এত গরম কেন?||বৈজ্ঞানিক আলোচনা
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। গ্রীষ্ম থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে বর্ষা,শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত পালা করে আসে। প্রত্যেক ঋতুর আগমনে প্রকৃতি নতুন রূপ ধারন করে।লাইন গুলো কি চেনা চেনা মনে হচ্ছে? হবার কথা।কারন বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা লিখতে গিয়ে সূচনা তে আমরা সবাই প্রায় এই লাইন গুলো লিখেছি।
কিন্তু এই লাইনগুলো প্রায় শ'খানেক বছর আগে লিখলে ঠিক ছিল।কারন আগে বাংলাদেশের প্রকৃতি এমন ছিল। তখন সব গুলো ঋতু ভালভাবে অনুভব করা যেত। প্রকৃতির রূপ বদল থেকে বোঝা যেত এখন কোন ঋতু চলছে।যেমন:কাশফুল থেকে শরৎ,কুয়াশা থেকে শীত,বৃষ্টি থেকে বর্ষা।
কিন্তু বর্তমানে খেয়াল করে দেখুন প্রকৃতির সব কিছুই উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে। এইত কয়েকদিন ধরে খেয়াল করছি এই গ্রীষ্মকালেও সকাল ৭টা পর্যন্ত কুয়াশা থাকে।বসন্ত কালে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে অথচ বর্ষাকালে বৃষ্টির অভাবে ফসলের মাঠ ফুটিফাটা হয়ে যায়।যে বন্যা হওয়ার কথা বর্ষাকালে সে বন্যা হচ্ছে শরৎকালে।অর্থাৎ ঋতুচক্র যেন উল্টাপাল্টা ঘোরা শুরু হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ এর প্রধান ঋতু তিনটি-গ্রীষ্ম,বর্ষা,শীত।শরৎ,হেমন্ত,বসন্তর মত মৃদু ঋতু গুলো আর অনুভব করা যায়না। এখন আপনি একটু আপনার ছোট বেলায় ফিরে যান তো,তখন বাংলার প্রকৃতি কেমন ছিল? আর এখন কেমন? এখন কি কিছুটা আবহাওয়া কিছুটা এক্সট্রিম না?
এই এক্সট্রিম আবহাওয়ার মূলে আছে এয়ার কন্ডিশনার(এসি),রেফ্রিজারেটর এর মত যন্ত্র গুলো। আপনি অবাক হতে পারেন, আরে এগুলো তো এই গরমে একটু ঠান্ডা অনুভূতি জাগাচ্ছে,আর এদিকে আমি বলছি এগুলোই গরমের কারন। নিশ্চয় আমি পাগল হয়েছি। কিন্তু না,আসলেই এগুলোই অন্যতম প্রধান কারন।
এই যন্ত্র গুলোতে ঠান্ডা করার জন্য একধরনের গ্যাস ব্যবহার করা হয়। আপনারা ফ্রিজে যে গ্যাস রিফিল করেন আমি সেটার কথাই বলছি। এই গ্যাস গুলোকে সামগ্রিক ভাবে CFC বা ক্লোরোফ্লোরো কার্বন বলা হয়। এই সিএফসি গ্রিন হাউজ গ্যাসগুলোর মাঝে অন্যতম।আর এই গ্যাসগুলোই তাপমাত্রা বাড়াচ্ছে। কিভাবে? আচ্ছা সেটা জানার আগে আমাদের জানতে হবে গ্রিন হাউজ কি?
গ্রিন হাউজ মানে সবুজ ঘর না। গ্রিন হাউজ একটা কনসেপ্ট৷ এটি মূলত ব্যবহার করা হয় শীত প্রধান দেশ গুলোতে। আপনারা হয়ত জানেন না যে গাছাপালা অতিরিক্ত গরমে যেমন টিকে থাকতে পারেনা,তেমনি অতিরিক্ত ঠান্ডায় ও টিকে থাকতে পারে না। এজন্যই শীত প্রধান দেশ গুলোতে গাছপালা বাচানোর জন্য এক ধরনের কাচের ঘর ব্যবহার করা হয়। এই ঘরের বিশেষত্ব হল এখানে সূর্যের আলো প্রবেশ করে ফলে ঘরের ভেতর টা গরম থাকে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যখন সুর্যের আলো থাকেনা তখন কিন্তু এই তাপ আর কমে না। কাচ তাপ কুপরিবাহী তাই ভেতরের তাপ আর বের হতে পারেনা। ফলে ভেতরের পরিবেশ গরম থাকে। আর গাছ গুলোর ও কোন সমস্যা হয়না।
এখন এই গ্রিন হাউজ এফেক্ট কিভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়াচ্ছে তা আগামী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
![break2.jpg](
বাহ্ বেশ ভালো গুছিয়ে লিখেছেন। সত্যি বলতে সাইন্টিফিকালি এই ব্যাপার গুলো অনেকেই জানে না এবং বোঝেও না। তাই যে যেমন পারছে সে তেমন চলছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতির যে দিকে যাচ্ছে আমার মনে হয় মানুষ আর পরিবেশ নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাববে না। নিজের সামান্য আরামের জন্য যা যা প্রয়োজন সবকিছুই সে করবে। আর পুরো পৃথিবীর মৃত্যুকে আলিঙ্গন করাতে এক পা করে এগোতে থাকবে।
টুইটার লিংক
https://twitter.com/britto_mohanta/status/1649336168729935873?t=sZL9eQ9yFuto0-_WWqwPPQ&s=19