জীবনের গল্প||পর্ব-৩
গতপর্বেঃ
মুখে হাসি রাখল বটে কিন্তু মনে মনে খুব ছোট বোধ করতে লাগল নিজেকে।কুকড়ে যেতে লাগল নিজের মাঝেই।সত্যিই তো খাবারের লোভেই তো সে এসেছিল।কি লোভী হয়ে উঠছে ও দিন দিন। অথচ আগে মা বাসায় কিছু রান্না করলে কাউকে কোন দিন কিছু ছেড়ে খেত না।নিজেদের ভাগে কম হলেও সবার জন্য পাঠিয়ে দিত। মনে মনে নিজেকেই গালি দিতে থাকল রুদ্র।
খুব কষ্টে চোখে জল আসা থেকে আটকাল।এরপর কাকাত ভাই কে ভাল থাকিস বলে চলে আসল বাইরে।গলার কাছে যেন একটা কিছু দলা পাকিয়ে থাকল।তখন মাথার ভেতর কে যেন বলে উঠল।আরে তুই গরীব তোর ইচ্ছা থাকতে নাই।আর সম্মান তো থাকতে নাই ই।এত ইমোশনাল হচ্ছিস কেন।
বর্তমান পর্বঃ
তার মনের মাঝে বিশাল ঝড় চলতে থাকে।সে কোনভাবেই এটি মানতে পারছিল না।তবে বাবা মা মনে কষ্ট পাবে তাই সে এগুলো সবার থেকে লুকিয়ে রাখে।সেদিন সে কিছুতেই ঘুমাতে পারল না।
সে কিছুতেই বুঝতে পারছিল না, যে কাকি কিছু দিন আগেও তাকে এত আদর যত্ন করত হঠাৎ তার এমন ব্যবহার? নাকি এতদিন তারা দিতে পারত তাই তাদের কদর ছিল? এখন তাদের অবস্থা খারাপ দেখেই কি আসল রূপ বেরিয়ে আসছে আপনজন দের?
সে নিজেকে বুঝাতে থাকল, তুই মানুষকে যতই আপন ভাব,মানুষ তোকে সেটাই ভাববে যেটা তারা ভাবে।আর তারা তোকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ভেবে নেবে।দরকারের সময় মাথায় তুলবে,আর দরকার শেষ হলে আছাড় দিয়ে মাটিতে নামাবে।
এর আগেও এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। একটা দোকান থেকে তারা সব সময় মুদি বাজার করত।বাবা ব্যস্ত থাকত তাই মোটামুটি ছোট বয়স থেকেই বাজার ঘাটের দায়িত্ব রুদ্রর।রুদ্র বরাবরই দেখতে দোকানদার কাকু তার লিস্টের বাইরেও অনেক জিনিস ধরিয়ে দিত।বলত নিয়ে যাও, টাকা নিয়ে ভাবতে হবে না। লিখে রাখলাম, তোমার বাবা দিয়ে দিবে।
তো কয়েকদিন আগে রুদ্র গেছিল কাকুর দোকানে।বাসায় চাল নেই।সকালের রান্না হয়নি।মা বলেছিল তোর কাকুর দোকান থেকে ধারে ১কেজি চাল নিয়ে আয়৷ তোর বাবা পরে দিয়ে দিবে।রুদ্র সেজন্যই গেছিল। কিন্তু দোকানদার কাকুর থেকে চাল চাইতেই তিনি মুখের উপর বলে দিল চাল নেই।অথচ সে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে তার সামনে চালের বস্তা।
রুদ্র মুখ ফুটে কিছু বলল না। যা শেখার সে শিখে নিয়েছে।বুঝে নিয়েছে অনেক কিছু।সেদিনের পর আজকের ঘটনা।এই দুই ঘটনা যেন তার চোখ খুলে দিল।দেখিয়ে দিল সংসারের মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা প্রকৃত চেহারা খানিকটা বুঝল।
কারো উপর দোষারোপ করল না সে।সে বুঝে নিল আসলে দোষটা তারই।সেই তো আশা করেছিল সবার থেকে ভালব্যবহার পাওয়ার,ভালবাসা পাওয়ার,উপকার পাওয়ার।কিন্তু মানুষ যে করবেই তার তো বাধ্যবাধকতা নেই।সে জন্য চরম সত্য টা বুঝে গেল।তাকে আজ থেকে মানুষের উপর থেকে আশা কমাতে হবে। নিজের উপর ফোকাস করতে হবে। যেভাবেই হোক বের হতে হবে এই অবস্থা থেকে।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
আমি আপনার জীবনের গল্পের গত পর্ব পড়েছি। আজকে আবার আপনি নতুন আরেকটি পর্ব আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আজকের পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। আজকের গল্পের শেষ অংশ সত্যিই খুব অসাধারণ ছিলো। আসলে অন্যের উপর ভরসা না করে নিজের উপর আস্থা রাখাই উত্তম। এত সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
অনেক উৎসাহিত হলাম আপনার মন্তব্য থেকে৷ ধন্যবাদ সুন্দর উৎসাহ মূলক মন্তব্যের জন্য।
জীবনের গল্পের ৩য় পর্ব পড়লাম, খুব ভাল লাগলো। নিজের উপর ভরসা করে চলতে হবে।নিজের সবকিছুর উপর ফোকাস করে চলতে হবে।অন্যের উপর ভরসা করলে কষ্টই পেতে হবে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু সুন্দর উৎসাহ মূলক মন্তব্য করার জন্য।