ইচ্ছে করেই চুপ থাকি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

child-g80cce7c5d_1920.jpg
source

চেঁচিয়ে কোন লাভ নেই, মাঝে মাঝে চুপ থাকতে হয়। তবে যারা চেঁচিয়ে গলা ফাটায়, তাদের যে খুব একটা উপকার হয় তা কিন্তু না, বরং ফেঁসে যায় আর লেপ্টে যায় তাদের সঙ্গে অহেতুক নোংরা কিছু দৃষ্টি।

তারা শুধু সুযোগ খোঁজে আর সুযোগ পেলেই ধাক্কা দিবে। আসলে এ সমাজে সবাই সব কিছু বোঝে, তারপরেও কেউ গলা ফাটায় না বা কেউ চেঁচিয়ে কিছু বলতে চায় না। কারণ সব নষ্টের দখলে চলে গিয়েছে। তাই এখানে চেঁচিয়ে কোন লাভ হবে না। তাই যত বেশি চুপ করে থাকা যায়, ততোই তো মঙ্গল । সেটা হোক নিজের জন্য নতুবা নিজের মানুষদের জন্য ।

শহর কিছুটা অদূরে বেশ বড় ধরনের উঁচু দালান-কোঠা সাম্প্রতিক সময়ে তৈরি হয়েছে। শুনলাম সেখানে নাকি নতুন ভাবে শিক্ষার কার্যক্রম চালু হয়েছে। এই মফস্বলের ছেলেমেয়েদের যা উচ্চশিক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমার কাছে হলে আসলে বে-সরকারি ভাবে এ ধরনের উদ্যোগকে এককথায় শিক্ষা বাণিজ্য মনে হয়।

ইতিমধ্যেই সেখানে কোট-টাই পরা শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত যাতায়াত করা শুরু করেছে। এলাকার সকল শিক্ষার্থীর মাথায় অনেকটা ভূত চেপেছে, অনেকটা ভুতুড়ে স্বপ্ন তাদের ভিতরে বেশ পরিপক্ক ভাবে অবস্থান করেছে। ব্যাপারটা এমন, যে ওখানে একবার ভর্তি হতে পারলেই, জীবন সার্থক আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না।

যে ছেলেমেয়ে গুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়নি মূলত তাদের চোখের সামনেই ওরা লোভনীয় মুলা ঝুলিয়ে দিয়েছে। শুধুমাত্র এই প্রতিষ্ঠানে পয়সা খরচা করে ভর্তি হয়ে যাও, তারপরে তোমার ক্যারিয়ার একদম শক্তপোক্ত, তোমাকে আর ঠেকায় কে ।

যাইহোক একটা সময়ের পরে, বছর শেষে যখন পড়াশোনার ইতি টানতে হয়। তখন ঠিকই কিন্তু বাস্তবতা এইসব ছেলে-মেয়ের চোখেও উঁকি-ঝুঁকি দেয়। জীবনের গতিপথ তখন তারা খোঁজার চেষ্টা করে। ঝাঁপিয়ে পড়ে বাস্তবতা নামক যুদ্ধে। পিছনে ফিরে তাকানোর চেষ্টা করে, দেখে শুধু মাঝখান থেকে কয়েকটা কাগজের সার্টিফিকেটের জন্য বাবার অজস্র পয়সা শেষ করে ফেলেছে।

তাহমিদ কে বলেছিলাম, জাতীয়তে যেহেতু সুযোগ পেয়েছো ভর্তি হওয়ার তো ওখানেই থেকে যাও। অহেতুক বাবার পয়সা নষ্ট না করে, চেষ্টা করো জাতীয়তে থেকেই ভালো কিছু করার জন্য। তাছাড়া পড়াশোনার কাছে আসলে গ্রাম-শহর বা জাতীয়-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কোন বিষয় না। তোমার চেষ্টাটাই আসলে বড় ব্যাপার।

তাহমিদ সেসময় কথা শোনেনি বরং অনেকটা তীর্যক কথা বলেছিল । অবশেষে সেই মুলা ঝুলানো স্বপ্নে পা দিয়ে ছিল। বাবার অনেকগুলো পয়সা খরচা করে সেই উঁচু দালান-কোঠা থেকে বেশ চড়া দামে বিবিএ এর সার্টিফিকেট কিনেছিল। আমি কখনোই চাইনি আজকের এই করুণ অবস্থা ওর হোক। তবে শুধু চেয়েছিলাম, ওর সামনে এসে বাস্তবতাটা উঁকি দিক।

গত সন্ধ্যায় পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানে তাহমিদের সঙ্গে হঠাৎই দেখা হয়ে গিয়েছিল। বোঝা যাচ্ছে যে, সময়টা ওর খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে, এমনিতেই এই কয়েক বছরে বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, সে তার বাবাকে অর্থনৈতিক ভাবে অনেকটাই পঙ্গু করে দিয়েছে। তারপরেও এখন আবার চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় তদবিরের ব্যাপারে বাবার কাছে পয়সার ব্যাপারটা সে কোন ভাবেই বলতে পারছে না।

আমি আসলে ওর এই কঠিন সময়ে, ওকে নিয়ে তেমন কোন সমালোচনা করব না। আবার তেমন কোন পরামর্শ ওকে দেব না। কারণ এমনিতেই ও ভীষণ মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে আছে। হয়তো আমার কথাগুলো এখন শুনতে ওর ভালো নাও লাগতে পারে ।

তবে যাই বলুন না কেন, আসলে জীবনের দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তগুলো বেশ ভেবেচিন্তে প্রথমেই নিতে হয় এবং সেভাবেই যদি পরবর্তীতে এগিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে হয়তো একটা সময়ের পরে গিয়ে পরিকল্পনা মাফিক জীবনটা অনেকটা গোছানো হয়ে যায়।

Banner-7.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন চুপ থাকাটাই শ্রেও যেকোনো পরিস্থিতি তে।গলা ফাটিয়ে খুব একটা উপকার হয়না বরং আরও কটু দৃষ্টিতে পড়তে হয়।একদম বলেছেন ভাইয়া,বর্তমান শিক্ষা অনেকটাই বাণিজ্য তে পরিণত হয়েছে।যারা পাবলিকে চান্স পায়নি তারা বেসরকারি তে লোভে পড়ে ভর্তি হয়,যখন পড়া শেষ হয় তখন বুঝতে পারে কতটা ভুল করেছে।আপনার গল্পের তাহমিদ তার বাবা কে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে বেসরকারি তে পড়ে।এটা বর্তমান সময়ে অনেকটাই সত্যি একটা ঘটনা।আমার পরিবার থেকেও এরকম দেখেছি।ভালো লেগেছে লেখাটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার গঠনমূলক মতামতের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

বর্তমান কে নিয়ে আমি কিছু বলবো না। কারন আমিও মনে করি চুপ থাকাই শ্রেয়। আমিও ইচ্ছে করে চুপ থাকি। আপনার গল্পের তাহমিদের বাবার জন্য আমার আফসোস আর দুঃখ করা ছাড়া আর কিছুই বলার নেই। পাবলক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতো এখন যেন সোনার হরিণ। আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সে ফায়দাটাই লুটে নিচ্ছে। কে শোনে কার কথা। তাই দেখেও দেখি না। আর শুনেও শুনিনা।

 2 years ago 

আসলে জীবনের দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তগুলো বেশ ভেবেচিন্তে প্রথমেই নিতে হয়।

জীবন নামের এই অধ্যায়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে পদক্ষেপ নিতে হয়।আর সিদ্ধান্ত যদি সঠিক না হয় তাহলে সেই অধ্যায়টা গর্তের অন্ধকার এর মধ্যে পড়ে যায়।আর আপনি যার কথা বললেন সে যদি আপনার প্রস্তাবটাকে ভেবেচিন্তে দেখত এবং নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কাজ করত তাহলে হয়তোবা আজকে তার এই দুর্দিন দেখা লাগতো না। খুব ভালো একটা অবস্থানে সে থাকতে পারতো। যাই হোক অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ দেয়া আমাদের সকলের একটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, কেউ যদি সেটা গ্রহণ না করে তাহলে আর কিছুই করার নেই। বেশ ভালো লাগলো ভাই আপনার পোস্ট পড়ে।

 2 years ago 

আসলে পড়াশোনাটা সম্পূর্ণ নিজের মধ্যে যেখানেই পড়ুক না কেন । জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা অর্জন করলেও পরবর্তীতে অনেক ভালো অবস্থানে যাওয়া যায় । কিন্তু শুধু বাবার টাকা নষ্ট করে প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোতে পড়েও যে তেমন কিছু হওয়া যায় না আপনার গল্পের এই তাহমিদই তার উদাহরণ । আপনি তাকে প্রথমেই পরামর্শ দিয়েছিলেন তারপরেও যেহেতু আপনার কথা শুনেননি তাহলে এখন আসলে এসব থেকে চুপ থাকাটাই ভালো ।ধন্যবাদ ভাইয়া ।

 2 years ago 

এমনটাই তো আজকাল আশেপাশে দেখছি আপু। শিক্ষা বানিজ্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিচ্ছু করার নেই।

 2 years ago 

যে ছেলেমেয়ে গুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়নি মূলত তাদের চোখের সামনেই ওরা লোভনীয় মুলা ঝুলিয়ে দিয়েছে।

যেসব ছেলে মেয়েরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ পায় না তাদেরকে লোভনীয় সব অফার দেখিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের পঙ্গু করে ছেড়ে দেয়। আসলে প্রথমে তারা যখন সেই পথে এগিয়ে যায় আর ফেরার পথ খুঁজে পায় না। একদিক থেকে পরিবারের উপর চাপ পড়ে অন্য দিক থেকে শিক্ষা বাণিজ্যে নিজেকে একেবারে বিলীন করে দেয়। যাই হোক তাহমিদ ভাইয়া যেহেতু আপনার কথা শুনেনি তাই হয়তো এরকম পরিস্থিতি হয়েছে। আমার মনে হয় সবাইকেই ভেবেচিন্তে কাজ করা উচিত।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58400.82
ETH 2567.08
USDT 1.00
SBD 2.38