পরিবর্তন আসুক মানসিকতায়
আমাকে মাঝে মাঝে কিছু বিষয় ব্যক্তিগতভাবে এমনভাবে ভাবিয়ে তোলে যে, আসলে সেই সকল প্রশ্নের উত্তর মিলাতে গেলে, মাঝে মাঝে বেশ চিন্তায় পড়তে হয়। তবে আমি মনেকরি , এখন যে কথাগুলো বলছি সেটা আমার নিতান্তই ব্যক্তিগত চিন্তাধারা থেকে। হয়তো অন্যের চিন্তার সঙ্গে মিল নাও থাকতে পারে।
দেখুন একটা বিষয় স্বাভাবিক ভাবে ভাবার চেষ্টা করুন, প্রতিনিয়ত যেভাবে বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে, সেখান থেকে যদি সমাধানের পথ খোঁজা যায়, তাহলে আমার প্রথম যে চিন্তাটা মাথায় কাজ করে, সেটা হচ্ছে সকলের যে কোন কর্ম করার মানসিকতা তৈরি করা।
আপনি কি পাশ করেছেন, কত দূর পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন, কতগুলো ডিগ্রি নিয়েছেন, এটা যতটা না পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আপনি কর্ম করতে স্বতঃস্ফূর্ত মনোভাব পোষণ করেন কিনা।
আপনি যদি ভাবেন যে, আপনার ঝুলিতে অনেক ডিগ্রী আছে, অনেক সার্টিফিকেট আছে, আপনি অনেক বিদ্বান। তাহলে কথা গুলো আমি আপনাকেই বলছি, একটু চেষ্টা করুন আপনার চারিপাশে তাকানোর জন্য, কারণ আপনার মত হাজারো বিদ্বান আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
তবে দিনশেষে এটাই সত্য কথা যে, চাকরির পদটা খুবই সীমিত এবং আপনার মত হাজারো বিদ্বান সেখানে একই পদের চাকরির জন্য ছোটাছুটি করছে।
তাহলে এত পড়াশুনা, তাহলে এত সার্টিফিকেট, এত কাঠখড় পোড়ানো, হ্যাঁ এসবের দরকার ছিল। তবে এসব এককথায়, চাকরির জন্য না। হয়তো সেটা আপনার নিজেকে যাচাই করার জন্য। পড়াশোনা মানেই তো শুধু চাকরি না। পড়াশোনা করে আপনি কতটুকু জ্ঞান অর্জন করলেন এবং কতটুকু স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারলেন, এটাই তো আমি বুঝি।
দেখুন কর্ম কিভাবে শুরু করবেন, কোন কর্মটা আপনি করবেন এবং কিভাবে নিজেকে কর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত করবেন, এই ব্যাপারটা সম্পূর্ণটাই নির্ভর করে আপনার মানসিকতার উপর। সত্যি বলতে কি, যেকোনো কর্ম দিয়েই ভালো কিছু করা যায়। যদি সেটাতে আপনার চেষ্টা ও এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে থাকে ।
বর্তমান প্রেক্ষাপট যেভাবে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে,তাতে আসলে পুঁথিগত বিদ্যার উপর নির্ভর করে কর্ম পাওয়াটা খুবই কঠিন।
কদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখছিলাম, মাস্টার্স পাশ করা একটা ছেলে চা বিক্রি করছে। তবে হ্যাঁ এখানে তার চা বিক্রি করার ধরনটা একটু আলাদা ছিল। কারণ ছেলেটা তার চা বিক্রির পেশাতে কিছুটা সৃজনশীল মনোভাব দেখিয়েছে। হোক সেটা চা বানানোর প্রক্রিয়ায় নতুবা আপ্যায়নে।
অন্য সকল দোকানদারের কাছ থেকে মানুষ যেভাবে চা ক্রয় করে খায়, এখান থেকেও মানুষ সেইভাবেই চা ক্রয় করে খাচ্ছে। তবে এখানে ক্রেতারা সুন্দর একটা পরিবেশ পেয়েছে এবং মাস্টার্স পাশ করা ছেলেটার আপ্যায়ন ও আতিথেয়তায় তারা অনেকটাই মুগ্ধ এবং ক্রমাগত তার বিক্রি বেড়ে যাচ্ছে।
এখন আপনি চাইলেই বলতে পারেন যে, মাস্টার্স পাশ করে ছেলেটা চা বিক্রি করছে। আসলে আপনার এমন চিন্তাধারা যদি থেকে থাকে, তাহলে আমার মনেহয় আপনার চিন্তাধারায় কিছুটা পরিবর্তন আনা খুবই জরুরী।
কারণ আপনি প্রথমত কাজকেই মূল্যায়ন করতে পারছেন না। এই ক্রমাগত চাকরি শূন্য বাজারে, ছেলেটা যে বসে না থেকে বুদ্ধি খাটিয়ে নিজে চলার চেষ্টা করছে এবং কর্মের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছে এবং এই উর্ধগতির বাজারে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে, এটাই তো অনেকটা বেশি। আসলে আমাদের মানসিকতায় পরিবর্তন না আসলে, ভালো কিছু আশা করা মোটেও সম্ভব না।
দেখুন, আপনি সরকারি চাকরি করুন বা বেসরকারি চাকরি করুন, ছোট্ট করে একটা কথা বলছি, হয়তো শুনতে খারাপ লাগতে পারে। তবে তারপরেও আমার মনেহয় এই পরিস্থিতিতে কথাটা বলা জরুরী, সরকারি চাকরি মানে প্রজাতন্ত্রের চাকর আর বেসরকারি চাকরি মানে কর্পোরেট চাকর।
আর এইসব বাদ দিয়ে, ছেলেটা চা বিক্রি করছে অনেকটা ভিন্ন আঙ্গিকে, সে তো স্বাধীন ব্যবসা করছে বরং তার ওখানে আরো দুজন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, তাহলে আমার তো মনে হয়, সেই বেশি ভালো আছে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
সত্যি বলেছেন ভাইয়া আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন আনা উচিত। আসলে আমরা সব সময় ভাবি শিক্ষিত হয়েছি সরকারি চাকরি করবো।ছেলেটা যে মাস্টার্স পাশ করে চা বিক্রি করছে সত্যি তার চা বিক্রির ধরন অন্য লোকের থেকে আলাদা থাকবে।আমাদের শিক্ষার গ্রহণ শুধু চাকরির জন্য না। আসলে একজন শিক্ষিত মানুষ যেখানেই যাক না কেনো তার ব্যবহার অন্য রকম থাকে। তাই আমাদের সবারই উচিত সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া,আর মানসিকতার পরিবর্তন আনা। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর লিখেছেন।