কাকা বাবুর প্রত্যাবর্তন||মুভি রিভিউ
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি। আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব একটি চমৎকার মুভি রিভিউ |
---|
কাকু বাবু ও সন্তুর অ্যাডভেঞ্চার পড়ে নি এমন বই পড়ুয়া খুব কম পাওয়া যাবে।সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এক অমর সৃষ্টি। প্রথমেই কাকা বাবু কে নিয়ে কিছু কথা বলে নেই। কাকা বাবুর প্রকৃত নাম রাজা রায় চৌধুরি। উনি ভারতের প্রত্নবিভাগের উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মচারী ছিলেন। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় উনি উনার একটি পায়ের নাড়াচাড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।এখন উনি সাধারণ মানুষের মত দমে না গিয়ে বিভিন্ন দেশে বেড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন রহস্যের খোজে তার সাথে থাকে তার ভাইপো সন্তু।
বইয়ের পাতা থেকে হইচই প্ল্যাটফর্ম তাকে নিয়ে এসেছে সেলুলয়েডের পর্দায়। চলুন দেখে নেওয়া যাক কেমন হল কাকা বাবুর প্রত্যাবর্তন।
সংক্ষিপ্ত বিবরণ
মুভির নাম | কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন |
---|---|
জনরা | অ্যাডভেঞ্চার,থ্রিলার |
OTT | হইচই |
অভিনয়ে | প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি,আরিয়ান ভৌমিক,সৃজিত মূখার্জি,অনির্বান চক্রবর্তী প্রমুখ |
ডিরেক্টর | সৃজিত মূখার্জি |
রেটিং | ৫/১০ |
কাহিনী সংক্ষেপ
কাকাবাবু আর সন্তু রহস্যের খোজে গোটা দুনিয়া চষে বেড়ান।তেমনি এবার তিনি আর সন্তু রওনা দিলেন কেনিয়ার শহর নাইরোবিতে৷ উদ্দ্যেশ্য হিসেবে কাকাবাবু বলেন নিখাদ ছুটি কাটানো৷ আর সেই ছুটি কাটাতে কাকাবাবু আর সন্তু উঠবেন লিটল ভাইসরয় নামক আজব এক হোটেলে। আজব বলছি কারন হোটেল টি সাধারণ কোন হোটেল নয় গভীর বনের মাঝে অবস্থিত হোটেল টি। ইট কাঠ,কনক্রিট এর পরিবর্তে হোটেলটি অনেকগুলো তাবু দিয়ে তৈরি।
কাকাবাবুরা নাইরোবি পৌছানোর পর তাদের রিসিভ করতে আসেন সেই হোটেলের একজন প্রতিনিধি ও একজন বাঙালি।এই বাঙালির রয়েছে রেস্টুরেন্ট এর ব্যবসা। বিদেশে বাঙালী পেয়ে সন্তু খুব খুশি হয়।আর সেই ভদ্রলোকের সাথে সন্তু ও কাকাবাবুর একটি ভাল সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।উনি কাকা বাবুদের একটি হোটেলে নিয়ে যান, কারন লিটল ভাইসরয়ে বিমান ছাড়া যাওয়া সম্ভব না।আর বনের মাঝে হওয়ায় সেখানে অনেক জীবজন্তুর ভয়।তাই তাদের পরের দিন যেতে হবে।
হোটেলে ওঠার পর কাকাবাবুর কাছে একটি হুমকির কল আসে, তাকে জানানো হয় উনি যদি লিটল ভাইস রয়ে যান,তবে উনাকে টুকরো টুকরো কেটে হায়েনা দিয়ে খাওয়ানো হবে। কিন্তু কাকাবাবু এসবের থোড়াই কেয়ার করেন। উনি বলেন আমি যাব,তোমার যা করার করো।উনাদের সাথে সেই বাঙালী ভদ্রলোক ও যেতে চাইলে কাকাবাবু রাজি হন।সেদিন রাত্রে হোটেল এর ম্যানেজার কাকাবাবুদের সাথে দেখা করতে আসেন।এসে একটি আজব কথা বলেন,কিছুদিন আগে দুজন অস্ট্রেলিয়ান পর্যটক নাকি হোটেল থেকে বেমালুম গায়েব হয়ে গেছে।
এরপর থেকে হোটেলে পর্যটক কমে গেছে।আর হোটেলে আজব আজব ঘটনা ঘটছে। এটা তে কাকাবাবু একটি কৌতুহলি হয়ে ওঠেন। পরেরদিন সকালে যখন কাকাবাবুরা হোটেলের দিকে রওনা দেন তখন একটি মাইক্রো তাদের চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।তখন কাকাবাবু বুঝতে পারেন ঘটনা খুব সামান্য নয়। তারপরেও তিনি সেই হোটেলে রওনা হন।
হোটেলে পৌছে হোটেলের দৃশ্য দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়। একদম বন্য পরিবেশ। হোটেলের মাঝে দিয়ে বন্য জন্তুরা হেটে বেড়াচ্ছে,আফ্রিকার সাভানার অসাধারণ সৌন্দর্য। কিন্তু তারপরেও কাকা বাবু প্রথম থেকেই হোটেলের ঘটনা গুলো সম্পর্কে বোর্ডার দের থেকে জানতে চান। এরপর রাতে তারা নিজেদের তাবুতে ঘুমাতে যান আর সেদিন রাতেই তাদের উপর হামলা হয়। গুলি করেন আততায়ী,কিন্তু কাকা বাবুরা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন আক্রমন হবে।তাই তিনি অন্য তাবুতে গিয়ে লুকিয়েছিলেন।
কি রহস্যা লুকিয়ে আছে এই হোটেল লিটেল ভাইসরয় এ? কাকাবাবু কার পথে বাধা সৃষ্টি করছেন? কে চায় কাকাবাবুকে রাস্তা থেকে সরাতে?
ব্যক্তিগত মতামত
মুভির সিনেমাটোগ্রাফি দারুন। গল্প টাও অনবদ্য। গল্পে রয়েছে টুইস্টের পর টুইস্ট। কিন্তু প্রথম দিকটা একটু স্লো।স্টোরি বিল্ড আপ করতে বেশ সময় লাগিয়েছেন ডিরেক্টর মহাশয়। এছাড়া কেনিয়ান বাঙালি ভদ্রলোকের চরিত্রে ও সন্তুর চরিত্রে অভিনয় করা দুজনের অভিনয়টা কেমন দৃষ্টিকটু লেগেছে।অভিনয় যে করছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে।প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জির অভিনয় ছিল অনবদ্য। এক পা সমস্যা যুক্ত কাকা বাবুর চরিত্র বেশ ভালভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন।তবে এত কিছুর পরেও মুভি আপনাকে পর্দায় আটকিয়ে রাখবে।ডিরেক্টর সৃজিত মুখার্জিও অভিনয় করেছেন একটি ক্যামিও চরিত্রে। আশা করি মুভিটি আপনার ভাল লাগবে। সময় থাকলে দেখে ফেলুন মুভিটি। হ্যাপি ওয়াচিং।
ট্রেইলার
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
এই মুভিটা আমি অনেক আগেই দেখেছিলাম সুতরাং মুভির পুরো প্লট আমার মুখস্ত। আমার ভালোলাগা মুভি গুলোর ভিতর এই মুভিটা অন্যতম।
আপনি চাইলে কিছুটা রহস্য উন্মোচন করতে পারেন কারণ মুভিটা তো অনেক পুরনো। হয়তো এখন সব জায়গাতেই অ্যাভেলেবল হয়ে গেছে।
এর আগে কয়েকবার কথা শুনেছিলাম এজন্য রিস্ক নেইনি দাদা।
ঠিক আছে তাহলে ভালো হয়েছে ভাই। আসলে এইসব সাসপেন্স থ্রিলার মুভি গুলো মাঝপথে বলতে গিয়ে থেমে গেলে অনেকটাই খারাপ লাগে। যদিও মুভিটা আমার দেখা এই জন্য তেমন কিছু মনে হয়নি আমার। কিন্তু আপনি এমন একটা জায়গায় গিয়ে লেখা আটকে দিয়েছেন যেখান থেকে আসলে কৌতূহলের শুরু।