কর্ম করে খাই রে ভাই , তামাশা করে নয় | @shy-fox 10% beneficiary
কর্ম করে খাই রে ভাই , তামাশা করে নয় ।।
ব্যাপারটা হচ্ছে এমন যে, কর্মের মাঝে নিজেকে নিয়োজিত করেছি এবং সেখান থেকেই চেষ্টা করছি নিজের আরো প্রসার ঘটানোর জন্য । যদিও ব্যাপারটা খুব একটা সহজ নয় । তারপরেও আমি হাল ছেড়ে দিতে রাজি নই । আমি জীবন মানে শুধু জয় বুঝি । আমাকে জিততেই হবে এবং শিখতেই হবে ,এটাই প্রথম ও শেষ ব্রত আমার ।
ব্যাপারটা হচ্ছে অনেকটাই সরল অংকের মত । পরাজয় বা পিছু হাঁটার অবকাশ এখানে নেই । আপনাকে কর্মই করতে হবে । কর্মই আপনাকে একটা পরিচয় এনে দেবে এবং কর্মই ধর্ম, কর্মের মাঝেই বেঁচে থাকতে হবে । ব্যাপার গুলো একদম গতানুগতিক, যদি বোঝেন তাহলে ভাল আর না বুঝলে তো কিছুই করার নেই ।
গ্রামের চেম্বারটাও বন্ধ করে দিয়েছে প্রায় মাস দুয়েক হচ্ছে । ভাবছি পড়ে থাকা চেম্বারটাকে ভিন্ন ভাবে কাজে লাগাবো । যদিও আমার নিজের থেকে কিছু করার ইচ্ছে নেই সেখানে । তবে সেই চেম্বারকে কেন্দ্র করে , যদি কেউ জীবিকা নির্বাহের পথ খুঁজে নেয় , তাহলে তো সমস্যা দেখছি না ।অতঃপর কলেজের পুরনো বন্ধুদের কাছ থেকে কিছু জুনিয়রের নাম্বার ও তাদের সম্পর্ক কিছু তথ্য সংগ্রহ করে নিলাম ।
আমি যে আর মেডিকেল প্রফেশনের সঙ্গে যুক্ত থাকছি না । এটা আমি অনেক আগেই মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি । চেম্বারে পড়ে থাকা মেশিন ও সার্জিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট এখন খুব একটা কাজে দিচ্ছে না । জানি এগুলো বাজারে বিক্রি করতে গেলে খুব একটা পয়সা পাবো না । মানে অর্ধেকেরও কম দামে আমাকে বিক্রি করে দিতে হবে । তার থেকে যদি , কোন জুনিয়র এইগুলো ব্যবহার করে নিজের একটা কর্মের ব্যবস্থা করতে পারে , তাহলে ব্যাপারটা আসলেই বেশ কার্যকর হবে ।
সেদিন রাতে চঞ্চলকে ফোন দিলাম । চঞ্চল মূলত আমার এলাকার ছোট ভাই । যদিও একই মেডিকেল কলেজ থেকে পড়াশোনা করে বের হয়েছি । তবে এ ক্ষেত্রে ওর বিষয় কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল । প্রতিটি মেডিকেল কলেজে মেধাবী দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা একটা কোটা থাকে । হয়তো সেই সুবাদেই চঞ্চলের ডাক্তারি পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিল ।
আমার কাজের মাত্রা খুব বেশি থাকে মূলত মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত । কারণ মঙ্গলবারে নিজের প্রশ্ন রেডি করা , বুধবারে লিস্ট তৈরি করা ও সেগমেন্ট বানানো এবং বৃহস্পতিবার হ্যাংআউট ও শুক্র-শনিবার ক্লাস থাকে । যাইহোক সপ্তাহের এই কয়টা দিন অনেকটাই দম ফেলার ফুরসত নেই । এই কয়েকটা দিনে বাড়তি চাপ থাকে আর তাছাড়া গতানুগতিক কাজ গুলো তো আছেই । সম্ভবত তখন রাত্রি তিনটার মতো বাজে । চঞ্চলের নাম্বারে একটা ফোন দিয়ে দিলাম । ঘুমকাতুরে চোখে চঞ্চল ফোনটা রিসিভ করল । আমি বললাম, চিনতে পেরেছিস । ও বলল , শুভ ভাই যে , এতো রাতে ।
আমি রাতের অতিথি রে চঞ্চল । জীবনটা এখন এই ভাবেই চলছে আমার । তোর কি খবর , ভাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে আছি, অন্যের চেম্বারে । মোটামুটি চলে যাচ্ছে দিনকাল । তবে খুব একটা শান্তিতে নেই । প্রতিনিয়ত যে পরিমাণে কাজ করতে হয় এবং তাতে যে পরিমাণে পয়সা আসে, তাতে আসলে এখানে থেকে খেয়ে, বাড়িতে পয়সা পাঠানো খুবই কষ্টকর হয়ে যায় ।
সহজ-সরল ছেলেটার কথা সেই ক্যাম্পাস জীবন থেকেই মোটামুটি আমার জানা আছে । এই ছেলে গুলো আসলে জীবনে প্রচুর পরিশ্রম করতে পারে । ওকে বলেই ফেললাম, চঞ্চল আমি তো চেম্বার করা ছেড়ে দিয়েছি । যেহেতু তোর বাড়ি আমাদের এলাকাতেই, তুই চাইলে আমার রানিং চেম্বারে নিজের মতো ক্যারিয়ার করতে পারিস । এর জন্য আমাকে কিছু দিতে হবে না । তুই নিজের মতো করে চালাতে পারিস । এখান থেকে যা আসবে, তা দিয়ে মোটামুটি বেশ ভালো ভাবেই চলতে পারবি আর যেহেতু তুই নিজের বাড়িতে থাকবি, থাকা-খাওয়ার খুব একটা সমস্যা তোর হবেনা বরং বাড়িতে কিছু অতিরিক্ত পয়সা দিতে পারবি । ভেবে দেখিস আমার প্রস্তাবটা ।
চঞ্চল , কোন ধর্মের কোন বর্ণের কোন গোত্রের এসব দেখার সময় আমার হাতে নেই । আমি মনে করি ও আমার কলেজের ছোট ভাই । তাছাড়াও সে একজন ডাক্তার । হয়তো তার সামনে একটা বেকার পদবী লাগানো আছে কিন্তু তারপরেও সে একজন ডাক্তার । আমি মনে করি যে , জীবনের প্রথম অবস্থাতে প্রায় সব ডাক্তারকে বেশ ভালোই বেগ পেতে হয় ।
হুট করে ফোনের ওপাশ থেকে হালকা কান্নার আওয়াজ। মাঝরাতে ব্যাপারটাতে চঞ্চল বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেছে , তা আমি বুঝতে পারছি । তাহলে কথা ওটাই চঞ্চল । সামনের মাসে বাসায় এসে , চেম্বারের চাবিটা নিয়ে যাস এবং নিজের মত করে চেম্বারটা চালিয়ে নিস ।
সত্যি বলতে কি , আমার ব্যক্তিগত জীবনে । আমি ভীষণ বুঝে বুঝে পা ফেলার চেষ্টা করি । আমি জানি, আমি যদি হেরে যাই , আমি যদি পরাজয়ের স্বাদ ভোগ করি আর যদি কখনো ভিখারী হয়ে যাই, তাহলে মানুষ শুধুমাত্র আমাকে নিয়ে সমালোচনায় করবে আর কোন সমাধান দিতে পারবে না । তাই আমি আমার জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের বুদ্ধি-জ্ঞানকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি । যদি নিজের বুদ্ধিতে নিঃস্ব হয়েও যাই, তাহলে সেটাতে তেমন আমার কোন আফসোস থাকবে না ।
এদিকে সেই সন্ধ্যা থেকেই ক্লাস চলছে, মোটামুটি দু'কাপ চা আমার ইতিমধ্যেই খাওয়া হয়েছে । তার মধ্যে আজকে আবার লিস্ট তৈরির মিটিং আছে । সর্বোপরি ব্যস্ততা কোন ভাবেই কমছে না । যেহেতু আমি কর্ম করে খাই , তাই অন্য কাউকে কর্মের সঠিক সন্ধান দিতে পারলে ভালোই লাগে । বেঁচে থাকুক কর্মজীবী মানুষ গুলো , এই উর্ধগতির দ্রব্যমূল্যের বাজারে ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমরা সবসময় একটা কথা বলে থাকি "নিজ বুদ্ধি রাজা পর বুদ্ধি ফকির"। এ কথাটি আমিও মন থেকে বিশ্বাস করি। নিজের ভালো নিজের চেয়ে অন্য কেউ বেশি বুঝবে না। তাই আপনি জেনে বুঝে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা আশা করছি ভালই হবে। আর আপনি সবসময় মানুষের জন্য ভালো চিন্তা করেন এটা আমার খুব ভালো লাগে। অন্যের জন্য ভালো কিছু ভাবা এটা অনেক বড় মনের অধিকারী না হলে সম্ভব নয়। চঞ্চলের কেঁদে ফেলার বিষয়টা জেনে বুঝতে পারছি সে কি রকম আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিল। সে এখন নিজের মতো করে একটি চেম্বার চালিয়ে যেতে পারবে এটা তার জন্য অনেক বড় পাওয়া। এরকম করে অন্যের মুখে হাসিটা ফোটাতে কজনই বা পারে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
মাঝেমাঝেই এটাই ভাবি যদিও কখনো শেষ হয়েও যাই তাও যেন নিজের বুদ্ধিতেই হয়ে যাই ।
জ্বী ভাইয়া নিজের উপর কনফিডেন্সটাই আসল। সেটাই যদি না থাকে তাহলে তো শেষ হওয়ার আগেই শেষ।
খুব সুন্দর একটা উদ্যোগ নিয়েছেন ভাইয়া । আসলে আমাদের কাছে যা শুধু মাত্র টাকায় কেনা কিছু যন্ত্রপাতি যা বাজার মূল্য দ্বারা বিবেচনা যোগ্য । এটা অন্য কারো জন্য হয়তো ভাল ভাবে বেচে থাকার শ্রেষ্ট উপকরণ ।
জীবনে যতদিন সুস্থ ভাবে বেচে আছি ততদিন আমাদের কর্ম করে যেতেই হবে । এই ছাড়া আর জীবনের মুল্যকি । নিজের অর্জিত অর্থই হলো সব চেয়ে সন্মান জনক জীবিকা ।
শ্রদ্ধা সহ আন্তরিক মোবারক বাদ জানাই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নিমিত্তে এই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ।
জীবন জীবনের জন্য, আমি কিছুই করি নি শুধুমাত্র সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি ।
অসাধারণ মানবিকতা আপনার। আপনার মাধ্যমে আপনার জুনিয়র চঞ্চলের একটা স্বাধীন কর্মসংস্থান হল। আসলে এভাবে যদি আমরা সবাই আশপাশের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াইতাম, তাহলে পৃথিবীটা একটা শান্তি নীড় হইত। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। এর বাস্তব উদাহরণ হয়ে থাকলেন আপনি। আপনার জন্য শুভকামনা সহ দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
এই উর্ধগতির দ্রব্যমূল্যের বাজারে বেঁচে থাকুক সবাই খেয়ে পড়ে । আপনার জন্যও ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা রইল।
শ্রদ্ধা করি সেই সমস্ত ব্যক্তিদের যাদের মধ্যে মানবতা রয়েছে। মন থেকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা তাদের জন্য যারা মানুষের বেঁচে থাকার পথ দেখায়। শ্রদ্ধা করি সেই সমস্ত ব্যক্তিদের যারা আজ পর্যন্ত সমাজটাকে টিকিয়ে রেখেছে মানবতার বন্ধনে। মন প্রাণ উজাড় করে ভালোবাসা জ্ঞাপন করলাম প্রিয় ভাই আপনার জন্য।
আপনার সাবলীল মন্তব্যে আমি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করছি ভাই ।
সত্যি ভাইয়া আপনার মহানুভবতার কথা শুনে আবেগপ্রবন হয়ে গেলাম। এই সময়ে আপনার মতন মানুষ খুব একটা দেখা যায়না । এখন মানুষ সব সময় নিজের বুঝটাই বেশি বুঝে। আশা করি চঞ্চল ভাইয়া খুব ভালো একটি পজিশন এ যেতে পারবে। আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো।
এমনটাই কামনা করি চঞ্চলের জন্য আমিও। বেঁচে থাকুক সবাই ।
ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আরো বেড়ে গেল। সত্যি ভাইয়া আপনি আপনার চারপাশের মানুষগুলোকে নিয়ে অনেক ভাবেন। আপনার মাধ্যমে একজন ভাই কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে জেনে ভালো লাগলো। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। ♥️♥️♥️
ভাই আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে আপনার প্রতি সম্মান যেন আরো বেড়ে গেল। আসলে আপনি মানুষের দুঃখ-কষ্ট বোঝেন। নিজের স্বার্থ নিয়ে আপনি থাকেন না। চঞ্চল ভাই এর যেকোন ধর্মের হোক না কেন, সে একজন মানুষ এবং সে আপনার ছোট ভাই। খুবই ভালো লাগলো আসলে আপনি যখন তাকে প্রস্তাব দিয়েছেন। যে এখানে এসেছেন চেম্বার করতে, তারপরও সবকিছু ঠিকঠাক আছে। তখন সে এতটা আবেগপ্রবণ হয়ে গেছে, যে ওপাশ থেকে কান্না করে দিয়েছে। যাক তার জীবনের পথ এভাবে খুলে যাবে, ভালো লাগলো। আপনার জন্য দোয়া করি ভাই।
মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি ভাই । যদিও মোটেও সহজ কাজ নয় , তারপরেও লেগে আছি ।
পৃথিবীতে এমন মানুষ খুবই কম রয়েছে যারা আপনার মত করে ভাবে। ভাইয়া আপনার মানবিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আপনার জন্য যদি একটি পরিবার ভালোভাবে খেয়ে পড়ে বাঁচে এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে। সত্যি ভাইয়া আপনার মত করে সবাই যদি ভাবতো তাহলে অনেক অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটানো যেত। যে হাসি কোটি টাকার দিয়েও কিনতে পাওয়া যায় না। সবার ভালোবাসা সব সময় আপনার সাথে থাকবে। ভাইয়া ভালো থাকবেন সব সময়।
ভাই আপনার এমন একটি লেখার অপেক্ষায় ছিলাম। আমার অনেকগুলো প্রশ্ন ছিল আপনাকে নিয়ে মনে মনে। কিছু প্রশ্নের জবাব পেয়েছি কিছু প্রশ্নের জবাব পাইনি। আসলে ভাই আপনি সত্যিই কর্ম করে খান কারণ রাত সাড়ে তিনটা সাড়ে চারটা পাঁচটা সময়ও আপনার পোষ্ট পাই ডিস্কোডে। আবার সকাল দশটায় উঠে দেখি আপনি কাজে ব্যস্ত। মাঝে মাঝে জানতে ইচ্ছে হয় আপনি কখন ঘুমান।
আমি নিশাচর ভাই । কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঘুমাই । শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
একজন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া সে মানুষটির জন্য যে কত বড় উপকার সেটা ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়। সত্যি ভাইয়া আপনার এই অসাধারণ মানবিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। নিশ্চয় চঞ্চল ভাইয়া এখন একটি স্বাধীন কর্মসংস্থান পেল। পৃথিবীর সবাই যদি পরস্পরের প্রতি আপনার মত এমন সহানুভূতিশীল হতো তাহলে নিশ্চয়ই পৃথিবীটা আরো সুন্দর হতো। ভাইয়া সৃষ্টিকর্তার নিকট আমার একটাই প্রার্থনা, মহান আল্লাহতালা যেন আপনার দীর্ঘায়ু দান করেন, আমিন।