ইজতেমায় ঘোরাঘুরি
আজ সকাল থেকেই বেশ ব্যস্ততার সাথে সময় কাটাচ্ছিলাম।কথায় বলে না," ঝামেলা যখন আসে তখন দল বেধে আসে।"আমার ক্ষেত্রে আজ দল বেধে না,যেন পুরো গ্রাম সহ চলে এসেছিল।যাই হোক সকাল থেকে সেসব সামলাতে সামলাতে প্রায় বিকেল হয়ে গেল।এসব সামলাতে গিয়ে নাওয়াখাওয়া ভুলে গিয়েছিলাম।
এরপর প্রায় বিকেল ৪.৩০ এ স্নান করে মাত্র বিছানায় একটু গা এলিয়ে দিয়েছি এর মাঝে বন্ধু নূরের কল। রিসিভ করার সাথে সাথেই বলল,"ভাই জলদি থানার সামনে চলে আয়"।বলেই ফোন কেটে দিল,কেন যাব সে নিয়ে কিছু বলল না।আমি ভাবলাম ইমারজেন্সি কিছু তাই জলদি বের হলাম।গিয়ে দেখি ও আর ওর এক বন্ধু অটোতে বসে আছে।আমাকেও বসতে বলল।
এরপর অটোতে বসে নূরকে বকা দিতে লাগলাম।ও বলল আরে আগে পুরো কথা শোন তারপর বকিস।তখন ও বলতে লাগল ওর বন্ধুর বোন গেছে পরীক্ষা দিতে,আর ভাগীনা কে রেখে গেছে বাড়িতে।সারাদিন ভালভাবে কাটলেও বিকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই ভাগীনা কান্নাকাটি শুরু করেছে।তাই ওরা নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে।আর অটো থামলেই আবার কান্নাকাটি করছে তাই আমাকে এভাবে তাড়া দিয়েছে।
আমি বলাল,বুঝলাম কিন্তু এবার কোথায় যাবি।তখন ও বলল ইজতেমা হচ্ছে চল ঘুরে আসি৷ আমি জানতাম ইজতেমা শুধু ঢাকায় হয়।কিন্তু আমার শহরেই যে হচ্ছে এটা শুনে অবাক হয়ে গেলাম।তখন ও বলল,সারাদিন ঘরে আর টিউশনে না দৌড়ে একটু দুনিয়ার খোজ খবর ও তো নিতে পারিস।যাই হোক ওকে আর কি বলি।
এখন ইজতেমার জায়গার বর্ণনা দেই।ইজতেমা যে জায়গাটিতে হচ্ছে সে জায়গাটির নাম কাটামোড়।গোবিন্দগঞ্জ শহর থেকে ৩কিমি পশ্চিমে, গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে।গল্প করতে করতে কিছুক্ষণ এর মাঝেই ইজতেমার মাঠে পৌছে গেলাম।
গিয়ে দেখি জায়গাটি লোকেলোকারণ্য।মাঠে ঢোকার পথে একটি ফটক তৈরি করা হয়েছে।আর ফটকের পাশেই ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প।তার সামনেই বিশাল সামিয়ানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।সারাদেশ থেকে আগত মুসল্লীগণ এই তাবুর নিচে নিজেদের মত জায়গা করে নিয়ে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। অজু ও টয়লেটের জায়গা আলাদা।আবার রান্নার জায়গাও আলদা করে দেওয়া হয়েছে।আপনি চাইলে গ্যাসের চুলা ব্যবহার করে থাকার জায়গাতেই রান্নার কাজ সারতে পারেবেন।
থাকার জায়গা নিয়ে যাতে সমস্যা না হয়,সেজন্য বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মুসল্লীদের জন্য জায়গা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।ধর্মপ্রাণ মহিলাদের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা।আমরা অনেকটা সময় নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখলাম।ভাগীনা এত মানুষদেখে একদম চুপচাপ ছিল।সেখানে আমাদের এক পরিচিত ভাই এর সাথে দেখা হয়। তিনিও আমাদের সাথে ঘুরতে বের হলেন।
ইজতেমার মাঠ ঘোরা শেষ হলে চলে গেলাম পাশের মেলায়।ইজতেমা আজ থেকেই শুরু। তাই মেলা এখনো পুরোপুরি বসে নি।তখনো দোকানপাট বসছিল।ভাগীনা মেলা দেখে ভীষণ খুশি। আমরা মেলায় ঘোরাঘুরি করলাম অনেকক্ষণ।সেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি পাঞ্জাবী,বোরকা, তসবীহ এর দোকান সহ অনেক খাবারের দোকান বসেছিল।
ঘোরাঘুরি করে অবশেষে আমরা একটি দোকানে বসলাম জিলাপী খেতে।মেলায় যাব আর গরম গরম জিলাপী খাব না তা তো হয়না।সবাই মিলে জিলাপী খাবার পর বাড়ির পথে রওনা হলাম।তখন ভাগীনা খেলনা নেওয়ার বায়না ধরলে তাকে বেলুন কিনে দেওয়া হল। এরপর ভাগীনা আবার বাড়ি আসার জন্য জেদ শুরু করল।তখন তাকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। বিকেল টা আজ বেশ কেটেছে।অনেক মজা করেছি সবাই মিলে।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
অবশ্য ইস্তেমায় গেলে যেমন অনেক কিছু জানা যায় এবং ধর্মর প্রতি অনুগত্য সৃষ্টি হয়। হয়তো ছোট্ট বাবুর জন্য সুযোগ পেয়ে গেলেন বিশ্ব ইজতেমায় যে অনেক কিছু দেখার শোনার এবং নতুন অনুভূতি পাওয়ার। আপনি ইস্তেমা সম্পর্কে খুব সুন্দর বর্ণনা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন যা পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আর সেখান থেকে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এটি শুধু কথার কথা নয়। ছেলেবেলা থেকেই আমরা এটি দেখে আসছি আমাদের বাড়িতে দুর্গা পুজার সময় হিন্দুদের চেয়ে মুসলিদের আসাযাওয়া বেশি হতো এখনও তাই।ক'দিন ধরেই বিশ্ব ইজতেমার কথা শুনছি আমরা কয়েকজন মিলে ঠিক করেছি ঘুরতে যাবো তার আগেই তুমি চলে গেলে আগে জানলে তোমার সাথে আমরাও ঘুরতে যেতাম।ইজতেমার মাঠে দেখি মেলা বসেছে দেখে খুবই ভালো লাগলো।বিশ্ব ইজতেমা সফল হোক এই কামনায় করি।
কাল তো শুক্রবার চলুন ঘুরে আসি।
যাক বন্ধুর ভাগনের কান্না সামলাতে গিয়ে আপনার নতুন অভিজ্ঞতা হলো। ইজতেমার মাঠে আমিও কয়েকবার গিয়েছি। তবে আমার কাছে ইজতেমার চাইতে এ্খানকার মেলাগুলোই বেশি ভালো লাগে। তবে গাইবান্ধায় যে ইজতেমা হয় এটা জানা ছিলনা। ধন্যবাদ।
এবারই প্রথম বার হচ্ছে ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
বুঝতে পারছি বেশ ভালোই মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন আপনারা ইজতেমায় ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে। আপনার বন্ধুর ভাগিনা কান্না করছিল তার কান্না থামানোর জন্য ঘুরতে গিয়েছিলেন তার সাথে সাথে আপনারাও ঘুরাঘুরি করতে পেরেছেন। জিলাপির কালার দেখে বুঝতে পারছি খুবই মজা করে খেয়েছেন আসলে এরকম জায়গায় গেলে গরম গরম জিলাপি খেয়ে না খায়। সম্পূর্ণ পোস্ট ভালই ছিল আপনার।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনার বন্ধুর ভাগিনার কান্না থামানোর জন্য ইজতেমায় গিয়েছিলেন সেখানে গিয়ে আপনারাও বেশ ভালোই মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন এবং সবার মাঝে এই বিষয়টি ভাগ করে নিয়েছেন দেখে আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে। যদিও আমার কাছে ইজতেমায় যেতে ভালো লাগেনা বিভিন্ন রকমের এখনকার মেলা গুলোতে যেতে একটু বেশি পছন্দ করি। কিন্তু আপনার কাটানো এত সুন্দর মুহূর্ত পড়ে ভাল লেগেছে ভীষণ।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
বন্ধুর ভাগ্নের কান্না থামাতে ইজতেমার মাঠে বেশ ঘোরাঘুরি করলেন।পাশেই আবার মেলা হচ্ছে খুব ভাল লাগলো দেখে।জিলিপী দেখে খেতে ইচ্ছে হচ্ছে। খুব সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করেছেন পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।