তেলের মধ্যে দিয়ে কিছুটা ভেজে নেবো।
●অষ্টম ধাপের কাজ_
বীজকলা এবং আলুর মধ্যে কাঁচা লংকা ,হলুদ দেবো। দেবার পর আবার সামান্য ভেজে নেবার পর পরই প্রয়োজন মত জল ঠেলে দেবো। জল ঠেলে দেবার পর কিছু সময় পর লবন দেবো। তারপর তরকারীটা ভালোভাবে সেদ্ধ করার জন্য ঢাকনা দিয়ে করার ঢেকে দেবো।
●নবম ধাপের কাজ_
আমি 12-15 মিনিট তরকারী সেদ্ধ করার পর আমি ছোট্ট মাছ গুলি তরকারি তে দেবো। 2-3 মিনিট আমি তরকারি ফুটিয়ে নিয়ে কড়াই থেকে তরকারি নামিয়ে নেবো।
●দশম ধাপের কাজ_
এবার আমি নামানো তরকারির মধ্যে জিরে পেস্ট মিশিয়ে দেবো। তারপর কড়াই এ সরিষার তেল কড়াই এ তেল কিছুটা গরম করে নেবো।
●একাদশ ধাপের কাজ_
সরিষার তেল গরম হওয়ার পর আমি পেঁয়াজ ,রসুন দেবো। খুব সুন্দর ভাবে পেঁয়াজ রসুন ভেজে নেবার পর আমি তরকারি পেঁয়াজ রসুনের মধ্যে দেবো। তাঁর পর আমি তরকারি 4-5 মিনিট ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়ে তরকারি কড়াই থেকে তুলে নেবো।
এভাবেই আমি বীজকলা দিয়ে ছোট্ট মাছের তরকারি রান্না করেছিলাম।
■রেসিপি নিয়ে কিছু কথা
সত্যি বলতে এই রেসিপিটি খুব পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত রেসিপি। একদম ঘরোয়া রেসিপি। আমার খুব প্রিয় একটা রেসিপি। খেতে খুবই স্বাদের এই রেসিপিটি । খুব সহজ ভাবে রেসিপিটি তৈরী করতে পারবেন।আশা করি আপনারা ও আমার মত রেসিপিটি বাড়িতে তৈরি করবেন।।
রেসিপি ম্যাকার : @simaroy
ফটোগ্রাফার : @simaroy
ক্যামেরা : Mi A1
লোকেশন : খাড়গ্রাম ,পালসিট ,বর্ধমান, পশ্চিম বঙ্গ, ইন্ডিয়া
ছোট্ট মাছগুলির 5 টি উপকারিতা:
1.প্রথমেই বলবো এই ছোট মাছগুলিতে প্রচুর পরিমাণে "ভিটামিন এ" থাকে। যা আমাদের রাতকানা রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই আমাদের বেশি বেশি ছোট মাছ খাওয়া উচিত।
2.ছোট মাছগুলি এতটাই উপকারী আমাদের নানা রোগ থেকে রক্ষা করে। ছোটো মাছগুলিতে প্রোটিন ও জলীয় অংশ বেশি থাকার কারণে আমাদের শরীরে জীবাণু বাসা বাধার আগেই ধ্বংস করে দেয়।
3.ছোট মাছ গুলির মধ্যে প্রচুর পরিমানে অসম্পৃক্ত চর্বি থাকে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি উপকারী। প্রোটিন,, ক্যালসিয়াম ,আয়রন, ফ্যাটি এসিড , ভিটামিনের সকল উপাদান রয়েছে। যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক অনেক গুন বাড়িয়ে দেয়।
4.আমাদের ব্লাড প্রেসার কমাতে ছোট মাছগুলির জুড়ি মেলা ভার। তাই আমাদের উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বেশি বেশি করে ছোট মাছ খাওয়া উচিত ।
5.আমাদের মারাত্মক রোগ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ছোট মাছের অবদান অপরিসীম। তাই সকল কে বলবো শরীর কে সুস্থ রাখতে বেশি বেশি করে ছোট মাছ খান।
বীজকলার উপকারীতা:
বীজকলার মধ্যে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিগুন রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। আমি তিনটি উপকারিতা শেয়ার করছি।
- বীজকলা এতটাই উপকারী আমাদের শরীরের কৃমি দের ধ্বংস করে । বিশেষ করে বীজকলার বীজে কৃমি ধ্বংস করার উত্তম উপায়।
2.আমাশয় দূর করা এবং আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি তে বীজকলা খুব উপকারী।
- আমাদের দেহের মধ্যে কিডনি এবং মূত্রাশয় পাথর দূরীকরণে এই বীজকলা খুব উপকারী। আমাদের গ্যাস্ট্রিক ,অম্বল দূর করে আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে আপনারা বীজ কলা খাবেন।
রেগার্ডস: @simaroy
রেসিপির বর্ণনা অনেক সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ দাদা
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
Enhorabuena, su "post" ha sido "up-voted" por @dsc-r2cornell, que es la "cuenta curating" de la Comunidad de la Discordia de @R2cornell.