ভাগ্যে থাকলে গিফট ঠেকায় কে

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ বাসীআশা করি সবাই ভাল আছেন।আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন।

আপনারা জানেন আমারা একটি ছোট বোন আছে।সে আমার অত্যন্ত আদরের। আমি বড় ভাই হলেও সব সময় চেষ্টা করেছি ফ্রেন্ড এর মত মেশার।যাতে কখনো কোন অসুবিধা হলে অন্তত আমাকে বলতে দ্বিধা না করে।

IMG_20220904_152912.jpg

বড় ভাই হিসেবে যতটুকু দায়িত্ব পালন করার ততটুকু অবশ্যই করি পাশাপাশি আমি ওকে ওর প্রাপ্য সম্মান পার্সোনাল স্পেস দেই।আবার আমি ওর মেন্টর ও বটে।

তো যাই হোক সামনে বোনের মাধ্যমিক পরীক্ষা।পড়াশুনা নিয়ে বিশাল ব্যস্ত।এখন তার কাজ খাওয়া,পড়া আর ঘুমানো।ওকে পড়ার কথা বলতে হয়না।ও নিজের দায়িত্বে পড়াশুনা করে। যাই হোক আজ সকালে হুঠাৎ বলতেছে দাদা আমার ঘড়ির ব্যাটারি শেষ।ওর আবার ঘড়ি ছাড়া এক মূহুর্ত চলে না।একদিন সিরিয়াস ভাবে রুটিন ফলো করা মানুষ।

অনেকদিন থেকেই ভাবছিলাম ওকে পরীক্ষা উপলক্ষ্যে একটি গিফট দেওয়া দরকার।কিন্তু এখন মাসের শেষ পকেট ফাকা।তাই মনের মাঝে দ্বিধা চলে আসল যে একটি ঘড়ি কিনে দেব নাকি আপাতত এটাই ঠিক করে নিয়ে আসব।আর বেতন পেলে না হয় একটি ভাল কিছু গিফট কিনে দেব অথবা কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাব।

দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত টাই মনমত হল কারন মাসের শুরু হলেও এখনো বেতন পকেটে আসে নাই।তো যাই হোক ঘড়িটা বগলদাবা করে রওনা দিলাম ভার্সিটির দিকে।আসার পথে ঠিক করে আনব।
IMG_20220904_111953.jpg

ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে গেলাম ঘড়ির দোকানে।ভেবেছিলাম ব্যাটারি পরিবর্তন করলেই হবে। তাই দোকানি কাকা কে বললাম ব্যাটারি চেঞ্জ করে দিতে।কাকাও কথা মত ব্যাটারি পরিবর্তন করে দিলেন।কিন্তু ব্যাটারি পরিবর্তন এর পরেও দেখা গেল ঘড়ি চোখ খুলছে না।এরপর কাকা বললেন কোন কারনে হয়ত মেশিন ঠান্ডা হয়ে আছে দাড়াও একটু হিট দিয়ে দেখি।হিট দেওয়ার পর ঘড়ি চোখ খুলছিল না।তখন কাকা বলল বাবা তোমার ঘড়ি আত্নহত্যা করেছে।ওকে জীবীত করতে যা খরচ হবে তার মাঝে অল্প টাকা দিলেই একটি নতুন ঘড়ি হয়ে যাবে।

IMG_20220904_112034.jpg

যাই হোক আমি ঈশ্বরের ইশারা বুঝতে পারলাম। উনিও চান আমি কিপ্টামি ত্যাগ করি। করে বিন্দুকে একটি ঘড়ি কিনে দেই।মনের একটি অংশ অবশ্য তখনো কিপ্টেমি করতে চাচ্ছিল।বলছিল এই কাকা ঘড়ি বিক্রি করার জন্য হুদাই বলতেছে ঘড়ি ঠিক হবে না।যাই হোক তাকে ধমক দিয়ে চুপ করালাম।করিয়ে ঘড়ি পছন্দ করতে শুরু করলাম।এভাবে কিছুক্ষণ বাছার পর একটি কাল ঘড়ি পছন্দ হল।এরপর কাকার সাথে দামাদামি করে নিয়ে ফেললাম।যদিও টাকা টা বন্ধুর থেকে ধার করতে হয়েছিল।তারপরেও বোন গিফট পাওয়ার পর তার হাসিমুখের কথা ভেবে টাকার কথা ভুলে গেলাম।

IMG_20220904_112840.jpg

যাই হোক বাড়ি এনে যখন ওর হাতে দিলাম ও অনেক খুশি হয়েছিল।অনেক ধন্যবাদ দিল।ও খুশি হওয়াতে আমিও খুশি।সবাই ওর জন্য প্রার্থণা করবেন। যদিও ঘড়ি টা ওর হাতে একটু বড় হয়েছে। কাল একটু ছোট দেখে আনতে হবে।

Sort:  
 2 years ago 

সত্যি বলেছেন ভাগ্যে থাকলে গিফট কেনো কোন কিছু ঠেকানো যায় না।ছোট বোন ঘড়িটা পেয়ে যে খুশি হয়েছে তার কাছে টাকা কিছুই মনে হয় না। যদি ও আপনার টাকা ধার করতে হয়েছে। টাকা দেওয়া যাবে কিন্তু খুশি হয়তো সব সময় পাওয়া যাবে না।আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

সব শেষে এই কথা টাই আমার মাথায় এসেছিল।টাকা ২দিন পর দিতেই পারব।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

আপনি যে আপনার বোনকে অনেক ভালবাসেন সেটা দেখে খুব ভালো লাগলো । অনেকের হয়ত অনেক টাকা থাকে কিন্তু গিফট করার মানসিকতা থাকে না। আপনি ধার করে হলেও আপনার বোনের খুশির কথা চিন্তা করেছেন। আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা।

 2 years ago 

ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আপনাদের ভাই বোনের সম্পর্ক যেন এভাবে অটুট থাকে সেই কামনা করি। সঙ্গে সঙ্গে ঘড়িটার আত্মার শান্তি কামনা করছি হি হি।।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ ভাই। হ্যা ঘড়ি টা রেস্ট ইন পিস হয়ে গেছে।

বোনের প্রতি আপনার ভালবাসা দেখে সত্যিই অবাক হলাম। যদিও সব দাদারাই তার বোনকে তার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে। তবে যেহেতু সামনে পরীক্ষা ছিল ঘড়ির একটা দরকারই ছিল। হতে পারে আপনার ঘড়ি পেয়ে আপনার বোনের পরীক্ষা খুশিতে আগে থেকে অনেক বেশি ভালো হতে পারে। আপনি যে বন্ধুর থেকে টাকা ধার নিয়ে বোনকে ঘড়ি কিনে দিয়েছেন। এই কথাটা শুনেই আমার বেশ ভালো লাগলো।

 2 years ago 

ধন্যবাদ দাদা।আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।ওর জন্য প্রার্থনা করবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 76338.99
ETH 2965.83
USDT 1.00
SBD 2.62