মেলায় ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত আর ছোট বেলার মেলায় দিনগুলি

আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন,আশা করি ভালোই আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি ।আজ বেশ কয়েকদিন খুবই ব্যস্ত ছিলাম তাই নিয়মিত পোস্ট করতে পারি নাই ,ইনশাআল্লাহ এখন থেকে নিয়মিত পোষ্ট করবো।

আজ আমি হাজির হয়েছে একটি নতুন পোস্ট নিয়ে ।গতকাল শত ব্যস্ততার মাঝেও এলাকার মধ্যে একটা ছোট মেলা হচ্ছে সেখান থেকে ঘুরে এসেছি। সেখানের ই কিছু ছবি এবং সাথে ছোট বেলার মেলার অনুভূতি গুলো শেয়ার করবো।

ডিভাইস: Oneplus
Location

ছোট বেলার মেলায় যাওয়ার অনুভূতি

আমাদের সময় মেলা হতো পহেলা বৈশাখীর পরদিন থেকে টানা ১৫দিন। আমাদের ডেমরার গরুর হাট নামক স্থানে এই মেলা বসতো।মেলা আসলেই চারিদিকে শুধু বাঁশির শব্দ শোনা যেতো।আমাকে বেশিরভাগ সময় মেলায় নিয়ে যেতো আমার বড় আপুর বন্ধুরা ,গনি ভাইয়া আর রাসেল ভাইয়া ।রাসেল ভাইয়া আমাকে কাঁধে করে নিয়ে যেতো মেলায় ,আর যেতে যেতে আমাকে বলতো আমি যা চাইবো তাই কিবে দেবে তবে শর্ত একটা , তাকে দুলাভাই ডাকতে হবে😂
আমিও তাকে দুলাভাই ডেকে ডেকে মেলায় যা যা পছন্দ হতো সব কিনে আনতাম । আমি মেলায় গেলেই ঠেলা গাড়ি,মাটির জিনিস,স্টিমার,হাতে রঙ দিয়ে ছাপ এগুলা খুবই পছন্দ করতাম কিনতে।

এখনকার মেলায় আর এসব জিনিস পাওয়া যায় না ,এখনকার বাচ্চারা জানে ই না মাটির ঠেলাগাড়ি কেমন? ছোট একটু মম দিয়ে কিভাবে স্টিমার চলে পানিতে ,আর হাতে রং বেরঙের ফুলের ছাপ দিয়ে সেই হাত পানিতে ভিজালে রং চলে যাবে এই ভেবে হাত না ভিজানো ।

তবে আমি গতকাল যে মেলায় গিয়েছিলাম খুবই ছোট জয়গায় হয়েছে।মেলায় তেমন কিছুই উঠে নাই শুধু কসমেটিকসের দোকানের পরিমান বেশি ।

IMG_20221023_195329__01.jpg

এখন আমার মেলায় যেয়ে ই শুধু খাবার কিনতে ইচ্ছা করে ,যেমন : মুরালি, বাতাসা, জিলাপি,পিঁয়াজু, বালুসাই ইত্যাদি। তাই মেলায় যেয়ে প্রথমেই আমি খাবারের দোকান কোন দিকে তা খুঁজে বের করে এসব খাবার কিনে নেই।

IMG_20221023_194756__01.jpg

IMG_20221023_194948__01.jpg

তবে আমার কাছে মেলার চিংড়ি মাছ অসম্ভব ভালো লাগে ।যা অন্য কোথাও থেকে খেলে এত মজা লাগে না ,তাই চিংড়ি ভাজা খেলাম।

IMG_20221023_194544__01.jpg

অতঃপর হাটতে হাটতে এই বুড়ো চাচার দোকানে আমার চোখ গেলো ,বিশেষ করে এই ছোট হাঁড়ি পাতিলের জন্য।

IMG_20221023_195209__01.jpg

ছোটবেলায় আম্মু আমাকে এই ছোট হাঁড়ি গুলো কিনে দিত তখন ফেরিওয়ালারা বাড়িতে বাড়িতে নিয়ে আসত ,দাম ছিলো প্রতি পিস ২ টাকা করে ।কত রকমের হাঁড়ি কড়াই যে আমার ছিলো তা নিয়ে কি আর বলবো ।আসলেই ওল্ড ইস গোল্ড

তবে এখন এই ছোট হাঁড়ি গুলোর দাম প্রতি পিস ১৫ টাকা। তবে এই দোকানের আশেপাশে কোন বাচ্চাই দেখলাম না, যে এগুলো কিনার জন্য মায়ের আঁচল ধরে কাঁন্না করবে

মাটির জিনিস মনে হয় মেলায় একটি ঐতিহ্য ,তাই এই জিনিস কখনো কোনো মেলা থেকে বাদ পড়ে না ।খুবই সুন্দর কালেকশনে ছিল এই দোকানটিতে হরেক রকমের মাটির পুতুল, ফল,প্লেট,মগ ,কাপ ইত্যাদি।

IMG_20221023_195049__01.jpg

তারপর তাবিজের দোকান ও ছিল ।১০মিনিটে রাশি অনুযায়ী পাথর দিয়ে আংটি বানিয়ে দেয় ।মনের বাসনা পূর্ন হওয়ার জন্য আমি একটি আংটি বানাতে চেয়েছিলাম ,তবে আম্মু আমকে টান দিয়ে নিয়ে আসছে।তবে লোকের ছবি আমি খুব ভয়ে ভয়ে ক্যাপচার করছি ,যদি আমাকে বশ করে ফেলে ।

IMG_20221023_195507__01.jpg

মেলা থেকে খাবার ছাড়া আর কিছুই কিনা হয় নাই ,তবে মাঝে মাঝে বাসা থেকে একটু বের হতে খুবই ভালো লাগে।

আজ এই পর্যন্তই,আবার নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হবো।

"ধন্যবাদ"

Sort:  
 2 years ago 

সত্যি বলতে ছোটবেলায় যে মেলায় আমরা যেতাম সেই মেলা এখন আর দেখতে পাওয়া যায় না। মুরালি বাতাসা বা অন্যান্য জিনিসের যে নাম গুলো বলেছেন সেগুলো প্রায় বিলুপ্তির পথে ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

 2 years ago 

আপুর বন্ধুকে দুলাভাই বললে সে খুশি হয়, আপনাকে অনেক কিছু কিনে দিত ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে, ছোট থাকতে এরকম ঘটনা অনেকের সাথেই ঘটে। আসলেই ছোটবেলা মেলা গুলো একটু অন্যরকম হতো 15 দিনের মতো একটা বড় সময় নিয়ে মেলা হতো আমিও মেলায় গেলে কিন্তু ঠেলাগাড়ি কিনতাম এবং হাতের ছাপ দিতাম ছোটবেলার সেই স্মৃতি গুলো এখনো আবছা আবছা মনে আছে।

 2 years ago 

আপুর বন্ধুদের দুলাভাই বলে খুশি হবে এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি বেশ চালাক মনে হচ্ছে, যে দুলাভাই বলে ইছামতো সব কিছু
নিয়ে নিতেন। দুলাভাই বললেই তো আর দুলাভাই হয়ে যায় না 🙃 এই কথাটা আপনি বুঝে গিয়েছিলেন হয়তো। ছোটবেলায় মেলাতে ঘুরে যে মজা পাওয়া যেত বড় হয়ে সেই মজাটা আর পাওয়া যায় না। চিংড়ি মাছ আপনার ভালো লাগে সেটা জেনে বেশ ভালো লাগলো। ছোটবেলায় মাটির জিনিসপত্রের উপর সবারই একটা আলাদা লোক কাজ করে। মেলায় গিয়েও অনেক মাঠে জিনিস কেনা পড়তো কিন্তু এখন আর সেটা হয় না। ছোটবেলায় মেলাতে যাওয়ার স্মৃতিগুলো খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সেজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আমার বাংলা ব্লগে আপনার ব্লগিং জার্নি শুভ হোক।

 2 years ago 

আপু আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই ভীষণ মজা পেয়েছি । আসলে ছোটবেলায় আমরা মেলায় যেরকম আনন্দ পেতাম এখনকার মেলায় বাচ্চারা সেরকম আনন্দ পায় না ।কারণ তাদের মাটির হাড়ি পাতিল এর প্রতি কোনো নেশাই নেই। সব সময় তারা মোবাইলে আসক্ত থাকে। আপনার ছোটবেলায় আপুর বন্ধুদের সঙ্গে ঘাড়ে করে মেলায় যাবার বিষয়টি বেশ মজা লেগেছিল । দুলাভাই ডেকে বেশ ভালই মেলা থেকে জিনিসপত্র কিনেছেন ।ভালো ছিলো ব্যাপারটা ধন্যবাদ ।

 2 years ago 

ছোটবেলায় মেলা যেতে খুব মজা লাগতো। বিভিন্ন ধরনের জিনিস কিনতাম।ডেমরার গরুর হাট নামে জায়গাটিতে একসাথে ১৫ দিন মেলা বসে আপনাদের ওইখানে। আর চিংড়ি মাছ আপনার ভালো লাগে চিংড়ি মাছ আমারও খুব প্রিয়। এবং বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র খুব সুন্দর করে ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

হুম আপু ছোট্ট বেলায় এসব কাহিনী সবার আছে ৷ বিশেষ করে কেউ বলে যদি আমাকে দুলাভাই বলে ডাকিছ তুই যা চাবি তাই পাবি ৷ আর তখন তো তেমন কোনো জানি না বলেই ফেলি ৷ যা হোক আপনি দুলাভাই বলেও যে কাধে করে মেলা গিয়ে অনেক কিছু কিনেছেন ৷ সত্যি অনেক মজা পাইলাম শুনে ৷
গ্রামের মেলা গুলোতে এখনো অনেক আনন্দ করা যায় ৲ ৷ তবে ছোট বেলা মেলায় যাওয়ার মতো আনন্দ এখন পাওয়া যায় না ৷

ভালো লাগলো আপু ধন্যবাদ

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন ।আসলে এখন সব কিছুই বিলুপ্ত প্রায় হয়ে গেছে।আগে কতো মজা করতাম শখের হারি পুতুল গারি আর এখন অসব নেই ই বলা চলে।দারুন উপভোগ করলাম ধন্যবাদ।

 2 years ago 

শীতকাল মানেই মাহফিল মেলা আরো কত কিছু। আর আপনার মেলায় ঘুরতে যাওয়ার সময়টুকু অনেক ভালো লাগলো আপু। আপনি মেলায় সুন্দর সময় কাটানোর পাশাপাশি অনেক সুন্দর কিছু ফটোকপি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল