হরিবাসরে ঘোরাঘুরি||হরিবাসরের মেলায়
ধর্ম এর সাধারণ অর্থ হল ধারণ করা। ধর্মের প্রধান কাজই হল আমাদের ভাল পথে ধরে রাখা,অন্যায় পথ থেকে বিরত রাখা।সব ধর্মই ভাল কাজ করতে উৎসাহ যোগায়।যাই হোক ধর্ম নিয়ে ভাষণ দিতে আসি নি।যে বিষয় নিয়ে লিখব তা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। তাই ধর্ম নিয়ে একটু গৌরচন্দ্রিকা করে নিলাম।
হরিবাসর হল হিন্দুধর্মের একটি ধর্মীয় উৎসব।তবে এটি কিন্তু সব খানেই একসাথে পালিত হয়না।অর্থাৎ এটি দুর্গাপুজার মত সারা দেশে একসাথে পালিত হয়না।এই এক এক জায়গায় এক এক সময় হয়।তবে বেশির ভাগ হরিবাসর শুরু হয় নবান্নর পরে থেকে।কারন মানুষের ক্ষেতে ফসল থাকলে কাজ থাকে,তখন মানুষ চাইলেও ধর্মীয় কাজে মননিবেশ করতে পারে না।
শুনতে একটু কটু শোনালেও এটাই বাস্তবতা।অনেকটা পেটে ক্ষুধা থাকলে যেমন ভাল উপদেশ ও তেতো লাগে অনেকটা সেরকম।খেয়াল করে দেখবেন অধিকাংশ ধর্মীয় সভাও কিন্তু শীতকালেই হয়।
হরিবাসরও এমন একধর্মীয় সভাই। বাসর এর সমার্থক শব্দ কিন্তু সভা। তাই হরিভক্ত লোকজন একত্রিত হয়ে হরিনাম,ধর্মীয় আলোচনাকেই হরিবাসর বলে।হরিবাসর এর ব্যাপ্তী এক,দুই, তিন চার থেকে শুরু করে ১৫দিন পর্যন্ত হতে পারে।
তবে এখানে রাজনৈতিক বক্তব্যের মত বক্তব্য হয়না।তার বদলে কীর্তন এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্মিয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে ধর্মীয়উপদেশ মূলক গল্প ও উপদেশ পড়ে শোনানো হয়। কীর্তন সারাদিন চলতেই থাকে। কীর্তন এর জন্য আলাদা আলাদা দল ঠিক করা থাকে। এবং প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ থাকে।
শুধু কীর্তন না৷ সাথে ভক্তবৃন্দের জন্য থাকে প্রসাদের ব্যবস্থা।প্রসাদ এক এক জায়গায় এক এক রকম দেওয়া হয়।আমাদের এখানে বেশিরভাগ খিচুড়ি দেওয়া হয়।আবার অনেক জায়গায় দেওয়া হয় সবজী,ডাল,ভাত অথবা পোলাও।
মন্দিরের আশেপাশে বসে মেলা। পাপড়,মুরলী,চানাচুর মিষ্টির দোকান।ভক্তগণ কীর্তন থেকে বাড়ি ফেরার সময় এসব দোকান থেকে কেনাকাটা করে। আগে যখন যোগাযোগ ভাল ছিল না,তখন শখের জিনিস কেনাকাটায় এসব মেলাই ছিল একমাত্র ভরসা।
যাই হোক আমাদের পাশের পাড়া ঠাকুরবাড়ি।আজ থেকে সেখানে হরিবাসর শুরু হয়েছে।মাইকে কীর্তন শুনছিলাম সকাল থেকেই। সন্ধ্যা থেকে বেকার বসে থাকা পড়ে।তাই ভাবলাম যাই কীর্তন শুনে আসি। যে ভাবা সেই কাজ।৭টা নাগাদ বেড়িয়ে পড়লাম।১০মিনিটের মাঝেই পৌছে গেলাম।
গিয়ে দেখি প্রচুর ভক্তবৃন্দের সমাগম ঘটেছে।সেই ভিড়ের মাঝে একটি চেয়ার নিয়ে বসে পড়লাম।তারপর ১ঘন্টা কীর্তন শুনে,বাড়ির সবার জন্য সরভাজা কিনে বাড়ির পথে আবার রওনা দিলাম।
দেখে ই বুঝতে পারছি হরিবাসরে বেশ ভালোই মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আমি এই উৎসবটির নাম আগে কখনো শুনেছিলাম বলে মনে হচ্ছে না। আমি তো আপনার পোস্টের মাধ্যমে এই বিষয় সম্পর্কে পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। সম্পূর্ণটা আপনি খুবই সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করেছেন। যার কারণে দেখে একটু বেশি ভালো লেগেছে। আপনি কিন্তু ঠিকই বলেছেন পেটে ক্ষুধা লাগলে ভালো কথাও তেঁতো লাগে। মুহূর্তটা কিন্তু বেশ ভালোই কেটেছে তাহলে।
এই উৎসবটা আমার কাছে একদম নতুন, আমি আগে কখনো এই উৎসব সম্পর্কে জানি নি। এটা ঠিক বলেছেন পেটে ক্ষুধা থাকলে ভালো কথা তেতো লাগে, নতুন একটা উৎসব সম্পর্কে জানতে পারি আমার ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আমি আপনাদের অনেক উৎসবের নাম শুনেছি কিন্তু এই নাম প্রথম বার শুনলাম। আপনার ফটোগ্রাফি দেখে বুঝতে পারছি খুব ভালো সময় পার করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনাদের অনেক ধর্মীয় উৎসবের নাম শুনলাম তবে কখনো আমি হরিবাসরে উৎসবের নাম শুনি নাই। কারণ আমার নিয়ারেস্ট বান্ধবী আপনাদের ধর্মেরই ছিল। তবে আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালই লাগলো। অনেক কিছু জানতে পারলাম। আসলে ধর্মীয় কিছু জানতে পারলে এমনি ভালো লাগে। অনেক সুন্দর করে পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
অনেক ধন্যবাদ আপু। এটা অন্যান্য পুজা পার্বন এর মত অতটা জাকজমক নয়।তাই হয়ত নাম শোনেন নি৷ আপনাদের নতুন কিছু জানাতে পারেছি জেনে ভাল লাগল।ধন্যবাদ আপু।
দাদা নমস্কার,
হরে কৃষ্ণ হরিবাসর সংকীর্তন দেখে মনে একটু অন্যরকম অনুভুতি লাগলো ৷ আসলে আমিও কয়েকদিন আগে প্রায় ২০ কিলো অতিক্রম করে হরিবাসর শুনতে গেছিলাম ৷ পোষ্ট করবো ভাবছি ৷ আর আজকে আপনার পোষ্ট দেখে অনেক ভালো লাগলো ৷ আসলে ধর্ম হলো বেচেঁ থাকার সম্বল ৷ তাই যতদিন রবো ধর্ম পালন করতে হবে ৷ ভালো লাগলো দাদা সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি দেখে ৷
আপনার কমেন্ট টা দেখে অনেক ভাল লাগল দাদা। হরে কৃষ্ণ দাদা।