আমাদের পিকনিক-পর্ব-২||শেষ পর্ব
আমার গত পোস্ট থেকে অবশ্যই জেনেছেন আমরা নতুন বছর উপলক্ষে পিকনিক এর আয়োজন করেছি।গত পর্বে সেই পিকনিক এরই বাজার ঘাটের গল্প শেয়ার করেছি।
বাজার করে আনার পর সমস্ত বাজার আন্টিদের হাতে তুলে দিয়ে অবসরে গেলাম।এর মাঝেই আঙ্কেল উপর সামিয়ানা লাগিয়ে দিলেন।তারপর শুরু হল আন্টিদের কাটাকুটি।কেউ সবজী কাটছে তো কেউ মাংস।আবার কেউ রোস্ট বানানো নিয়ে ব্যস্ত।
আর সব থেকে আনন্দ যাদের তারা হল বাচ্চারা। পিকনিক রাতে হলেও এরা সকাল থেকেই সেজেগুজে একদম রেডি।ওরা নিজেরাই খেলাধুলা করছিল,নাচ ছিল।সাউন্ড বক্স জিনিস টা আমার একদম পছন্দ নয়। অনেকের কাছে এটা বিনোদনের মাধ্যম হলেও সারা পাড়া কাপিয়ে গান বাজানোর পক্ষপাতী আমি নই তাই সাউন্ডবক্স আনি নি।
এরপর শুরু হল রান্নাবান্নার পালা।রোস্ট আর খাসির মাংসের গন্ধে চারদিক ভরে উঠল আর আমার ক্ষুধা চাগিয়ে উঠরে লাগত।তখন সবে বিকেল ৪টা।এদিকে খাওয়াদাওয়া রাতে তাই বারবার ঘড়ি দেখছিল সবাই।আমিও ঘড়ি দেখা দলের লোক।
এভাবে রান্না পুরোপুরি কমপ্লিট হতে রাত লেগে গেল।এরপর বাচ্চাদের জেদে শুরু করলাম চেয়ার খেলা।প্রতিবারই এই ইভেন্ট থাকে কিন্তু এবার সব টাকা মাংসে ইনভেস্ট করতে মত দিয়েছিল বড়রা তাই এবার ইভেন্ট বাদ গিয়েছিল।কিন্তু পিকনিকের আসল আনন্দ বাচ্চাদের আর ওরাই যদি সেটা থেকে বঞ্চিত হয় তাইলে পিকনিকের স্বার্থকতা কোথায়।তাই আমি নিজের খরচে তাদের জন্য ব্যবস্থা করলাম খেলাধুলার।যদিও পরে বড় এবং মাঝারি সবাই অংশ নেয়।
চেয়ার খেলার ভিডিও
খেলাধুলার পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান স্বপ্ল পরিসরে।আসলে পুরস্কার যাই হোক,জেতা টাই আসল বিষয়। আমিও মাঝারিদের চেয়ার খেলায় দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেছি।
এরপর চলে আসে মেইন ইভেন্ট। আমরা চেয়ার টেবিলের আয়োজন করি নাই।তার থেকে মাটিয়ে সামিয়ানা বিছিয়ে প্রথাগত উপায়ে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম।তবে যেহেতু আয়োজক আমি তাই সবার খাওয়াদাওয়ার পর যদি অবশিষ্ট থাকে তো আমার খাওয়া আর না থাকলে কপালে খাওয়া নেই। সবাইকে পরিবেশন করলাম আমি আর আন্টি।
এরপর সব শেষে খেতে বসলাম। তবে থালা সজিয়ে বসলেও খেতে পারি নি।একে তো এত পরিশ্রমের পর আর খুধা ছিল না।তারপর আবার একজন মাটি থেকে হাড় তুলে ফেলতে গিয়ে আমার পাতের উপর সেগুলো দুর্ঘটনাক্রমে ফেলে দেয়। ফলে খাওয়াদাওয়া পর্বের ইতি।
এরপর সবাই এক এক করে বিদায় নিতে থাকে।সবাই আয়োজন এর বেশ প্রশংসা করে।আয়োজক হিসেবে নিজেকে স্বার্থক মনে হল। প্রথমত এই আয়োজনে কোন ঝগড়া,ঝামেলা খাবার কমবেশি হয়নি।দ্বিতীয়ত সবাই খুব মজা করেছে।ফলে দারুন ভাবে সবার নতুন বছরের সূচণা হল।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
আপনার গত পর্ব আমার পড়া হয়নি।তবে এমন পিকনিকের আয়োজনে খাওয়া দাওয়ার চেয়ে আমার মনে হয় আনন্দটা অনেক থাকে। সবাই দেখছি অনেক আনন্দ করে খেয়েছে। আসলে পিকনিক কেনো যেকোনো অনুষ্ঠানে পরিশ্রম করলে আর খুধা থাকে না।তারপরে ও যখন খেতে বসলেন হাড়গুলো আপনার প্লেটে পড়ে গেল, যাইহোক এটা একটা দূর্ঘটনা।সবাই ভালো ভাবে খেয়েছে এটাই অনেক, ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর গোছানো মন্তব্য করার জন্য।
এমন পিকনিকের আয়োজন করলে আনন্দের আর শেষ থাকে না তা আমি পূর্বেই বুঝেছি।। আপনাদের ফটোগ্রাফি এবং ভিডিও দেখে খুবই ভালো লাগলো সবাইকে খুব মজা করেছেন এতে আর কোন সন্দেহ রইল না।। আসলে এমন দিন এমন সময় এমন আয়োজন হয়তো প্রতিদিন হবে না কিন্তু স্মরণীয় হয়ে থাকবে চিরকাল।। তাছাড়া খাবারগুলো কিন্তু অনেক লোভনীয় ছিল।।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।আর নব বর্ষের অনেক শুভেচ্ছা রইল।
নতুন বছর উপলক্ষে অনেকেই দেখছি পিকনিক করেছে আবার আপনারাও সকলে মিলে সুন্দর একটি আয়োজন করেছিলেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। খুব ছোটবেলায় এরকম পিকনিক করতাম কিন্তু এখন আর নতুন বছর উপলক্ষে কিছু করতে ইচ্ছে করেনা সারাটা দিন ঘরের মধ্যেই কাটিয়ে দিই। যাইহোক আপনার এই সুন্দর মুহূর্তটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুবই চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। বিশেষ করে বাজার করে নিয়ে এসে দিয়ে আপনার ছুটি হয়ে গিয়েছে এটা ভাবতেই ভালো লাগছে, আসলে ছেলেরা এমনই বাজারটা করে নিয়ে আসা তাদের কাজ,বাকিটা বাড়ির সকল মেয়েদের হাহাহা।
ভাই রান্নাটাও আমাদেরই করা লাগছে।খালি আন্টিরা কাটাকুটি পর্যন্ত ছিল।যাই হোক ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
নিউ ইয়ার কে কেন্দ্র করে খুব চমৎকার একটি পিকনিক করেছেন। আসলে আপনাদের পিকনিকটি অনেক জমজমাট ছিল। কারণ সবাই মিলে একসাথে করেছেন তাই। অনেক ধন্যবাদ আমাদের মাঝে দুটি পর্বে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
দাদা গত পোস্টে দেখেছিলাম বাজার সদাই তবে কমেন্ট করি নি ৷ তবে আজকের পোষ্টটি না পড়ে আর থাকতে পরালাম না ৷
সত্যি বলতে গ্রামের পিকনিক আয়োজন গুলি সত্যি অসাধারণ ৷ পাড়ার সবাই মিলে একসাথে আহা দারুন ৷ আর এই শীতের দিন মানেই পিকনিকের আয়োজন ৷ তবে ছোট্ট বেলার পিকনিক খাওয়ার মতো আনন্দটাই সবচেয়ে সুন্দর ৷ মাত্র কিছু টাকা দিয়ে বাড়ি হতে চাল ,লবন ,তেল দিয়ে খাওয়া ৷ আসলে বাচ্চারা ছাড়া পিকনিকে আনন্দ লাগে না ৷
অনেক ভালো লাগলো দাদা চেয়ার. খেলা দেখে অনেক মজার খেলা ৷
এরপর খাওয়া দাওয়া আহা আপনি তো দেখছি হাটু গুরে বসেছেন ৷
অনেক ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে৷
হ্যা ভাই আমি ওভাবে ছাড়া বসতে পারিনা।আর চড়ুই ভাতির আলাদা মজা।নিজেদের চাল,নুন নিজেদের রান্না।ওটার সাথে এগুলোর তুলনাই নেই।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
পিকনিক মানেই আনন্দ। আপনারা পিকনিকে বেশ মজা করেছেন। এত খাবারের আয়োজন দেখে আমার লোভ লেগে গেল। আপনি বাচ্চাদের আনন্দ মাটি হতে দেননি এটা ভাল করেছেন। আপনি আয়োজক হিসেবে বেশ ভাল কাজ করেছেন তা বোঝা গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আপনি নিজেই খেতে পারলেন না শুনে ভাল লাগেনি। তবে ঝগড়া বিদ্বেষ ছাড়া এত বড় একটি পিকনিকের আয়োজন করেছেন দেখে নিশ্চয়ই অনেক আনন্দ পেয়েছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
অবশ্যই ভাই।আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে প্রতিবারই ঝগড়া লাগত।আমি গত ৩বছর থেকে করতেছি কোন ঝগড়া ঝামেলা নাই৷ তাই একটু স্বার্থক তো মনে হয় ই।ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
গত পর্বে বাজারের পর্ব দেখেছিলাম।এমন পিকনিকের আয়োজন করলে বেশ ভালোই লাগে।ভালোই তো নিজের খরচে বাচ্চাদের জন্য খেলার আয়োজন করেছেন।যদি ও জিনিসটা দুর্ভাগ্যবশত তবে আমি বেশ মজা পেয়েছি হাড়গুলো যে আপনারই প্লেটে পরেছে।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
হ্যা কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ।খুশি তো হবেনই।যাই হোক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
দেখে বোঝা যাচ্ছে বছরের শুরুটা আপনার বেশ জমিয়ে কাটিয়েছেন সবাই মিলে।আয়োজন বেশ বড়সড় করে করেছেন।তবে আপনার পক্ষে নয় কারণ আমি বড় সাউন্ড দিয়ে গান বাজানোর পক্ষে। পিকনিকের শেষে খেলা ধুলার আয়োজন এবং বেশ মজার করে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন চলছে দেখে বোঝা যাচ্ছে।মজার মুহূর্তটি আমাদেরকে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সবার নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে আপু। বক্স যে মানুষের কি পরিমান সমস্যা করে তা শুধু যে ভুক্তভোগী সেই জানে।এজন্য আমি বক্স এর বিরোধী।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনার পিকনিকটা অনেক সুন্দর হয়েছে। ছোটবেলা এরকম পিকনিক আমরা অনেক করেছি। এরকম আনন্দদায়ক অনুষ্ঠান বাচ্চাদেরকে অনেক আনন্দ প্রদান করে থাকি। কিন্তু আমি ভাবছি শেষ পর্যন্ত কি আপনি আমার রোস্টই রান্না করেছিলেন?
হ্যা আপনার বিয়ে বাড়ির রোস্ট টাই হয়েছিল।অসাধারণ হয়েছিল খেতে।কিন্তু আফসোস খেতে পারি নি ঠিক মত।দারুন একটি রেসিপি সময় মত পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আর সুন্দর মন্তব্যের জন্যও ধন্যবাদ।