ব্যাচের ইফতার||২০১৬ ব্যাচ

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমাদের ব্যাচের ইফতার মাহফিল।

IMG_20230420_182236.jpg

প্রত্যেকটি মানুষের জীবনের বেস্ট সময় টা কাটে হয়ত হাইস্কুলে।প্রাইমারিতে বন্ধুত্ব জিনিসটা সেভাবে বোঝা যায়না।তখন কার রোল এক হবে সেই নিয়ে প্রতিযোগীতা চলতে থাকে।মানে ছেলেমানুষি যাকে বলে। আবার তখন স্বাধীনতাটাও থাকে না যে যখন ইচ্ছে বাইরে গেলাম,বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলাম।ফলাফল খুব একটা মজা হয়না প্রাইমারিতে।

আবার কলেজ লাইফে আসে পড়াশোনার চাপ।ক্যারিয়ার এর জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় এই উচ্চমাধ্যমিক।ফলাফল সবাই লাইফ নিয়ে খুবই সিরিয়াস হয়ে যায়।আবার ভিন্ন ভিন্ন কলেজ সিলেকশন এর জন্য বন্ধুরাও আলাদা হয়ে পড়ে।নতুন বন্ধুদের সাথেও ভালভাবে মেশা হয়ে ওঠে না। সবাই শো অফ,রিলেশন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।ফলে প্রকৃত বন্ধু যাকে বলে তা হয়ে ওঠে না।ভার্সিটি লাইফটাও অনেকটা সেরকম ই।

IMG_20230420_181803.jpg

তবে হাইস্কুল লাইফ টা পুরোপুরি আলাদা। না আছে পড়ার চাপ,না আছে পরাধীনতার বেড়ি।তার উপর বয়:সন্ধি কালের গরম রক্ত।কোন কিছুতেই ভয় নেই এই বয়সে,না আছে পিছুটান। এই সময়েই হয় আসল বন্ধুত্ব। এই সময় কোন বন্ধু যদি বলে ভাই তোর জন্য জীবন দিতে পারি তবে সেই কথা প্রায় ৯০%সত্য।

হাইস্কুল লাইফের বন্ধুত্ব টিকে থাকে প্রায় সারাজীবন।আমাদের হাইস্কুলটি শতবর্ষের ও বেশি প্রাচীন।যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সরকারিকরণ করা হয়েছে।তবে আগে বেসরকারি ছিল। আর শিক্ষার মান ভাল হওয়ায় সবাই প্রায় এখানে ভর্তি হতে চায়। ফলে আগে ছাত্র নেওয়ার কোন লিমিটেশন ছিল না। স্কুলে কক্ষের কোন অভাব ছিল না।ফলে ইচ্ছামত শাখা বাড়িয়ে নিয়ে ছাত্র ভর্তি করিয়ে নেওয়া হত।

IMG_20230420_181822.jpg

আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলাম মোট ৩৩০জন।শাখা ছিল তিনটি।যাই হোক এগুলো গল্প এখন বাদ। এখন আসি প্রধান বিষয়ে। আমাদের এই ৩৩০জনের মাঝে অনেকেই আজ ঝড়ে গেছে। কঠিন বাস্তবতার কাছে হার মেনে অনেকেই আজ সংসার এর ঘানি টানছে।তারপরেও যে কয়জন টিকে আছি তাদের মাঝে বন্ধুত্বের বন্ধন যথেষ্ট শক্তিশালী।

এই বন্ধন কে অটুট রাখার জন্য প্রতিবছর রমজান মাসেই একটি ইফতার মাহফিল এর আয়োজন করা হয়।এবারো তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। সবাই মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২৮রোজার দিন ইফতার করা হবে।আরেকটি কারন হল এই দিন আমাদের সেমিফাইনাল ম্যাচ ছিল।ইফতার এর চাদা ধার্য করা হয় ২৫০টাকা। অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার কাছে থেকে টাকা নেয় কিন্তু আমরা নিজেদের সব কিছু নিজেদের টাকা তেই করি।

IMG_20230420_182544.jpg

প্রথমে প্রস্তাব হল কোন রেস্টুরেন্ট থেকে প্যাকেট কেনা হবে। তারপর প্রস্তাব হল বাবুর্চি ঠিক করে রান্না করা হবে। কারন প্যাকেটে যে পরিমান দেবে তা দিয়ে পেট ভরবে না কারই।তাই রান্নার প্রস্তাবেই সবাই রাজি হল।আর মেনু ঠিক করা হল বিরিয়ানি আর বুটের ডাল।

সেই মত ২০তারিখ অর্থাৎ ২৮রোজার দিন চলে আসল। খেলায় আমরা অল্পের জন্য হেরে যাই। আমরা খেলা চলাকালীন সময়েই আরেকদল রান্নার ব্যবস্থা করতে থাকে যাতে ইফতার এর সময়ের মাঝেই খাবার রেডি হয়ে যায়। অত:পর বিকেল ৫টা থেকেই সবার আনাগোনা শুরু হয়। এরপর ইফতার এর আগে সবাই গোল হয়ে বসলাম। যারা রান্নার দায়িত্বে ছিল তারা এক এক করে পরিবেশন শুরু করে।এরপর আজান দিলে সবাই একসাথে খাওয়া শুরু করি। তবে এর মাঝেও অনেক মজা করেছি। বন্ধুবান্ধব অনেক দিন পর একসাথে হলে যা হয়। তারপর আমাদের হেরে যাওয়া টিমের মেম্বার দের নিয়েও মজা করা হচ্ছিল।সব মিলিয়ে দারুন সময় কেটেছে।

ভিডিও

আজকের পর্ব এপর্যন্তই। কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন। পুনরায় সবাইকে ঈদ মোবারক বলে আজকের পোস্ট শেষ করছি। ভুলত্রুটি নিজগুণে ক্ষমা করবেন।

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
![break2.jpg](

Sort:  
 last year 

আপনার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। ঠিক বলেছেন ভাইয়া বন্ধুত্ব করা হয় একমাত্র হাইস্কুল জীবনে। প্রাইমারিতে কার রোল এক হবে সেই নিয়ে প্রতিযোগীতা চলতে থাকে আর উচ্চমাধ্যমিকে সবাই লাইফ নিয়ে খুবই সিরিয়াস হয়ে যায়। শুধু হাইস্কুল লাইফ থাকে মুক্ত স্বাধীন। যাই হোক আপনারা ২৮ রোজায় সবাই মিলে একসাথে ইফতার পার্টি করেছেন দেখে ভালো লাগলো। সবাই একসাথে এভাবে খোলা আকাশের নিচে বসে খাওয়ার মজাই আলাদা।

 last year 

ভাইয়া হাই স্কুল লাইফটাই হচ্ছে জীবনের সোনালী সময়। এই সময়ে মানুষ যত আনন্দ উপভোগ করে তা অন্য কোন সময় করতে পারে না। আর সেই বন্ধুদের সাথে অনেকদিন পর দেখা হলে তারও বেশি ভালো লাগে ।সবাই মিলে ইফতার করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগছে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 last year 

সত্যিই হাইস্কুল জীবনটা অনেক আনন্দের ও ভালো সময় কাটে।এই সময়টা যেন স্মৃতির পাতায় গেঁথে থাকে।তাছাড়া আপনারা ২৫০টাকা চাঁদা তুলে ইফতার করেছেন জেনে ভালো লাগলো।সবাই মিলে খাওয়ার মাঝে এক আলাদা অনুভূতি কাজ করে মনে, ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 62881.38
ETH 2449.40
USDT 1.00
SBD 2.62