নীড়ে ফেরা || @shy-fox 10% beneficiary
বাহিরে গিয়ে খুব একটা বেশি দিন কোন জায়গায় থাকতে পারিনা । যার প্রথম ও শেষ কারণ হচ্ছে আপনারা । হয়তো নেটওয়ার্ক ভালো থাকলে সেটা আলাদা বিষয় । তবে নেটওয়ার্কের বাহিরে গেলেই সমস্যা । যার কারণে হয়তো থাকতে পারি না । কারণ আপনাদের ছাড়া আমি কেমনে থাকি বলেন । আমার তো এখন দুটো জীবন , একটা বাস্তব জীবন আর একটা জীবনে আপনারা থাকেন ।
ঐ যে সেদিন বিরিয়ানির গল্প বলেছিলাম মনে আছে । তারপর তো দুপুরবেলা ভরপুর খেয়েদেয়ে মনে হলো এবার আমাকে ফিরতে হবে । কারণ অনেকগুলো কাজ বাকি আছে আর সবগুলো কাজ কিন্তু আপনাদের জন্য । প্রত্যেকটা পোস্ট খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা , তারপর সেগুলো আবার নমিনেশনের জন্য পাঠানো । সবগুলো একেকটা প্রসেস মাফিক কাজ । মানে হুট করে যদি একটু এদিক-সেদিক হয়ে যায়, তাহলে অনেকটাই এলোমেলো হয়ে যেতে পারে । যাইহোক অতঃপর যেমন সিদ্ধান্ত তেমন কাজ । হিরাকে বলেই ফেললাম আজ কিন্তু বাসায় ফিরতে হবে ।
আমি যতবার শ্বশুরবাড়িতে এসেছি, ততবারই দেখেছি আমার গিন্নির এখানে আসলেই মন উদাস হয়ে থাকে ফেরার কথা শুনলেই। কখনই কোনভাবেই সহজে ফিরে যেতে চায় না সেই যান্ত্রিক নাগরিক জীবনে । তবে যেহেতু আমাদের কাজের জন্যই শহরাঞ্চলে থাকতে হয়, মূলত যেহেতু আমাদের কর্ম আমাদের রুজি রোজগারের ব্যবস্থা করে । তাই যেখানে ভালো নেটওয়ার্ক থাকে সেখানে গিয়েই আমরা থাকতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি । হয়তো এই জন্যই বারবার ফিরে আসি সেই যান্ত্রিক নাগরিক জীবনে ।
বিকেল গড়িয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই হীরাকে বললাম , কিগো যাবে না । ওর মনভার, দুদিনের জন্যই মাত্র এসেছে । আর এসেই হুট করে আমি তাকে নিয়ে যেতে চাচ্ছি । তার মনভার হওয়ার ই কথা । যদিও সে আমার ব্যাপারটা বোঝো , তবে আমারও এই যাত্রায় কিছুই করার নেই । তাছাড়া ওকে ছাড়া আমি অনেকটাই বলা যায়, অর্ধমৃত । কারণ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও, যদিও সবকিছু কাজ ঠিকঠাক মতো করার পরেও খাওয়া-দাওয়া যদি ঠিক মতো না হয় তাহলে কিন্তু অনেকটাই আমার এলোমেলো হয়ে যায় ।
আমি ওকে যে শুধুমাত্র আমার পরিচর্চা বা রান্নাবাড়ি করার জন্যই যে রেখেছি তা কিন্তু না । ও আমার অর্ধাঙ্গিনী । আমি মনেকরি ওকে ওর ব্যক্তি-স্বাধীনতা আমি পুরোটাই দিয়েছি । দিয়েছি ওকে ওর নিজের মত করে বাঁচতে । আমি কখনোই ওর স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করি না । তবে চেষ্টা করি, আমি শান্তিতে থাকতে যতটুকু করণীয় ঠিক সেই কাজটাই করতে । ওকে বলেই ফেললাম, সময় সুযোগ পেলে আবারো আসবো । এবার না হয় , একটু বাসার পথে ফিরি ।
কয়েকদিন থেকেই আবহাওয়ার অবস্থা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না । লাগাতার বৃষ্টি লেগেই আছে, কখন যে হুট করে বৃষ্টি নামবে তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই । আশেপাশের নদ-নদীগুলো একদম ভরে উঠেছে । কখন যে শহর রক্ষার বাঁধের উপর দিয়ে, পানি শহরে ঢুকে পড়বে এটা বলা খুব মুশকিল । যাইহোক তড়িঘড়ি করে গাড়িতে চেপে বসলাম । তারপর ঠান্ডা নির্মল হাওয়া, তবে এ হাওয়া কিন্তু সুবিধার না । কারণ এ হাওয়া অন্য কিছুর লক্ষণ জানান দিয়ে যাচ্ছে । তবে কোনো মত বাসায় ফিরতে পারলেই বেঁচে যাই ।
হীরাকে বললাম, বাবুকে তোমার ওড়না দিয়ে জড়িয়ে ধরো । ওর হয়তো ঠান্ডা লাগছে । এমনিতেই হালকা কাশি কয়েকদিন থেকে ওর লেগেই আছে । তারপরে ওকে মুড়িয়ে নিয়ে যাত্রা শুরু , বেশ ভালই লাগছিল । হুট করে আবহাওয়ার পরিবর্তন । মুহূর্তেই নীল আকাশ কালো হয়ে গেল । এ যেন সংকেত দিচ্ছে, বোঝা যাচ্ছে যে একটু পরেই হয়তো সন্ধ্যা নামবে । যদি এমনটা ভাবেন নেহাত একদম ভুল হবে । হয়তো ঝুম বৃষ্টি নামবে । কারণ এই পড়ন্ত বিকেলে এতদ্রুত সন্ধ্যা নামার প্রশ্নই আসেনা । মুহূর্তেই পুরো আকাশ জুড়ে কালো মেঘ, আমার বুঝতে বাকি রইল না । অটোওয়ালা ভাইকে বললাম, যত দ্রুত পারেন আমাদেরকে নিয়ে চলুন ।
বাসায় ফিরতে হবে তারপর কিছুটা গোছগাছ তো আছেই । আবার রাত্রে গিয়ে কিছুটা মিটিং করতে হবে । যদি মাঝপথে রাস্তায় বৃষ্টিতে আটকে যাই তাহলে মহাবিপদ । কারণ এই বৃষ্টির পানি খুব একটা বেশি সুখকর হবে না । যদিও আমি একা থাকলে কোন সমস্যা হতো না । তবে সঙ্গে যেহেতু বাবু ও হীরা আছে, তাই মূলত চিন্তা ওদের নিয়েই । আর এই সকল উন্মুক্ত গাড়িতে খুব একটা বৃষ্টির পানি ঢাকার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে ।
যাইহোক এ যাত্রায় আমাদেরকে বাসায় ফিরতে হবে । মূলত অনেকগুলো কাজ পড়ে আছে , কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে । যেমন ভাবনা তেমন চিন্তা বারবার আমি করছি । বারবার যেন চেনা রাস্তা ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছে । একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন । যখন আপনি অতিরিক্ত চিন্তা ভাবনার ভিতরে থাকবেন, তখন হাজারো কাছের পথ যেন আরও দেরী ও দীর্ঘ মনে হবে ।
ভাগ্য সহায় থাকলে আসলে অনেক কিছুই হয়ে যায় । যেমনটি এ যাত্রায় হলো , বাসায় ফিরতেই সঙ্গে সঙ্গেই ঝুম বৃষ্টি । আহা বেঁচে গেলাম এই যাত্রায় । কেবল বাসার ভিতরের সিঁড়ি দিয়ে উঠছি আর মনে মনে জল্পনা-কল্পনা গুলোকে মিশে ফেলার চেষ্টা করছি । যাক বাবা বেঁচে গেলাম বৃষ্টির হাত থেকে । তবে এ বৃষ্টি যে কয়দিন থাকবে, তা বলা মুশকিল কারণ থেমে থেমেই হচ্ছে ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
গল্পটা পড়ে বেশ ভালোই লাগলো। তবে ভাবীর জন্য মন খারাপ হচ্ছে। তার ছবি দেখেই বুঝা যাচ্ছে তার আরো কিছু দিন থাকার ইচ্ছা ছিলো। তবে আসলেই কিছু করার নাই৷ কারণ গ্রামে যে নেটওয়ার্ক এত অবস্থা তাতে আপনার কাজ করতে অনেক অসুবিধা হবে। যাইহোক বৃষ্টি আসার পূর্বেই যে বাসায় ফিরতে পেরেছেন এটাই অনেক। ভালো থাকবেন ভাই।
এটা একদম সত্যি কথা ও আসলেই ফিরতে চাচ্ছিল না । তবে আমারও কিছু করার ছিল না । আর যদি ওখানে নেটওয়ার্ক ভালো থাকতো, তাহলে হয়তো থেকেই আসতাম ।
ভাইয়া আপনি আপনার অর্ধাঙ্গিনীকে অনেক ভালোবাসেন সেটা আমরা সকলেই জানি। আসলে আমাদের প্রিয় কাছের মানুষগুলোকে যদি আমরা নিজের ভালোবাসা দিয়ে আগলে না রাখি এবং তাদেরকে স্বাধীনতা না দেই তাহলে সম্পর্কগুলো ধীরে ধীরে তিক্ততায় ভরে যায়।তবে আপনি আপনার কাজের ব্যাপারে বেশ সচেতন এটা আমরা সকলেই জানি। কারণ আপনার ভেতরে যে দায়িত্ববোধ আছে সেটা আমাদেরকে সব সময় অনুপ্রেরণা যোগায়। তবে যাই হোক আপনি বৃষ্টির আগেই নিজের বাসায় ফিরে এসেছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার জন্য এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। ❤️❤️❤️❤️
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া তাই আমি চেষ্টাকরি ওকে ওর মতো থাকতে দেওয়ার জন্য।
ভাইয়া আপনি যে অনলাইনে ও অফলাইনে সব সময় আমাদের নিয়ে ভাবেন এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। আমাদের ছোট বড় নানা সমস্যা নিয়ে সমাধানের পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। যাইহোক ভাইয়া শুধু ভাবীর দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই। প্রত্যেকটা মেয়েই যদি প্রতিদিন বাবার বাড়ি যায় তবুও ফেরার সময় তাদের মন কিছুটা মলিন হয়। বর্তমান আবহাওয়া টাই এরকম প্রতিনিয়ত থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সায়ান বাবুকে নিয়ে আপনারা যে বৃষ্টির আগেই ফিরতে পেরেছেন এটা বাবুর জন্য খুব ভালো হয়েছে। কারণ একটু ঠান্ডা লাগলেই ওর কাশিটা আরো বেড়ে যেত। সায়ান বাবুর সুস্থ জীবন কামনা করছি।
ধন্যবাদ ভাই , আমার অনুভূতিটা বোঝার জন্য । আসলে আমারও কিছু করার ছিল না । ব্যাপারটা হয়তো আপনি বুঝতেই পেরেছেন ভাই । শুভেচ্ছা রইল ।
ভাইয়া একবার যাওয়ার গল্প পড়লাম এখন আসার গল্প পড়লাম। ভালই লাগলো। দুইটা গল্পের মধ্যেই একটি জিনিষ খেয়াল করলাম সেটা হলো দুইটি গল্পের মধ্যে নতুন নতুন কথা যোগ করেছেন। একটা গল্পের কথার সাথে আরেকটা গল্পের কথা সম্পূর্ন আলাদা। ধন্যবাদ ভাইয়া।
পাঠকের সন্তুষ্টি লেখকের আত্মতৃপ্তির বহিঃপ্রকাশ । আমি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করছি ভাই ।
ভাই আপনি সত্যিই আমাদের নিয়ে অনেক ভাবেন, এর জন্য আমরা আপনার কাছে চির কৃতজ্ঞ ।
আর বাবার বাসায় গেলে সবারই আসার সময় একটু মন খারাপ হবেই। তেমনটা হীরা আপুর সাথেও হয়েছে, এটা স্বাভাবিক।
যাইহোক শেষমেষ বৃষ্টি নামার আগেই বাসায় পৌঁছাতে পেরেছেন জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। আসলেই এই বৃষ্টিতে আমাদের কারোরই ভেজা উচিত না। সায়ান বাবু তো অনেক ছোট, তার গায়ে একটু বৃষ্টির পানি লাগলেই ঠাণ্ডা লেগে যাবে।
ধন্যবাদ ভাই আপনার নীড়ে ফেরার গল্প আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। ❤️
ধন্যবাদ ভাই আমার নীড়ে ফেরা পোস্টটি পড়ার জন্য এবং আপনি যে আমার অনুভূতি বুঝতে পেরেছেন এটা জেনেও খুব ভালো বোধ করছি । আমাদের জন্য আশীর্বাদ করবেন ।
সব সময় আশীর্বাদ রয়েছে ভাইয়া 🥰
ভালোবাসা অবিরাম 🧡
আপনি সবসময়ই যে আমাদের নিয়ে ভাবেন এটা আমার খুবই ভালো লাগে।
হীরা আপুর মনে হয় ভালোই মন খারাপ ছিলো বাবার বাড়ি থেকে ফিরে আসার জন্য।
তবে সবকিছুর পরেও যে বৃষ্টি আসার পূর্বেই ঠিকঠাকভাবে বাসায় পৌছতে পেরেছেন এটাই অনেক।শায়ান বাবুকে নিয়ে বৃষ্টিতে আটকা পড়লে মহা মুশকিল হয়ে যেত।
আপনাদের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
হুম, ওর মন ভালোই খারাপ ছিল । আসলে বাড়ি থেকে ফিরতে চাচ্ছিল না । এটা আসলে আমি ওর মন মানসিকতা দেখেই মাঝে মাঝে বুঝতে পারি । তবে আমি খুব একটা বেশি জোর করি না । তবে মাঝে মাঝে কিছুই করার থাকেনা । ধন্যবাদ আপনাকে আপু ।
সত্যিই ভাইয়া, প্রকৃতির নির্মল পরিবেশে থাকলে আর শহর জীবনে ফিরতে ভালো লাগে না আমার ও ভাবীর মতো।আমার তো শহরে গেলে দম বন্ধ হয়ে আসে।যাইহোক তবুও বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেওয়াই বড়ো ব্যাপার।যাইহোক আপনারা যে বৃষ্টির আগে বাড়ি ফিরে যেতে পেরেছিলেন জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে হয়তো কর্মের তাগিদেই শহরে থাকতে হয় । তাছাড়া আমারও শহরের পরিবেশ খুব একটা ভালো লাগে না ।