ভাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোটা উদযাপন||খুশির মূহুর্ত
কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগবাসী?আজকে
আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিছু খুশির মুহুর্ত।
আজকে দিনটা ভাই বোনের পবিত্রবন্ধনের।আজকের দিনটিতে প্রত্যেকটি বোন তাদের ভাইয়ের জন্য মন থেকে প্রার্থনা করে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনার জন্য।
আজকের এই দিনটির পেছনে একটু পৌরানিক গল্প আছে।সর্বপ্রথম সুর্যদেব এর কন্যা যমুনা তার ভাই জমকে ফোটা দিয়েছিলেন।এবং এরপর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অসুরের সাথে যুদ্ধে যাওয়ার আগে এই দিনেই বোন সুভদ্রার থেকে ফোটা নিয়েছিলেন।
সেই থেকে প্রতিটি বোন ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনায় আজকের এই দিনটিতে ভাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোটা পালন করে আসছে।যেহেতু আমারও ও ছোট বোন আছে তাই এই দিন টি পালন করা অত্যন্ত আনন্দের।কাল থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।কিন্তু সন্ধ্যায় প্রায় সব ভন্ডুল হয়ে যায়।
তাই মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল।সকালে যখন হাল ছেড়েই দিয়েছিলাম তখন আমাদের প্রতিবেশী কাকিমা আমাদের নিমন্ত্রণ করেন।তখন আশার আলো দেখতে পেলাম।এরপর ভাবলাম যেহেতু যৌথভাবে অংশগ্রহণ তাই আমিও একটু কন্ট্রিবিউট করার চেষ্টা করলাম।কিন্তু কাকিমা নিতে অনিচ্ছুক।তারপরেও আমি কিছু দেই।
এরপর কাকিমা মা মিলে সব প্রস্তুতি নিতে থাকেন।এই ফাকে টুকটাক কাজ শেষ করে ভালভাবে স্নান সেরে পরিষ্কার জামাকাপড় পরে কাকিমার বাসায় গিয়ে হাজির। সাথে আমার বোন ও ছিল।সেখানে গিয়ে দেখি কাকিমা এলাহী ব্যবস্থা করেছেন।আর সব প্রস্তুত।
শুধু আমার ছোট কাকাতো বোন কথামনি স্কুলে ছিল জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছিল।এদিকে সকাল থেকে সবাই না খাওয়া ফলে সবার অবস্থা খারাপ।সবাই খালি ঘড়ির দিকে দেখছিল স্কুল কখন ছুটি দেবে।এরপর একসময় সবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কথামনি স্কুল থেকে আসল।
আমরা সবাই প্রস্তুতি নিয়ে বসলাম।তারপর বিন্দু প্রথমে শিশর এর নির্মল জল দিয়ে আমার ও উৎসর কপাল ধুইয়ে দিল।তারপর প্রদীপের কালি,ঘি,মধুর সংমিশ্রনে কপালে ফোটা দিয়ে দিল। সাথে ছিল সেই পরিচিত মন্ত্র
ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোটা,জমের দুয়ারে পড়ল কাটা
যমুনা দেয় জম কে ফোটা,আমি দেই আমার ভাইকে ফোটা
এরপর প্রদীপ দিয়ে আমাদের বরণ করে নিয়ে আমাদের প্রণাম করল।তারপর আমরাও তাকে আশীর্বাদ করলাম।এরপর একে একে দিবা এবং কথামনি আমাদের ভাইফোটা দিও এবং আমরাও প্রত্যেক কে আশীর্বাদ করলাম।
এরপর ঘটে একটি মজার কান্ড।আমাদের পরিবারের সব থেকে ছোট সদস্যা সৃজা মনির এটাই ছিল প্রথম ভাইফোটা।সে খুব এক্সাইটেড ছিল।কিন্তু যেই তারা পালা আসল সে কান্নাকাটি শুরু করে দিল।তার সে কান্না কিছুতেই থামানো যায়না।এরপর অনেক কষ্টে তাকে কোলে নিয়ে,হাত ধরে আমাদের কপালে ফোটা দিয়ে দিলেন।
এরপর সবাই মিলে আমরা খেতে বসলাম।ক্ষুধায় সব খাবার অমৃত লাগছিল।তবে কাকিমার রান্না কিন্তু অসাধারণ বরাবরই।এরকম যৌথ অনুষ্ঠানে সব সময় কাকিমাই রান্না করেন। কাকিমার পায়েস একবার যে খাবে সে আর ভুলতে পারবে না।
সবাই মিলে খুব মজা করে খাওয়াদাওয়া করার পর কাকিমা কে ধন্যবাদ জানিয়ে আমরা চলে আসলাম নিজেদের বাসায়।যতক্ষণ ছিলাম সময়গুলো অনেক ভাল কেটেছে।আসলে এই মজার সময়গুলোর কথাই অনুপ্রেরণা যোগাবে।কাল কে কোথায় থাকবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই,তাই উপভোগ করে নেই প্রতিটি মুহুর্ত। এই ভাল সময় গুলো ক্যামেরাবন্দী করা আছে।আমি ভ্লগ আকারে প্রকাশ করতে ইচ্ছুক।যদি আপনারা উৎসাহ দেন খুব শীঘ্রই ভ্লগটি প্রকাশ করব।
আমাদের বাড়িতে ভাইফোঁটা খজ হল। কাল পোস্ট করব।এই দিনটা যে কি আনন্দ হয় মনের মধ্যে বলে বোঝাতে পারব না। আমাদের জেনারেশনে আমিই বড়।আর কাকাদের ছেলে আমার নিজের ভাই মিলিয়ে মোট ৬ জন। তার মধ্যে ৫ জন কে ফোঁটা দেওয়ার সুযোগ পাই।খুব ভালো লাগে দিনটা। বেশ এক সাথে হৈ হুল্লোড়, খাওয়া দাওয়া হয়। 🥰
আমার প্ল্যান ছিল আমরা ১৫ভাই আর ৮বোন মিলে এবার পালন করব।কিন্তু প্ল্যান টি ভন্ডুল হয়ে যায়৷তাই এই ক্ষুদ্র পরিসরে।
দেখে তো মনে হচ্ছে খুবই ভালো মুহূর্ত পাঠিয়েছেন। আমি আপনাদের ভাইফোটার কথা অনেক শুনেছি। মনে হচ্ছে অনেক মজা হয়। সব বোনেরা মিলে যখন সকল ভাইদেরকে ফোটা দেয় তখন অনেক আনন্দ করেন। আপনার পোস্ট পড়ে বেশ ভালো লাগলো। সত্যি অসাধারণ ছিল এটি।
অনেক মজার এবং আনন্দের সাথে কাটিয়েছেন ভাইফোটার মুহূর্ত দেখে মনে হচ্ছে। একসাথে যখন সবাই মিলে এই দিনটি উদযাপন করেন অনেক মজা করেন মনে হয়। খুবই সুন্দর ভাবে দেখছি এই দিনটির কথা লিখেছেন এভাবে কাটিয়েছেন। সত্যি পড়ে বেশ ভালোই লাগলো।
ভাইয়া ব্লগ বানানটি এমন হবে, ঠিক করে নিয়েন।যাই হোক আপনার ও আপনার বোনের দীর্ঘ আয়ু কামনা করছি।ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল ভাইয়েরা।ধন্যবাদ
এ কি রে ভাই.... বোনদের থেকে ভাইফোঁটা নিলেন তবে পোষ্টের কোথাও তো তাদের গিফট দেওয়ার কথা লেখা দেখলাম না। এটা তো বোনদের প্রতি অন্যায় করা হলো।
ভাইফোঁটা কেন দেওয়া হয় এটা কিন্তু আমার জানা ছিল না আপনার থেকে জেনে নিলাম।
দিয়েছি দাদা।তবে তখন না পরে।তাই লিখি নাই।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভাই ফোঁটা খুবই সুন্দর একটি মুহুর্ত প্রতিটি ভাইবোনের জন্য। আমি কত বছর হলো যে ভাই ফোঁটা দেইনি তার ঠিক নেই। এবার ভেবেছিলাম যে কাছাকাছি আছি ফোঁটা হয়তো দিতে পারবো কিন্তু সেটাও হলো না। তোমাদের ফোঁটা দেওয়ার দৃশ্য দেখে খুবই ভালো লাগলো। কি কারনে তোমার সব প্রস্তুতি ভন্ডুল হলো সেটা জানা হলো না। সে যাই হোক শেষ পর্যন্ত ফোঁটা দিতে পেরেছো এটাই অনেক। তোমাদের সবার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
কাকাতো ভাই গুলি সব মামা বাড়ি চলে গিয়েছিল।তাই বড় করে করার প্ল্যান টা কার্যকর হয়নি। আশা করি সামনে বছর আপনি দিতে পারবেন কাকিমা।
ভাইয়া আপনি মনে হয় খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত পার করেছেন। এই ভাইফোটার দিনে এই উৎসবটি সরাসরি নিজের চোখে কখনো দেখিনি। আমি টিভিতে এই উৎসব দেখেছিলাম খুব ভালো লাগে আপনাদের এই উৎসব। আপনি সেই সুন্দর মুহূর্ত গুলো খুব সুন্দর ভাবে ক্যামেরাবন্দি করেছেন যা দেখে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
খুব শীঘ্রই ভ্লগ আনবো আপু।আরো ভালভাবে দেখতে পাবেন তখন।অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।