জোর করে গিফট নেওয়া
অনেক দিন পর ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে।অনেকদিন থেকে নিয়মিত পোস্ট করা হচ্ছিল না।ভাবছি নিয়মিত হব কিন্তু একের পর এক ঝামেলা,অনুষ্ঠান, পরীক্ষা আসছিল।ফলে আর নিয়মিত হতে পারছিলাম না। এই মাস পুরোটাই হয়ত এভাবেই যাবে। কারন আরো অনেক কয়েকটা অনুষ্ঠান বাকি।
যাই হোক অনুষ্ঠানের সাথে আমার পকেটের টাকার সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক।অর্থাৎ অনুষ্ঠান যত নিকটে আসে পকেট তত খালি হতে থাকে। অনুষ্ঠানের সময় পকেট একবারেই খালি হয়ে যায়।ঈদের আগে থেকে একদম ফাকা পকেট নিয়ে ঘুরছি।যাই হোক এটাই গল্পের মুল প্লট।
ঈদের আগেরদিন গেছি বন্ধুর ভাগীনার পাঞ্জাবি খুজতে।বন্ধু পাঞ্জাবী কিনেছে বন্ধুর ভাগীনাও সেই পাঞ্জাবী পছন্দ করেছে।কিন্তু সেই পাঞ্জাবী ওর মাপের নেই,ওকে অনেক বুঝানো হল কিন্তু সে বুঝতে নারাজ। উলটো আরো প্রতিজ্ঞা করল পাঞ্জাবী না পেলে সে নাওয়া খাওয়া ত্যাগ করবে।আমার ব্যক্তিগত ভাবে এত জেদি বাচ্চা পছন্দ নয়৷ কাউকে এমন দেখলে কানে কপালে থাপড়াইতে মন চায়।
কিন্তু বন্ধু ভাগীনা কে বিশাল আদর করে, তাই আমাকে নিয়ে বের হল পাঞ্জাবি খুজতে।প্রথমে গেলাম বগুড়া,সেখানে না পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ চলে আসলাম।এরপর গোবিন্দগঞ্জ খোজা শুরু করলাম।গোবিন্দগঞ্জে পাঞ্জাবি পেলাম কিন্তু তা সাইজে হয় ছোট অথবা বড়।যাই হোক শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসছিলাম।কিন্তু তখন দেখলাম একটি নতুন দোকান হয়েছে।সেখানে দেখলাম হাফপ্যান্ট বিক্রি হচ্ছে।
আমার বেশ কৌতুহল হল।কারন আমি সব সময় হাফপ্যান্ট ব্যবহার করি। হাফপ্যান্ট বলতে টু-কোয়ার্টার যাকে বলে। খুব বিপদে বা পড়লে আমি ফুলপ্যান্ট ব্যবহার করি না। যাই হোক প্যান্ট গুলোর কোয়ালিটি বেশ ভাল ছিল।দামদর করলাম, দোকানদার ৩৫০টাকা চাইল।দাম বেশ রিজনেবল মনে হল।আমি নিজেও কাপড়ের ব্যবসা করেছি একসময় তাই জানি দাম এমনই।
দাম শুনে খুশি হবার সাথে সাথেই মনে পড়ল,আরে আমি তপ গরীব।দাম বেশিই কি আর কমই বা কি।আমি তো নিতেই পারব না। মন খারাপ হয়ে গেল। বাসায় এসে মাকে বললাম,উদ্দেশ্য মা যদি কিছু টাকা ধার দেয় তাইলে প্যান্ট টা কেনা যায়। কিন্তু তা হল না।তারপর হঠাৎ দেখলাম ফোনে ছোট বোনের বৃত্তির টাকার মেসেজ আসল।সাথে সাথে মাথায় একটি বুদ্ধি খেলে গেল।
ওর ক্রেডিট কার্ড আমার কাছে। তাই ওর টাকা তুলতে হলে আমাকেই বলতে হবে। হল ও তাই৷ তখন আমি শর্ত জুড়ে দিলাম আমাকে প্যান্ট গিফট করলে ওর টাকা তুলে এনে দিব।অনেক ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল এর পর রাজি হল। তারপর ওকে নিয়ে প্রথমে টাকা তুলতে গেলাম।তারপর টাকা তুলে নিয়ে চলে গেলাম প্যান্ট কিনতে, তবে মনে মনে চিন্তা ছিল প্যান্ট টা আছে কিনা৷ কিন্তু কপাল ভাল,ছিল প্যান্ট টা।তারপর ট্রায়াল দিয়ে কিনে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
আপনি তো দেখছি বড় ভাই হয়ে ছোট বোনের কাছ থেকে জোর করে গিফট নিয়ে নিলেন। আপনার কাছে টাকা না থাকার কারণে বেশ ভালোই একটা বুদ্ধি যোগাযোগ করলেন। তবে এই বুদ্ধিটা কিন্তু আমার কাছে কিছুটা ভালো লেগেছে এমন কি মজাও পেলাম। বেশিরভাগ ভাইরা ছোট বোনদেরকে এরকম ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করে থাকে। আপনিও ঠিক তা করলেন। প্যান্ট টি কিনে নিশ্চয়ই আপনি অনেক বেশি খুশি হয়েছিলেন।
এভাবে জোর করে ছোট বোনের কাছ থেকে গিফট আদায় করতে কিন্তু ভালোই লাগে ভাই। আপনি তো দেখছি সুযোগে সৎ ব্যবহার করে ফেললেন। প্যান্ট পছন্দ হওয়ার পরে টাকা না থাকার কারণে কিনতে পারেননি। ছোট বোনের উপবৃত্তির টাকা দিয়ে ওকে ব্ল্যাকমেইল করে কিনে নিয়েছিলেন তাহলে গিফট হিসেবে। ভাগ্য ভালো আপনার প্যান্টটা বিক্রি হয়ে যায়নি
ভাই বোনের কাছ থেকে আর বোন ভাইয়ের কাছ থেকে আবদার করে বলেন আর জোর করে বলেন নেয়াই যায়।আপনার এই পোস্টটি পড়ে আমি আমার অনুভূতিতে ও হারিয়ে গেলাম।আমার বড় ভাইয়া ও এমন করতো আমার সাথে। খুব ভালো লাগলো অনুভূতি গুলো পড়ে। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।