আত্মা ঠান্ডা || @shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

IMG-20220816-WA0008.jpg

সেদিন যখন বগুড়া গিয়েছিলাম তখন যাত্রাপথে অনেকটাই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল । বিশেষ করে সকালবেলা আমরা খাবার খাই না কিন্তু সেদিন একটু খাবার খেয়েছিলাম । যার কারণে হিরার এসিডিটি হচ্ছিল । এসিডিটি হওয়ার কারণে হিরার বমি বমি ভাব হচ্ছিল। যাইহোক মহাস্থানের কাছাকাছি গিয়ে গাড়িটা থামিয়ে,মোটামুটি বাহিরের পরিবেশে কিছুটা সময় হিরাকে হাঁটাহাঁটি করতে বললাম প্রকৃতির মধ্যে ।

IMG-20220816-WA0004.jpg

সম্ভবত মিনিট দশেক ও বাহিরে হাঁটাহাঁটি করার পরে, কিছুটা হালকা বোধ করছিল । তারপর আমরা আবারো গাড়ির স্টার্ট করে গন্তব্য বগুড়া শহরের উদ্দেশ্যে । যাইহোক রানা প্লাজার নিচে গিয়ে, গাড়ি পার্কিং করে রেখে । তারপরে অবশেষে বের হয়ে পড়লাম নিজেদের কিছু ব্যক্তিগত কাজ করার জন্য।

IMG-20220816-WA0014.jpg

যেহেতু হিরা এমনিতেই বেশ নার্ভাস ছিল । আর মজার ব্যাপার হচ্ছে চোখের সামনেই মূলত শরবতের উন্মুক্ত দোকানগুলো আমি দেখতে পেলাম । যদিও এই শরবতের দোকান নিয়ে অনেকের বিভিন্ন রকম মন্তব্য থাকতে পারে। আবার কারো রুচি নাও হতে পারে । তবে আমার এগুলো খেয়ে অভ্যাস আছে বহু আগে থেকেই। বলতে পারেন যখন আমি কলেজ লাইফে ছিলাম তখন দেখেই । আর তাছাড়াও বগুড়ার পানি ভালোই, তাই অনায়াসেই এই শরবত গুলো খাওয়া যায় ।

IMG-20220816-WA0009.jpg

মাথার উপর তাকাতেই দেখলাম সূর্য তার নিজের ইচ্ছে মতো তাপ ছড়িয়ে যাচ্ছে । যদিও এতক্ষণ গাড়ির ভিতরে ছিলাম সেখানে কিন্তু তাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা ছিল কিন্তু গাড়ি থেকে বের হতেই,মনে হচ্ছিল যেন একদম গরমে অস্থির । এমতাবস্থায় শরবতের দোকানটা ছিল আশীর্বাদ স্বরুপ আমাদের কাছে । শরবতের দোকানদার ভাইকে বললাম , ভাই আমাদের জন্য ঝটপট তিনটা লেবু দিয়ে শরবত বানিয়ে দিন । তারপরেও হিরাকে বললাম,তোমার যদি কোন অসুবিধা না হয়, তুমি খেতে পারো । হিরাও বেশ স্বাচ্ছন্দেই খেতে রাজি হয়ে গেল সঙ্গে আমার ভাইও ।

IMG-20220816-WA0003.jpg

এই শরবত বানানোর প্রক্রিয়াটা একদম খুব যে আহামরি তা আমি বলবো না । দামেও খুব সস্তা একদম ১০ টাকা গ্লাস । মূলত একটা লেবু কেটে প্রথমে লেবুর রস গুলো এটা গ্লাসের মধ্যে রাখা হয় তারপর সেখানে কিছুটা ঠান্ডা পানি এবং সেটার ভিতরে কমলা লেবুর পাউডার দিয়ে দেওয়া হয় । অতঃপর সেই গুলোর ভিতরে আবার বিট লবণ দিয়ে ঝাঁকাঝকি করে বানিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় সেই শরবত । মূলত এটাই বানানোর প্রক্রিয়া ।

IMG-20220816-WA0012.jpg

সত্যি বলতে কি যখন আমি মুখে দিয়েছি তখন আমার কাছে অনেকটাই অমৃতের মত লাগছিল ।
অনেকটাই গরমে একাকার অবস্থা তার ভিতরে যখন এরকম লেবু দিয়ে ঠান্ডা শরবত মুখে দিতে পেরেছি, তখন যেন মনে হচ্ছিল পুরো শরীরটার ভিতরে একটা ঝাঁকি দিয়ে উঠল হিম শীতলার । বেশ ভালই অনুভব করলাম আমি । অল্প পয়সায় স্বল্প সময়ে নিজের শরীরকে সতেজ করার জন্য, এই শরবতের কোন বিকল্প হতে পারে না ।

IMG-20220816-WA0006.jpg

তারপরেও জায়গা ভেদে একেকজনের রুচি ও মতামত ভিন্ন থাকতেই পারে । তবে আমি মনে করি আসলে যেহেতু সকল মানুষ খাচ্ছে তো ঐ জায়গা থেকে যখন আমি চিন্তা করেছি , তখন এই ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই স্বাভাবিক মনে হয়েছে । তারপরেও যদি কারো রুচির ব্যাপারে প্রশ্ন এসেই যায় তাহলে বলবো না খাওয়াই শ্রেয় ।

IMG-20220816-WA0007.jpg

অতঃপর তৃষ্ণার্ত আত্মাকে চাঙ্গা করে তারপরে দোকানদারের পয়সা মিটিয়ে অবশেষে আমরা আমাদের গন্তব্যের দিকে রওনা দিলাম । যাইহোক সর্বোপরি আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে শরবতটা আর আমি মনেকরি , যদি আমার পরবর্তী সময়ে আবারও এরকম সৌভাগ্য হয় তাহলে আমি আবারো খেয়ে দেখতে পারি । মোট কথা শরবতটা আমার কাছে ভালই লেগেছে । স্বল্প পয়সায় যে তৃষ্ণার্ত আত্মাকে ঠান্ডা করা যায়, এটা আসলে দীর্ঘদিন পরে এই শরবত না খেলে হয়তো বুঝতেই পারতাম না ।

IMG-20220816-WA0002.jpg

IMG-20220816-WA0000.jpg

একটা জিনিস বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি । বিশেষ করে যারা একদম খেঁটে খাওয়া মানুষ আছে। তারা যখন ক্লান্ত শরীরে এসে এই দোকানগুলোর সামনে শরবতের জন্য অপেক্ষা করে , আমি সেই বিষয়টা ভাবার চেষ্টা করছি । মুহূর্তেই ঠান্ডা হয়ে যায় সেই ক্লান্ত শরীরের আত্মা গুলো । তখন নিশ্চয়ই একটা প্রশান্তির হাসির ছাপ দেখা যায় সেই মুখ গুলোতে ।

Banner-3.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

একদম ঠিক ভাইয়া এসিডিটি হলে জার্নি করা খুবই কষ্টকর। বমি বমি ভাবটা সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিকর। গাড়ি থেকে নেমে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করার সিদ্ধান্তটা খুব ভালো ছিল। আর এমন সময় লেবুর সরবত অনেক উপকারী। বিশেষ করে সূর্য্য যখন প্রচন্ড উত্তাপ ছড়ায় তখন এক গ্লাস এরকম শরবত খেলে একেবারে আত্মা ঠান্ডা হয়ে যায়। আসলে খেটে খাওয়া মানুষের ভরসা এই দোকানগুলো। আমিও মাঝে মাঝে খাই এই শরবত। যখন প্রচন্ড ক্লান্ত থাকি তখন ভালো মন্দ ভাবার সুযোগ থাকে না কিন্তু। অনুভূতি গুলো জেনে খুব ভাল লাগলো ভাইয়া।

 2 years ago 

এই জন্যই আপনার ভাবী নিজের থেকেই লেবুর শরবত খেতে চেয়ে ছিল ভাই ।

 2 years ago 

যদিও এই রকম শরবত খাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি,তবে আমার কাছে এই রকম স্টল গুলোর খাবার বেশ ভালোবাসার লাগে।যেমন ঝালমুড়ি, ফুচকা,বেলপুরি।আপনার শরবতের পোস্ট পড়ে বেশ খেতে ইচ্ছে করছে😜।

 2 years ago 

হুম এইটা সত্য যে এই রকম স্টলের স্ট্রিট ফুড খেতেও বেশ ভালোই মজা লাগে আপু ।

 2 years ago 

এই গরমে যদি লেবুর ঠান্ডা শরবত পাওয়া যায় তাহলে আর কি চাই এমন শরবত আমিও অনেক পছন্দ করি সত্যি বলতে এটি খাওয়ার অভ্যাস আমারও রয়েছে। আসলে খাদ্য অভ্যাসের একটি পরিবর্তন আনলে মাঝেমধ্যে আমারও একটি এসিডিটি সমস্যা হয় এটা স্বাভাবিক। গরম এবং ক্লান্তি শেষে যদি ঠান্ডা শরবত পাওয়া যায় আসলেই আত্মা ঠান্ডা হয়ে যায়। আপনার মুহূর্তগুলো উপলব্ধি করতে পেরে খুবই ভালো লাগতেছে ভাইয়া । ভালোবাসা নেবেন ভাইয়া এবং আপনার এবং ভাবীর প্রতি রইল বিশেষ শ্রদ্ধা। 🥰

 2 years ago 

বাহ্ আপনার অনুভূতি জেনে ভালোই লাগলো ভাই । আমার কাছেও খেতে ভালোই লাগছিল ।

 2 years ago 

দাদা বগুড়া যাওয়ার পথে খুব সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছেন শরবত খাওয়ার মূহুর্তে ৷হুম ১০ টাকা দিয়ে যে আত্মার শান্তি পাওয়া যায় তা হয়তো এই শরবত খেয়ে বুঝতে পেরেছেন ৷
সর্বোপরি আত্না ঠান্ডার বিষয়ে গুছিয়ে কথা গুলো বলার জন্য ৷
ধন্যবাদ

 2 years ago 

জী ভাইয়া শরবত গুলো আসলেই অনেক সুস্বাদু। যে একবার খেয়েছে সে বারবার খেতে চাইবে। বরফ গলা পানি দেয়তো আর সাথে লেবু বিটলবন দিলে শরবতটা সেই টেষ্টি লাগে। আমিও খেয়েছি অনেক বার এখনো মাঝে মাঝে খাই। ঢাকা শহরে না খাওয়াটাই বেটার। ধন্যবাদ ভাইয়া।

এই শরবত গুলো আমি ঢাকাতে খাই না তবে বগুড়া থাকলে ঠিকই খাই। সত্যিই অসাধারণ তৃপ্তি পাওয়া যায় শুভ ভাই। খেটে খাওয়া মানুষগুলো একগ্লাস খেলেই আবার যেন চাঙ্গা হয়ে ওঠে পুরো দমে। লেবুর রসটা খুব বেশি কাজে দেয় আমার তো তাই মনে হয়।

 2 years ago 

ঢাকার পানি নিয়ে আমারো ঝামেলা লাগে ভাই । তবে বগুড়ার পানির কোন ঝামেলা নাই ।

 2 years ago 

নিজের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য আমরা যখন রাস্তার ধারে গড়ে ওঠা শরবতের দোকানগুলোর সামনে দাঁড়াই তখন অন্য কোন কিছু মাথায় আসে না। তাদের বানানো শরবত খেয়ে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। হয়তো অনেকের কাছে সেটা পছন্দের নাও হতে পারে। কিন্তু আমার কাছে খেতে ভালই লাগে। কারণ আমিও মাঝে মাঝে শরবত কিনে খাই। ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার অনুভূতিগুলো আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ♥️♥️

 2 years ago 

আমার কাছে তখন মূখ্য বিষয় ছিল তৃষ্ণা মেটানো , তবে যা লিখেছি ভাই তা একদম ব্যক্তিগত মতামত থেকে ।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি প্রতি চমৎকারভাবে আপনার অনুভূতিগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি কথা বলতে ভাইয়া রাস্তার ধারে বিক্রয় করা শরবত পান করতে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। আমি গত ১৪ আগস্ট কুষ্টিয়াতে গিয়েছিলাম। সেখানে মজমপুর নামক স্থানে আমি দুই গ্লাস শরবত কিনে পান করলাম। মনে হলো আমার আত্মা ভরে গেল শরবত পান করে।যাহোক, অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

এই গরমে মাঝে মধ্যেই আমি এসব দোকান থেকেই শরবত খেয়ে থাকি। আসলে এই গড়মে রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় গলা পর্যন্ত শুখিয়ে যায়। তখন এসব শরবত খেলে যেন প্রাণ ফিরে পাই। অনেক সুন্দরভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন ভাই।।।

 2 years ago 

আমার কাছেও ঠিক সেদিন অবস্থাটা তেমনি ছিল রে ভাই । তবে বেশ মজা পেয়েছি খেয়ে ।

 2 years ago 

দাদা, ধুলো বলির মধ্যে রাস্তার এই স্টলগুলো থেকে কখনও খেতে ইচ্ছা করে না।তার ওপর ওই একই গ্লাস। কত জন যে খাচ্ছে। স্বাস্থ্য কর মনে হয়না। তাই আমি জল কিনে খাই প্রয়োজনে।
তবু আপনার আত্মা ঠান্ডা হওয়ার পোস্ট পড়তে মজাই লাগলো।

 2 years ago 

জায়গা ভেদে জীবন গুলো আলাদা রে আপু । হাইজিন মেইনটেইন করা আসলেই করণীয় ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59508.12
ETH 2603.38
USDT 1.00
SBD 2.39