চড়ুইভাতি||মজার অনুভূতি
আমাদের শৈশব ছিল বড়ই মজাদার। তখন পড়াশোনার অত চাপ ছিল না। ছিল না সকাল হতে না হতেই নিজের ওজনের থেকে বেশি ওজনের ব্যাগ নিয়ে টিউশনে দৌড়ানোর তাড়া। আমাদের শৈশব টা ছিল মুক্ত বিহঙ্গের মত। সেখানে ভাল রেজাল্টের অদৃশ্য শিকল পায়ে বাধা থাকত না।
যাই হোক নিজের শৈশব নিয়ে অনেক বকবক করলাম। আমাদের শৈশবে অনেক মজার জিনিস ছিল।তখন হয়ত মোবাইল,কম্পিউটার এর মত বিনোদন এর সামগ্রী ছিল না।কিন্তু তারপরেও কিন্তু আমরা ছোট ছোট জিনিসের মাঝে বিনোদন খুজে নিতাম।হাতে দামি ঘড়ি,সানগ্লাস না থাকলেও নারিকেল পাতার ঘড়ি,চশমা পড়ার পর আমাদের মনে যে অনুভূতি আসত তা এখন ব্রান্ডের ঘড়ি সানগ্লাস ও দিতে পারবে না।
যাই হোক শৈশব টাকে রঙিন করার যতগুলো উপাদান ছিল তার মধ্যে অন্যতম হল চড়ুইভাতি।চড়ুইভাতি আপনারা হয়ত অনেকেই চেনেন।আবার অনেকের কাছে বিষয়টি নতুন মনে হতে পারে।চড়ুই ভাতি হল আমাদের পিকনিক এর প্রাচীন সংস্করণ। এটি দেখা যেত নব্বই এর দশক থেকে মোবাইল আবিস্কার হবার আগে পর্যন্ত। এখনো অবশ্য হয় তবে তাতে বিশুদ্ধ নির্মল যে আনন্দ আগে ছিল তা থাকে না।
পিকনিক এর সাথে চড়ুইভাতির বেশ কিছুটা ব্যাসিক পার্থক্য রয়েছে।তার মাঝে অন্যতম হল চড়ুইভাতি তে চাদা নেওয়া হয়না।তেল,নুন লাকড়ি যা প্রয়োজন তা সবাই যার যার বাড়ি থেকে এনে নিজেরাই রান্না করে। খাবারের স্বাদ যেমনই হোক, সবাই মিলে যোগাড় যন্ত্র করে একত্রে বসে খাওয়ার মজা টাই আলাদা।
যাই হোক আমাদের বাসার উঠান টা বেশ বড়। আশে পাশের বাসার পিচ্চিরা, বড়রা সবাই আমাদের উঠানে আড্ডা দেয়,খেলাধুলা করে। আজ শুক্রবার তাই আজ সকাল থেকেই বাড়ির উঠান সরগরম।আমার পিচ্চিরাও খেলতেছিল,হঠাৎ একজন বায়না ধরল চড়ুইভাতি করবে।
আমিও পেছনে থেকে উৎসাহ দেওয়া শুরু করলাম।ভাবলাম আমিও ওদের সাথে যোগ দিয়ে আবার শৈশবের দিনে ফিরে যাব।অনেক মজা হবে। কিন্তু সেই আশার গুড়ে বালি, ওরা পিকনিক করবে মাছ দিয়ে৷ আর আমি মাছ খাইনা।তাই আমার অংশগ্রহণ করা আর হল না।কিন্তু তাই বলে মন খারাপ করি নি। আগাগোড়া ওদের সাহায্য করতেছিলাম।পরে সিদ্ধান্ত হয় শুধু ছোটরাই অংশগ্রহণ করতে পারবে। বড়রা পারবে না।আর ওরা সব মিলিয়ে সংখ্যা হল ৩জন।
ওদের চুলা বানিয়ে দিলাম,যেহেতু তিনজন তাই বড় হাড়িপাতিলের বদলে ওদের খেলার ছোট হাড়িপাতিলেই রান্না করার সিদ্ধান্ত হল।সেজন্য চুলাটাকেও ছোটই বানানো হল।এই ফাকে ওরা রান্নার যোগাড় করে নিল,তবে অর্ধেক কাজ আমাদের থেকেই করিয়ে নিয়েছে। মাছ কেটে দিল মিথিলা।যাই হোক কাজ করে দিলেও বেশ মজা হচ্ছিল,সেই সাথে ছোটরাও অনেক মজা করছিল।
এরপর একসময় রান্না শেষ হল।সবাইকে খেতে বসিয়ে দেওয়া হল,পরিবেশন ওরা নিজেরাই করল।পাশ থেকে এক পাশের বাড়ির আন্টি মন্তব্য করছিল হলুদ কম হয়েছে,আলু সিদ্ধ হয়নি।আমি বললাম আন্টি ওদের রান্না ওরাই বুঝবে। প্রথমবার করেছে একটু হবেই,প্রথমবারেই পারফেক্ট হয়না।আস্তে আস্তেই শিখে যাবে। ওরা মজা করছে এটাই বড় বিষয়।যাই হোক সবাই খুব মজা করে খেল। আর সেই আন্টিও মুখ বাকা করে চলে গেল।যাই হোক আমিও বেশ মজা করলাম ওদের সাথে।ছুটির দিনটা অনেক ভাল কেটেছে।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
চড়ুইভাতী তৈয়ারী দেখে ছোট কালের কথা মনে পড়ে গেল। ছোটকালে অনেকজন মিলে এভাবে আমরা অনেক কিছু তৈরি করতাম। তবে ভাইয়া ছোট বাচ্চারা কিছু তৈরি করলে তা ভালো হয়েছে বলতে হয়। পাশের বাড়ি এক আংটি বলেছে আলু সিদ্ধ হয়নি হলুদ কম হয়েছে এগুলো বললে ছোট বাচ্চাদের মন খারাপ হয়ে যায়। আপনার পোষ্টের মধ্যে জানতে পারলাম আপনি মাছ খান না।আর ভাইয়া মাছ খাওয়ার চেষ্টা করবেন মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন আছে। অনেক সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আপনার এই চড়ুইভাতির পোস্ট পড়ে ছোট বেলার কথা খুব মনে পড়ে গেল। এই খেলা আমার মনে হয় সবার জীবনে স্মৃতি হয়ে রয়েছে। ছোটবেলায় ভাইবোনেরা মিলে এই খেলা খেলতে অনেক ভালো লাগতো। সবশেষে একসাথে বসে খাওয়ার মজাই আলাদা ছিল। সবার ঘর থেকে চাল ডাল আর পুকুর থেকে মাছ তুলে রান্না করে খেতে খুবই মজা হতো। ধন্যবাদ এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
চড়ুইভাতি দেখে শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল ভাই। কতো সোনালী মুহূর্ত পার করেছি বাড়ির সমবয়সীদের সাথে। শৈশবে চড়ুইভাতি খাওয়ার কি যে আনন্দ তা বলে বুঝানো সম্ভব হবে না। আসলে শৈশবের সেই সোনালী মুহূর্তগুলো মনে পড়লে এখনো হৃদয় শিউলিত হয়ে উঠে। সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করা আনন্দটাই আলাদা। আপনার পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শৈশবের অনেক স্মৃতি মনে পড়লো। ধন্যবাদ আপনাকে দুর্দান্ত পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে সেই ছোটবেলায় চলে গেলাম । আমাদের ছোটবেলাটা সত্যিই চমৎকার ছিল । আর এখনকার বাচ্চারা তো এগুলোর কিছুই দেখেনা । তবুও তো আপনার বাসায় বাচ্চাদের নিয়ে চড়ুইভাতী করেছেন বিষয়টা বেশ ভালো লাগলো । বাচ্চারাও চড়ুইভাতি বিষয়টা বুঝতে পারল । আর কিছু লোক তো থাকবেই সব জায়গায় কিছু বাঁকা কথা বলার জন্য । যাই হোক আপনি ভালো জবাব দিয়েছেন বিষয়টা ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ ।
আপনার চড়ুইভাতি দেখে আমারও শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। শৈশবে আমরাও বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করতাম। যা দিয়ে অনেক খেলা করতাম এবং আনন্দ করতাম। বিভিন্ন ধরনের মাছ মাংস দিয়ে চাউল দিয়ে জলাতী রান্না করতাম। এবং বিভিন্ন ধরনের পাতা দিয়ে খেলার জিনিস বানাতাম। সত্যিই এসব স্মৃতি ভুলার মত নয়। আপনার পোস্টটি পড়া অনেক ভালো লাগলো।
কি দরকার এই কথাগুলো বলার। এতে তো বাচ্চাদেরও মন খারাপ হয়ে যায়। আমি তো মনে করি তাদের আরো উৎসাহ দেওয়া উচিত।
যাইহোক আমার নিজেরই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল আপনার এই পোস্ট পড়তে পড়তে। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের বাঁশ বাগানে সবাই মিলে ঠিক এইভাবে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করতাম।
তবে আশ্চর্যকর বিষয় এটা যে, আমি জানতাম না আপনি মাছ খান না। আপনি মাছ খান না কেনো....?
গন্ধের জন্য খেতে পারি না দাদা। মাছের গন্ধ কোন ক্রমেই আমার সহ্য হয়না। খেলেই নানা সমস্যা হয়।তাই মোটেই খাইনা।
চড়ুইভাতী মানে আনন্দ আয়োজন, যেখানে অনেকজন মিলে একসাথে খিচুড়ি ভাতের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ছোটবেলায় এই জাতীয় খিচুড়ি ভাতের আয়োজন করতাম পাড়ার সকল বন্ধুরা মিলে। মনের মাঝে স্মৃতি ভেসে আসলো আপনার পোস্ট পড়তে গিয়ে।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
এই মুহূর্তগুলো পড়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আপনি একদম ঠিক কথাই বলেছেন নারকেল পাতার চশমার ঘড়ি লাগিয়ে যে মজা হত সেগুলো কোন ব্র্যান্ডের ঘড়ি চশমা লাগালে ও এখন ফিরে পাওয়া যাবে না। আসলে পাশের বাসার আন্টি গুলা খুবই মারাত্মক। এরা যদি সমাজে না থাকতো তাহলে সমাজটা খুবই সুন্দর হতো। যাইহোক তারপর বাচ্চাদের সাথে সাহায্য করে এই মুহূর্তটা কাটিয়েছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। আশা করছি বাচ্চা সময়টা খুবই আনন্দে কাটিয়েছে।