আমার পছন্দের শীতের পিঠা রেসিপি তৈরি-" মজাদার ঝিনুক বা শঙ্খ পিঠা"
ভূমিকা
আমার অনেক ইচ্ছে ছিল সময় নিয়ে পিঠা বানানোর ।কিন্তু আমাদের নানা প্রয়োজনীয় কাজে প্রায় 3 দিন সময় কেটে গিয়েছে বাড়ির বাইরে।ফলে অনেক ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে আজ পিঠা বানাচ্ছি এবং শেষ মুহূর্তে হলেও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার প্রবল ইচ্ছে থাকায় ঝটপট লেগে পড়লাম পিঠা বানাতে।আজ আমি বানাবো "ঝিনুক পিঠা" ।তবে অঞ্চল ভেদে এই পিঠাকে (চিরুনি পিঠা,ঝিনুক পিঠা,শঙ্খ পিঠা ও শামুক পিঠা) ও বলা হয়ে থাকে।তবে এই পিঠাকে যে নামেই ডাকা হোক না কেন এটি কিন্তু ভীষণ মজার খেতে।দেখতে যেমন সুন্দর ,খেতে ও কিন্তু তেমনই মজাদার ও সুন্দর।
পিঠাটি আমার কাছে ভালো লাগার কারণ:
এই ঝিনুক পিঠাটি সুন্দর ডিজাইনের হয় এবং অনেকটা মুচমুচে হয়।ফলে মুচমুচে পিঠা খেতে আমার অনেক ভালো লাগে।তাছাড়া এই পিঠাটি গুড়ের সিরার না দিয়ে ও খাওয়া যায় এবং অনেক দিন পর্যন্ত রেখে খাওয়া যায়।এছাড়া গুড়ের সিরায় ভেজানো হলে খুবই সফট খেতে লাগে ।
শীত উৎসবের বাতাবরণে পিঠা রেসিপি
"বারো মাসে তেরো পার্বণ" কথাটি যেন বাঙালির জন্য একদম প্রযোজ্য।এই প্রবাদটি বহু প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে এবং বাঙালি তা যথাযথ ভাবে পালন করে আসছে।তেমনি শীতকালে বাঙালির ঘরে নতুন ধান উঠলে নানা ধরনের পিঠা বানানোর উৎসব লেগে যায়।ফলে যেকোনো উৎসব বাঙালির মনে দারুণ সারা জাগায়।উৎসব কথাটি বাঙালির যেন রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবাহিত হয়।শীতকাল মানেই ভ্রমন ও ভোজনের আনন্দ।যা অন্য কোনো ঋতুতে তেমন পাওয়া যায় না।তাছাড়া শীতকালে বাঙালির ঘরে ঘরে হরেক রকমের পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায়।এটি একটি বড় উৎসব শীতকালের জন্য।এছাড়া খেজুর গাছের রসের পিঠা খাওয়া তো আছেই।কিন্তু সেটি এখন কিছুটা বিলুপ্তির পথে।যাইহোক আজ আমি হাজির হয়েছি নতুন এক ধরনের পিঠা রেসিপি নিয়ে ।চলুন দেখে নেওয়া যাক---
উপকরণ:
1.শুকনা চাউলের গুঁড়া - 1.5 কাপ
2.ফুটন্ত জল - 2 কাপ
3.লবণ - 1/2 টেবিল চামচ
4.চিরুনি - 2 টি
5.আখের গুড় - 1 কাপ
6.ঠান্ডা জল - 1/2 কাপ
7.এলাচ - 2 টি
8.সয়াবিন তেল -500 গ্রাম
রেসিপিটি তৈরি করার পদ্ধতি
ধাপ 1
■প্রথমে একটি কড়াই ধুয়ে নিয়ে চুলায় মিডিয়াম আঁচে বসিয়ে দিলাম।কড়াই এর মধ্যে 2 কাপ পরিমান জল দিয়ে দিলাম।
ধাপ 2
■এবার আমি কড়াই এর জলের মধ্যে স্বাদ অনুযায়ী সামান্য লবণ দিয়ে দিলাম।
ধাপ 3
■জলটি টকবকিয়ে ফুটিয়ে নিলাম।
ধাপ 4
■চালের গুঁড়া 1.5 কাপ পরিমান নিলাম। চালের গুঁড়া চালুনী দিয়ে চেলে নিতে হবে।
ধাপ 5
■লবন মিশ্রিত সেই জল ভালোভাবে ফুটিয়ে নিলাম।
ধাপ 6
■এবার ফুটন্ত জলের মধ্যে চালের গুঁড়া মিশিয়ে দিলাম। এবার 5 মিনিট ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দিলাম।
ধাপ 7
■ 5 মিনিট পর চুলা বন্ধ করে আরো নেড়েচেড়ে 5 মিনিট ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দেবো। চালের গুঁড়া সেদ্ধ হওয়ার জন্য।
ধাপ 8
■তারপর কড়াই থেকে সেদ্ধ চালের গুঁড়া একটি পাত্রে নামিয়ে নেবো।
ধাপ 9
■এবার একদম সম্পূর্ণ রূপে দুটি নতুন চিরুনি নিলাম।
ধাপ 10
■এবার আমি গোটা আখের গুড় নিয়ে এক কাপ পরিমান কুচিয়ে নিলাম।
ধাপ 11
■দুটি এলাচের মুখ ফাটিয়ে নিলাম।
ধাপ 12
■1/2 কাপ জলে এলাচ ও গুড় ফুটিয়ে নেবো এক তার অব্দি।
ধাপ 13
■এবার হালকা গরম সেদ্ধ চালের গুঁড়া হাত দিয়ে মেখে নেবো।
ধাপ 14
■আমি অল্প অল্প চালের ডো নিয়ে দুই হাতের সাহায্য গোল করে নেবো।
ধাপ 15
■এবার গোলটি চৌকো করে নেবো এক পাশ। তারপর চিরুনি দুটোর গায়ে সাদা তেল মেখে নেবো। চিরুনির বড় অংশে ডো এর সেপ টি রেখে দেবো।
ধাপ 16
■আর একটি চিরুনির সাহায্য ঘুরিয়ে চেপে নেবো। ঝিনুকের মতো করে।
ধাপ 17
■এভাবে সবগুলো ঝিনুক পিঠা তৈরি করে একটা পাত্রের উপর রাখলাম।
ধাপ 18
■আখের গুড়ের সিরাটি তৈরি হয়ে গেছে।
ধাপ 19
■এবার চুলার উপর পরিষ্কার কড়াই বসিয়ে দেবো। তারপর সয়াবিন তেল কড়াই এর মধ্যে দেবো।
■সয়াবিন তেল কড়াই এর মধ্যে খুবই ভালোভাবে গরম করে নেবো।
ধাপ 20
■গরম সয়াবিন তেলের মধ্যে একটা একটা করে সব ঝিনুক পিঠা দিয়ে দিলাম।
ধাপ 21
■ঝিনুক পিঠা টি ভেজে নেবো দুই পাশ নিজের প্রয়োজনমত।
ধাপ 22
■ঝিনুক পিঠা গুলি ভেজে নেবার পর কড়াই থেকে তুলে নেবো। একটা পাত্রে রেখে দেবো।
ধাপ 23
■এবার হালকা গরম আখের গুড়ের সিরার মধ্যে ভাজি ঝিনুক পিঠা গুলি দিয়ে দেবো।
ধাপ 24
■আখের গুড়ের সিরার মধ্যে 4-5 মিনিট পর একটি পাত্রে তুলে নিলাম। এভাবেই আমি সুস্বাদু ঝিনুক পিঠা রেসিপি তৈরি করেছি।
উপসংহার
শীত আসলেই বাঙ্গালীর রন্ধন শালায় পিঠা রেসিপির ধুম পড়ে। বাঙালি পিঠা উৎসবে মেতে ওঠে। এমনকি শীতের সময়ে বিভিন্ন উৎসবে ও মেলা এমনকি হাটে বাজারে সকল জায়গায় পিঠা বিক্রি হয় ।তাই বলবো শীতে বাঙালির জিভে পিঠা চেকে দেখার সুযোগ যেনো নিজের রন্ধন শালা ছাড়াও বাড়ির বাইরেও চেকে দেখার সুযোগ মেলে। ফলে উৎসবের বাতাবরণ এ বাঙালীর মনে খুশির জোয়ার দেখা যায়। বিশেষ করে শীতে বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠা রেসিপি যেনো অনাদিকাল থেকে চলে আসছে। আজ আমি ঝিনুক পিঠা রেসিপি তৈরি করেছি। খেতে ভীষণ সুস্বাদু একটি পিঠা রেসিপি। রেসিপিটির পূর্ন স্বাদ পেতে অবশ্যই বাড়িতে রেসিপিটি তৈরি করবেন। তাহলেই বুঝতে পারবেন যে রেসিপিটির স্বাদের গভীরতা কতটুকু ? মজা করে বলতে হয়,ঝিনুক পিঠা খেতে -"জাস্ট অন্য লেভেল"।
ডিভাইস | রেডমি নোট টেন প্র ম্যাক্স |
---|
রেসিপি ম্যাকার | @simaroy |
---|
10% beneficiary to @shy-fox
রেগার্ডস | @simaroy |
---|
শামুক পিঠা দেখতে অত্যন্ত চমৎকার। খেতে কেমন হবে আমি জানিনা কারন আমি কোনদিন খাইনি। তবে এবার বাড়িতে তৈরি করার চেষ্টা করব। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
খেতেও খুব মজাদার হয়। পূর্ন স্বাদ পেতে আপনাকে তৈরি করে খেতে হবে। তাহলেই মজাটা বুঝবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া
শুভ কামনা রইলো
সত্যি ভাইয়া ঝিনুক পিঠা আমার অনেক ভালো লাগে। আপনি সব সময় আমার প্রিয় পিঠাগুলো আবার প্রিয় খাবার গুলো এবং ইউনিক খাবারগুলোই আমাদের সামনে উপস্থাপন করেন ।আপনার এই বিষয়গুলো আসলেই সত্যি মনমুগ্ধকর ।এত সুন্দর ভাবে ফটোগ্রাফি করেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমার পছন্দের রেসিপিগুলি আপনার পছন্দের রেসিপি। শুনে খুবই ভালো লাগলো। রেসিপি পছন্দের দিক থেকে আপনার সাথে আমার মিল আছে। আপনার মন্তব্য অনেক উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পাই সবসময়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু। শুভেচ্ছা নিবেন।
বাহহ,,অসাধারণ হয়েছে আপনার শীতের পিঠার রেসিপি টি।আসল কথা হচ্ছে দেখতে খুবই লোভনীয় ও সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে এটি শেয়ার করার জন্য ও আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভাইয়া🙂
আপু সত্যি ঠিক বলেছেন অনেক মজাদার হয়েছিলো। অনেক খুশি হলাম আপনার মন্তব্য। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু। শুভেচ্ছা রইলো
দাদা আপনি মানেই হলো নতুন রেসিপি।আপনার ইউনিক কাজ গুলো আমাকে মুগ্ধ করে দেয়।এই পিঠার রেসিপিটি আমার কাছে একদম নতুন লাগছে।এরকম পিঠা আমি এই প্রথম দেখলাম খুবই ভাল লাগল শুভ কামনা রইলো।
ভাইয়া আপনার কাছে একদম নতুন ও ইউনিক লেগেছে শুনে খুব ভালো লাগলো। আপনি একদিন অবশ্যই বাড়িতে তৈরি করবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যর জন্য ।শুভেচ্ছা অবিরাম।
ঝিনুক বা শঙ্খ পিঠা দেখতে অনেক দারুন হয়েছে। চিরুনি ব্যবহার করে পিঠা তৈরীর পদ্ধতি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে দাদা। ধন্যবাদ আপনাকে দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আপু ঝিনুক পিঠা করতে গেলে ডিজাইনের জন্য চিরুনি ব্যবহার করেছিলাম। অনেক সুন্দর মন্তব্যর জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু। শুভেচ্ছা নিবেন।
ঝিনুক পিঠা কখনো খাইনি কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে যে খুবই মজা হবে আপনি এই পিঠার বানানোর প্রসেসিং টা খুব ভালো ভাবে উপস্থাপন করেছেন। এখন যদি চেষ্টা করি তাহলে হয়ত এটা তৈরি করতে পারব অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এভাবে এই পিঠা রেসিপি শেয়ার করার জন্য
অবশ্যই ভাইয়া ঝিনুক পিঠা রেসিপি খেতে খুবই মজার হয়। আপনি তৈরী করে টেস্ট করে দেখবেন। অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যর জন্য। শুভেচ্ছা নিবেন ।
এই পিঠাটি আমি অনেক খেয়েছি ভাই খেতে অনেক ভালো লাগে। আপনার পিঠা রেসিপি টি দেখতে অসাধারণ হয়েছে ভাই খেতে একেবারে লোভ লেগে যাচ্ছে। এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার অনুভুতি শুনে খুব ভালো লাগলো। আপনি খেয়েছেন তাহলে টেস্ট নিয়ে আপনি পুরোপুরি অবগত। অসংখ্য শুভেচ্ছা। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া আপনার তৈরী ঝিনুক পিঠা রেসিপি। সত্যি আমার কাছে এত ভাল লেগেছে যে তা বলে প্রকাশ করতে পারবো না। তবে ভাইয়া কখনো খাওয়া হয়নি। যেরকম দেখলাম মনে হচ্ছে অনেক টেস্টটি হয়েছে খেতে। আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইল।
একদিন অবশ্যই খেয়ে দেখবেন। খেতে অনেক টেস্ট পাবেন। আপনার মন্তব্য অনেক খুশি হয়েছি। আপনার কাছে নতুন লেগেছে শুনে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া। শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রইলো
ঝিনুক পিঠা দেখতে তো অনেক সুন্দর লাগছে। ঠিক মাছের ডিমের মতো।খেতেও অনেক সুস্বাদু হবে বুঝি। এইধরনের পিঠা আগে কখনো খাওয়া হয়নি। নতুন কিছু দেখলে খুবই ভালো লাগে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য ভাই। 😍😍
ভাইয়া শুনে ভালো লাগলো। অনেক ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে তৈরি করেছি। তবে সম্পূর্ণ চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই জন্য খেতে খুব টেস্ট হয়েছিলো। একদিন তৈরি করবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা নিবেন ভাইয়া।
বাহ ভাইয়া অসাধারন পিঠা তৈরি করেছেন আপনি শামুক বা শঙ্খ পিঠা পিঠাটি নাম খুব সুন্দর দেখে মনে হচ্ছে খেতেও খুবই সুস্বাদু হয়েছে। চিরুনি দিয়ে এত সুন্দর একটি পিঠা তৈরি করেছেন যা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর পিঠার রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপু চেষ্টা করেছি, আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে ভালো লাগলো। আপনার সুন্দর মন্তব্যর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু। শুভেচ্ছা রইলো