উৎসাহ দেওয়া || @shy-fox 10% beneficiary
মানুষকে উৎসাহ দিতে যেমন ভালো লাগে তেমন সেই উৎসাহ যদি আরো নিজের পরিবারের লোকজনের ভিতরে কাউকে দেওয়া যায়, তাহলে আমি মনে করি সেখানে প্রশান্তির ব্যাপারটা একটু বেশি কাজ করে । আচ্ছা ব্যাপারটা একটু জানতে গেলে অতীতে যেতে হবে ।
আমার ছোট্ট একটা ব্যাটারি চালিত অটো গাড়ি আছে । মূলত আমি যখন গ্রামের চেম্বারে যাতায়াত করতাম, ঠিক সেই সময় ভেবেছিলাম আমার প্রতিদিন যে পরিমাণ পয়সা যাতায়াত করতে খরচ হতো, সেই পরিমাণ পয়সা একবার বাৎসরিক ভাবে হিসাব করে দেখলাম যে , আমার যাতায়াতের খরচটাই বিশাল অংকের একটা এমাউন্ট দাঁড়িয়ে ছিল ।
অতঃপর গভীরভাবে চিন্তা করলাম, কি করা যায় । যেহেতু আমার শ্বশুর আগে থেকেই কৃষি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল আর তার মূল পেশাই ছিল ধান চাষাবাদ করা । তাও আবার শুধুমাত্র বছরের দুটো সিজনে অতঃপর তার হাতে অফুরন্ত সময় । ঠিক সেই সময়ের কথা ভেবেই, সেই সময় অটো গাড়িটা কিনেছিলাম। যা এখনও আছে , সম্ভবত বছর তিনেকের বেশি সময় হয়ে গেল গাড়িটার বয়স ।একদিকে শ্বশুর মশাই এখন ফাঁকা সময়টাতে যেমন কাজের ভিতরেই থাকছে , ঠিক অন্যদিকে বাড়তি কিছু পয়সাও আসছে সংসারে ।
যদিও এখন আর চেম্বার করি না , মোটামুটি মেডিকেল প্রফেশন ছেড়েই দিয়েছে । তাও অটো গাড়িটা থেকেই গিয়েছে । একদিক থেকে হলেও সেই সিদ্ধান্তটা তো কাজে লেগেছে । দীর্ঘ টানা ছয় মাস আমার শাশুড়ি আমাদের সঙ্গে আমার বাসায় ছিল । তারপর থেকে মোটামুটি এখন বাবু কিছুটা হলেও বড় হয়ে গিয়েছে । এখন বাবুকে, হীরা নিজের থেকে নিজের মতো করে সামলাতে পারে ।
বলতে গেলে এখন আমার শাশুড়িও ছুটি পেয়েছে । তার হাতেও এখন অফুরন্ত সময় । যেখানেই আমি অফুরন্ত সময় দেখি , সেখানেই আমি ভিন্ন রকম সিদ্ধান্ত পাঁকিয়ে ফেলি । ভাবছিলাম তার জন্য যদি কিছুটা একটা করা যেত , তাহলে বেশ ভালই হতো । এই ভাবনা চিন্তা যদিও আমার থেকে বেশি করতো গিন্নি ।
নিচ তলায় প্রতিবেশী একটা ভাবি আছে , তার স্বামী মোটামুটি ভালো একটা চাকরি করা সত্ত্বেও, সেই ভাবি নিজেই বাসায় বসে থেকেই, বেশ ভালো কাপড়ের ব্যবসা করে । হীরা অবশ্য তার ফেসবুকের বন্ধু । হুট করেই সেদিন রাতে হীরা যখন তার ফেসবুকের নিউজ ফিড ঘাঁটাঘাঁটি করছিল , সেই মুহূর্তে একটা কাপড়ের পাইকারি বিক্রির পেজে সেই ভাবির লাইক দেওয়া দেখেছিল ।
আসলে ঘটনার সূত্রপাত সেখান থেকেই । আজকাল হীরার বুদ্ধি কিছুটা খুলেছে । অবশেষে হীরা কিছু পয়সা ইনভেস্ট করতে রাজি এবং ব্যবসাটাতে যদি তার মাকে কাজে লাগানো যায় তাহলে বিষয়টা ভালোই হয় । যেহেতু তার মা এখন গ্রামের বাড়িতে ফাঁকাই বসেই থাকে । আর ঐ গ্রামের মেয়ে মানুষেরা একটু কেনাকাটা করার জন্য গ্রামের বাজারে বা শহরের দিকে যাতায়াত করে । তাই ঐ চিন্তাভাবনা থেকেই অবশেষে সেই পেজ থেকে কিছু কাপড়ের অর্ডার করে দিল ।
সেদিন রাতে, হীরা আমাকে বলেই ফেলল যে, সে মানসিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে , সে তার মাকে কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়াবে এবং তার মা বাড়িতে বসেই কাপড় বিক্রি করবে গ্রামের মেয়ে মানুষদের কাছে । যার প্রয়োজন হবে, তারা বাড়িতে এসে তার মায়ের কাছ থেকে কাপড় কিনে নিয়ে যাবে ।
আমি হীরার কথায় , জাস্ট চোখ বন্ধ করে রাজি হয়ে গেলাম। আমি তো বলেই ফেললাম, তোমার দিন দিন যে সুবুদ্ধির উদয় হচ্ছে ব্যাপারটা আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছে । আমার কোন সমস্যা নেই । তুমি তোমার মতো , তোমার সিদ্ধান্ত কাজে লাগাতে পারো ।
দুদিন পরে , হীরার অর্ডার করা কাপড় গুলো আমাদের ঠিকানায় চলে এসেছে । বেশ নেড়েচেড়ে দেখছে কাপড় গুলো হীরা । সঙ্গে আমার শাশুড়িকেও ব্যাপার গুলো খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে । কোনটা কিভাবে , কত দামে বিক্রি করতে হবে ।
যাইহোক ওরা কতদূর কি করতে পারবে, তা আমি জানিনা । তবে মানুষকে যখন কাজের মাঝে ব্যস্ত রাখা যায় , তখন ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ ভালোই লাগে । কারণ কর্মই প্রধান কথা আর কর্মই শেষ কথা । আমি আসলে মূলত এটাতেই বিশ্বাসী । আর যখন কেউ কর্ম করতে চায় , তখন তাকে একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারলে বেশ ভালই লাগে । সেটা হোক নিজের লোক বা হোক অন্য যেকোনো কেউ ।
আজ দীর্ঘদিন পরে , হীরার চোখে মুখে আনন্দের বেশ ঝিলিক আমি দেখতে পাচ্ছি । কারণ ও ওর মনের মধ্যে যে স্বপ্ন লুকায়িত করে রেখেছিল , তা এখন অনেকটাই বাস্তবে পরিণত হয়েছে । আজ ওর মাকে কাপড় গুলো বুঝিয়ে দিল এবং শিখিয়ে- পড়িয়ে দিল কিভাবে কি করতে হবে ।
ওরা মা-মেয়ে ব্যবসা আসলে কতদূর কি করতে পারবে , তা আমার জানা নেই । তবে আমার গিন্নির চিন্তাধারা যে দিন দিন পরিপক্ক হচ্ছে, এটা দেখে নিজের মাঝে বেশ ভালোলাগা বোধ কাজ করছে ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
বাহ দারুন একটা উদ্যোগ নিয়েছে ভাবি, আমার কাছে এই জিনিসটা কিন্তু অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আশাকরছি ভাবি যে আশা প্রত্যাশা নিয়ে শুরু করেছে সেটা অবশ্যই সফল হবে। আর আপনি ভাবীকে সবসময় সাপোর্ট দিয়ে যাবেন এতেই ভাবি অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
সত্যি বলতে কি ওর চিন্তাভাবনা দেখে এবার আমি নিজেই কিছুটা অবাক হয়েছি । তাও যে পরিপক্কতা আসছে এটাই তো অনেক ।
চেষ্টা আর আপনার আর হীরা আপুর সার্পোট থাকলে আশা করি ভালো দূর অব্দি এগাতে পারবে।কথাগুলো খুব সুন্দর করে বলে দিলেন ভাইয়া।শুভ কামনা রইলো ভাইয়া আপনার শাশুড়ীর জন্য,আশা করি খুব ভালো করে ব্যবসায় খুব ভালো দূর এগুতে পারবে।🥰
আমার কাছে মনে হয় ভালো কাযে ব্যস্ত থাকলে সফলতা আসতে জাস্ট বাধ্য।আর ছোট ছোট পদক্ষেপ গুলোর মাধ্যমেই যেকোনো বড় সফলতা আসে।
এই জন্যই তো কাজে ব্যস্ত রাখার একটা পরামর্শ ওকে দিয়েছি আপু । দেখি এখন সামনে কি হয় ।
সত্যি কথা বলতে আপনার লেখাগুলো যখন পড়ছিলাম তখন ভাবির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আরো বেড়ে যাচ্ছিল ভাইয়া। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত কিছু কর্মের মাঝে থাকা। ভাবির মা অর্থাৎ আমাদের আন্টি যেহেতু বাসায় এখন একাই থাকেন তাই আমার মনে হচ্ছে এই কাজটি উনি খুব ভালোভাবেই করতে পারবেন। আর আপু তো সহযোগিতা করার জন্য আছেন। আপু যদি নিজে পছন্দ করে কাপড় গুলো অর্ডার করে দেন তাহলে আমার মনে হয় সেই কাপড় গুলো সবার কাছেই পছন্দ হবে। নতুন উদ্যোগে এভাবেই তারা এগিয়ে যাক এবং সফল হোক এই প্রত্যাশা করি।
যেহেতু সময় আছে তাই সেই দিকটা বিবেচনা করেই মূলত এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আপু ।
উদ্যোক্তা হওয়া একটি বড় গুন ভাই। সত্যি বলতে ভাবি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা সময়োপযোগী একটি সিদ্ধান্ত এবং অনলাইনে ব্যবসা গুলো অনেক ভাল চলছে এখন। যাই হোক ভাবীর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ভাবি খুব সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মায়ের জন্য । কাজের ভিতর থাকলে শরীর মন খুবই ভালো থাকে। আশা করি আন্টি অবশ্যই এই কাজে সফল হবে আর ভাবি তো পাশে আছে আর ভাবির পাশে আছেন ভাইয়া আপনি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাবির এত সুন্দর একটি উদ্যোগে উৎসাহ দেওয়ার জন্য। ভাবি আর আন্টির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
সত্যি বলতে কি আপু ওর এবারের সিদ্ধান্ত ও নিজেই নিয়েছে আমি শুধুমাত্র ওকে সাহস যুগিয়েছে ।
আসলে ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কারণ আপনি হীরা ভাবির সিদ্ধান্তকে চোখ বুজে স্বীকার করে নিয়েছেন। এটি খুবই ভালো কারণ যার মনের ইচ্ছার যে কাজটি যদি বাধা দেওয়া যায় তাহলে খুবই কষ্ট পায়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার মনে হচ্ছে ভাবী অনেক সফল হবে এবং ভাবী তার মাকে দিয়ে এই ব্যবসায় অনেক ভালো কিছু করতে পারবে দোয়া রইল।
বাহ,সত্যিই ভাবীর বুদ্ধির তারিফ করতে হয়।তবে যেকোনো ব্যবসা অতটা ও সহজ নয়, বেশ ধৈর্য্যের কাজ এটি।ছোট থেকেই একদিন এটি দীর্ঘ ব্যবসায় পরিণত হতে পারে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
এটা নিঃসন্দেহে ভালো একটি উদ্যোগ। এখন ঘরে বসেই মানুষ লাখ লাখ টাকা আয় করছে। আর ব্যবসার মধ্যে ভালো একটা প্রফিট থাকেই। যদিও তারা প্রথম কাপড়ের উদ্যোগটি নিয়েছে। আশা করি মা ও মেয়ে মিলে ব্যবসাটা দাড়ঁ করাতে পারবে। আপনি তাদেরকে সাপোর্ট দিয়েছেন শুনেও ভালো লাগলো। অলস সময় টা বসে না থেকে কাজে লাগাতে পারবে।
ভাবি অনেক সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাথে আপনার সম্মতি পেয়ে দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক কৌতুহলী হয়ে পড়েছেন। গ্রামাঞ্চলে কাপড়ের ব্যবসাটা আসলেই অনেক ভালো চলে আমাদের এলাকাতে অনেকজন এই ব্যবসাটির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তারা এখান থেকে বেশ লাভবান হচ্ছেন। ঠিক কথাই বলেছেন ভাইয়া কর্মই প্রধান কথা কর্মে শেষ কথা ,,❤️ কথাটি শুনে আসলেই মনটা ভরে গেল,