বর্ষণমুখর বেলা
গ্রামের বাড়ির খুব কাছেই আমার এক বাল্য বন্ধুর বাড়ি। বলা যায় একসময় ওর সঙ্গে, আমার জীবনের অনেকটা সময় কেটেছিল। দুপুরের পরে ওকে মুঠোফোনে জানিয়েছিলাম যে, ওর বাড়িতে বেড়াতে যাব। যেহেতু আর দুটো দিনই গ্রামে আছি, তাই ভাবলাম ওর সঙ্গে দেখা করেই যাই।
তবে আসলে যেমন ভাবা যায়, তেমনটা সব সময় হয়ে ওঠে না। আজও হয়ে ওঠেনি। আজ আবহাওয়া আমার অনেকটাই বিপক্ষে ছিল। যদিও আমাদের ইচ্ছে ছিল বিকেল বেলার দিকে বাল্য বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যাব এবং সেভাবে মানসিক প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম, তবে দুপুরের একটু পরেই পুরো আকাশ যেন অন্ধকার হয়ে এসেছিল।
বাতাসের গতিবেগ যেন ক্রমাগত বাড়ছিল এবং একটা সময়ের পরে বাধ্যই হলাম আবারো বাল্যবন্ধুকে ফোন করার জন্য। বললাম কোন আয়োজন করিস না, আজ আর কোন ভাবেই সম্ভব না দেখা করা। তারপরেই শুরু হল ভারী বর্ষণ। তবে বৃষ্টি হওয়ার আগে যতটা সময় বাতাস হয়েছিল, তা যেন অনেকটা কালবৈশাখী ঝড়ের মত ছিল।
বাড়ির সামনে যে বাঁশ বাগান এবং তার পাশে যে আমের গাছগুলো ছিল, সেগুলো এমন ভাবে দুলছিল যেন যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে যাবে। আমি অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বাহিরে গিয়ে মুহূর্তটা ভিডিও করার চেষ্টা করেছিলাম।
তবে একটা বিষয় আমি ভীষণভাবে সেই মুহূর্তে ভাবছিলাম,এখানে যে পরিমাণ ঝড়ো বাতাস হচ্ছে, তাতেই আমাদের যে অবস্থা, তবে কিছুদিন আগে যখন মোখা নামক ঝড়টা হয়েছিল, সেসময় বাতাসের গতিবেগ তো আরো কয়েকগুণ বেশি ছিল, না জানি সেসময় উপকূলবর্তী মানুষজনের কি অবস্থাটাই হয়েছিল।
ঘরের ভিতরে যেন সময় কোনোভাবেই কাটছিল না। আর তাছাড়া বিদ্যুৎ নেই, বিদ্যুৎ কখন আসবে তা সঠিক বলা যাচ্ছে না। মোটামুটি দিনের বেলাতেই যেন অন্ধকার হয়ে গিয়েছে সব কিছু। এমনিতেই গ্রাম অঞ্চলে ঝড়ের সময় সব থেকে বড় যে সমস্যাটা হয়, সেটা হচ্ছে সবকিছু যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। মনে হয় সবকিছু থেকে সবাই যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। তারপরেও সময় কাটানোর জন্য অনেকটা সময় জানালার পাশে বসে থেকে নিজের মত করে বৃষ্টি পড়া দেখছিলাম।
হয়তো শৈশবে এমন বর্ষণ মুখর দিনে অন্যভাবে সময় কাটাতাম। অনেকটা দুরন্তপনায় এদিক-সেদিক ছুটে বেড়াতাম। হয়তো ভারী বর্ষণ কে উপেক্ষা করে আম কুড়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়তাম। তবে এখন সেসব শুধুই অতীত। এখন নিজের ভিতরে বড্ড ভীতি কাজ করে। এখন আর শৈশবের মত ছোটাছুটি হয় না, নিজেকে বন্দী রাখি আর শৈশব নিয়ে ভাবি।
অনেকটা বিরক্তিকর ভাবেই কেটেছে পুরোটা সময়। কোথায় একটু চেয়েছিলাম নিজের মত করে বাল্যবন্ধুর সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করব, খোশগল্প করে কিছুটা সময় কাটাবো, তবে তা আর কই হয়ে উঠল বরং অলসতাতেই পুরোটা দিন কেটে গেল।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1661311031099158528?t=nrbdDp3lFTO174mURirk4w&s=19
বর্ষণমূখর বেলার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। ঝড়-বৃষ্টির কারণে আপনার প্রিয় বন্ধুর বাড়িতে যাওয়া হয়নি ঠিক কিন্তু প্রাপ্তিও আছে।সেকারণে দারুণ কিছু ছবি ও ভিডিও উপহার পেয়েছি আমরা। ঠিক বলেছেন ঝড়-বৃষ্টিতে গ্রামে কারেন্ট থাকেনা, একটা ভুতুরে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তবে আমার কিন্তু ভালই লাগে এই পরিবেশটা! শুভ কামনা আপনার জন্য।
জীবন যেখানে যেমন আপু, এটা সত্য যে হুটহাট এমন অবস্থা তৈরি হলে অনেকের কাছে সেটা উপভোগ্য কর হয়।
ভাইয়া আমাদের এখানেও গতকাল সন্ধ্যায় থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ঝড় আর বৃষ্টি হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় কারেন্ট নেই। খুব খারাপ একটা অবস্থা। ঝড় এর অনেক সুন্দর ভিডিও ধারন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সহজ সরল মন্তব্যের জন্য।
বৃষ্টির জন্য আর বাল্য বন্ধুর সাথে দেখা করা হলো না। আশা করি যে দু দিন থাকবেন তার মধ্যেই দেখা হয়ে যাবে। তবে আমার কাছে গ্রামের বাড়িতে বসে বৃষ্টি দেখতে দেখতে আপনার নিজের ভিতরের সুন্দর অনুভূতি গুলো বেশ ভালো লাগলো। এমন বৃষ্টির দিন দেখি না অনেক বছর। আজ আপনার সুন্দর এই পোস্টটি দেখে আমার ছেলে বেলার কথাই বেশী মনে পড়ছে।
না আপু, এবার আর দেখা করাই হয়ে উঠবে না ওর সঙ্গে। তবে সত্য যে বেশ দীর্ঘদিন পরেই এমনভাবে ঝড়-বৃষ্টি দেখা হয়ে উঠলো আমার নিজেরও।