যন্ত্রণাদায়ক সকাল || @shy-fox 10% beneficiary
এত সকালে যদিও কখনো আমার ঘুম ভাঙ্গে না । আমার যে আসলে কখন সকাল হয়, এটা আমি নিজেও জানি না । আসলে যখন আমার ঘুম ভেঙে যায় তখনই সকাল । তবে আজকের সকালটা অন্যান্য দিনের থেকে অনেকটাই আলাদা ছিল । মূলত আজকের ঘুমটা ভেঙেছে বাবুর কান্নার আওয়াজে । অনেকটা ঝাঁপ দিয়ে বিছানার উপর উঠে বসে গিয়েছে । কলিজার টুকরা আমার হঠাৎই কান্নাকাটি করছে , এটা যেন আমি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না ।
হীরা বলছে , দেখছো বাবুর গায়ে এগুলো কি উঠছে । এগুলোর যন্ত্রণায় হয়তো ও বেশ কষ্ট পাচ্ছে আর কান্না করছে । গত রাতে ভোর পাঁচটায় ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু যখন উঠেছি তখন সম্ভবত সকাল সাতটার মতো বাজে । মুহূর্তেই যেন চোখের ঘুম আমার উধাও । ওর শরীরের র্যাশ দেখে আমি যেন অনেকটাই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম।
আমার শরীরের ভেতরে যেন কাঁটা দিয়ে উঠেছে ওর অবস্থা দেখে । দ্রুত মোবাইলটা ঘেঁটে সঙ্গে সঙ্গে আমার কলিগদের বারবার ফোন করার চেষ্টা করছি । তবে একটা বিষয় ভালো করে খেয়াল দেখলাম । যখন চিন্তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম, তখন আসলে ঠিকমতো কাউকেই পাশে পাই নি ।
বেশ কয়েকবার যখন পরিচিত সিনিয়র কলিগের নাম্বারে ফোন দিয়ে তাদেরকে পেলাম না । তখন নিজেই একটু ঘাঁটাঘাঁটি করার চেষ্টা করলাম ইন্টারনেটে আসলে এটা কি চিকেন পক্স নাকি অ্যালার্জি র্যাশ । বেশ মাথায় গুলিয়ে গেল, তারপরও চেষ্টা করছিলাম লক্ষণ গুলো বোঝার জন্য । এক রাতের মধ্যেই এইরকম অবস্থা হয়ে গিয়েছে, এটা কোনভাবেই যেন বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছিল না আমার কাছে ।
অস্থিরতা কমিয়ে ঠান্ডা মাথায় একটু ভাবার চেষ্টা করলাম , এই মুহূর্তে কি করা যায় । বাবুর ক্রমাগত শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে আবার কমছে । অনেকটা তাপমাত্রায় কাঁপাকাঁপি করছে ও । মুহূর্তেই হীরাকে বললাম ঝটপট রেডি হয়ে নাও আমরা যাচ্ছি হাসপাতালে ।
মায়ের মন যেহেতু , তাই হীরাও বেশ অস্থির । ও নিজেও বেশ কষ্ট পাচ্ছিল । ওকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছিলাম আর বললাম সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে । তখনও বাবুর দুচোখ দিয়ে যেন বারবার পানি পড়ছিল । কত দ্রুত যে কাপড়-চোপড় গায়ে দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছি বাসা থেকে, তা আসলে বলে বোঝাতে পারবো না ।
দ্রুত মোবাইল চাপছি আর ফোন নাম্বার ঘাটছি । অবশেষে ফোন দিয়ে ফেললাম সরকারী হাসপাতালের জরুরী বিভাগে । যে ফোন ধরলো, তার কাছে খোঁজ নিলাম এই মুহূর্তে ডিউটি ডাক্তার কে আছে । তাকে যখন আমার পরিচয় দিলাম সে আমাকে বলল, আপনি চিন্তা না করে বর্হি: বিভাগে দ্রুত শিশু ওয়ার্ডে চলে যান । যদিও আমাদের আগে তিন থেকে চারটা সিরিয়াল ছিল, তারপরেও সেই সব বাচ্চার কথা চিন্তা করেই সিরিয়াল ভঙ্গ করিনি । তবে চাইলেই কিন্তু পারতাম তবে বিবেকে বেশ বাঁধা দিয়েছে ।
অতঃপর শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখি দায়িত্বরত ডাক্তার আমার পূর্ব পরিচিত । সে চেষ্টা করলো আমার বাবুর শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য এবং ঘন্টা তিনেকের মত তার ফলোআপে রাখার চেষ্টা করলো । সে চেষ্টা করছে আমার কাছ থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো শোনার জন্য । আমি তাকে বললাম এইটা হঠাৎই হয়ে গিয়েছে । তারপরেও সে নিজের থেকে দেখে ডায়াগনোসিস করার চেষ্টা করলো ।
তবে এই সময়ের ভিতরেই মোটামুটি আমার আরো দুই তিনজন পুরোনো কলিগ চলে এসেছিল । তারা এসেও বসে বাবুকে দেখছিল অবশেষে তারা সিদ্ধান্ত নিল যে এটা আসলে অতিরিক্ত এলার্জির কারণে হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী এখন ট্রিটমেন্ট চলছে । তবে তারা বলল যে, খুব দ্রুত ভালো হয়ে যাবে । আমি যেন মানসিকভাবে স্থির থাকি ও কোন দুশ্চিন্তা না করি, তেমনটাই তারা বলে দিল ।
বাবু যতো বড় হচ্ছে আর ক্রমাগত দিন দিন আমার ততো অভিজ্ঞতা বেড়েই যাচ্ছে । যাইহোক বাবা হয়েছি , শুধুমাত্র যে সুখের অনুভূতি প্রতিনিয়ত থাকবে এমনটা কিন্তু না । মাঝে মাঝে বিভিন্ন রকম অনুভূতিগুলোর স্বাদ গ্রহণ করতেও হবে । তারপরেও আমার বাবুটা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এবং পৃথিবীর সকল বাবুরা নিশ্চিন্তে ভালো থাকুক তাদের বাবা-মার কাছে, এমনটাই তো প্রতিনিয়ত কামনা করি ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
শায়ানের শরীরের বিভিন্ন রেসগুলো দেখে আমার বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো ভাইয়া। দূর থেকে দেখেই এতটা খারাপ লাগছে আর তার মায়ের কতটা খারাপ লাগছে সেটা বুঝতেই পারছি। এছাড়া সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে শায়ান খুবই ছোট মানুষ। সে হয়তো তার কষ্টের কথা বলতে পারছে না। কিন্তু তার খুবই কষ্ট হচ্ছে এটা বুঝতেই পারছি। 😭😭😭
ভাইয়া শায়নের এ অবস্থা দেখে আমার নিজেরই অনেক খারাপ লাগতেছে। ফক্স গুলো দেখে আমি অস্থির হয়ে যাচ্ছি। এত ছোট বাচ্ছার এলার্জি হয়ে গেল। যাক দোয়া করি আল্লাহ যেন খুব তারাতারি সুস্থ করে দেন।
দেখে এলাম তো,মুখের হাসিটাতে একটু দাগ পরেছে।ইনশাআল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে এবং মুখে সেই মলিন হাসিটা আবার ফিরে আসবে।
কতটা ভয়ানক ঝড় গিয়েছে আপনার উপর দিয়ে তা কল্পনা করতে পারছি।আশা করি শায়ান বাবু খুব জলদি সুস্থ হয়ে উঠবে এই প্রার্থনা করি।আপনি বেশি দুঃশ্চিন্তা করবেন না ভাইয়া।
ভাইয়া আমার সত্যি অনেক খারাপ লেগেছে সায়ানের এই অসুস্থতার কথা শুনে ,আমি দোয়া করছি সায়ান তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক। আপনি ভেঙ্গে পড়বেন না সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
প্রথমে দোয়া করি শায়ান বাবু যেন তারাতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে। হঠাৎ এ রকম অবস্থা থেকে মেনে নেওয়া অনেক কষ্টের। সত্যি ভাইয়া প্রয়োজনে কাউকে কাছে পাওয়া যায় না।আপনার কাজটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। কারণ আপনার আগে চারটা সিরিয়াল ছিল আপনি চাইলে কিন্তু আগে যেতে পারতেন। তবে বিবেকে বেশ বাঁধা দিয়েছে ।শুধুমাত্র যে সুখের অনুভূতি প্রতিনিয়ত থাকবে এমনটা কিন্তু না,একদম সত্যি কথা । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ যন্ত্রণাদায়ক সকালটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনার এই নিয়মানুবর্তিতা আমার খুবই ভালো লাগে ভাই। আপনার মতো বিবেক কয়জনের আছে বলেন। সন্তানের কিছু হলে বাবা মা অস্থির হয়ে যায়। আশাকরি শায়ান বাবু দ্রুতই সুস্থ্য হয়ে যাবে।
বাবুর এমন অবস্থা দেখে হঠাৎ করে আমারও খুব খারাপ লেগেছিল নিশ্চয়ই খুব কষ্ট পেয়েছিল। বাবুরা যখন সামান্য অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন সব বাবা-মা ই অস্থির হয়ে পড়ে এবং ঘাবড়ে যায়। যাই হোক যেহেতু একে অতিরিক্ত এলার্জির কারণে হয়েছে আশা করি খুব শীঘ্রই সায়ানের এলার্জি কেটে যাবে। এবং তার জন্য অনেক অনেক সুস্থতা কামনা করছি।
শায়ান বাবুর জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি তাড়াতাড়ি যেনো সুস্থ হয়ে যায়। বাচ্চাদের কিছু হলে কোন বাবা মাই স্থির থাকতে পারেনা, আপনাদের দুজনকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনারা কতটা চিন্তিত ছিলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ও একেবারেই অনেক ছোট কি সমস্যা হচ্ছে ও বলতে পারছে না আর এটা একজন মায়ের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। আজকে আমি দেখেও অনেক টা ভয় পেয়ে গেছি শায়ান বাবুর শরীর দেখে। ডাক্তার দেখিয়েছেন ইনজেকশন করেছে, আশাকরি আমাদের মিষ্টি শায়ান বাবু খুব শীঘ্রই এই যন্ত্রণার হাত থেকে রক্ষা পাবে।শুভকামনা নিরন্তর ❤️
ভাইয়া শায়ান বাবুর এরকম অবস্থা দেখে সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। কেন যে ছোট ছোট সোনামণিদের এরকম অবস্থা হয় তা বুঝে উঠতে পারিনা। মনে হয় ছোটদের এরকম অবস্থা না হয়ে যদি আমাদের অর্থাৎ বড়দের এরকম অবস্থা হয় তবুও মেনে নেয়া যায়। ছোটদের এত কষ্ট ও যন্ত্রণা খুবই বেদনাদায়ক হয় বাবা-মার কাছে। কেননা এরকম অনেক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলাম আমি। তবে ভাইয়া এরকম অবস্থায় সকল বাবা-মাকেই উচিত মানসিকভাবে স্থির থাকা তা না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দুহাত তুলে প্রার্থনা করছি, আমাদের শায়ান বাবু যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। শায়ান বাবুর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।