বিদায় আসলেই অনেক আবেগপ্রবণ ||@shy-fox 10% beneficiary
দেড় বছরের অভিজ্ঞতা, আমি আজকে সংক্ষিপ্তভাবে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। আশাকরি আমার যারা পাঠক আছে, তাদের ভালো লাগবে। আসলে দেড় বছরের অভিজ্ঞতা বলতে, গ্রামে যে দেড় বছর ছিলাম সেই দেড় বছরের অভিজ্ঞতা খুব ছোট্ট ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করব । আমি বিগত পর্বে লিখেছিলাম, আমি কেন গ্রামে গিয়েছিলাম সেই বিষয় সম্পর্কে, যারা ঐ পর্বটা পড়েছে তাদের আজকে এই পর্বটা বুঝতে কিছুটা হলেও সুবিধা হবে ।
যেহেতু হুট করে ডিসিশন নিয়ে গ্রামে চলে গিয়েছিলাম, তাই সেখানে গিয়ে মোটামুটি আমাকে এডজাস্ট হতে অনেকটা হিমশিম খেতে হয়ে গিয়েছিল। কারণ শহুরে জীবন আর গ্রামীণ জীবনের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। কারণ শহরের জীবনে দিনরাত সবই সমান কিন্তু গ্রামীণ জীবনে সন্ধ্যার আলো নামার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানকার চিত্র সম্পূর্ন উল্টো হয়ে যায়, সবাই ঘুমিয়ে যায় আপন ভুবনে । যদিও এখন সাময়িক সময়ের জন্য কিছুটা হলেও গ্রামীণ জীবনেও পরিবর্তন এসেছে তবে সেটাকে আমি আহামরি বলবো না।
আসলে গ্রামীণ জীবনটা সম্পূর্ণ ওপেন আর সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে এখানে সবাই সবার কাছে যায় এবং সবাই সবার সঙ্গে প্রতিনিয়ত মেশার চেষ্টা করে। যার কারণে এখানে অতিরিক্ত প্রাইভেসির ব্যাপারটা খুব একটা বেশি প্রাধান্য পায় না । কারণ সবাই সবার পরিবারের মধ্যে সহজে ঢুকে যায়, যাইহোক আর আমি মনে করি সেই শৌচকার্য থেকে শুরু করে একদম ঘুমানো পর্যন্ত প্রত্যেকটা জায়গাতেই কিছু না কিছু ত্রুটি আছে এই গ্রামীণ জীবনে ।
যেহেতু ছোট থেকেই আমি শহরে বড় হয়ে ছিলাম এবং হুট করে যেহেতু গ্রামে চলে গিয়েছিলাম যার কারণে আমাকে অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়েছে এবং আমি অনেক কিছুই সহ্য করে হয়েছে। তবে আমার এই ব্যাপারগুলো মেনে নিয়ে একটা সময় ভালই লেগেছিল কারণ গ্রামীণ মানুষগুলো দিনশেষে সহজ-সরল । দেড় বছরতো অনেক লম্বা সময়, লম্বা সময়ের বর্ণনা তো খুব অল্প সময়ে অল্প কথায় দেওয়া যায় না, তবে কিছু কথা আমি বলেই রাখি।
- প্রতিনিয়তঃ বৈদ্যুতিক সমস্যা লেগেই থাকত।
- এখানে দিনের বেলা অনেকটা খোলামেলা অবস্থা যখন যার যেখানে খুশি মন চায় যেতে পারতো এবং কারো বাড়িতে যদি কেউ কাউকে ঢুকতে না দিতো তাহলে সেটা অনেকটা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকতো।
- টং পাড়ে সবাই মিলে গল্প করা এটা অনেকটা স্বস্তিদায়ক অবস্থা ছিল গ্রামীণ মানুষগুলোর ভিতরে আসলে টং তাদের বৈঠকখানা বলা যেতে পারে ।
- কৃষি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বেশি এবং কৃষি এদের প্রধান জীবিকা । সারাদিন ক্ষেতে কাজ করে দিন শেষে বাজারে গিয়ে এক কাপ চা যদি কারো কাছ থেকে কোন মত খেতে পারে তাহলেই এদের মনেহয় প্রকৃত জীবনের সার্থকতা এটাই ।
- বাজার করা এদের মুখ উদ্দেশ্য নয়, মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজারে গিয়ে গল্প-স্বল্প করা এবং মোটামুটি সেখানে আরেক রকমের বৈঠকখানা চলে এটাই তাদের আর একটা বিনোদনের জায়গা।
- গ্রামীণ মহিলা মানুষরা, তারা ভীষণ অদ্ভুত। আসলে এই অদ্ভুত ব্যাপারটা এমন যে , কারো ভালো কেউ সহজে দেখতে পারেনা , সেটা নিজের আত্মীয়ের হোক বা অন্য কারো হোক । তবে এদের মধ্যে ব্যাপারটা একটু আলাদা, কারো বাড়িতে যদি মাংস রান্না হয় , তাহলে সেই মাংস সে কিভাবে কিনতে পারলো, সেই ব্যাপারটা নিয়ে তাদের কিউরিসিটি জেগে যায় ভিতরে। আর তাছাড়া তারা মূলত গরু লালন পালন করা ও হাঁস-মুরগি লালন পালন করা ও কিছু সেলাইয়ের কাজ করেই জীবন পাড়ি দিয়ে দেয় ।
- যেহেতু গ্রামে ছিলাম এবং ডাক্তারি প্রফেশনের সঙ্গে জড়িত, তাই রাত-বিরাতে বিভিন্ন সময়ে আমাকে মানুষের দোরগোড়ায় যেতে হয়েছে এবং তাদের সমস্যার সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করতে হয়েছে ,এই ব্যাপারটাও খুব ভালোভাবে মনে থাকবে এবং তারা আমাকে মোটামুটি ভালই সম্মান করেছে।
সর্বোপরি কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা নেই, তবে যে অভিজ্ঞতাগুলো আমার হয়েছে সেটা অনেকটা আমার জীবনে ছিল না বললেই চলে। মোটামুটি এই অভিজ্ঞতাগুলো গ্রামীণ অঞ্চলে গিয়ে আমার হয়েছে । আমি এক কথায় বলে দিতে পারি, এখনকার গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষজন সহজ-সরল তবে কিছুটা জটিলতা সম্পন্ন।
যাইহোক আজকে বিদায়বেলা ,আজকে এই গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যাচ্ছি এবং মোটামুটি শহরেই থাকবো, তবে অভিজ্ঞতাগুলো থেকে যাবে আমার চিরজীবন অন্তরের অন্তস্থলে ।
সত্যিই ভাইয়া নতুন জায়গায় যাওয়ার একরকম আনন্দ যেমন কাজ করে ,তেমনি দীর্ঘদিন এক জায়গায় থেকে ছেড়ে আসা কষ্টদায়ক।কিছুটা স্মৃতি হয়ে থাকবে।আপনার নতুনভাবে শহর জীবন-যাপন সুখদায়ক হোক সেই প্রার্থনায় করি।ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলে ভাই ঠিক বলছেন গ্রামের কিছু কিছু ব্যাপার খুবই বিরক্তিকর ঠেকে নিজের কাছে। আমিও মাঝেমধ্যে গ্রামে যাই পরিবারের কিছু কাজে আর তখন অনেক বিরক্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় আমাকে। বিশেষ করে গ্রামের একজনের ভালো আরেকজন নিতে না পারাটা।
আপনার শহরের জীবন যেনো ভালো কাটে এই দোয়াই রইলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার অনেক কিছুই মানিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়েছে। কিনতি তাও আপনি বিদায় বেলায় বলছেন কোনো তিক্ত অভিজ্ঞতা নেই। তার মানে আপনি মন থেকে সব ঝেড়ে ফেলে নতুন শুরু করছেন সবটাই। যা একটি আদর্শ মানুষের গুণ। কারণ পিছনের কষ্ট সামনের ভালো লাগা গুলোকে একটু হলেও ফিকে করে দেন।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
যেতে নাহি দিতে চাই তবু চলে যেতে হয় তবু চলে যাই। এই কথাটি আজ খুবই মনে পড়ছে। প্রতিটা বিদায় খুব কষ্টের। বিদায় নাম টাই কষ্টের আমরা প্রতিটা ক্ষেত্রে থেকে যখন বিদায় নেই তখন খুবই খারাপ লাগেম কিন্তু আমাদের ঠিকই এই পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে চলতে হয়ম বিদায় যেমন কষ্টের ঠিক তেমনই কিছু কিছু বিষয় আছে যার কারণে জীবনের উন্নতি লাভ হয়। যদি বিদায় নিয়ে আমরা সেই পথে না এগিয়ে যায় তাহলে আমাদের জীবন কখনোই উন্নতি হবে না। তাই বিদায় যতই কষ্ট হোক তবুও আমাদের বিদায় নিতে হয়। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
শহরের জীবন ও গ্রামীণ জীবনের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে। মাঝে মাঝে গ্রাম ভালো লাগে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক খারাপও লাগে। আজকাল আর গ্রামের মানুষগুলো সেই আগের মতো সহজ সরল নেই। সবাই দিনে দিনে অনেক জটিল হয়ে যাচ্ছে। আপনার গ্রামে কাটানো মুহূর্তের অভিজ্ঞতাগুলো শুনে অনেক ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
হা, গ্রাম আর শহর দুইটির দূরত্ব কাছাকাছি হলে ও আকাশ পাতাল তফাত। যদিও এখন গ্রাম থেকে শহর ভাল, কারন হচ্ছে গ্রামের মানুষজন আর আগের মতো নেই। সেই আগের যুগের মাটির মানুষ গুলো সব গ্রামের নষ্ট আবহাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। তাই সেই তুলনায় শহর ই ভাল।
ভাইয়া আপনার লিখা বাস্তব গল্প কিন্ত অসাধারণ হয়। মনে এই কাহিনি গুলো দিয়ে নাটক তৈরি করা যাবে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলেই ভাইয়া আগের পোস্ট পড়েছিলাম বলে এটা বুঝতে অনেক সহজ হয়েছে৷ এটা সত্যি যে গ্রামের মানুষ আর শহরের মানুষ এর ভিতর বেশ কিছু তফাত রয়েছে। ধন্যবাদ আপনার বিষয় টা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভাই আপনি গ্রাম ও শহর সম্পর্কে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।আসলে আমার মতে শহরের তুলনায় গ্রাম অনেক ভালো।সুখে-দুঃখে গ্রামের লোক একে অপরের পাশ্বে থাকে সবসময়। গ্রামে প্রকৃতির হাওয়া স্বাস্থ্যকর।
যাইহোক অনেক সুন্দর লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভাইয়া গ্রামে কাটানো আপনার অভিজ্ঞতার কথা গুলো শুনে অনেক কিছু জানতে পারলাম। গ্রামীণ জীবনযাপন ও শহরের জীবনযাপন একটি থেকে আরেকটি একদমই আলাদা। আমরা আমাদের জীবনে কাটানো গ্রাম ও শহরের অনেক অভিজ্ঞতা দিয়ে উপলব্ধি করতে পারি কোনটি আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ। কেন জানি গ্রামীণ পরিবেশগুলো বদলে যাচ্ছে। আগের মতো সবার মাঝে আর আন্তরিকতা দেখা যায় না। শহরের জীবন যাপন হয়তো যান্ত্রিক। কিন্তু সেই তুলনায় গ্রামের জীবনযাপনের ধরনও আজকাল হারিয়ে যাচ্ছে। এত সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের সকলের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভাইয়া আমার বাড়ি শহরে, ছোটবেলা থেকেই শহরে বড় হয়ে উঠেছি। গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই। আপনার পোষ্টটি পড়ে তাদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আপনার বাস্তব জীবনের গ্রাম ও গ্রামের মানুষ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ধন্যবাদ ভাই