গতরাতের ঘটনা
হয়তো দিনের বেলার প্রকৃতির এত সুন্দর ছবি দেখে আপনার মনে হতেই পারে গল্পের নামকরণটা কেন রাত্রিবেলা দিয়ে শুরু হলো। মূলত এটার পিছনে একটু কারণ আছে, সেটা জানতে হলে পুরো ঘটনাটি পড়তে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে আমি একটি দোতারা কিনেছি, এটা কমবেশি সকলেই জানেন। তবে এখনো হাতে-কলমে খুব একটা ভালোভাবে সেটা বাজানো শিখে উঠতে পারিনি। আসলে এটা তো সাধনার ব্যাপার, চাইলেই তো আর হুটহাট করে শেখা যায় না। আর তাছাড়া সময় কই বলেন, সময়টাই যে বড় দুষ্প্রাপ্য হয়ে গিয়েছে।
মোটামুটি রাত্রি তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত এই এক ঘন্টা সময় আমি বেছে নিয়েছি দোতারার জন্য। যেহেতু আমার বাল্যবন্ধুর মাধ্যমে দোতারাটি কিনেছি, তাই ওর কাছ থেকেই কিছুটা তালিম নিয়েছি। মূলত সেগুলোই সময় পেলে মাঝে মাঝে চর্চা করার চেষ্টা করি।
গত দু'দিন থেকে মনটা এমনিতেই খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। তাই চেষ্টা করছিলাম গতরাতে নিজেকে একটু ব্যস্ত রাখার জন্য। তারই প্রয়াসে মূলত দোতারা বাজানোর চেষ্টা করছিলাম। তবে যেভাবে চাচ্ছিলাম, সেভাবে হচ্ছিল না। একটা সময়ের পরে হঠাৎ করেই উপরের যে তারটা ছিল সেটা ছিঁড়ে গিয়েছিল। আসলে মন খারাপ থাকলে নাকি সবকিছুই এলোমেলো হয়ে যায়। হয়তো তার বাস্তব প্রমাণ আমি নিজেই পেলাম।
কিছুদিন আগেই দোতারাটা কিনেছি আর তার মধ্যেই তারটা ছিঁড়ে গেল। ভাবতেই বেশ খারাপ লাগছিল। তবে এটার সমাধান করাই লাগবে। কারণ দোতারার প্রতি আমার অনেকটা মায়া জন্মে গিয়েছে। বাজাতে পারি বা না পারি, তবে দোতারা যদি ঠিকঠাক থাকে, তাহলেই তো একটা পরিতৃপ্তি কাজ করে নিজের ভিতরে ।
এমনিতেই সারারাত ঠিকমতো ঘুম হয়নি, তার মাঝেই চেষ্টা করছিলাম সেই ভোর রাতেই বাল্যবন্ধুর সাথে যোগাযোগ করার জন্য। যদিও ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ অপরপ্রান্ত থেকে ফোন কেউ ধরে নি। তবে ভোরের দিকে অপরপ্রান্ত একটা বার্তা এসেছে, তাতে লেখা ছিল শহর থেকে কিছুটা অদূরে আজাদুল ভাইয়ের বাড়িতে গেলেই দোতারার তার পাওয়া যাবে।
যাইহোক যেহেতু তারের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, তাই ভোর বেলাতেই বেরিয়ে পড়লাম সেই আজাদুল ভাইয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে, মূলত দোতারার তার কেনার জন্য এবং তারটা কিভাবে লাগাতে হবে, সেটা শিখে নেওয়ার জন্য।
আসলে শখের জিনিসগুলোর যদি হুটহাট করে কিছুটা অসুবিধা হয়ে যায়, তাহলে মনের ভিতরে এমনিতেই খচখচ করে। যেমনটা আমার হচ্ছিল, দোতারাটা ঠিক না করা পর্যন্ত । তবে যখন আমি আজাদুল ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছেছি, তখনো সে ঘুম থেকে ওঠেনি আর এত সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার কথাও না।
তারপরেও তাকে ভোরবেলা ডেকে তোলার চেষ্টা করলাম এবং অবশেষে মোটামুটি চড়া দামে চার সেট দোতারার তারগুলো সংগ্রহ করেছি। যেন পরবর্তীতে ছিঁড়ে গেলেও আর এরকম বিপদে পড়তে না হয়। এখন বাসায় ফেরার পালা, ঘড়িতে তখন সকাল সাড়ে আটটা থেকে নয়টার মতো বাজে। আমার চোখ গুলো যেন ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে, শরীর অনেকটা দোল খাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি, এখন আমার গভীর নিদ্রা দরকার।
কোনরকম নিজেকে সামলে নিয়ে আবারো সেই গ্রামীণ রাস্তায় ভ্যান গাড়িতে চড়ে, শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম। বাসায় ফিরে মোটামুটি আগে দোতারার তারটা লাগিয়ে নিলাম। তারপরে অল্প সময় বাজানোর চেষ্টা করলাম। আসলে এটা বাজানো বেশ কষ্টসাধ্য। তাই এখন আর বৃথা চেষ্টা করতে চাচ্ছি না। কারণ এটা ঠিক করতে পেরেছি, এটাই অনেক কিছু। মোটামুটি দোতারাটা রেখে দিয়ে চেষ্টা করলাম ঘুমিয়ে নেওয়ার জন্য ।
আসলে গান-বাজনা যত সহজে মুখ থেকে টুক করে বের হয়, এটা আসলে পরিপক্ক ভাবে শিখতে গেলে বেশ কাঠ-খড় পোড়াতে হয়। তা আপাতত একটু হলেও এখন বুঝতে পারছি। গান গাওয়া কিছুটা হলেও সহজ, তবে শিল্পী হওয়া বড্ড কঠিন। যা সবাই হতে পারে না।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
যখন কোন কিছু এলোমেলো হয়ে যায় তখন সবদিক থেকেই এলোমেলো হয়ে যায়। আপনি কিছুদিন আগে একটি দোতারা কিনেছেন আমরা সবাই জানি। শখের বসে দোতারা বাজানো শিখছেন। আসলে নিজের সবগুলো মাঝে মাঝে পূর্ণ করতে ভালো লাগে। দোতারার তার ছিড়ে গিয়েছে এবং সেটা সংগ্রহ করার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন বুঝতেই পারছি ভাইয়া। আসলে গান-বাজনা খুবই শখের জিনিস। এছাড়া আপনি ভালো গান করেন আমরা সকলেই জানি। গান গাইতে পারে সবাই হয়তো সবাই শিল্পী হতে পারে না। কিন্তু আপনার মাঝে সেই প্রতিভা আছে। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ভাইয়া।