দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।গতকাল একটি দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম।সেই বাজে অভিজ্ঞতাই শেয়ার করব আপনাদের সাথে।
আপনারা জানেন কিছুদিন পর আমার মাসির বিয়ে।বিয়ের অনেক কাজ এর দায়িত্ব আমার উপর।কয়েকদিন আগে বিয়ের শপিং নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলাম।অনেকেই জানেন হয়ত।
কয়েকদিন থেকে নতুন দায়িত্ব পালন করা লাগছে।দায়িত্বটি অনেকটা পোস্টম্যান এর মত। বিয়ের কার্ড আত্মীয়দের বাসায় বিলি করতে হচ্ছে।প্রথমত বিষয়টি নিয়ে আমি খুব একটা খুশি নই।কারন এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসে এখনো বাড়ি বাড়ি গিয়ে কার্ড বিলি করার সাইন্স টা আমার মাথায় কিছুতেই আসে না।
যাই হোক,মামা যখন আদেশ করেছে,তা পালন করা আমার জন্য কর্তব্য।তাই টিউশন,পরীক্ষা সব কিছুর ফাকে ফাকে সময় বের করে দায়িত্বপালন করছি।এই দায়িত্বের জন্য শুক্রবারেও শান্তিতে ঘুমাতে পারছিনা।
তো গতকাল যাওয়ার কথা ছিল বগুড়া শেরপুর।বগুড়ার দই তো বিখ্যাত, আশা করি সবাই জানেন।এই বগুড়ার দইয়ের মাঝে আবার শেরপুরের দই বিখ্যাত।একবার খেলে স্বাদ মুখে লেগে থাকবে।সকালে রওনা দিয়ে আগে বোনের মেসে গেলাম।ওখানে কয়েকটি জিনিস দিয়ে, ওর খোজ নিয়ে রওনা দিলাম শেরপুর।
সেখানে গিয়ে দুপুরের খাওয়াদাওয়া করে বিশ্রাম নিয়ে নিমন্ত্রন করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।কিন্তু রাস্তায় প্রথম বিপত্তি হল গাড়ি পাওয়া নিয়ে।কিছুতেই গাড়ি পাচ্ছিনা।অথচ শেরপুর থেকে রাত ৩টা তেও গাড়ি পাওয়া যায়।অথচ আজ বিকেল বেলা গাড়ি পাচ্ছিনা।এভাবে একঘন্টা অপেক্ষার পর একটি ঢাকার গাড়ি পেলাম।সিট ছিল না,তাই দাঁড়িয়ে আসতে হবে।
তখন ভাবলাম এখানে দাঁড়িয়ে গাড়ির অপেক্ষা করার থেকে গাড়ি তে দাঁড়িয়ে বাড়ির দিকে এগিয়ে যাওয়া ঢের ভাল। এই বুদ্ধির জন্য নিজের পিঠ নিজে চাপড়িয়ে,গাড়িতে উঠে পড়লাম।কিন্তু তখন কি ছাই জানতাম কপালে দুঃখ আছে।
যাই হোক বাসে চড়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে,সুখে দুঃখে আসলাম বগুড়া পর্যন্ত। এরপর বগুড়া টার্মিনালে এসে ড্রাইভার নেমে যায়।কারন তার ঘুম পাচ্ছিল।দায়িত্ব পায় নতুন ড্রাইভার।
এরপর গাড়ি যখন মোকামতলা আসে সে ভুল করে নির্মানাধীন ওভারব্রিজের রাস্তায় তুলে ফেলে।কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় তাকে পাশের রাস্তায় যেতে হবে।
কিন্তু পিছে না গিয়ে সে হঠাৎ করে নামিয়ে দেয়।কিন্তু তার গননায় একটু ভুল ছিল,দুটি রাস্তার মাঝে উচ্চতার তফাৎ ছিল অনেক,তাছাড়া দুইটি রাস্তার মাঝের মাটিটুকু একদম নরম।ফলে সামনের একটি চাকা নামানোর সাথে সাথে গাড়ি কাত হয়ে যায়,এবং চাকা ডেবে যায়। গাড়ি উলটে যাওয়ার মত অবস্থা হয়।যারা দাঁড়িয়ে ছিল তারা সিটের যাত্রিদের উপরে গিয়ে পরে।
এরপর দ্বিতীয় চাকা নামলে গাড়ি কিছুটা ব্যালেন্স হয়।তখন সবাই নতুন ড্রাইভার কে গালাগালি করছিল।আর গাড়ি এমন অবস্থায় পড়ে যে তা সামনেও যেতে পারছে না আবার পিছনেও যেতে পারছে না।দুই রাস্তার মাঝখানের কাদায় আটকে গেছে।সব যাত্রীদের নামিয়ে গাড়িটিকে কাদা থেকে উঠানোর চেষ্টা করা হল,কিন্তু এতে গাড়ির এক্সেল ক্ষতিগ্রস্থ হয়।ফলে গাড়ি চলার অনুপোযোগী হয়ে পড়ে।যাত্রীরা তো ননস্টপ গালাগালি করছিল।
তখন সব যাত্রীদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।ফলে আমিও অন্য গাড়ি ধরে বাসায় চলে আসি।আজ সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে রক্ষা করেছেন বলে গাড়ি অল্পের জন্যে উলটে যায়নি,আর অনেক বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি।সৃষ্টিকর্তা কে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে দাদা বিপদ কখনো কাউকে বলে কয়ে আসেনা। তবে আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করেন। এই যাত্রায় বেঁচে গেলেন শুকরিয়া আদায় করেন আল্লাহর কাছে। আধুনিক যুগে কাড বিলি করা মাথায় না আসার কিছুই নেই। আপনি ফোন করে নিমন্তন্ন করলে সেটা আত্মীয়-স্বজন ভাই বন্ধু যাই বলেন না কেন গ্রহণযোগ্য হয় না। আপনি গিয়ে কথা বলে আসলেন কলা কৌশল করে আসলেন এতে নেমন্তন্নটা দেওয়া হলো আত্মীয়র সাথে কথাবার্তা হল এতে দুই পক্ষের ই মনে আনন্দ বিরাজ করে। অসাধারণ ছিল আপনার অনুভূতিগুলো। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
ভালো লজিক দিয়েছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনার মাসির বিয়ের জন্য দেখি আপনি খুবই খাটছেন। আর গাড়িটা উল্টে গেলে যে কি হতো তা ঠিক নাই। আসলে গাড়ি চালানোর সময় তাড়াহুড়া করা উচিত না। আপনাদের কোনো ক্ষতি হয়নি এটা জেনে খুশি হলাম। আপনার মাসির বিয়ের জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।দাওয়াত রইল বিয়ের।
দূর্ঘটনা থেকে যে রক্ষা পেয়েছেন তা শুনেই ভালো লাগছে।যদি বাসটা উলটে পড়ে যেত তাহলে হয়ত খুব খারাপ কিছু হয়ে যেত।অদক্ষ ড্রাইভারদের কারণে অনেক সময়ই যাত্রীরা খুব বাজেভাবে দূর্ঘটনার শিকার হয়।এমন একটা সময়ের মুখোমুখি হয়েছেন জেনে ভয় পেয়ে গেলাম।ভাগ্য ভালো যে খারাপ কিছু হয়নি।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন জানতে পেরে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। অদক্ষ ড্রাইভারের কারণে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ধরনের এক্সিডেন্টগুলো সংঘটিত হয়। আপনার মাসির বিয়ের আগে কোন প্রকারের দুর্ঘটনা হয়নি এটা খুবই ভাগ্যের ব্যাপার। এখন থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে মাসির বিয়ের জন্য তোড়জোরে খেটে যান। মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় যেন আপনার মাসির বিয়ে খুব ভালোভাবেই সম্পন্ন হয় এই কামনা করছি। ধন্যবাদ
হ্যা ভাইয়া বিয়ের আগে দুর্ঘটনা ঘটলে খুব বাজে ব্যাপার হত।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনার মাসে বিয়েতে আপনার খুব কষ্ট হচ্ছে মনে হচ্ছে। পরীক্ষা টিউশন তার ফাঁকে আবার কার্ড বিলানো। কম কথা? এরমধ্যে আবার এক্সিডেন্ট। ভাগ্য ভালো আল্লার ঘটনা থেকে বেঁচে গেছেন।
হ্যা আপু কপালের জোর আর ঈশ্বরের ইচ্ছায় বেচে গেছি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এত বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। ড্রাইভারদের ভুলের কারনে অনেক জীবনের ক্ষতি হয়ে যায়। খুব সাবধানে পথ চলবেন।ভাল থাকবেন ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপু উপদেশের জন্য।আপনিও ভাল থাকবেন।
এটা একটা প্রথা। আমাদের ইন্ডিয়াতে তো এই রকমই হয়। নিতান্তই যারা অনেক দূরে থাকে তাদের অনলাইনে কার্ড দেওয়া হয়।
যাই হোক আপনার পোস্টটা পড়ে একটু খারাপ লাগলেও, পরে অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছি। আপনার শেষ পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি, সুস্থভাবে বাড়ি আসতে পেরেছেন। আসলে অনেক সময় অন্যের অসাবধানতা দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, আমরা যতই সাবধান হইনা কেন তাতে কোন লাভ হয় না।
হুম নিজে সাবধান হয়েও লাভ হয়না।অন্যের অসাবধানতায় দুর্ঘটনায় পড়তে হয়।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া এই প্রযুক্তির যুগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কার্ড দেওয়াটা একটু বিড়ম্বনাই বটে। কপালে ভোগান্তি থাকলে তা কোন না কোন ভাবে চলেই আসে। একে তো গাড়ি পাচ্ছিলেন না, বহু কষ্টে যাও একটি গাড়ি পেয়েছেন তা আবার গাড়ির ড্রাইভারের ঘুম পাওয়ার কারণে নতুন ড্রাইভার। অল্পের জন্য এক্সিডেন্ট এর হাত থেকে বেঁচেছেন। গাড়ি উল্টে গেলে বড় কোন দুর্ঘটনা হতে পারতো। যাক অবশেষে সুস্থ মত বাড়িতে পৌঁছেছেন তাই অনেক।
হুম।ভগবানের কৃপায় সব কিছুর পরেও সুস্থ্যভাবে চলে এসেছি।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনার মাসির বিয়ে আনন্দের সাথে সাথে কিছু কষ্ট করতে। আপনি কিছু হয়নি এটার জন্য খুবই ভালো লাগলো। এসময় কোনো দূর ঘটনা হলে কষ্টের কোন সীমা থাকতো না।