দুশ্চিন্তার রাত
প্রতিদিনের জীবন আমার, পাখির মতন
এখন এখানে তো, সেখানে তখন
এই হল আমার দৈনন্দিন জীবনের সংক্ষিপ্ত রুটিন।সারাদিন কাটে দৌড়ের উপর।সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শুরু হয় দৌড়,শেষ হয় সেই রাতে।তারপরেও রাতে যে শান্তিতে ঘুমাব সে সম্ভাবনা কম।
গতকালও ছিল এমন একটি দিন,ছোট বোন কে কলেজে ভর্তি করাতে হবে তার কাগজ পত্র সংগ্রহ করার চেষ্টায় ছিলাম।মানুষের হাতের জিনিস সংগ্রহ যে কতটা ঝামেলার তা যে সংগ্রহ করতে যায় সে ছাড়া কেউ বোঝে না।টিউশন শেষ করে বের হয়েছি সকাল ১০টায়।তারপর একবার স্কুল একবার ইউনিয়ন পরিষদ করতে করতে সন্ধ্যা।
সারাদিনের খাওয়াদাওয়া বলতে টিউশনের নুডলস।তারপর টিউশন শেষ করে বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে রাত ৮টা।কিন্তু বাড়িতে ঢুকে দেখি আরেক কান্ড।আমার ঠাম্মা(দাদী) আমাদের সাথেই থাকে। ছোট বেলা থেকেই আমি দাদীর হাতেই মানুষ হয়েছি। আমার খাওয়া,গোসল ঘুমানো সহ দাদীর কাছেই।আম্মুর থেকে দাদীই বেশি খেয়াল রাখত।
যাই হোক বাসায় ঢুকেই দেখি দাদীর মাথায় পানি দেওয়া হচ্ছে এই ঠান্ডার মাঝে।তারপর দেখি উনার নাক দিয়ে অনবরত রক্ত পড়ছে।সাথে সাথে প্রেশার মেপে দেখলাম হাই প্রেশার। প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী প্রেশারের ঔষধ খাইয়ে দিলাম।তারপরও রক্তপড়া বন্ধ না হওয়ায় আমার মামাকে কল দিলাম।মামা ডাক্তার। মামা ঔষধ বলে দিলেন আর বললেন জলদি হাসপাতালে নিয়ে যেতে।
ছোট ভাইকে ঔষধ আনতে দিয়ে আমি গেলাম রিক্সা ডাকতে।তারপর রিক্সা নিয়ে তাকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলাম।সেখানে ডাক্তার সাহেব আবার প্রেশার চেক করে,কি কি ঔষধ খেয়েছেন তা জেনে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেন।কিন্তু তাতেও কাজ হল না। ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর অথবা বগুড়া রেফার করে দিলেন।
সাথে সাথেই অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বগুড়া রওনা দিলাম।রাস্তায় ক্রমাগত রক্তপাত হয়েই চলেছে।বারবার ভগবান কে ডাকছিলাম যেন রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়৷ কিন্তু উলটো আরো বমি করে দেয়৷ এখন আরো ভয় পেয়ে যাই৷ কারন এমন অবস্থায় বমি মোটেও ভাল লক্ষণ না।তার উপর উনার বয়স প্রায় ৯৫।এই অবস্থায় এত রক্তপাত হলে রক্তস্বল্পতার জন্য শকে চলে যেতে পারেন।
আর এত রাতে রক্ত ম্যানেজ করাও সম্ভব না।যাই হোক যখন আমরা বগুড়া পৌছাই তখন রাত ১২টা।সেখানে একটি নার্সিং হোমে ভর্তি করানো হল।ভর্তি করার সাথে সাথে ডাক্তার চিকিৎসা শুরু করলেন। তারপর রক্তপড়া আস্তে আস্তে কমতে থাকল।পুরোপুরি রক্ত থামতে রাত ৩টা।হাসপাতালে থাকা সম্ভব না।তাই ৪টায় রওনা দিলাম বাড়ির দিকে।বাড়ি পৌছাতে পৌছাতে সকাল ৫টায়।পুরো একদিন খাওয়া ঘুম ছাড়া।
আজ আবার সারাদিন দৌড়াদৌড়ি।সেনাবাহিনীর সদস্য দের দিন কেমন কাটে তা বুঝতেছি।এত ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যে আর কিছু করার শক্তি নেই।সবাই আমার দাদীর জন্য দোয়া করবেন।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
বিপদে ধৈর্য ধারন করতে হয়।বিপদ এলে ভেংগে পরলে চলবে না। আপনি খুব পরিশ্রম করেন তা আগে ই জানি। দায়িত্ব পালন করেন তাও জেনেছি। দাদী অসুস্থ হয়েছে জেনে খুব খারাপ লাগলো। দোয়া করি তিনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবেন। টেনশন করবেন না। আল্লাহ ভরসা।
দোয়া করবেন আপু।ধন্যবাদ শান্তনা দেওয়ার জন্য।
কাছের মানুষ গুলো অসুস্থ হলে শরীরের চেয়ে মনটা আরও বেশি ভেঙে যায়।আপনার উপর দিয়ে অনেক ধকল গেছে বুঝতে পারছি। আপনি অনেক কষ্ট করেন সেটা আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম।আপনার দাদির জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।তাড়াতাড়ি সুস্হ হয়ে আপনার যাতে আবার খেয়াল রাখতে পারে।ভালো থাকবেন সবসময়।
ধন্যবাদ শান্তনার জন্য।আপনার দোয়া যেন কবুল হয়।
আপনার পোস্ট পড়ে অনেকটা খারাপ লাগল। সত্যি ভাইয়া মানুষ এমনি আজ এখানে তো কাল সেখানে। আর সবচেয়ে বড় কথা বিপদ যখন আসে বলে কয়ে আসে না। আমি ও দেখছি যেদিন কাজ থাকে সারাদিন কোন সময় থাকে না।কলেজে ভর্তির জন্য কাগজ পত্র গোছানোর অনেক সময়ের প্রয়োজন। সত্যি ভাইয়া আপনার দাদিমার জন্য খাবার লাগল।দোয়া করি উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
ধন্যবাদ আপু। আপনার দোয়া যেন কবুল হয়।
ভাইয়া আপনার জন্য আমার অনেক কষ্টই হচ্ছে। কারন আপনার এই সময়টা আমি এক সময়ে পার করে এসেছি। যাক সেসব কথা না হয় আর একদিন বলব। আপনার তো অনেক ব্যাস্ত জীবন। আবার এর মধ্যেই দাদীর এমন অসুস্থ্যতা। তবে সময় যদি দাদী কে প্রেসারের ঔষুধ দিয়েই ভালই করেছেন। দোয়া রইল আপনার দাদীর জন্য।
আপনার দোয়া যেন কবুল হয় আপু।ধন্যবাদ
দুশ্চিন্তার রাত টা ছিলো আর দিনটা ছিলো প্যারার ৷ বেশ ভালোই ছুটা-ছুটি করতে হয়েছে আপনাকে বুঝতে পারছি ৷ আসলে এতো ঝামেলার মাঝে রাতে ঠাম্মার এই অবস্থা দুশ্চিন্তা হওয়ারই কথা ৷ যাই হোক , ঠাম্মার সুস্থতা কমনা করছি ৷ ঈশ্বর যেনো খুব তারাতারি ঠাম্মাকে সুস্থ করে তোলে ৷
আপনার প্রার্থনা যেন ঈশ্বর শোনেন।
বিপদ যে কখন আসে বলে আসে না হঠাৎ করে এমন অঘটন ঘটে যায় যা দৌড়ঝাঁপের মধ্যে চলে যাই।এমন নাক দিয়ে রক্ত পড়া আমার মায়েরও হয়েছিল প্রেসার বেড়ে যাওয়ার কারণে তবে চিকিৎসা করার ফলে কমে যায়।তবে আপনার দাদীর তো বমি হলো দেখে ভয় পেয়েছি।তবে শেষে রক্ত পড়া বন্ধ হয়েছে এবং বাসায় ফিরেছেন জেনে অনেক ভালো লেগেছে ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ।দোয়া করবেন আমার দাদীর জন্য।
কাছের মানুষগুলো অসুস্থ হলে সত্যি অনেক খারাপ লাগে। তবে আপনার দাদীর সুস্থতা কামনা করি আল্লাহ যেন তাকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেই। ছোটকালে আমার দাদী ও আমাদেরকে অনেক আদর করতেন। এমনিতে আপনি সারাদিন ব্যস্ততার মাঝে ছিলেন এবং রাতে বাড়ি যাওয়ার পথ দেখলেন আপনার দাদুও অসুস্থ। যাক আল্লাহর রহমতে তাড়াতাড়ি আপনার দাদুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। এই ধরনের পোস্টগুলো পড়লে আসলে নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগে।
ধন্যবাদ ভাইয়া।দোয়া করবেন যাতে উনি তারাতারি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
অবশ্যই আপনার ঠাম্মার জন্য আশীর্বাদ করি। তিনি যেন অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে যান। বিগত কিছুদিন ধরে আমারও প্রচন্ড রকম শরীর খারাপ ছিল। কালকে তো রীতিমতো মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম, দুই তিন বার বমিও করেছি। তবে আপনারা সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জন্যই আপনার ঠাম্মা বিপদ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
হ্যা দাদা। জলদি মেডিকেলে না নিয়ে গেলে বিপদ হত।