সাধক অর্জুন||প্রথম পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী। আশা করি সাবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব একটু ভূতের গল্প।

pexels-prabhala-raghuvir-57901.jpg

সোর্স

ধুর এই মশার জ্বালায় আর বাচা গেল না।এই ছোট ছোট প্রাণী গুলো ভূতের থেকেও ভয়ংকর।ভূত তাও একবারে রক্তচুষে মেরেই ফেলে এদের বারবার জ্বালায় না,আবার কানের কাছে বিশ্রী গানও শোনায় না। আমি মাঝে মাঝে ভাবি কোনটা সব থেকে বেশি বিরক্ত লাগে,এদের কামড় নাকি এদের গান? এত টা বিরক্ত লাগত না যদি এসে চুপচাপ খেয়ে চলে যেত।অনেকটা বিয়ে বাড়িতে বিনাদাওয়াতে খাওয়ার মত।

আবার মাঝে মাঝে মনে হয় এরাই একমাত্র যাদের আমি তাড়াতে চাইলেও যায় না,না চাইতেই চুমা দেয়,আবার গানও শোনায়। এই যুগে এমন মহৎ প্রাণী কোথায় পাওয়া যাবে? যাই হোক ওদেরও দোষ নেই। পাপি পেটের প্রশ্ন, বেচারারা আর করবেই বা কি? আমারই ভাবা উচিৎ ছিল আর অন্তত একটা কয়েল আনা প্রয়োজন ছিল।

pexels-beingthetraveller-2730218.jpg
সোর্স

ও আচ্ছা মশার অত্যাচারে ভুলেই গেছি নিজের পরিচয় দিতে। আমি পার্থ।মেসে থাকি৷ বিয়ে শাদি করি নি। বাড়িতেও বাবা মা নেই।সরকারি ছা পোষা কেরানী। সকালে ঘুম থেকে উঠি,স্নান করি,খাই অফিস যাই। দুপুরের খাবার অফিসেই খাই।এরপর সন্ধ্যায় মেসে ফিরে আসি। এরপর মেসের মেম্বার দের সাথে আড্ডা,তাস খেলা তারপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া।

একদম নিস্তরঙ্গ জীবন যাকে বলে।তবে এই জীবন টা যেন আমাকে মানায় না। ছোট বেলা থেকেই দারুন ডানপিটে ছিলাম।ভীষণ দূরন্ত জীবন ছিল আমার। দিনভর দুরন্তপনা করে কাটিয়েছি।এখন এই ছা পোষা জীবন কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। মন চাচ্ছিল সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে সন্ন্যাসী হয়ে যাই।কিন্তু আবার ভাবি সন্ন্যাসী জীবনের এত কষ্ট সহ্য করতে পারব তো? তখন পিছিয়ে আসি। এভাবেই চলছিল।

pexels-cottonbro-studio-5416014.jpg

সোর্স

কিন্তু বারবার খালি মনে হয় যাই না বেড়িয়ে। কি হবে এই ছা পোষা জীবন টেনে নিয়ে? কেউ তো নেই। সারাদিন এমন দ্বিধায় ভুগতে থাকি। এভাবে চলতে চলতে একদিন বেড়িয়েই পড়লাম। সাথে কিছু জামাকাপড় আর জমানো কিছু টাকা।কোথায় যাব জানিনা,কি খাব তাও জানিনা।কিন্তু বেড়িয়ে পড়লাম সেই ছাপোষা জীবন ছেড়ে।

সারাদিন চলতে লাগলাম রাস্তা ধরে। চলতে চলতে একটি গঞ্জ মত জায়গায় চলে আসলাম।সেখানেই একভাতের হোটেলেই দুপুরের খাবার খেয়ে আবার হাটা শুরু করলাম। একটু হাটতেই একটি নদীর দেখা পেলাম।সেই নদীর পাড় ধরে হাটতে থাকলাম। ঠিক সন্ধ্যার মুখে একটি বিশাল ফাকা জায়গায় চলে আসলাম। জায়গাটি একদম জনমানব শূণ্য।

pexels-mehmet-turgut-kirkgoz-11373178.jpg
সোর্স

এখানে থেকে নদীর দৃশ্য সুন্দর ভাবে দেখা যায়। নদীর পাড়ে বসে সূর্য ডোবার সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতেছিলাম। এভাবেই আস্তে আস্তে আস্তে সূর্য ডুবে রাত লাগল। তখন আমার হুশ ফিরল মশার কামড়ে।তখন মনে পড়ল আমি বসে আছি জনমানব শূণ্য সম্পূর্ণ অচেনা এক জায়গায়।এখন কি করব ভেবে না পেয়ে এখানেই রাত টা কাটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।কিন্তু মশার জ্বালায় তা আর সম্ভব না।সারা রাত জেগে কাটাতে হবে।তাই মনযোগ সরানোর জন্য মশা নিয়ে গবেষণা করছিলাম।

তখনই হঠাৎ একটি গম্ভীর কন্ঠে আমার গবেষণা ভংগ হল। প্রথমে বুঝতে পারি নি এই রাতে বেলায় এই জনমানব শুণ্য জায়গায় মানুষ কোথা থেকে আসল।তখন আবার ধমক,কে তুমি? এত রাতে শ্মশানে বসে কি করছ?

আজকের পর্ব এপর্যন্তই। কেমন লাগল গল্পটির প্রথম পর্ব? সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।ভুল ত্রুটি মার্জনীয়

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png
*
banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
break2.jpg

Sort:  
 2 years ago (edited)

হায় হায় লোকটি শেষ পর্যন্ত শ্মশানে চলে গেছে 😕
নির্ঘাত বিপদে পরে গেছে, এতো রাতে আবার জনমানবশূন্য জায়গায় গম্ভীর গলা। ভাবতেই গা শিউরে উঠছে। কেন এই পাগলামী করতে গেলো লোকটা। দেখা যাক সামনের পর্বে কি হয়।
দারুন লিখেছেন কিন্তু

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া উৎসাহিত করার জন্য।

 2 years ago 

পৃথিবীতে একমাএ প্রানী যার ভয়ে আমরা মানুষেরা খাঁচায় থাকি।আমাদের এখানে আমরাও সবাই মশার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ। পার্থ ও তাও শ্মশানে মশার কামড় খায় আমরা তো ঘরে বসেই মশার গান আর কামড় খাই।যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়। ধন্যবাদ

 2 years ago 

শীঘ্রই আসবে। আমি মশার জ্বালায় মশারি টাঙিয়ে খাটের নিচে ঘুমাই। হাহাহা

 2 years ago 

আগে বলে নি আমি কিন্তু মশাকে খুব ভয় পাই। মশারিতে কোনো মশা ঢুকলে তাকে না মারতে পারলে আমার সারা রাত ঘুম হয় না। কমেন্টি লেখার সময়ও একটা মশা মেরেছিলাম। এখানে লোকটি দিনের বেলায় নদীর পাড়ের দৃশ্য দেখতে দেখতে ভুলেই গেছে যে সে শ্মশান ঘাটে বসে আছে।

 2 years ago 

সে জানত না ওটা শ্মশান।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আবার মাঝে মাঝে মনে হয় এরাই একমাত্র যাদের আমি তাড়াতে চাইলেও যায় না,না চাইতেই চুমা দেয়,আবার গানও শোনায়। এই যুগে এমন মহৎ প্রাণী কোথায় পাওয়া যাবে?

খুব হাসলাম এই কথা শুনে। আমি চাই আপনার মত এরকম লেখক আরো দুই একজন এই কমিউনিটিতে আসুক। লেখাগুলো পড়ে মনে হচ্ছিল কোন প্রফেশনাল রাইটারের লেখা পড়ছি।

তখন আবার ধমক,কে তুমি? এত রাতে শ্মশানে বসে কি করছ?

আবার সেই সাসপেন্স রেখে দিয়েছেন।😂😂 পরের পর্বে ট্যাগ করে দিয়েন। বাংলাদেশ আছি তো, হয়তো স্কিপ হয়ে যাবে। কারণ পোস্ট পড়ার মতো সময় পাচ্ছি না।

 2 years ago 

আহা দাদা যে কমপ্লিমেন্ট দিলেন তাতে তো গলে পানি পানি হয়ে গেলাম। অনেক ধন্যবাদ দাদা। অবশ্যই ট্যাগ করে দেব। পুনশ্চ ধন্যবাদ ভাতৃদেব।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.030
BTC 82470.22
ETH 3177.63
USDT 1.00
SBD 2.82