ভূতের গল্প- ২য় পর্ব||দুর্বল হৃদয়ের মানুষরা সাবধান
সোর্স
গত পর্বের পর থেকে।আগের পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-তা ছিলুম এককালে?
-তার মানে আপনি ভূ-ভূ-ভূ-
-আহ!কি ভূ-ভূ করছেন মশাই।বলুন ভূত।
তার কথা শুনে আমি প্রায় অজ্ঞান হতেই নিচ্ছিলুম।তখন ভূত মহাশয় দিলেন এক ধমক
--আহা ভূত হয়ে ভূত কে দেখে মূর্ছা যাচ্ছ।তুমি দেখি আমাদের মান সম্মান ডুবাবে ভায়া।ও আচ্ছা ভুলেই গেছিলুম তোমার তো আবার মানুষ ভাব এখনো যায় নি।
কথাটা বড্ড প্রেস্টিজে লাগল।তরতাজা জীবিত মানুষ কে কেউ যদি ভূত বলে তাহলে তার প্রেস্টিজে লাগার কথাই।বউয়ের ঝাটার বাড়ি ও প্রেস্টিজে এত টা লাগে নি।তাই সাথে সাথে প্রতিবাদ করলুম
-আজ্ঞে না আমি দিব্যি জলজ্যান্ত মানুষ।
তা ভূত এত সহজে একথা বিশ্বাস করবে কেন? সে আবার বলল
-থাক আর বাহাদুরি দেখাতে হবে না।বললাম না প্রথম প্রথম এমন হয়।
এটা শুনে মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেল।একটা ভূত আমাকে বিশ্বাস করছে না।বললাম দাড়ান প্রমান দিচ্ছি
-এই বলে রাম নাম শুরু করে দিলুম।
আর রাম নাম শুনে ভূত বাবাজি এই পালায়,কি সেই পালায়।তারপর ধমক দিয়ে বলল
-থাক থাক এত রাতে আবার ঠাকুর দেবতা কে বিরক্ত করা কেন? বিশ্বাস করেছি তুমি মানুষ।তা ভায়া একটা কথা বলো তো,"তোমরা মানুষেরা ভূত কে এত ভয় পাও কেন?"
-আমি মিন মিন করে বললুম না মানে বইয়ে পড়েছি ভূতেরা নাকি ঘাড় মটকে দেয়।রক্ত চুষে খায়।
আমার এই কথা শুনে সে ফ্যাচ ফ্যাচ করে হাসতে লাগল।আর বলল
-ও তাই বল।তোমাদের লেখক গুলো এক নম্বরের ধড়িবাজ।ব্যাটারা আমাদের নামে আজেবাজে লেখে বেশ কয়েক পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে। উপায় থাকলে মশায় মানহানির কেস করতুম।কিন্তু সে যো নেই। একবার কোন লেখক কে বাগে পাই।দেখিয়ে দেব ভূত কাকে বলে।
আমি এতক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়েছি।মনে হচ্ছে এই ভূত নেহাৎ আমার মতই নিরীহ,কোন ক্ষতি-টতি করবে না।তাই কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলাম
-তার মানে আপনারা রক্তটক্ত খান না?
-ছ্যা ছ্যা ওইত তোমাদের ভেজাল খাবার খাওয়া রক্ত। ও খেলে আর দেখতে হবে না ।নির্ঘাত ডায়রিয়া হয়ে আবার পটল তুলব।
এবার আরো বেশি আত্মসম্মানে লাগল।মানুষদের অখাদ্য বলে অপমান করা।একবার বলতে নিয়েছিলুম মোটেই না,আমাদের রক্ত বেশ সুস্বাদু।আমরা এখন ভেজাল খাইনা।ভোক্তা অধিকার নিয়মিত অভিজান করে ভেজাল মেশানো বন্ধ করেছে।কিন্তু এই শুনে পাছে আবার আমার রক্ত খেতে চাইলে মুস্কিলে পড়ে যাব। তাই চেপে গেলুম।বললাম
-হক কথা।মানুষের রক্ত খেয়েছেন কি আবার মরেছেন।আচ্ছা মানুষ মরলে ভূত হয়,কিন্তু ভূত মরলে কি হয়?
এই প্রশ্ন শুনে ভূতটা বেশ উদাস হয়ে গেল।আমার থেকে আবার একটা বিড়ি চেয়ে নিয়ে টানতে লাগল আর উদাস মনে চাদের দিকে তাকাতে লাগল।আমি ভাবলাম হয়ত মরার আগে কবি-টবি ছিল তাই হঠাৎ কবিতা লেখার ভাব এসেছে।এই হয়ত কবিতা বলতে শুরু করবে।তা মন্দ হবে না।ভূতের কবিতা শুনেছে এমন ভাগ্যবান কয়জন আছে।কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও যখন কবিতা বের হচ্ছে না তখন আর থাকতে না পেরে বলেই ফেললুম
-কি এত ভাবছেন? আরেকটু ভাবলে তো দার্শনিক হয়ে যাবেন।
-নাহ রে ভাই।সে যখন মানুষ ছিলুম তখনকার কথা মনে পড়ে গেল।
আমারো মনে পড়ল এতক্ষণ ধরে বকবক করছি অথচ নিজেদের নাম টাই জানিনা। তাই জিজ্ঞেস করলুম দাদা আপনার নাম টাই তো জানা হল না।
-তা নাম একটা ছিল যখন মানুষ ছিলুম।তা ভূত সমাজে আসার পর আবার নতুন করে গোবরপ্রাশন করে নাম রাখতে হয় সে এক এলাহী ব্যাপার।মরার পর যখন ভূতলোকে এলুম তখন আবার আমার গোবরপ্রাশন করে আমার নাম রাখা হল.........
বিঃদ্রঃবাকি অংশ পরের পর্বে
নতুন কিছু করার চেষ্টা করলাম।অশান্ত মস্তিষ্কে ফিকশন গল্পের প্লট আনা খুবই মুশকিল তারপরেও অনেক চেষ্টা করে এতটুকু এগোতে পেরেছি।কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন।
এই প্রশ্নটা আমি আপনাকে উল্টে করলাম আশা করি পরবর্তী পর্বে জানানোর চেষ্টা করবেন।
সত্যিই খুব সুন্দর ছিল। পুরো গল্পটাই মনোযোগ সহকারে পড়লাম। আমার তো মনে হয় পরীক্ষার সময়ও এত মনোযোগ দিয়ে বই পড়ি না। হা হা হা... খুব সুন্দর এগোচ্ছেন, তবে কতগুলো পর্ব হবে এটা জানতে পারলে বেশ ভালো লাগতো। কারণ পোস্ট পড়া শেষে লিখে দিচ্ছেন পরবর্তী অংশ আগামী পর্বে। আমি তো ভেবেছিলাম আজকেই গল্প শেষ হয়ে যাবে। যাইহোক কি আর করা যাবে আগামী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
ভূত মরে মানুষ হয়।পুনঃজন্ম।ধন্যবাদ দাদা উৎসাহ দেওয়ার জন্য।জানিনা কয় পর্ব হবে।
আগের পর্ব টা পড়েছি দারুন লেগেছে।এবারের পার্ট টাও বেশ জমিয়ে লিখেছেন।একদম রূপকথার গল্পের মতো।মাবার শেষে এসে আবারও একটা টুইস্ট রেখে দিয়েছে।দারুন হয়েছে দাদা চালিয়ে যান।
ধন্যবাদ ভাই। অনেক উৎসাহিত হলাম।
ভূতের গল্প শুনতে এবং পড়তে আমার বরাবরই বেশ ভালো লাগে। তবে আপনার ভূতের গল্পটা পড়ার সময় ভয়ের সাথে সাথে হাসি ও পাচ্ছিলো। এত রাতে ঠাকুর দেবতাকে বিরক্ত করা কেন? প্রশ্নটা খুব সুন্দর ছিল। এবং মানুষ মরলে ভূত হয় তাহলে ভূত মরলে কি হয় এই কথাটা পুরাই দারুন। সবশেষ গল্পটা খুব সুন্দর হয়েছে পরবর্তী পর্বের আশায় থাকলাম।
ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহ যোগানোর জন্য