গ্রাম বাংলার ফটোগ্রাফি||ফোনোগ্রাফি
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের ভাই-বোন।কেমন আছেন সবাই? আমি অনেক ভাল আছি।আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব গ্রাম বাংলার কিছু ফটোগ্রাফ।
শহরের ইট,কাঠ, পাথরের জঙ্গল এর মাঝে আমার বাস।সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই সেই রুক্ষ ইটের দেয়ালের মুখ দেখে আর গাড়ির হর্ণের শব্দে কান পচে গেছে সেই সাথে মনটাও কেমন যেন সেই ইটের দেওয়ালের মতই হয়ে গেছে।এজন্যই শহরের মানুষগুলোও দিন যাওয়ার সাথে সাথে রুক্ষ হয়ে ওঠে।মন থেকে সব আবেগ অনুভূতি হারিয়ে যায়।
অনেকদিন পর আজ দুপুরে নানুবাড়ি এসেছি।আমার নানুবাড়ি একদম গ্রাম এলাকায়।বিদ্যুৎ এসেছে মাত্র বছরখানেক হল।এখনো নেটওয়ার্ক ভাল মত পাওয়া যায়না।দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পর বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে ঘুরতে বেড়োলাম।আমার মামার বাড়িতে আমার সমবয়সী কেউ নেই।তাই একা একাই ঘুরতে হয়।
বের হয়ে প্রথমেই হাটা দিলাম গ্রামের মেঠো পথ ধরে।আমার অত্যন্ত পছন্দের একটি কাজ গ্রামের মেঠো পথ ধরে হেটে যাওয়া।দুইপাশে ধানক্ষেত মাঝখানে রাস্তা।যদিও আমার চাদনী রাতে হাটতে বেশি ভাল লাগে,কিন্তু আজ পড়ন্ত বিকেলে হাটতেও মন্দ লাগছিল না।
রাস্তার পাশে রয়েছে দিগন্ত বিস্তৃত ধান ক্ষেত।যদিও এখন ধান পেকে গেছে।দূর থেকে মনে হচ্ছে যেন কেউ রাশি রাশি সোনা ফেলে রেখেছে।চোখ জুড়িয়ে যায় এমন দৃশ্য দেখে।
পড়ন্ত বিকেলে ধানের শিষের ফাকা দিয়ে অস্তগামী সুর্যের আলো যেন মন কেড়ে নিচ্ছিল।সেই দৃশ্যের সৌন্দর্য ক্যামেরাবন্দী করার লোভ সামলাতে পারলাম না।তবে চোখে যা দেখি ক্যামেরা তা দেখে না। তাই বেশি একটা ভাল হয়নি।
যখন ধানের শিষের ফাকা দিয়ে আসা অস্তগামী সূর্যের আলোকে ক্যামেরা বন্দী করতে পারলাম না তাই এবার ধানের শীষের ছবি তোলার চেষ্টা করলাম।বিকেলের রোদের খুবই সুন্দর লাগছিল।
এরপর আরেকটু সামনে যেতেই দেখলাম রাশি রাশি ধান কাটা হয়েছে।তবে ধান কেটেই কিন্তু বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়না।আগে সমস্ত জমির ধান কাটা হলে তারপর সব ধান একসাথে আটি করে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।ধান গুলো দেখে রবি ঠাকুরের সোনার তরী কবিতা মনে পড়ল।
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হল সারা
ভরানদী ক্ষুরধারা
খর-পরশা
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।
সব জমিতে কিন্তু ধান চাষ হয়না।কিছু জমিতে রবি শস্য চাষ করা হয়।রবি শস্যা হল শীতের শস্য।অনেক আগে থেকেই আমরা বাজারে কপি দেখতে পাচ্ছি এসব অগ্রিম রবিশস্য।কিন্তু এই জমির ফসল গুলো প্রকৃত রবিশস্য।এগুলো শীতের কিছু আগে বাজারে উঠবে।
এটি আরেকটি রবিশস্য টমেটো।ছবি তুলতে তুলতে রোদ অনেক পড়ে এসেছিল তাই হয়ত বোঝা যাচ্ছেনা।উপরের তার গুলো দেওয়া হয়েছে পাখির হাত থেকে বাচতে।
এই ফটোটি তুলেছিলাম গ্রামের ভেতর বেড়ানোর সময়। শহরে খুব বেশি গরুপালন হয়না।আর গ্রামে বিষয়টি তার উলটা।প্রায় প্রত্যেকটি বাড়িতেই গরুপালন হয়।দুধের জন্য সাধারণত বাছুরকে আলাদা করে বেধে রাখা হয়। এই বাছুরটি কোন ভাবে পালিয়ে মায়ের দুধ খাচ্ছে।আর মা ও পরম আদরে বাচ্চার ক্ষুধা মেটাচ্ছে।
ফটোগ্রাফার | বৃত্ত |
---|---|
ডিভাইস | পোকো এক্স২ |
লোকেশন | গাংনগর,শিবগঞ্জ,বগুড়া |
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
সত্যি ভাইয়া ইট পাথরের দেয়ালের মাঝে নিজেকে বড্ড বেমানান লাগে আজকাল। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেয়ালের দিকে তাকালেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। কোথায় একটু প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখব তা নয়। সেই শহরে এসে বাস করতে হচ্ছে। আপনি যেহেতু আপনার নানুর বাসায় গিয়েছেন তাহলে নিশ্চয়ই অনেক ভালো সময় কাটাচ্ছেন। যেহেতু আপনার নানু বাসা গ্রাম অঞ্চলে তাইতো নেটওয়ার্কের সমস্যা হচ্ছে। যাইহোক ভাইয়া মাঝে মাঝে যদি সবকিছুর বাহিরে গিয়েও এত সুন্দর পরিবেশে সময় কাটানো যায় তাহলে ভালই লাগে।
গ্রাম বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য গুলো এখনও সবাইকে আকৃষ্ট করে। আসলে প্রকৃতির সৌন্দর্য সবকিছুকে হার মানিয়ে দেয়। যেমন ধরুন আপনার এই পর্বে সোনালী ধানের ক্ষেত সবচেয়ে বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে।
ধন্যবাদ ভাই। অনেক উৎসাহ পেলাম আপনার মন্তব্য থেকে।
বিদ্যুৎ নেই এমন একটি গ্রামে অনেকদিন যাবত যাবার সখ কিন্তু এমন কোন গ্রাম বোধহয় এখন তেমন একটা নেই। যাইহোক আপনার নানুবাড়ি এলাকাটা কিন্তু খুবই সুন্দর। একদম খাটি গ্রাম বলতে যা বোঝায় তাই। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
হ্যা ভাই একদম খাটি গ্রাম।বিদ্যুৎ এসেছে বেশিদন হল না।এখন বিদ্যুত ছাড়া গ্রাম খুজে পাওয়া অনেক কষ্টকর।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনার এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমার একটি গান মনে পড়ে গেল ।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি আসলেই গ্রাম বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য এতটাই মনোমুগ্ধকর যে পৃথিবীর কোথাও তা খুঁজে পাওয়া যাবে না। মেঠো পথ ,ধান খেত সোনালী সূর্য সবই যেন সুখের প্রতিক।
একদম উপযুক্ত একটি গান বলেছেন আপু। তখন এরকম ই ঘুরছিল মাথায়। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
কবে নানু বাড়িতে গিয়েছিলাম মনেই নেই! নানু বাড়ির গ্রামীণ সৌন্দর্য আমার কাছে খুব ভালো লাগে! অনেকদিন পর গ্রামীণ পরিবেশে ভালো সময় কাটিয়েছেন। ফটোগ্রাফি দেখেই বুঝা যাচ্ছে 🌼। ধন্যবাদ ভাইয়া
নানার বাসায় ঘুরতে গিয়ে খুবই চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। খুবই চমৎকার কিছু কথা ও আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন আসলে শহর অঞ্চলে থেকে কেউ কখনোই প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখতে পারবেনা। প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখতে হলে অবশ্যই গ্রামে যেতে হবে কারণ গ্রামের প্রকৃতি অনেক বেশি রোমাঞ্চকর হয়ে থাকে শহরের তুলনায়। ঘোরাঘুরির মুহূর্তের সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফিও আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো।
দাদা আপনার প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি বেশ চমৎকার হয়েছিল। আপনার ফটোগ্রাফির মাঝে প্রকৃতি যেন অপরূপ সৌন্দর্যে ফুটে উঠেছে। আসলে গ্রাম্য প্রকৃতি দেখতে আমার কাছে খুবই সুন্দর লাগে। আপনার জন্য শুভকামনা দাদা।
ধন্যবাদ ভাইয়া অনেক উৎসাহিত হলাম।আপনার জন্যও অনেক শুভ কামনা রইল।
আপনাকেও ধন্যবাদ দাদা।
সত্যি বলেছেন ভাইয়া শহরের মানুষ দেয়ালের মধ্যে থাকতে থাকতে তার মনটাও দেওয়ালের মতো হয়ে গেছে। আর গ্রামের অপরূপ দৃশ্য এখনো দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। ধান খেতের ছবিগুলো চমৎকার হয়েছে।টমেটো ও কপিগুলো সুন্দর, এগুলো কৃষকের মুখের হাসি।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ গ্রাম বাংলার সুন্দর ছবিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার ।
আপনার কথা গুলো একদম সত্যি।ফসল গুলোই কৃষকের মুখের হাসি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
গ্রাম বাংলার মেঠো পথে দিয়ে হাঁটতে অনেক মজা লাগে। আসলে ইট পাথরের শহরের মধ্যে থাকতে থাকতে জীবনটা একদম কনক্রিটের মতো হয়ে যাচ্ছে।আসলেই গ্রাম বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য এতটাই মনোমুগ্ধকর যে পৃথিবীর কোথাও তা খুঁজে পাওয়া যাবে না।আমাদের বাংলাদেশ আসলেই অনেক সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে সুন্দর কিছু মূহূর্ত ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।আসলেই আমাদের দেশের মত সৌন্দর্য কোথাও খুজে পাওয়া যাবে না।