আধ্যাত্মিক নিরাময় || Spiritual Healing || @shy-fox 10% beneficiary

শিশু ডাক্তারের কাছ থেকে যখন পরামর্শ নিয়ে বাসায় ফিরছি তখনো বাবুর শরীরের ঐ ফোসকা পড়ার ক্ষত চিহ্ন গুলো যেন বারবার আমাকে রক্তাক্ত করে যাচ্ছিল । আমি যেন কোনভাবেই নিজেকে সামলে নিতে পারছিলাম না ।

গত দুদিন বেশ ভালোই শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম গিয়েছে । বেশ ভালোই দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছিল হসপিটালে বাবুকে নিয়ে । ভেবেছিলাম সবকিছুই হয়তো নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে । তবে আজকের দিনটাও বেশ ভিন্ন রকম ভাবে শুরু হয়ে গিয়েছিল ।

ঘুম থেকে উঠেই যখন কমিউনিটিতে সকলের সঙ্গে কথোপকথন হচ্ছিল তখনও সবকিছু ঠিকই ছিল । মুহূর্তেই কান্নার আওয়াজ তবে সেটা ক্রমাগত বেড়েই চলছিল । তখনো বাবুকে দেখিনি কিন্তু যখন কান্নার শব্দটা খুব তীব্র হচ্ছে তখন নিজেই বিছানা থেকে উঠে পাশের রুমে গিয়ে ওকে দেখার চেষ্টা করলাম । পরিস্থিতি একদম হিতে-বিপরীত ।

এইদিকে আজ সন্ধ্যায় আবার টিনটিনের জন্মদিন উপলক্ষে স্পেশাল হ্যাংআউট আছে কমিউনিটিতে । সেখানে আবার দীর্ঘ সময় অনবরত কথা বলতে হবে এবং পুরো অনুষ্ঠানটাকে একপ্রকার গুছিয়ে পরিচালিত করতে হবে । তার জন্যও একটা মানসিক প্রস্তুতির দরকার।

যাইহোক ছোট্ট করে একটা বার্তা লিখে দিলাম সহযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে । বললাম সন্ধ্যার আগেই যেভাবেই হোক ফ্রি হয়ে যাব । বাবুর শারীরিক অবস্থার বেশ ভালোই অবনতি হয়েছে, আমাকে শিশু ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে । যদিও আমার সহযোদ্ধারা বেশ ভালোভাবেই আমাকে মানসিক সাপোর্ট দিয়েছিল । অতঃপর বেরিয়ে গেলাম শিশু ডাক্তারের পরামর্শের জন্য ।

দুপুরের পরে বাহিরে বসেই মোবাইলে টুকটাক কিছু কাজ সেরে নিয়েছি । কারণ তখনও শিশু ডাক্তার আসেনি ক্লিনিকে । অবশেষে সবকিছু দেখা শেষে ডাক্তার বলে দিল , এটা সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় প্রত্যেকটা বাচ্চারই হচ্ছে এবং পূর্বেকার যে ওষুধগুলো অন্যান্য ডাক্তাররা দিয়েছে, সেই গুলো সে একটু দেখার চেষ্টা করলো । তবে সে শুধু বলল যে, সব কিছুই ঠিকই আছে তবে আমি দুটো ওষুধ যুক্ত করে দিচ্ছি । যেহেতু ভাইরাস জনিত রোগ এটি । তাই virux সিরাপটা আধা চামচ করে ছয় ঘন্টা পর পর খাওয়াবেন আর সঙ্গে virux মলমটা লাগাবেন ক্ষতস্থান গুলোতে আর পূর্বেকার ওষুধ গুলো চলবেই কমপক্ষে সাতদিন।

অতঃপর বাসার উদ্দেশ্যে ফেরত । কিন্তু এত বড় শহরটাতে এই ছোট ওষুধ দুটো যেন কোনোভাবেই খুঁজে পাচ্ছিলাম না । অনেকটা হন্যে হয়ে খুঁজছিলাম এই দোকান থেকে ঐ দোকানে । আমার অস্থিরতা দেখে রিক্সাওয়ালা ভদ্রলোক হয়তো আমার মনের অবস্থা একটু হলেও আন্দাজ করতে পেরেছিল। পৃথিবীটা আসলে বড্ড আধ্যাত্মিক একটা জায়গা । যদিও এখানে কেউ কারো ব্যথা বোঝেনা । তারপরেও কিছু মানুষ হালকা করে অনুভব করার চেষ্টা করে ।

আমার মূলত যে কয়টা পরিচিত ওষুধের দোকান ছিল সব কয়টাতেই খোঁজ নিলাম কিন্তু মলমটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল তবে সিরাপটা যেন কোনভাবেই খুঁজে পাচ্ছিলাম না । মূলত সিরাপটাই দরকার আর মলমটা বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য ।

এক ঘন্টার বেশি সময় ধরে রিক্সা নিয়ে ঘুরছি বিভিন্ন দোকানগুলোতে । অনেকটাই নাজেহাল হয়ে গিয়েছি তাও যেন ওষুধ গুলো খুঁজেই পাচ্ছিলাম না । যখন একদম শেষমেষ হাল ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম । তখন সাইফুল ভাই আমাকে বলল, তার কিছু পরিচিত ওষুধের দোকান আছে, তবে সেটা শহর থেকে একটু বাহিরে । আমি যদি চাই , তাহলে সে আমাকে সেই দিকটাতে নিয়ে যেতে পারে ।

আমার আসলে মূলত ওষুধ পাওয়া দিয়ে কথা । আমি তাকে বলে ফেললাম, আমার কোন সমস্যা নেই । আমি যেতে রাজি আছি । শহরের বাহিরের দিকেও যে আজকাল বেশ ভালো ভালো ওষুধের দোকান হয়েছে তা আসলে আমার জানা ছিল না । তবে খুব একটা বেশি ঘোরাঘুরি করা লাগেনি । খানিক দূর যেতেই পাড়া-মহল্লার ছোট ফার্মেসীতেই ওষুধটা পেয়ে গিয়েছিলাম।

যে সিরাপটা আমি শহরের মেইন ফার্মেসীর দোকানগুলোতে খুঁজে পেলাম না । সেই সিরাপটা আমি খুঁজে পেলাম পাড়া-মহল্লার ফার্মেসীর দোকানে । দোকানদার তো আমাকে বলেই ফেলল, আসলে এই ওষুধগুলো মূলত খুব একটা সকলের দরকার পড়ে না । তাছাড়া সব সময় তো আর এই সমস্যাগুলো হয় না । যার কারণে সকলে আসলে এই ওষুধগুলো দোকানে খুব একটা রাখে না । যদিও আমি ভাবিনি যে , এই পাড়া-মহল্লার ফার্মেসিতে এসে এই ওষুধ খুঁজে পাব । তবে তারপরেও পেয়ে ভালই লাগছে । সাইফুল ভাইয়ের প্রতি যেন আলাদা একটা কৃতজ্ঞতা মনের ভিতর থেকে প্রকাশ পাচ্ছে ।

দুটো একশো টাকার নোট হাতে ধরিয়ে দিয়ে যখন বলে ফেললাম, সাইফুল ভাই আমার বাসায় আসেন । অন্তত এক কাপ চা খেয়ে যান । কথাটা শুনে, অদ্ভুত রকমের একটা চাহনিতে তাকিয়ে ছিল সাইফুল ভাই আমার দিকে । সেই অদ্ভুত চাহনির ভিতরে অব্যক্ত কিছু ভাষা লুকিয়ে ছিল ।

সে হাসি মুখেই বলল, ভাই আপনি অনেক ছোটাছুটির পরে ওষুধ পেয়েছেন, তাতেই আমি খুশি হয়েছি । আপনার বাসাটা চিনে রাখলাম, যদি কখনো সময় সুযোগ হয়, তাহলে অন্য একদিন এসে চা খেয়ে যাবো । আজ আরও ভাড়া মারতে হবে,সময় বড্ড কম । আপনার বাবুর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি ।

সাইফুল ভাইয়ের কথা গুলো শুনে মুহূর্তেই যেন মনের ভিতরে আলাদা একটা প্রশান্তি বয়ে গেল । যেটা অনেকটাই আধ্যাত্মিক । আজ বড্ড উপকার করছে সে আমার। তার সহযোগিতার কথা বহুদিন মনে থাকবে ।

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy