নিউ ইয়ারের পিকনিক||পর্ব ১(বাজার সদাই)
২০২২ সাল আমাদের থেকে বিদায় নিল।আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গেল আরো একটি বছর।অনেকেই এমন ভাবছেন,আবার অনেকে ভাবছেন নতুন বছর, নতুন সম্ভাবনা।আমি দ্বিতীয় মানুষদের দলে।পৃথিবীতে যখন আসছি যাবই একদিন,এই ভাবনা নিয়ে বসে থেকে যদি সেই জীবনটাই উপভোগ না করলাম তাইলে লাভ কি হল?
যাই হোক আমার নিয়মিত পাঠকরা জানেন আমাদের পাড়ায় প্রতিবছর একটি বড় পিকনিকের আয়োজন করি।মেইন উদ্যোক্তা আমি।বাকি সবাই সাপোর্ট করে।কিছু লোকজন শুধু মেহমান হয়ে আসে আর যায়। এবারো সবাইকে নিয়ে পিকনিক এর আলোচনায় বসলাম।এটা ৪দিন আগের ঘটনা।
প্রথমেই তারিখ ঠিক করতে হবে।তখন সবাই মতামত দিল যেহেতু সামনে নতুন বছর চলে আসছে তাইলে নতুন বছরের প্রথম দিনই হোক পিকনিক।গনতান্ত্রিক দেশ, অধিকাংশ যে মতামত দেবে সেই মতামত গ্রহণ করতে হবে। আর এখানে তো নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে।তাই ঠিক করা হল ২০২৩ সালের জানুয়ারির প্রথম দিনই হবে পিকনিক।সদস্য হিসেব করে দেখা গেল সদস্য হয়েছে ৩০জন।আর ৩০জনের খরচের গড় হিসেব করে দেখা গেল প্রায় ৯০০০ টাকা খরচ হবে।সে অনুযায়ী প্রত্যকের চাদা ধরলাম ৩০০ করে।মেনু ঠিক করা হল সালাদ, খাসির মাংস,মুরগীর রোস্ট,সব্জী,পোলাও আর কোল্ড ড্রিংকস
তো আজ হল সেইদিন।আজকেই পিকনিক।যাবতীয় চাদা গতকালই তুলে শেষ করেছি। আজ সকাল বেলা বাজার করা।গতকালই মাংসের দোকানে কথা বলে এসেছি।আজ সকাল সকাল যেতে বলেছিল।তাই আজ সকালে উঠেই চলে গেলাম মাংসের দোকানে।কিন্তু আমার ক্যালকুলেশনে একটু ভুল ছিল।আমি ইগনোর করে গেছি যে এটা শীতের সকাল আর বাইরে প্রচুর কুয়াশা।তাই ৭টায় গিয়ে দেখি দোকান খোলে নি,তাই আবার ৯টায় গেলাম।
গিয়ে দেখলাম টাটকা মাংস মাত্রই কাটা হচ্ছে।সেখানে থেকে মাংস কিনে চলে গেলাম কাচা বাজারে।যেহেতু অনেক জিনিস তাই খুচরা বাজার করা লস তাই চলে গেলাম পাইকারি বাজারে।পাইকারি বাজারে গিয়েই চোখ জুড়িয়ে গেল।শীতকালীন সবজী তে বাজার ভরে রয়েছে।আর সব সবজীর দাম জনগনের সাধ্যের মধ্যেই।তাই সবাই বেশ মন খুলে বাজার করছে।
কাচা বাজার করে চলে গেলাম রোস্টের মুরগী কিনতে।মুরগীর বাজারে গিয়ে তো চক্ষু চড়কগাছ।যে মুরগী কিছুদিন আগে ১৬০ করে কিনেছি তা আজ ২৫০ এ দিতেও নারাজ।তখন সাপ্লাই আর ডিমান্ডের সূত্র মনে পড়ল।কাল থার্টিফাস্ট নাইট গেছে সবাই পিকনিক করেছে,আজকেও অনেকে করবে। তাই এই অবস্থা।যাই হোক নয়টি মুরগী কিনলাম। মোট দাম আসল ১৭৫০ টাকা।
তারপর ডেকোরেটর থেকে সামিয়ানা আর ডেকচি নিলাম।এরপর লাকড়ি প্রয়োজন।লাকড়ির ব্যাপারে একটা ট্রিক্স খাটিয়েছিলাম।যদি বাজারে লাকড়ি কিনতে যেতাম তাইলে ৫০০ টাকা লাগত।কিন্তু আমাদের এখানে এক কাঠমিস্ত্রী আছেন।উনার দোকানে প্রচুর এক্সট্রা কাঠ থাকে,যেগুলো উনি বিক্রি করেন।আমরা উনাকে ধরলাম।উনাকে লাকড়ির বিনিময়ে দাওয়াত দিলাম।৩০০ টাকার বিনিময়ে প্রচুর লাকড়ি পেলাম।
এখন সব বাজার ঘাট কমপ্লিট।তখন দেখি আরো প্রায় ১কেজি মাংসের টাকা অতিরিক্ত আছে,তাই আরো এক কেজি মাংস নিয়ে বড়ি ফিরলাম। আন্টিরা এখন কাটাকুটির কাজে লেগে গেছেন।আজকে এপর্যন্তই।বাকি অংশ পরের পোস্টে।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
বাহ্,নতুন বছরে নতুন পিকনিক। ভালোই তো আমাকে অতিথি হিসাবে রাখলেই পারতেন😜😜।চাঁদার পরিমানও ঠিক আছে, মেনু ও মোটামুটি বেশ ভালো।আসলে সব কিছুর দাম অনেক বেড়েছে, তাই মুরগীর আর কি দোষ। যাক নতুন বছরে বেশ ভালোই মজা করবেন।শুভ কমনা রইলো। ধন্যবাদ
বইন রে দাওয়াত দিতে হবে কেন? চলে আসবেন যে কোন সময়।তারপরেও ফর্মালিটির জন্য দাওয়াত রইল।মধ্যরাতের আগে চলে আসেন।
আপনাকে রাখেনি কারণ আপনি একা ১০ জনের খাবার খাবেন তাই।🥺
নতুন বছরে আমরা পিকনিক করেছি কিন্তু এত কিছু না শুধু বারবিকিউ করেছি। আপনারা তো বিশাল আয়োজন করেছেন। আমরা আগে পরিবারের সবাই মিলে এমন পিকনিক করতাম। এখন যে যার মত ব্যস্ত থাকার কারণে আর এমন পিকনিক হয় না। আপনার পিকনিক দেখে আমার মনে পড়ে গেল। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
সত্যি ভাইয়া এই ধরনের পিকনিক গুলো অনেক ভালো লাগে। সবাই মিলে কত সুন্দর ভাবে উপভোগ করে। মেনু টা তো দারুন ছিল। আসলে বর্তমান বাজারে সব কিছুরই দাম বেড়েছে। তারপরও এসব আয়োজন থেমে থাকে না। যাই হোক খুব সুন্দর ভাবে আপনি সবকিছুর আয়োজন করেছেন। বেশ ভালই মজা করবেন নিশ্চয়ই। আমরাও আসবো নাকি ভাইয়া??😜
বাহ! পিকনিকের লিস্ট দেখে তো বোঝা যাচ্ছে অনেক বড়সড় পিকনিকের আয়োজন চলছে।ইদানিং মাছ, মাংস,মুরগির দাম অনেক বেশি।এভাবে চলতে থাকলে দেশের মানুষ না খেয়ে মারা যাবে এক সময়।তবে পিকনিকের আয়োজন দেখে আমারও যেতে ইচ্ছে করতেছে।আশাকরি পিকনিকের ভোজন অনেক ভালই হবে।
এ সময়ে অনেকেই পিকনিক করে আপনারাও খুব বড় ধরনের পিকনিকই করলেন।খাবারের মেনু তো ভালোই হল।বাজার করতে গিয়ে প্রথমে খাসির মাংস কিনতে গেলেন, কারন তখন সবেমাত্র খাসি কেটেছে। তাই তাজা মাংস কিনে সবজির পাইকারি বাজারে গেলেন।শীতের তাজা আর হরেক রকমের সবজি দেখে চোখ সত্যি ই জুড়িয়ে যায়। সবজি কিনে রোস্টের মুরগী কিনতে গিয়ে দাম শুনে আপনার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গেল।মুরগীর দাম বেড়ে গেছে।কিন্তু কি আর করার, নিতে তো হবে। মোট ৯ টি মুরগী নিলেন।সামিয়ানা ও ডেকচি নিলেন।কাঠ লাকড়ির দোকান থেকে নিলে বেশি দাম পরবে, তাই কাঠের দোকানের টুকরো কিনে নিলেন বেশ ভালোই হলো।যদিও তাকে দাওয়াত দিলেন। সবকিছু কেনার পর ও ১ কেজি মাংসের টাকা বেঁচে যাওয়াতে আবার এক কেজি কিনে আনলেন।এখন সব কাটাকুটি চলছে। সামনের পর্বে বাকি সব জানতে পারব।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া আপনার নিউ ইয়ারের পিকনিকের বাজার সদাই এর পর্ব পড়ে অনেক ভাল লাগলো। এরকম অনুষ্ঠান করতে আমার কাছেও অনেক ভাল লাগে। ভাইয়া বাজার সদাই করতে কি আপনি একাই গেছেন না কি,....সাথে তো কাউকে দেখতেছি না। আর দ্বিতীয় পর্বটা ছবি সহ তারাতারি প্রকাশ করে ফেলেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
শীতকাল আসলে চারপাশে পিকনিক খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। খুব ভালো লাগলো যে আপনারা পিকনিক খাচ্ছেন এবং সবগুলো বাজার নিজে হাতে করেছেন। ধন্যবাদ বাজরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
স্কুল লাইফে এরকম পিকনিকের দায়িত্ব আমার উপরও ছেড়ে দেওয়া হতো। ঠিক এরকম করেই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বাজারে চলে যেতাম বাজার করার জন্য। আর এই সময়টাতে মাংসের দাম এমনিতেও একটু বেশি থাকে, এটা নতুন কিছু না।